কোনো বিশেষ দলের হয়ে কাজ না করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। স্বচ্ছতার মাধ্যমে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণের চেষ্টার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রাজারবাগে নির্বাচন বিষয়ক প্রশিক্ষণ উদ্বোধনকালে প্রশাসনের প্রতি নানা নির্দেশনা দেন তিনি।

রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ধৈর্য্যের সঙ্গে মাথা ঠাণ্ডা রেখে আইনি প্রক্রিয়ায় সকল বিষয় মোকাবিলা করতে হবে। আমরা কাজ কর্মে যত স্বচ্ছ থাকবো সাধারণ জনগণের কাছে তত আস্থা অর্জন করতে পারব।

তিনি বলেন, আশা করবো নির্বাচন শান্তি ও উৎসব মুখর হবে। ২৪, ১৮ সালসহ অতীতের বাজে নির্বাচনগুলোর কথা মাথা থেকে ফেলে দিতে হবে। সমাজ থেকে দুর্নীতি ও মাদক কমাতে হবে। আমাদের সময় খুব একটা নেই।

গণমাধ্যমের প্রতি অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকারের ব্যর্থতা জোরেসোরে তুলে ধরা হয়, কিন্তু সফলতা তুলে ধরা হয় না।

অপারেশন ডেভিলহান্টের কর্মযজ্ঞ এখনও চলমান রয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্টদের তালিকা প্রত্যোক থানায় রয়েছে। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে তৎপর রয়েছে। অনেক অপরাধী জামিনে ছাড়া পেয়ে অপরাধ করছে জানিয়ে তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান উপদেষ্টা।

তিনি জানান, নির্বাচনের আগে লটারির মাধ্যমে পুলিশে বদলি ও পোস্টিং দেয়া হবে। এসময়, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী বলেন, জুলাই আগস্টের পর নতুনভাবে পুলিশ যে তৈরি হয়েছে তার চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে জাতীয় নির্বাচন।

এসময় পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, এবারের নির্বাচন পুলিশের জন্য অগ্নিপরীক্ষা। চাপের মধ্যে থেকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান আইজিপি।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্র সক্রিয় ছিল বলে অনেকে মনে করেন। তবে এমন ধারণাকে স্রেফ ষড়যন্ত্র বলে উড়িয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের গতিপথ বদলে গেছে। জো বাইডেন প্রশাসনের মত মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নয়, ট্রাম্প প্রশাসনের অগ্রাধিকার ব্যবসা বাণিজ্য বলে মনে করেন কুগেলম্যান।

যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া প্যাসিফিক ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায় সব বিদেশি সাহায্য স্থগিত করেছেন। ইউএসএইড ভেঙে দিয়েছেন। তিনি ‘নেশন বিল্ডিং’ পছন্দ করেন না। তাই বাইডেন প্রশাসনের দেয়া প্রতিশ্রুতি ট্রাম্পের সঙ্গে খাপ খাবে না।

গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সংখ্যালঘু অধিকারের মতো বিষয়গুলো এখনো দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে কুগেলম্যান বলেন, এগুলো ইতিহাস হয়ে গেছে। ট্রাম্প কেবল স্বার্থনির্ভর নীতি মানেন। মানবাধিকার বা গণতন্ত্র তার অগ্রাধিকার নয়। তিনি লেনদেনভিত্তিক ও ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করেন।

তিনি আরও বলেন, আসলে ট্রাম্প প্রশাসনের নজরে বাংলাদেশ খুব একটা নেই। সেটা হয়তো ভালোও হতে পারে। কারণ নজরে থাকা দেশ যেমন ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে।

এদিকে, রাজনীতিতে দক্ষিণপন্থার উত্থান নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আশংকা প্রসঙ্গে মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, গত এক বছরে ধর্মভিত্তিক ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলো বেশি রাজনৈতিক পরিসর পেয়েছে। যদি তারা গণতন্ত্রবিরোধী বা সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়ায় তখনই সমস্যা হবে। এক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদ সবচেয়ে বড় উদ্বেগ। বাংলাদেশ অতীতে এই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে।

এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এটিকে গুরুত্ব সহকারে নজরদারি করতে হবে। প্রতিশোধমূলক রাজনীতি ও চরম মেরুকরণ বাংলাদেশে বড় ঝুঁকি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ায় অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি রয়েছে। আগামী নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা বেশি। তবে নির্বাচনের সময় সহিংসতার আশঙ্কা থেকেই যায়।

অপরদিকে, এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর জোর দেন তিনি। বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এই সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা পাহাড়সম। তাছাড়া, এই সরকারের সময় মানুষের অস্থিরতা বাড়লেও আগের চেয়ে জনগণের স্বাধীনতা বেড়েছে।

নির্বাচন প্রসঙ্গে এই দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ বলেন, নির্বাচন যথাসময়ে ও সুষ্ঠুভাবে হওয়া অত্যন্ত জরুরি। অন্যথায় নতুন অস্থিরতার ঝুঁকি রয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের পর অনেক কাজ শুরু হয়েছে, কিন্তু তা এখনো অনেক বাকি। তাই নতুন সরকারের ওপর প্রচণ্ড চাপ ও প্রত্যাশা থাকবে।

সবশেষে নতুন শুল্কনীতির পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য কিনতে বাংলাদেশের ওপর চাপ বেড়েছে বলেও জানান মাইকেল কুগেলম্যান।

আজ বিশ্ব এক মহাজাগতিক দৃশ্যের সাক্ষী হতে চলেছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে দেখা যাবে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। এটি ‘ব্লাড মুন’ নামেও পরিচিত। যারা রাতের আকাশ দেখতে ভালোবাসেন তাদের জন্য দারুণ সুযোগ এটি।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ বিভাগ (আইএসপিআর) জানিয়েছে, যদি আকাশ মেঘমুক্ত থাকে তাহলে বাংলাদেশ থেকেও দেখা যাবে এই চন্দ্রগ্রহণ।

বাংলাদেশ সময় ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা ২৮ মিনিট থেকে শুরু হবে চন্দ্রগ্রহণ। মোট ৭ ঘণ্টা ২৭ মিনিট স্থায়ী হবে গ্রহণ। তবে পূর্ণগ্রাস গ্রহণের সময়টাই সবচেয়ে আকর্ষণীয়। এই সময়েই দেখা যাবে ‘ব্লাড মুন’। তবে খালি চোখে চাঁদের এই পরিবর্তন খুব একটা বোঝা যাবে না।

এদিন বাংলার আকাশে রাত ৯টা ২৭ মিনিট থেকে চাঁদের একটি অংশ ধীরে ধীরে কালো হতে দেখা যাবে। রাত সাড়ে ১০টায় পৃথিবীর ছায়া পুরোপুরি চাঁদের উপরে পড়বে। এই মুহূর্তে চাঁদ পুরোপুরি অদৃশ্য হবে না, বরং লালচে বা তামাটে রঙ ধারণ করবে।

চন্দ্রগ্রহণটি পুর্ণাঙ্গভাবে দেখা যাবে এমন স্থান হলো পূর্বে ইন্দোনেশিয়ার হিলা দ্বীপ হতে শুরু করে পশ্চিমে কেনিয়ার মোম্বাসা বন্দর পর্যন্ত। এই দু’দিকের কিছুটা পূর্ব-পশ্চিমেও আংশিক গ্রহণ দেখা যাবে। তবে উত্তর আমেরিকা, ক্যারিবীয়ান অঞ্চল ও দক্ষিণ আমেরিকার ৯০ ভাগ অঞ্চল থেকে এটি দেখা যাবে না।

উল্লেখ্য, আকাশপ্রেমী ও সাধারণ মানুষ— সবার জন্য এটি এক অনন্য সুযোগ। শুধু সৌন্দর্য নয়, চাঁদের লাল রঙের মাধ্যমে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করারও বিরল সুযোগ মিলবে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাব্বিশের ফেব্রুয়ারিতেই আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু যারা এই সরকারকে ভোট পর্যন্ত যেতে দিতে চায় না, তারা সর্বোচ্চ বাধা দেবে। কিছু লক্ষণ এখনই দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ৭ দল ও হেফাজত ইসলামের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার বরাতে এ কথা জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যারা ভোট দিতে পারেননি তাদের জন্য আগামী নির্বাচনে ভালো অভিজ্ঞতা হবে। আর যারা ভোট দিতে গিয়ে তিক্ততার শিকার হয়েছেন তাদেরকেও ভাল অভিজ্ঞতা দিতে হবে। আগামী নির্বাচনে অন্য কোনো দেশ যেন থাবা বসানোর সুযোগ না পায়- এমন মন্তব্যও করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

দুর্গাপূজার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বরাতে প্রেস সচিব জানান, দুর্গা পূজায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা সকলের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেছেন, অনেকে গণ্ডগোল তৈরির চেষ্টা থাকবে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার (৩০ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার বাইরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রেস সচিব বলেন, কিছু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে চিফ অ্যাডভাইজার বসবেন। বিকেল ৩টার সময় বিএনপির সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি এবং ইলেকশন নিয়ে আলাপ আলোচনা হবে; সাড়ে ৪টায় জামায়াত এবং সন্ধ্যা ৬টায় এনসিপির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা।

মূলত, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান মতভিন্নতার মধ্যেই হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এরই মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপও ঘোষণা করেছে ইসি। হঠাৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় আগামী নির্বাচন ঘোষিত সময়ের মধ্যে হবে কি না, এ নিয়েও রাজনৈতিক অঙ্গনে ও নাগরিক সমাজে আলোচনা তৈরি হয়েছে।

উল্লেখ্য, ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল এবং ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

রাজনীতির মাঠে নানামুখী উত্তাপ বিরাজমান। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি বা সংখ্যানুপাতিক (পিআর) নির্বাচন নিয়ে দলগুলোর মধ্যে বাহাস চলছে। তাছাড়া, ভোটের আগে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের মতো ইস্যুও রয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাফ জানিয়েছেন, ঐকমত্য না হওয়া বিষয়গুলোর ভাগ্য পরবর্তী সংসদে নির্ধারণ করা হবে।

তিনি বলেন, যেকোনো কিছু করলে হলে আগে সংসদে যেতে হবে। সংসদ ছাড়া সংবিধান সংশোধন করা যাবে না।

এদিকে, গণপরিষদ কিংবা নতুন সংবিধান নিয়েও বিএনপির অবস্থান পরিস্কার করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ীই সবকিছু হবে। প্রয়োজনে সংবিধানের ভুলত্রুটি সংশোধন হতে পারে।

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, নতুন সংবিধান আমরা গ্রহণ করবো না। কারণ বর্তমান সংবিধানের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রাম জড়িয়ে রয়েছে। সংবিধানের ভুলত্রুটি সংশোধন করা যাবে। অনেকে নতুন সংবিধান লেখার দাবি তুলছেন। কিন্তু তারা এটি কেন করছে আমি বুঝি না।

অপরদিকে, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বা এনসিপির সমমনা বক্তব্যেও আগামী নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখছেন না মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সঠিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। দলগুলো বিভিন্ন কথা বললেও নির্বাচন বিলম্বিত হলে গণতান্ত্রিক উত্তরণ দেরী হবে এটা সবাই উপলব্ধি করে।

সংস্কার বিএনপির সন্তান উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রাম ও আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের সবচেয়ে বড় শিকার বিএনপি। তাই সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিয়ে আমাদের আপস করার সুযোগ নেই।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সংস্কারের নিশ্চয়তা দিতে আমরা একমত হয়েছি। এটিকে ইস্যু করা উচিত নয়। ঐকমত্য হওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলো এখনই বাস্তবায়ন হোক। আর একমত না হওয়া বিষয়গুলো সংসদের হাতে দেয়া হোক।

রাজনৈতিক কৌশল থেকে দলগুলো যে বক্তব্যই দিক না কেন, সকলেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল।

এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচনী ক্যাম্পেইন সবার আগে জামায়াত শুরু করেছে। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায় ভোটে সকল দল অংশ নেবে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এক সপ্তাহের মধ্যে রিলিজ পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

রোববার (৩১ আগস্ট) নুরের সবশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ধীরে ধীরে নুরের উন্নতি হচ্ছে। তার ৪ টি সমস্যা রয়েছে— নাক, চোয়ালের হাড় ভেঙে গেছে। চোখেরও ইঞ্জুরি আছে। মস্তিষ্কেও রক্তক্ষরণ হয়েছে।

সিটিস্ক্যান রিপোর্ট ভালো আসছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, নুর কিছুটা ট্রমায় আছে। গঠিত হওয়া বোর্ডের সিদ্ধান্তে সব ধরণের চিকিৎসা হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি রিলিজ পেতে পারেন বলেও এসময় আশা প্রকাশ করেন ঢামেক পরিচালক।

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতাকর্মীদের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। দুপক্ষকে ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিচার্জে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁনসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। গুরুতর আহত হওয়ায় নুরকে প্রথমে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে রাত ১১টার দিকে তাকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়।

জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেছেন, গতকাল মশাল মিছিলের নামে বেশ কয়েকজন জাতীয় পার্টির অফিসে আগুন দিতে এসেছিল। এ সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা আগুনে পুড়ে যাওয়ার হাত থেকে নেতাকর্মীদের রক্ষা করেছেন।

শনিবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, আরেকটি দলকে ব্যান করা কোন দলের আদর্শ বা কর্মসূচি হতে পারে না। দেশে নব্য মবতন্ত্র সৃষ্টি হচ্ছে। এই সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক করতে পারেনি। তারা সুষ্ঠ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারবে কি না তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।

এ সময় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন শামীর হায়দার পাটওয়ারী।

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা আবারও জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, নির্বাচন প্রতিহত করবে এমন কোনো শক্তি নেই।

শনিবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে ব্রিফিংয়ে নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করার মতো পরিবেশ আছে কিনা জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, আপনারা পুলিশ সদর দফতর থেকে পরিসংখ্যান নেবেন। গত বছরের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পরিসংখ্যান তুলনা করে দেখবেন; পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে কিনা। আমরা কিন্তু পুলিশকে জানিয়েছি, তারা যেন নিয়মিত পরিসংখ্যান দেয়। আমরা মনে করি, সামনে নির্বাচন হওয়ার মতো যথেষ্ট পরিবেশ আছে। নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে হবে।

নুরুল হক নুরের প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সবার জন্য সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য নুরকে দেশের বাইরে নেয়া হবে। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা ফোনে নুরের সঙ্গে কথা বলছেন এবং হামলার প্রতি সমবেদনা ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (৩০ আগস্ট) দলটির উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, শনিবার দুপুর ১টার দিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফোন করেন। এ সময় নুরুল হক নুর প্রধান উপদেষ্টাকে গতকালের ঘটনার বিস্তারিত জানান। ফোনালাপে গতকালের ঘটনার তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

এর আগে, গতকাল রাতে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম নুরুল হক নুরকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল যান।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ছিন্নমূল এলাকায় একটি দেশীয় অস্ত্র তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে চার জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী।

আজ শনিবার (৩০ আগস্ট) সকালে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ৬টি দেশীয় অস্ত্র, ৩৫ রাউন্ড খালি কার্তুজ, ৫ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, একটি চাইনিজ কুড়াল, ২০টি ছুরি, চার্জারসহ ২টি ওয়াকিটকি, ১টি মেগাফোন, ৪টি প্যারাসুট ফ্লেয়ার এবং অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়। 

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কামরুল হাসান, আশিকুর রহমান, রুমন ও আমির হোসেন। তারা প্রত্যেকেই জঙ্গল সলিমপুরের ৯ নম্বর সমাজের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে কামরুল হাসান ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী বলে জানিয়েছেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কাজী সেলিম উদ্দিন।

ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ছিন্নমূল দিনার ঘোনা এলাকার একটি ঘর থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময়, ঘরটিতে বেশ কিছু অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামও পাওয়া যায়।

অপরদিকে, আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে তথ্য যাচাই-বাছাইের পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান।

কক্সবাজারে কোনো হোটেলের বিরুদ্ধে নদী বা পরিবেশদূষণের অভিযোগ উঠলে শুধু জরিমানা না করে, তা বন্ধ করে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

আজ শনিবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজারের হিলটপ সার্কিট হাউসের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক ‘বিশেষ সমন্বয় সভা’ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ নির্দেশনার কথা জানান তিনি।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, ময়লা ফেলার কারণে প্রতিনিয়ত নদী দূষণ ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। হোটেলগুলোতে পরিবেশ অধিদফতর বছরের পর বছর লাখ লাখ টাকা জরিমানা করে আসলেও আবর্জনা ফেলা বন্ধ হয়নি। এ সময়, জরিমানা না করে অভিযুক্ত হোটেলগুলো একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে বলে জানান তিনি। সেইসাথে প্রথমে নদী দখলমুক্ত করে, পরে দূষণমুক্ত করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।