অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকেও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে বিএনপির প্রতিনিধি দল।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনেও এই তিন উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি করা হয়। তাদের বিষয়ে বিএনপির বক্তব্য হচ্ছে তারা ‘বিতর্কিত’। আজও সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, এই তিন উপদেষ্টার কারণে সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুন্ণ হচ্ছে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যা অনুমান করতে পেরেছিলাম, সে অনুযায়ী আমরা একটি লিখিত বক্তব্য নিয়ে এসেছিলাম। তা প্রধান উপদেষ্টার কাছে পেশ করেছি এবং সে অনুযায়ী আমরা আলোচনা করেছি। এর সারাংশ হচ্ছে… বাংলাদেশে গণতন্ত্রে উত্তরণের লক্ষ্যে বিএনপি শুরু থেকে একটি জাতীয় নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবি জানিয়ে আসছে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে ও সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের জন্য আমরা দাবি জানিয়েছি।

তিনি আরও বলেছেন, বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক ও পারিবারিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আওয়ামী লীগ আমলে। এজন্য আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বেশি বিচার দাবি করে বিএনপি। কোনোভাবে আওয়ামী লীগের বিচার অসম্পূর্ণ থাকলে বিএনপি সরকারে যখন যাবে তখন তা বিচারের আওতায় এনে স্বাধীন বিচারবিভাগের মাধ্যমে পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা হবে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম অবিলম্বে সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দ্রুত একটি রোডম্যাপ প্রদানের দাবি আমরা জানিয়েছি।

অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে, একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণে একটি প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা হবে, তা বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, যেকোনও উছিলায় নির্বাচন যত বিলম্ব হবে, আবার স্বৈরাচার ফিরে আসার ক্ষেত্র তৈরি হবে। এর দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকারের সংশ্লিষ্টদের ওপর বর্তাবে।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সম্প্রতি নানা গুজব রয়েছে, সেই প্রেক্ষিতে আমরা বলেছি, বিএনপি কখনোই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চায়নি। বরং প্রথম দিন থেকে এ সরকাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছে।

আজকেও কি বিএনপি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের আশ্বাস পায়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, স্পেসিফিক কোনও কথা হয়নি, স্পেসিফিক কোনও কথা জানাননি, আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি। হয়তো উনারা প্রেস উইংয়ের মাধ্যমে জানাবেন। আমরা অপেক্ষা করবো।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন এই তিনটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সংস্কার প্রসঙ্গে উনারা একমত হয়েছেন, যেখানে একমত হওয়ার কথা তার ভিত্তিতে সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে। এবং সেই কাজ অতি সহসাই সম্পন্ন সম্ভব। এখানে কোনও দ্বিমত পোষণ করেননি।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জনের খবর পেয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যার পর প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যার পর প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। জানা যায়, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ নিয়ে আজ বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে, যা নিয়ে অনেকই অনেক কথা লিখছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলতে সন্ধ্যায় যমুনায় যান নাহিদ ইসলাম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে যমুনা টেলিভিশনকে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীন জানান, প্রধান উপদেষ্টার কাজ করার মতো পরিস্থিতি না থাকলে তিনি তার পদে থাকার ব্যাপারটি বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে এমন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও লাখো মানুষের ত্যাগ সেই ত্যাগের প্রতি দায়বদ্ধতা ও পুরো দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ জাতীয় ঐক্যের বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ ইসলাম।

দেশের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। 

বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগ থেকে মুজিবুল আলম প্রকাশিত এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার বিকালে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। এসময় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিষদ আলোচনা করা হয়।

বৈঠকে ডা. শফিকুর রহমান দেশের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ ইউনূসকে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) দেয়া বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি। বুধবার (২১ মে) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

এদিন বিকেলে ঢাকা উত্তর সিটির জনসংযোগ বিভাগ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলে, পছন্দের ঠিকাদার কাজ না পাওয়ায় ঢাকা উত্তর সিটির নগর ভবনের সামনে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন।

প্রতিবাদে গণ অধিকার পরিষদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পছন্দের ঠিকাদার কাজ না পাওয়ায় ডিএনসিসি নগর ভবনের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে নুরুল হক নুর’— ডিএনসিসির জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এমন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি তাদের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে পরিষদের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীর নেতা ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার স্পষ্ট তথ্য-প্রমাণের পর তিনি প্রশাসকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন না।

নুরুল হক নুর। সভাপতি, গণ অধিকার পরিষদ।

গণ অধিকার পরিষদ বলছে, এজাজের হিযবুত তাহ্‌রীর ও জঙ্গিবাদের কার্যক্রমে যুক্ত থাকা ও ওই অভিযোগে ২০১৫ সালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সম্প্রতি আল–জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের ফেসবুক পোস্টেও উঠে এসেছে। এই সুস্পষ্ট তথ্য–প্রমাণের ভিত্তিতেই তাঁকে প্রশাসক পদ থেকে অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবিতে গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা ঢাকা উত্তর সিটির সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেই কর্মসূচিতে সমর্থন জানায়।

এতে আরও বলা হয়, ঢাকা উত্তর সিটি বলেছে, নুরুল হকের পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ না দেওয়ায় গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা উত্তর সিটির সামনে বিশৃঙ্খলা করেছে। এটি একেবারে অসত্য, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। বরং দরপত্রে অংশগ্রহণ করে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েও গণ অধিকার পরিষদের একজন সদস্যকে ‘কমিশন’ ব্যতীত কাজ না দেওয়ার বিষয়টি প্রশাসক এজাজকে অবহিত করা হয়েছিল। তিনি বিষয়টি অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীকে অবহিত করতে বলেন।

গণ অধিকার পরিষদ বলেছে, প্রশাসকের পরামর্শেই নুরুল হক বিষয়টি ওই কর্মকর্তাকে জানান। অন্যদিকে গাবতলী পশুর হাটসহ কয়েকটি বিষয় গণমাধ্যমে এসেছে যে কমিশন ও পছন্দের লোক ব্যতীত প্রশাসক এজাজ অন্য কাউকে কোনো ধরনের কাজ দেন না। মূলত নিজের অভিযোগ আড়াল করে অন্যত্র দৃষ্টি ঘোরাতেই এজাজ গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়াচ্ছেন।

উল্লেখ্য, নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরীরের সাথে সম্পৃক্ত এবং দুর্নীতিতে অভিযুক্ত থাকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের পদ থেকে মোহাম্মদ এজাজকে অপসারণের পাশাপাশি দ্রুত গ্রেফতারের দাবি-ও জানায় গণ অধিকার পরিষদ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। তিনি আগামী অর্থবছরে এই রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যের কথাও জানান।

বুধবার (২১ মে) পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ পূর্বাভাসগুলোর কথা তুলে ধরেন গভর্নর।

ব্যাংকিং খাত এবং ক্ষুদ্রঋণ সম্পর্কেও কথা বলেন ড. মনসুর। তিনি বলেন, ২৬ শতাংশ সুদের হারে ক্ষুদ্রঋণ টিকতে পারে না।

গভর্নর বলেন, গ্রাহকরা এজেন্ট ব্যাংক শাখা থেকে অর্ধেক সুদে ঋণ পাচ্ছেন। এমতাবস্থায় ধীরে ধীরে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় উচ্চ সুদের ক্ষুদ্রঋণ বাজার থেকে বাদ দেয়া হবে।

রিজার্ভ সম্পর্কে ড. আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, পরের মাসে রিজার্ভ ২৭ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে থাকবে। আগামী অর্থবছরে এই রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, চলতি মাসের ১৯ মে পর্যন্ত দেশের মোট রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ গণনা পদ্ধতি অনুসারে বর্তমানে দেশের রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

পাঁচ দিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে আবারও বাড়ানো হলো স্বর্ণের দাম। নতুন দাম অনুযায়ী, ভালো মানের (২২ ক্যারেট) প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮২৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯২১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানীয় বাজারে তেজাবি (পাকা) স্বর্ণের দাম বাড়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

গতকাল বাজুসের স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন মূল্য তালিকা প্রকাশ করা হয়। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২২ মে) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।

নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮২৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯২১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার  ৬৯৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬২ হাজার ১৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৩০৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৯৭২ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৪৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রূপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ৮৪৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি রূপার ২ হাজার ৭১৮ টাকা। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ৩৩৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রূপার ১ হাজার ৭৫০ টাকা।  

এর আগে, ১৮ মে সবশেষ স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছিল। ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরিতে এক হাজার ৩৬৪ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৮ টাকা। এ নিয়ে চলতি বছরের সাড়ে চার মাসে মোট ২৩ বার স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলো।

বকেয়া বেতন ও অন্যান্য পাওনার দাবিতে রাজধানীর কাকরাইল মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করা গার্মেন্টস শ্রমিকরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। টিএনজেড গ্রুপের ওয়াশিং প্ল্যান্ট ও মহাখালী ডিওএইচএস-এ মালিকের বাড়ি বিক্রি করে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও অন্যান্য পাওনাদি আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে এমন ঘোষণার পর তারা আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়।

এর আগে, আজ মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে শ্রম ভবন থেকে মার্চ টু যমুনা কর্মসূচি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আসেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। এ সময় কাকরাইল মোড়ে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেন। পরে সেখানেই বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।

শ্রমিকরা জানান, গাজীপুরের টিএনজেড গ্রুপের ৮টি গার্মেন্টস ও আশুলিয়ার চেইন অ্যাপারেলস লিমিটেড দীর্ঘ সময় ধরে তাদের বেতন বন্ধ রেখেছে। এতে তাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। বেশিরভাগ কর্মীরা টানা তিন মাসের বাসা ভাড়া দিতে পারেননি। এছাড়াও, বিভিন্ন দোকানের বাকি পরিশোধ করতে পারছেন না তারা। ফলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে মার্চ করতে বাধ্য হয়েছেন তারা।

শ্রমিকরা তখন আরও জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে শ্রম ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও সরকার থেকে কোনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ন্যায্য বেতন ভাতা পরিশোধ না করা পর্যন্ত কাকরাইল মোড়েই অবস্থান করবেন তারা। এ সময় বেতন-ভাতা পরিশোধে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপও কামনা করেন তারা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীদের সাথে যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল তা অবসান হয়েছে। ধাপে ধাপে এনবিআর কর্মচারীদের দাবি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাস্তবায়ন করতে ঈদের পর প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। কার্যকরের পর ধাপে ধাপে কর্মচারীদের দাবি বাস্তবায়ন করা হবে। তবে এখন অধ্যাদেশের কোনও পরিবর্তন হবে না।

প্রসঙ্গত, গত ১২ মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তি করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি পৃথক বিভাগ করে অধ্যাদেশ জারি করে। এরপর থেকে অধ্যাদেশের কয়েকটি ধারায় সংস্কার দাবি করে এনবিআরে কর্মরতরা। এই দাবিতে কয়েকদিন ধরে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কলমবিরতি কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তারা। এতে কাস্টমস ও রাজস্ব আদায় স্থবির হয়ে পড়ে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন নরওয়ের প্রতিমন্ত্রী। মঙ্গলবার (২০ মে) নরওয়ে সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী স্তিনে রেনাতে হোহেইম রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশের প্রতি নরওয়ের অব্যাহত সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

সাক্ষাতকালে হোহেইম নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইউনাস গার স্তোরের পক্ষ থেকে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানান এবং বাংলাদেশ-নরওয়ে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আপনি নরওয়েতে সুপরিচিত। আমাদের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই আপনার ব্যাপারে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে কথা বলেন। আপনাদের মধ্যে বহু দিনের বন্ধুত্ব রয়েছে।

এসময় অধ্যাপক ইউনূস দুই দেশের মধ্যকার গভীর ও ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা স্মরণ করে বলেন, সংকটকালে নরওয়ে সবসময় বাংলাদেশের পাশে থেকেছে। আমাদের উন্নয়ন অভিযাত্রায় আপনাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

হোহেইম বহুপাক্ষিক সহযোগিতা ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রতি নরওয়ের অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার পাশে থাকতে আমরা এখানে এসেছি। আপনার কাঁধে যে দায়িত্ব, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশাও অনেক।

সাম্প্রতিক মাসগুলোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাইয়ের গণআন্দোলনে বহু প্রাণ হারিয়েছে এবং আমাদের অর্থনীতি ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগের সরকার প্রতিবছর আনুমানিক ১৬ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচারের সুযোগ করে দিয়েছিল। ঋণগুলোকে উপহার হিসেবে ব্যবহার করা হতো আর আমরা পেয়েছি অগণিত অনাদায়ী বিলের বোঝা।

তিনি আরও বলেন, এই সকল কষ্টের মাঝেও বিশ্ব এখন বাংলাদেশকে নিয়ে আশাবাদী। সদ্যসমাপ্ত বিডা সম্মেলনে বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানিগুলো (নরওয়ের কোম্পানিগুলোসহ) এখানে এসেছিল। তারা দায়বদ্ধতা থেকে নয় বরং আগ্রহ ও সম্ভাবনার প্রতি বিশ্বাস থেকে এসেছে।

প্রধান উপদেষ্টা মানবিক ইস্যু, বিশেষ করে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিয়ে নরওয়েকে আরও সহায়তা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এরা বাস্তব মানুষ, যাদের বাস্তব স্বপ্ন আছে। রোহিঙ্গা তরুণদের আশা দরকার। অনেকেই ৭ বা ১০ বছর বয়সে এসেছিল, এখন তারা কিশোর। তারা ক্যাম্পেই বড় হয়েছে। প্রতিদিন আরও শিশু জন্ম নিচ্ছে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে। তারা নিজেদের বাড়ি ফিরতে চায়, কিন্তু একটি অচল অবস্থায় আটকে আছে। আমরা যেন তাদের ভুলে না যাই।

হোহেইম এই মানবিক সংকটের ব্যাপকতা স্বীকার করেন এবং নরওয়ের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ যেভাবে এই সংকটের নেতৃত্ব দিচ্ছে আমরা তা গভীরভাবে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে দেখি। আমরা আমাদের সম্পর্ককে কেবল উন্নয়ন সহযোগিতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না বরং আরও বিস্তৃত, গতিশীল অংশীদারত্বে পরিণত করতে চাই।

এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সচিব ও এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. মোশারফ হোসেন।

বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করেছে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক। মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

ফয়েজ আহমদ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, স্টারলিংক অফিশিয়ালি বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে। সোমবার বিকেলে তারা ফোন কলে আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে এবং আজ সকালে তাদের এক্স হ্যান্ডেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে দুটি প্যাকেজ ‘স্টারলিংক রেসিডেন্স’ এবং ‘রেসিডেন্স লাইট’র মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করবে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে, স্টারলিংক রেসিডেনশিয়াল প্যাকেজের মাসিক খরচ ধরা হয়েছে ৬ হাজার টাকা এবং রেসিডেনশিয়াল লাইট প্যাকেজের মাসিক খরচ চার হাজার দু’শ টাকা। তবে উভয় প্যাকেজের জন্যই গ্রাহকদেরকে ৪৭ হাজার টাকা এককালীন যন্ত্রপাতির খরচ বহন করতে হবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, আগ্রহী গ্রাহকরা স্টারলিংকের ওয়েবসাইটে গিয়ে অথবা নির্ধারিত প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সংযোগের জন্য আজ থেকেই অর্ডার করতে পারবেন। শুরুতে একটু খরচ হলেও এর মাধ্যমে প্রিমিয়াম গ্রাহকদের জন্য উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা প্রাপ্তির টেকসই বিকল্প তৈরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। পাইলট দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে বিমানটি জরুরি অবতরণ করান। ২৯০ জন যাত্রীর সবাই নিরাপদ আছেন।

মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, সকাল ৭টার দিকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে TK713 ফ্লাইটটি। উড্ডয়নের ১৫ মিনিট পরই বিমানের একটি ইঞ্জিনে স্পার্ক লক্ষ্য করেন পাইলট। তিনি বিমানটি ফিরিয়ে আনেন এবং আকাশে প্রায় দেড়ঘণ্টা চক্কর দিয়ে জ্বালানি খরচের পর, সকাল সোয়া ৮টায় নিরাপদে জরুরি অবতরণ করে। ২৯০ যাত্রীর সবাই নিরাপদে আছেন।

এয়ারপোর্ট সূত্রে জানা গেছে, যাত্রীদের বিমান থেকে নামিয়ে হোটেলে পাঠানো হয়েছে। তাদের যাত্রার বিকল্প ব্যবস্থার বিষয়ে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ মে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকাগামী বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটের বাম পাশের ল্যান্ডিং গিয়ারের চাকা খুলে নিচে পড়ে যায়। তবে পাইলটের দক্ষতায় ফ্লাইটটি নিরাপদে অবতরণে সক্ষম হয়। ঐ ফ্লাইটে শিশুসহ মোট ৭১ জন যাত্রী ছিলেন।

সং‌র‌ক্ষিত নারী আস‌নের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক লায়লা পারভীন সেজু‌তিকে গ্রেফতার করে‌ছে পু‌লিশ।

সোমবার (১৯ মে) রাত আড়াইটার দি‌কে শহ‌রের নিজ বা‌ড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভা‌রপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শা‌মিনুল হক জানান, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।