বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলায় বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীর ছেলে কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। 

শনিবার (৩০ আগস্ট) শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাহ পিয়াসের আদালত এই আদেশ দেন।

এর আগে, গত ২৫ আগস্ট বিকালে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হকের আদালত তৌহিদ আফ্রিদির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়, তৌহিদ আফ্রিদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং মাই টিভির পরিচালক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে জুলাই আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষ নিয়ে লাইভে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন এবং সেলিব্রেটি ও অন্য কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের দিয়ে আন্দোলন বন্ধের জন্য প্ররোচিত করেছে। এক্ষেত্রে যারা দ্বিমত পোষণ করে তাদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়েছেন তিনি।

এতে আরও বলা হয়, আসামির উসকানিমূলক কার্যক্রমে অনুপ্রাণিত হয়ে স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসী, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বিচারে গুলিবর্ষণে মামলার ভিকটিম আসাদুল হক বাবু (২৪) মৃত্যুবরণ করে বলে তদন্তে প্রকাশ পায়। মামলার প্রকৃত ঘটনা, অজ্ঞাতনামা আসামিদের পরিচয় শনাক্তকরণ ও রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে আসামিকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জন্য সাতদিনের রিমান্ড প্রয়োজন।

আদালতে রিমান্ড শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শামসুদ্দোহা সুমন তৌহিদ আফ্রিদির বিরুদ্ধে হত্যায় সহায়তার অভিযোগ আনেন। এসময় তৌহিদ আফ্রিদি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নাকচ করেন।

প্রসঙ্গত, একই মামলায় ২২ নম্বর আসামি তৌহিদ আফ্রিদির বাবা মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীকে গত ১৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর পুলিশ গ্রেফতার করে। তিনিও বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

সবজির বাজারে উত্তাপ যেন কমছেই না। যোগান সংকটের অজুহাতে দামও বেড়েছে কয়েকগুণ। প্রায় ২ মাসের বেশি সময় ধরে বাজারে বাড়তি দাম যাচ্ছে সব ধরনের সবজির। চড়া দামের কারণে কমেছে বিক্রিও। সেই সঙ্গে এবার ক্রেতার ওপর চাপ বাড়াচ্ছে ডাল। ডিমের দাম কিছুটা কমলেও অপরিবর্তিত ব্রয়লার মুরগির দর।

শুক্রবার (২৯ আগস্ট) ছুটির দিনে রাজধানীর বেশকিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

সরবরাহে খুব একটা ঘাটতি আছে—  তেমনটি চোখে পড়ে না। তবুও, বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে সবজির যোগান কম। আর এমন অজুহাতে চলছে লাগামছাড়া দাম বৃদ্ধি।

কখনও বৈরি আবহাওয়া, আবার কখনও মৌসুম শেষ, এমন বাহানা খুচরা বিক্রেতাদের। গোল বেগুনের দাম ১৬০ টাকা কেজি। এক কেজি লম্বা বেগুন, করলা কিনতেও বেরিয়ে যাবে একশো টাকা। কিছুটা কমলেও, আড়াশো গ্রাম কাঁচামরিচের জন্য গুনতে হবে ৬০ টাকা। কাঁচা পেঁপে আর আলু ছাড়া ৮০ টাকার কমে মিলছে না বেশিরভাগ সবজি। বাজারে এমন অস্থিরতার জন্য নজরদারির দুর্বলতাকে দুষছেন ক্রেতারা।

কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে চড়া মূল্যে স্থির হয়ে আছে পেঁয়াজের বাজার; কিনতে হবে ৮০ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা দাম বেড়েছে আদা-রসুনেরও। নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়ে ডালের বাজারে। ২০ টাকা বেড়েছে এক কেজি দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি কমায় বাজারে দাম বাড়ছে ডালের। ছোট দানার মসুর ডালের দাম বেড়েছে বেশি। মোটা দানার ডালের দামও বেড়েছে। ফলে আমাদেরও দাম বাড়াতে হচ্ছে।

বাজারে খোলা আটা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় কেজিতে, যা আগে ছিল ৪০-৪২ টাকা। প্যাকেটজাত আটার দামও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১০ টাকায়। আর খোলা ময়দা এখন ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আগে যা ছিল ৫০ টাকা। প্যাকেটজাত ময়দা ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ১৩০ টাকা।

প্রতি আঁটি পুঁইশাক ৫০-৬০ টাকা, ডাটাশাক ২০-৩০, কলমি শাক ২০ টাকা পর্যন্ত, লাল শাক ২৫-৩০, লাউশাক ৪০-৬০, পাটশাক ২০-২৫ এবং কচুশাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পুরোপুরি স্বস্তি না এলেও, কিছুটা উত্তাপ কমেছে ডিমের বাজারে। গত সপ্তাহের তুলনায় লাল ডিমে ডজন প্রতি দাম কমেছে ১০ টাকা, মিলছে ১৪০ টাকায়।

এদিকে, ভরা মৌসুমে বাজারে ইলিশের দেখা নেই বললেই চলে। চাহিদা মেটাতে সবাই ঝুঁকছেন চাষের জাতে। আর তাতেই বিপত্তি। বেড়ে গেছে সব ধরনের মাছের দাম। রুই-পাঙ্গাস-তেলাপিয়ার মতো চাষের মাছও কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৫০-১০০ টাকা।

অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগির বাজার। এক কেজি ব্রয়লারের জন্য গুণতে হবে ১৭০ টাকা। আর সোনালি মিলছে ৩২০ টাকা কেজিতে।

উদারপন্থী রাজনীতিকে সরিয়ে উগ্রপন্থী রাজনীতি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্র চলছে, যা বাংলাদেশের জন্য চরম ক্ষতিকর হবে— এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (২৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন না হলে ফ্যাসিবাদের উত্থান হবে। দেশে-বিদেশেও যা নিয়ে তৎপরতা চলছে।

তিনি বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে জনমনে শঙ্কা আছে। সংস্কার নিয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দল বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছর ধরে খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা অত্যাচারের শিকার হয়েছে। এই ত্যাগকে ধারণ করতে হবে। ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই না বাংলাদেশকে। গনতন্ত্রকে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, যেখানে মুষ্টিমেয় গোষ্ঠী নয়, সার্বিক জনগণের কল্যাণ হবে৷

এসময় সব চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র মোকাবেলার পাশাপাশি, ভালো কাজ দিয়ে ক্ষমতায় যেতে হবে বলে নেতাকর্মীদের সতর্ক করেন বিএনপি মহাসচিব।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পেশাদারিত্ব এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। শুক্রবার (২৯ আগস্ট) নির্বাচন উপলক্ষ্যে দুই দিনব্যাপী কোর প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন শেষে এ কথা বলেন তিনি।

সিইসি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিই বড় চ্যালেঞ্জ প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এ সময় নির্বাচন কমিশনারদের নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার ওপর গুরুত্বারোপ করার আহ্বান জানান তিনি।

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচন হবে। এটা কমিশনের চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন কমিশন এবং ভোটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, প্রত্যাশার তুলনায় ভোটার সংখ্যা বেশি হতে পারে। প্রবাসীরা উচ্ছ্বাস নিয়ে ভোট দিতে অপেক্ষা করছেন।

ক্রমেই বাড়ছে ভেনেজুয়েলা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা। লাতিন ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌবহর পাঠানোর জবাবে ব্যাপক সামরিক মহড়া আয়োজন করেছে ভেনেজুয়েলা। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর অভিযোগ তাদের সম্পদে নজর যুক্তরাষ্ট্রের; আর তাই সামরিক উত্তেজনা তৈরি করে উপনিবেশ স্থাপন করতে চায় তারা। এদিকে, সার্বভৌমত্ত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে চিঠি দিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকান দেশটি।

মূলত দেশের উপকূলে মার্কিন নৌ বহর দৃশ্যমান হওয়ার পরই সামরিক শক্তি প্রদর্শনে মহড়া দেয় ভেনেজুয়েলা। প্রেসিডেন্ট মাদুরোর সরাসরি তত্ত্বাবধানে এতে অংশ নেন স্পেশাল রেভ্যুলুশনারি অপারেশনস বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য।

দেশটির পাহাড়ি অঞ্চলে বিশেষ পোশাকে বিভিন্ন সামরিক দক্ষতা দেখান সেনারা। ছিল চোখ জুড়ানো প্যারেড। অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে লাইভ ফায়ারিংয়েও অংশ নেন স্পেশাল বাহিনীটি। এসময় ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেন, দেশটির সম্পদ লুটের জন্য উসকানি তৈরির চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তার দাবি, সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রস্তুত ভেনেজুয়েলার মানুষ।

নিকোলাস মাদুরো বলেন, সাম্রাজ্যবাদী গ্রিংগোরা কী চায়? ভেনেজুয়েলার সম্পদ, উপনিবেশ স্থাপন করা এবং ভেনেজুয়েলাকে টুকরো টুকরো করতে চায় তারা। একটানা হুমকি, মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ, ভেনেজুয়েলা জাতির বিরুদ্ধে অবরোধের পরও আমি বলতে পারি, আমরা আগের চেয়েও শক্তিশালী। শান্তি, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য আরও বেশি প্রস্তুত।

চলতি সপ্তাহে আরও একটি সামরিক মহড়া হবে বলে জানিয়েছে মাদুরো প্রশাসন। লাতিন ও ক্যারিবীয় উপকূলে নৌবহর পাঠানোর ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে কারাকাস। এরই মধ্যে, জাতিসংঘের কাছে পাঠিয়েছে অভিযোগপত্রও।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ভেনেজুয়েলার প্রতিনিধি স্যামুয়েল মোনকাদা বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে, যেখানে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের ক্রমাগত হয়রানিমূলক নীতি এবং সাম্প্রতিক বিপজ্জনক কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়েছে। তাদের এই সামরিক তৎপরতা জাতিসংঘ সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

এর আগে, মাদক বিস্তার রোধে ভেনেজুয়েলা উপকূলে তিনটি ডেস্ট্রয়ার, পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন অ্যাটাক সাবমেরিনসহ সাড়ে চার হাজার নৌসেনা পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে, সারাদেশে মিলিশিয়া মোতায়েনসহ, জলসীমায় যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে ভেনেজুয়েলাও।

প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রশাসন ভেনেজুয়েলার বর্তমান শাসক নিকোলাস মাদুরোকে ‘বৈধ প্রেসিডেন্ট’ মনে করে না। তার সঙ্গে লাতিনের বিভিন্ন মাদকচক্র ও অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর যোগসাজশ আছে বলেও অভিযোগ ওয়াশিংটনের।

নিরপেক্ষতার সঙ্গে বিএসসি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন জ্বালানি ও খনিজ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

সেখানে বলেন, সরকার দাবিগুলো গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। এখন তো আন্দোলন করে লাভ নেই। আমাদের সময় দিতে হবে। একদিকে ৩ দফা, আরেকদিকে ৭ দফা আছে। এর মাঝে ব্রিজ হিসেবে কাজ করবে কমিটি। কেননা এক গ্রুপের দাবি মানলে আরেক গ্রুপ খেপবে।

তিনি বলেন, সমস্যার সমাধানে ১৪ সদস্যের ওয়াকিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রকৌশল সংক্রান্ত সরকারি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা থাকবেন। এই গ্রুপের কাছে দাবি তুলে ধরতে পারবে আন্দোলনকারীরা।

উপদেষ্টা বলেন, কমিটি আন্দোলনকারী, বিএসসি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের অভিভাবকদের সাথে বৈঠক করা হবে। প্রকৌশল সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়গুলোর সাথে বৈঠক করা হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২৪ ধাপে ভোটের কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে কমিশন।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এ রোডম্যাপ ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, তিনটি ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। আগামী নভেম্বরে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রতি বুথে ৬০০ পুরুষ ও ৫০০ মহিলা ভোটার রাখার চিন্তা করছি।

নির্বাচনের তফসিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কাজ তফসিল ঘোষণার ১৫ দিন আগে শেষ করার চেষ্টা থাকবে। কর্মপরিকল্পনায় বিভিন্ন সংযোজন হবে। ভোটের ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে।

ইসির সিনিয়র সচিব আরও বলেন, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে শুনানির পর তথ্য পর্যালোচনা চলছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সীমানা চূড়ান্ত করতে পারব বলে আশা করছি। আর ৩০ সেপ্টেম্বর জিআইএস বা ভৌগলিক ম্যাপ প্রকাশ করা হবে।

ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা এবং বডি ক্যামেরার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার। এটা আমাদের চাহিদা না। এআই ও অপতথ্য একটা চ্যালেঞ্জ। কমিশন এটি নিয়ে কাজ করছে। এ সময় নিশ্চিন্তে ভোট দিতে পারার পরিবেশ সৃষ্টি করা চ্যালেঞ্জ বলেও জানান তিনি।

ব্যাংকের পাশাপাশি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও চরম লুটপাট হয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। ঋণের নামে লোপাট হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। যা এখন খেলাপি। এসব প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে বেকায়দায় পড়েছেন গ্রাহকেরা। জমানো টাকা ফেরত দিতে পারছে না এসব প্রতিষ্ঠান।

এই অবস্থায় চরম সংকটে থাকা ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, এফএএস ফাইন্যান্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, বিআইএসফি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, পিপলস্‌ লিজিং, আভিভা ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স, প্রিমিয়ার লিজিং ও জিএসপি ফাইন্যান্স।

তালিকায় থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ৬০ থেকে ৯৯ শতাংশ। বছরের পর বছর এসব প্রতিষ্ঠানকে গুণতে হচ্ছে লোকসান।

যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিষ্ঠান বন্ধ কোনও সমাধান নয়। এর ফলে নতুন করে জটিলতা তৈরি হতে পারে।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমদ বলেছেন, অবসানের বিকল্প…. আমি তো অবসান পছন্দই করি না। একীভূতকরণ, এতে আমি শতভাগ সমর্থন করি। অবসান কোনও সমাধান না। এটা আমেরিকায় আছে, ব্যাংক বন্ধ হয়ে যায়। ইউরোপে থাকতে পারে, ব্যাংক বন্ধ। কিন্তু এসব দেশে এটা চলবে না। এটা করলে লোক রাস্তায় নেমে যাবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মালিক পক্ষের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণেই সংকটে পড়েছে এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান। তাই প্রতিষ্ঠান বন্ধের আগে পরিচালনায় সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সাথে আমানতকারী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কী হবে সে বিষয়টি পরিস্কার করতে হবে।

সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ বলেছেন, যারা মালিকপক্ষ, যারা এটার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা করলো? দেখলাম না তো তাদের সম্পদগুলো টেকওভার করে তা বন্টন করে দিলো। অবসানের কথা বললে বলতে হবে হবে দুইটা জিনিস, একটা হলো আমানতকারীরা কতদিনের টাকা পাবে, উৎস পেমেন্ট করবো নাকি প্রিন্সিপালটা দিবো, প্রশ্ন কিন্তু এগুলো আসবে। দ্বিতীয় হলো যারা কর্মী আছে তাদের কী অবস্থায় আনা হবে?

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, যেসব প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়, তাদেরকেই বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখনও বন্ধের পদ্ধতি চূড়ান্ত হয়নি। তবে আমানতকারীদের স্বার্থের বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনায় নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বললেন, সিদ্ধান্ত হয়েছে যে থাকবে না। এদেরকে টিকিয়ে রাখার কোনও পন্থা এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে নাই। যেটা ব্যাংকের ক্ষেত্রে আছে। অতএব না থাকলে কোন কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে অবসান করা হবে এবং আমানতকারী ও চাকরিজীবীদের কী হবে ওই ব্যাপারে তো এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ওটা প্রসেসের মধ্যেই অন্তর্ভূক্ত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক কিন্তু বলেছে, আমানতকারীদের স্বার্থেই প্রতিষ্ঠানগুলো অবলুপ্ত করা প্রয়োজন।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়টি সরকারের ইচ্ছা এবং তহবিল যোগান দেয়ার ওপর নির্ভর করছে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাইদ হত্যা মামলার বিচার শুরু হচ্ছে আজ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ এই মামলার সূচনা বক্তব্য অনুষ্ঠিত হবে। সেইসাথে, সাক্ষ্যগ্রহণও হতে পারে আজ থেকেই। এর আগে, গত ৬ আগস্ট বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল ২।

বুধবার (২৭ আগস্ট) সকালে এই মামলায় গ্রেফতার ৬ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। আর বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ জন এখনও পলাতক রয়েছেন। তাদের পক্ষে ইতোমধ্যে সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

এর আগে, গত ২৮ জুলাই এ মামলার ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। ওই দিন আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি এ মামলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগসহ বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয়া হয় ৩০ জুন। আর ২৪ জুন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা।

ডাকসু নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জালাল আহমেদের বিরুদ্ধে উঠলো গুরুতর অভিযোগ। ঢাবির মুহসিন হলে নিজ রুমমেটকে ছুরিকাঘাতের করেছেন তিনি। বর্তমানে, ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে আহত রুমমেট রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র রবিউল ইসলাম।

মঙ্গলবার মধ্যরাতে তুচ্ছ ঘটনায় বাকবিতণ্ডা শুরু, যা গড়ায় মারামারি পর্যন্ত। হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ৪৬২ নম্বর কক্ষ থেকে আহত অবস্থায় বেরিয়ে এলে, অন্যরা তাকে নেয় মেডিকেলে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রবিউলের রুমমেট, ডাকসু ভিপি প্রার্থী জালাল আহমেদ ওরফে ‘জ্বালাময়ী জালাল’ তাকে কুপিয়ে জখম করেছে।

ঘটনার পর রুম ভেতর থেকে আটকে ফেলে জালাল। পরে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টোরিয়াল টিম ও হল প্রশাসনের সহায়তায় তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পাল্টা আঘাতের অভিযোগ তারও।

এ ঘটনায় পুরো হলে মধ্যরাতে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত জালাল আহমেদের স্থায়ী বহিষ্কার এবং হল প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবি তোলে।

প্রক্টরের আশ্বাস, এ ঘটনায় হল প্রশাসন বাদী হয়ে মামলা করবে। একইসাথে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জালালকে বহিষ্কারের কথাও বিবেচনায় রাখা হবে।

ঢাবি প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, হলের প্রভোস্ট, দুইজন হাউস টিউটর এবং কর্মকর্তারা অভিযুক্তকে থানায় নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় মামলা হবে। মামলার পরবর্তী যে প্রক্রিয়া, সেটি প্রচলিত আইন অনুযায়ী চলবে।

প্রক্টরের আশ্বাসের পরও উত্তেজনা কাটেনি মুহসীন হলে। পরিস্থিতি শান্ত করতে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। বিদ্রোহী কবি হিসেবে খ্যাত নজরুল ছিলেন বাংলা সাহিত্যের অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীক। মৃত্যুর এতো বছর পরেও শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিবাদী কন্ঠস্বর হয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্মে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন কবি নজরুল।

তিনি শুধু কবি নন, ছিলেন সংগীতজ্ঞ, নাট্যকার-দার্শনিক। অসাম্প্রদায়িক বাণী, শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে তার লেখা আজও অনুপ্রেরণার উৎস।

দীর্ঘ রোগভোগের পর ঢাকায় ১৯৭৬ সালের এই দিনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নজরুল। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে সমাহিত করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে।

নজরুল সবসময়ই শোষিতের পক্ষে, যুগে যুগে নতুন প্রজন্মের মাঝে জ্বালিয়ে রেখেছেন বিদ্রোহের স্ফুলিঙ্গ।

কবি নজরুল ইনিস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলী বলেন, রণাঙ্গনে কবির গান শুনে মুক্তিযোদ্ধারা এতোটাই অনুপ্রাণিত হতেন যে রেডিওতে যখন গান বাজতো, সেই মুহূর্তে রেডিওর সামনে দাঁড়িয়ে স্যালুট করতেন। এরপর ২৪’এর গণঅভ্যুত্থানে নজরুল যেন নতুন রূপে ফিরে এলেন।

যদিও জাতীয় কবির সরকারি গেজেট প্রকাশে লেগে গেল ৫৪টি বছর, তবুও নজরুলকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে কবি নজরুল ইনিস্টিটিউট। খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে নজরুলের হারিয়ে যাওয়া গানের খাতা।

কবি নজরুল ইনিস্টিটিউট নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলী বলেন, কুইটিসেন্স অব নজরুল- কবির পুরো সাহিত্য সমগ্র থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে একটি বই তৈরি করা হয়েছে। বইটি এক হাজার পৃষ্ঠার বেশি। বইটি বের হলে বিশ্বের অন্যান্য ভাষায় নজরুলকে অনুবাদ করা যাবে বলে আশা করছি।

নজরুল তার সৃষ্টিতেই উজ্জ্বল মহাতারকা, তবুও তাকে চর্চায় ও লালনে উৎসাহিত করতে সরকারি উদ্যোগের বিকল্প নেই।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজনসহ আরও কয়েকটি আবেদনের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে দ্বিতীয় দিনের রিভিউ শুনানি চলছে আজ।

এর আগে, গত ২১ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় রিভিউ চেয়ে করা আবেদন শুনানির জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেন আপিল বিভাগ।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। ওই রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের অক্টোবরে আবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়াও আবেদন করে জামায়াতে ইসলাম, সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি।

শুনানিতে আইনজীবীরা জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের আপিল শুনানিতে যে ৭ জন বিচারপতি ছিলেন, তাদের মধ্যে ৪ জন বাতিলের পক্ষে ছিলেন।পরে, তাদের পর্যায়ক্রমে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু, বাকি তিনজন বাতিলের পক্ষে ছিলেন না বলে তাদের প্রধান বিচারপতি হওয়ার সৌভাগ্য হয়নি।