নির্বাচন কমিশনে আয় ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে জাতীয় পার্টি। বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূইয়া নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদের কাছে ২০২৪ সালের অডিট রিপোর্ট জমা দেন।

২০২৪ সালে দলটির আয় ব্যায়ের হিসাবে দেখা গেছে, গত বছরে জাপার বার্ষিক আয় ২ কোটি ৬৪ লক্ষ ৩৮ হাজার ৯৩৮ টাকা। অন্যদিকে ব্যয় ১ কোটি ৭৯ লক্ষ ৮৮ হাজার ৪৪ টাকা। আয়ের খাতে কর্মীদের চাঁদা, প্রকাশনা ও ডোনেশন দেখানো হয়েছে। আর ব্যয় হয় প্রচার কার্যক্রম, অফিস কর্মচারীদের বেতন ইত্যাদি খাতে।

এসময় জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূইয়া বলেন, আওয়ামী লীগের সাথে নির্বাচন করার জন্য জাপাকে ফ্যাসিস্ট এর দোসর বলা হচ্ছে এটি গ্রহণযোগ্য নয়। বিএনপিও বিগত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। জাপাকে অবৈধ বলার দাবি উঠলে বিএনপিসহ বাকিদলগুলোকেও অবৈধ বলতে হবে।

আগামী নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হলে জাপা অংশ নিবে বলেও জানান তিনি। বিগত তিন নির্বাচনে অংশগ্রহনের দায়ে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করলে ২০১৮ এর নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য বিএনপিসহ ৩১ টি দলকে নিষিদ্ধ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আরপিও অনুযায়ী রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত হয়। সেখানের কোন শর্ত জাপা লঙ্ঘন করেনি। এছাড়া কমিশনকে এখন পর্যন্ত পুরোপুরি নিরপেক্ষ বা পক্ষপাতদূষ্ট বলার পক্ষে নয় জাপা, যেহেতু এখনও তারা নির্বাচন করেনি।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে জাপা আয় করে ২ কোটি ২২ লাখ দুই হাজার ৪০৫ টাকা। আর ব্যয় করে এক কোটি ১৩ লাখ ১৮ হাজার ৫২৫ টাকা। ২০২২ সালে তাদের আয় হয় ২ কোটি ২৯ লাখ ১৪ হাজার ৯৬৮ টাকা। ব্যয় হয় ১ কোটি ২৮ লাখ ৩৭ হাজার ৫৪২ টাকা। ব্যাংকে স্থিতি ছিল ১ কোটি ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৪২৬ টাকা। অর্থাৎ ২০২৪ সালে তাদের আয় ও ব্যয় দুটোই বেড়েছে।

তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফম খালিদ হোসেন।

আজ বুধবার (৩০ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ দফতরে তাবলিগের দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, কমিটিতে দুই পক্ষের প্রতিনিধি থাকবেন। আশা করি, এই কমিটির মাধ্যমে উভয় পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে। সামনে সংঘাতের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা এটাই চাচ্ছি।

দুই পক্ষের একসাথে ইজতেমা করা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, একসাথে ইজতেমা করা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আশা করি, দুপক্ষের মধ্যকার সংকট কমে যাবে।

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ধর্ম অবমাননাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বসতবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করা ঠিক নয়। এতে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। রংপুরের গঙ্গাচড়ায় যে কটুক্তি করেছে, তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে যারা বাড়িঘরে ভাংচুর চালিয়েছে, তাদের এটা করা ঠিক হয়নি। এ নিয়ে মামলা করা হলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের তাদের ‘এক্সিট’ নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ডেমোক্রেসি ডায়াস বাংলাদেশের এক সেমিনারে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

দেবপ্রিয় বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ পরবর্তী সরকার কতটা বৈধতা দেবে, তাও চিন্তা করতে হবে। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া- যতটুকু না করলেই নয় ততোটুক সংস্কার করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

একই অনুষ্ঠানে সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেন, সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করে নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার। নির্বাচন অক্টোবরে হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। বলেন, পিআর পদ্ধতি ভালো হলেও এখন তা সময়োপযোগী নয়।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মোবারক হোসেনকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করা হয়েছে।

আজ বুধবার (৩০ জুলাই) খালাস চেয়ে মোবারক হোসেনের করা আপিল মঞ্জুর করে এ রায় দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ।

মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর মোবারক হোসেনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে সর্বোচ্চ সাজা কার্যকরের আদেশ দেয়া হয়।

সেই রায়ে বলা হয়, একাত্তরে মোবারক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজাকার বাহিনীর অন্যতম সদস্য ছিলেন। তার বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দুটি প্রমাণিত হয়। এর একটিতে মৃত্যুদণ্ড এবং অপরটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

পরে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে মোবারক হোসেন আপিল করেন। তিনি ২০১২ সাল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। পরে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠান, সরকারি মঞ্জুরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণে ‘জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫’ গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে সভাপতি করে রোববার (২৭ জুলাই) এ প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়।

কমিশনে তিনজন পূর্ণকালীন সদস্য এবং ১৯ জন খণ্ডকালীন সদস্য রাখা হয়েছে। কমিশনের প্রথম সভা থেকে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেবে এই কমিশন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়– সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ধারা ১৫-এ দেয়া ক্ষমতাবলে জাতীয় বেতনস্কেলের আওতাভুক্ত প্রজাতন্ত্রের সব শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ‘জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫’ গঠন করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে সভাপতি করে সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক হিসাব মহানিয়ন্ত্রক মো. মোসলেম উদ্দীন এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. ফজলুল করিমকে কমিশনের পূর্ণকালীন সদস্য করা হয়েছে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় বেতন কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করেছে বিএনপি। সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দিনের শুরুতে চারটি সংস্থার নিয়োগ ইস্যুতে আলোচনা শুরু হয়। সেই আলোচনা থেকে ওয়াকআউট করে বিএনপি।

রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার ২০তম দিনের মতো আলোচনা শুরু হয় সকালে। আলোচনার বিষয়বস্তু সরকারি কর্মকমিশন, দুদক, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন‍্যায়পাল নিয়োগের বিধান। আলোচনায় অংশ নেয়নি বিএনপি। তবে পরের আলোচনায় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে অংশ নিবে দলটির প্রতিনিধিরা।

আলোচনার শুরুতে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, আজকের মধ্যে জুলাই সনদের খসড়া পাঠিয়ে দেওয়া হবে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে। এখনো সনদ চূড়ান্ত হয়নি। যেখানে সনদের প্রেক্ষাপট ও পটভূমি থাকবে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য ঠিক করার মতো অনেক মৌলিক বিষয়ে আলোচনা হলেও সমাধান হয়নি।

এর আগে, ২৩ জুলাই রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ থেকে প্রতীকী ওয়াকআউট করে সিপিবিসহ তিন দল। ওইদিন অধিবেশন শুরুর সঙ্গে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ। প্রসিকিউশন বলছে, তারা সব আসামির বিচার শুরুর আবেদন জানাবেন।

মামলায় গ্রেফতার চার আসামি বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরীসহ মোট ৬ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে৷

এর আগে গত ৩০ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। ওইদিন ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল-২।

গত ২২ জুলাই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়-বেরোবির সাবেক ভিসি, রংপুরের সাবেক পুলিশ কমিশনারসহ ২৪ জনকে পলাতক ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২৷ এদিকে আশুলিয়ায় ৬ লাশ পোড়ানোর মামলায় ৮জন ও লক্ষ্মীপুরের একটি মামলায় ৩ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।

ভোটের আনুপাতে হতে হবে সংসদরের উচ্চ কক্ষ, আসন অনুযায়ী নয়। এ বিষয়ে ঐকমত্যে না আসলে জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

অভ্যুত্থানের শহীদ ১১ জনের পরিবারের সাথে সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে জামালপুরের ডাক বাংলোতে সাক্ষাৎ করেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। খোঁজ-খবর নেন স্বজনদের। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কথা বলেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

এসময় নাহিদ বলেন, মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা থাকতে হবে জুলাই সনদে। উচ্চ কক্ষ ভোটের আনুপাতিক হারে হতে হবে, আসন অনুসারে হওয়া যাবে না। এ বিষয়ে ঐকমত্য না হলে জুলাই সনদ সাক্ষর হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নাহিদ। এ বিষয়ে ঐকমত্য আসার পরই জুলাই সনদে সাক্ষরের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

শহরের তমালতলা এলাকা থেকে বের হবে পদযাত্রা। বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শেষ হবে ফৌজদারি এলাকায়। পরে সেখানে পথসভায় অংশ নেবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এরপর রওনা হবেন ময়মনসিংহের উদ্দেশে। এনসিপি’র জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে জামালপুরে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

বিএনপি কোনো দেশের ওপর নির্ভরশীল নয়, এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন- যারা যত চেষ্টাই করুক, চাপে ফেলে বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলা যাবে না।

সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে শাহবাগে জুলাই গণঅভ্যুত্থান শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে যুবদলের ঢাকা শহরের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় গ্রাফিতি অংকন এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে শুধু যুবদলেরই ৭৯ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এই আন্দোলন গুটিকয়েক ব্যক্তির নয়; ছিল সব বয়সী মানুষের। বিএনপি সংস্কারে সহযোগিতা করছে জানিয়ে শেখ হাসিনার বিচারের কাজ নিয়ে সরকরের ভূমিকার সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। চাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পাঁচ নেতার গ্রেফতারের ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল। বলেন- ডিবি অফিসের শত নিপীড়নের পরও বিএনপির কোন নেতাকর্মী আত্মসমর্পণ করেনি, কারো কাছে সেসময় মুচলেকাও দেয়নি।

রাজধানীর উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় চিকিৎসা দিতে আসা বিদেশি চিকিৎসকদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (২৭ জুলাই) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সিঙ্গাপুর, চীন ও ভারতের ২১ জন চিকিৎসক ও নার্সের একটি প্রতিনিধিদল। সাক্ষাতকালে তিনি তাদের প্রতি এই কৃতজ্ঞতা জানান।

প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় সংকটের সময়ে তাদের উৎসর্গ ও সংহতির প্রশংসা করেন এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।

ড. ইউনূস বলেন, এই দলগুলো শুধু তাদের দক্ষতা নিয়েই আসেনি, এনেছে তাদের হৃদয়ও। তাদের উপস্থিতি আমাদের অভিন্ন মানবিকতা ও বিপর্যয়ের সময়ে বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের মূল্যকে আবারও নিশ্চিত করেছে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আহতদের জটিল চিকিৎসা ও ট্রমা কেয়ার নিশ্চিত করতে মেডিক্যাল টিম স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের পাশাপাশি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা দ্রুত কূটনৈতিক সমন্বয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানান, যার ফলে দলগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে ও সময়মতো বাংলাদেশে পৌঁছে তাদের কাজ শুরু করতে পেরেছে।

তিনি সফররত চিকিৎসকদের তাদের লক্ষ্য সহজতর করতে সরকারের পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দেন।

প্রধান উপদেষ্টা স্বাস্থ্যসেবা খাতে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা, চিকিৎসা শিক্ষার আদান-প্রদান এবং দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্ভাবনে অংশীদারিত্ব বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী এমনকি ভার্চুয়ালি সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি জোর দেন, এই জাতীয় অংশীদারত্ব জনস্বাস্থ্য ও জরুরি প্রস্তুতির ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী সহযোগিতার ভিত্তি স্থাপন করতে পারে।

বৈঠকে সিঙ্গাপুরের ১০ জন, চীনের ৮ জন এবং ভারতের ৪ জন চিকিৎসক ও নার্স উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও, ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন ও সিঙ্গাপুরের মিশন প্রধানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘটনা হলো ২৪-এর জুলাই গণঅভ্যুত্থান।

রোববার (২৭ জুলাই) এনসিপির জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে নেত্রকোনায় এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার দেশের মানুষের অধিকার হরণ করেছিল। সেই সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে এসে অভ্যুত্থান করে তাদের পতন নিশ্চিত করে।

তিনি বলেন, একটি নতুন সংবিধান ও সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছি আমরা। সংবিধানের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, মুজিববাদ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কাজ করাসহ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় কাজ করবে এনসিপি। একটি জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র বিনির্মাণে মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের অধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।

নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে নাহিদ বলেন, তরুণদের জন্য এনসিপি গঠিত হয়েছে। তরুণদের সাথে নিয়েই একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবো আমরা। বয়োজ্যেষ্ঠদের অভিভাবকের ভূমিকায় আবির্ভূত হয়ে এনসিপিকে সাহায্য ও পরামর্শ দেয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারগুলোর স্থায়ী বসবাসের জন্য ফ্ল্যাট প্রকল্প গ্রহণ করেনি একনেক সভা। খরচের হিসাব মূল্যায়ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ তথ্য জানান, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। বলেন, প্রকল্প এগিয়ে নেবে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়। প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ৮ হাজার ১৪৯ কোটি টাকার ১২টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২৭ জুলাই) সকালে এনইসি মিলনায়তনে চলতি অর্থবছরের প্রথম একনেক সভায় নানা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সভায় জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবারের স্থায়ী বাসস্থানের জন্য, ‘৩৬ জুলাই আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রকল্প’ উত্থাপন করে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পটিকে সাধুবাদ জানালেও অনুমোদন দেয়নি একনেক সভা। প্রশ্ন ওঠে, শুধু ঢাকায় কেন আবাসন প্রকল্প হবে? দেশজুড়ে জুলাই যোদ্ধারা ছিলেন। অনেক পরিবার ঢাকায় থাকতে চায় না।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, ব্যয়ের প্রাক্কলন আরও যথাযথ হওয়া উচিত। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে প্রকল্পটিকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে।

পরে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি ২ হাজার কোটি টাকার স্যানিটেশন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন। বলেন, আপাতত আমাদের স্যানিটেশন সিস্টেম প্রতিবেশি ভারতসহ আরও কয়েকটি দেশের চেয়ে ভালো।

গাজীপুর থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত র‍্যাপিড বাস ট্রানজিট কার্যক্রমকে বড় ধরণের অপরিকল্পিত প্রকল্প হিসেবে অভিহিত করা হয় একনেক সভায়। ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, বিপুল ব্যয়ের এই অহেতুক প্রকল্পের নকশা ও পরিকল্পনার সাথে কারা জড়িত ছিল, তা অনুসন্ধান করা হবে।

সভায়, ২ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা ব্যায়ে ‘ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন’ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এর আওতায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য বহুতল হল ও আবাসন ভবনের পাশাপাশি একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হবে।

সরকার পরিবর্তনের পর বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের ঠিকাদারদের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে একনেক। এসব প্রকল্পের সাথে জড়িত প্রকল্প পরিচালক এবং সরকারি কর্মকর্তাদের বিষয়েও তদন্ত করা হবে।