২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ঘটনায় রুজুকৃত মামলার মধ্যে ১২টি মামলায় চার্জশিট দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি হত্যা এবং অন্যান্য ধারায় মামলা ৯টি।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এক বার্তায় এ তথ্য জানায় পুলিশ সদর দফতর।

বার্তায় জানানো হয়, চার্জশিট হওয়া তিনটি হত্যা মামলার সবগুলোই শেরপুর জেলার। অন্যান্য ধারার ৯টি মামলার মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ১টি, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ১টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ৩টি, সিরাজগঞ্জ জেলার ২টি এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের তদন্তাধীন ২টি মামলা রয়েছে।

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানকালে দায়েরকৃত মামলার যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত করার জন্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা মামলা তদারকি করছেন। রুজুকৃত সব মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে বলেও জানানো হয়। 

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম কারণ ছিল কর্মসংস্থানের অভাব। এখনও সেই সমস্যার বড় সমাধান হয়নি। রাতারাতি পরিস্থিতি বদলে ফেলা কঠিন, এমন মন্তব্য করেছেন শ্রম, কর্মসংস্থান ও যুব উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকালে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও ইউএনডিপির কর্মশালায় যোগ দেন তিনি।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, বেকারত্ব দূর করাই আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বেকারত্ব দূর করতে কাজ করছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ আরও বাড়বে।

এতে জানানো হয়, স্টার্টআপের জন্য ১০০ কোটি টাকার নতুন তহবিল গঠনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে আলোচনা হয়েছে। এর বাইরে বেসরকারি বিভিন্ন উৎস থেকে আসতে পারে আরও ৩ কোটি ডলার। এটি ব্যবহার করা গেলে ব্যবসার অনেক ভালো আইডিয়া সামনে আসবে বলেও মনে করে বিডা।

বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানান, এফডিআই টানতে বরাবরই বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগকে প্রাধান্য দিয়েছে বাংলাদেশ। ফলে ছোট উদ্যোক্তারা সামনে আসতে পারেনি। সে পরিস্থিতি বদলাতে সরকারের সব দফতরের মাঝে সমন্বয় আনার চেষ্টা চলছে।

গোপালগঞ্জে নেতাদের গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। একসাথে জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে দলটি। বুধবার (১৬ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টায় খুলন প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্ম সূচির ঘোষণা দেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। নাহিদ ইসলাম বলেন, হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গি কায়দায় এনসিপির ওপর হামলা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ বহুদিন পরিকল্পনা করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। গোপালগঞ্জ ফ্যাসিস্টদের একটি আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এ ঘটনায় সরকারকে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে জেলাটিতে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ সমাবেশ করতে পারবে না এমন মিথ ভেঙে দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার ফরিদপুরে পথসভা হবে। পূর্বনির্ধারিত সবগুলো জেলায় পথসভা চলবে। তবে মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে স্থগিত হওয়া পথসভার সময় পরে জানানো হবে। এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, অন্যান্য জেলার মতো গোপালগঞ্জেও আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স নিয়ে গিয়েছিলাম। তারা আরও আগে কঠোর হলে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারত। প্রশাসনের তৎপরতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তা তদন্ত করে দেখতে হবে। হতাহতদের প্রসঙ্গে নাহিস ইসলাম বলেন, গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় সমাবেশে শেষে ফেরার পথে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাদের গাড়িবহর অতর্কিত হামলার শিকার হয়েছে। জেলার চৌরঙ্গী মোড়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দুই পাশ থেকে এসে হামলা চালায়, ইট-পাটকেল ছুড়েছে।

ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী এসে হামলাকারীদের প্রতিরোধের চেষ্টা চালায়। পুলিশও হামলাকারীদের সরিয়ে দিতে ফাঁকা গুলি বর্ষণ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করছে। বাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তেও দেখা গেছে।

এদিকে, গোপালগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রেখেছে হামলাকারীরা। তাতে বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়েছেন এনসিপির নেতারা।

এর মধ্যে চৌরঙ্গী মোড় থেকে এনসিপির গাড়ি বহরের কয়েকটি যানবাহন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দিকে চলে গিয়েছে। সেসব গাড়িবহরে কারা রয়েছেন, তা জানা যায়নি। তারাও হামলার শিকার হতে পারেন বলে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইট থেকে নিবন্ধন স্থগিত হওয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’ প্রতীক সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আজ বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে ইসির ওয়েবসাইটে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ নামের পাশে প্রতীক হিসেবে ‘নৌকা’ নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিবালয়ের সিস্টেম ম্যানেজার মো. রফিকুল হক বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ‘নৌকা’ প্রতীকটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

ইসির ওয়েবসাইট

এর আগে, মঙ্গলবার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে ‘নৌকা’ প্রতীককে পুনরায় শিডিউলভুক্ত করা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

আরও পড়ুন: ‘নৌকা’ মার্কাটাকে কোন বিবেচনায় আবার শিডিউলভুক্ত করতে পাঠালেন: আসিফ

উল্লেখ্য, গতবছরের ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। পরবর্তীতে, গত ১২ মে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে। এরপর নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন স্থগিত করে।

এর আগে, গত রোববার (১৩ জুলাই) নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আব্দুর রহমানেল মাছউদ জানান, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ হলেও নির্বাচনী প্রতীকের তফসিলে নৌকা প্রতীক আপাতত থাকবে। কারণ, প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দলের জন্যই আমরা একটা প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে থাকি। এই প্রতীকগুলো ইসির সংরক্ষিত। এখন কোনো দলকে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলে প্রতীক বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানান তিনি।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা বলেছেন, মধুমতির কোল ঘেঁষা গোপালগঞ্জ সারা বাংলাদেশের। যেভাবে জেলাগুলোকে পূর্বে দলীয়করণ করা হয়েছে—বগুড়া, কুমিল্লা। যেভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে—সেই সংস্কৃতিতে আমরা আর ফিরতে চাই না।

আজ বুধবার ( ১৬ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।

তাসনিম জারা বলেন, অনেকে আমাদেরকে ‘৭১- বিরোধী’ বলে দেখাতে চান। কিন্তু ‘৭১ আমাদের, ‘২৪ আমাদের। ‘৪৭, ‘৭১, ‘২৪—এই জনপদের মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। বৈষম্য দূর না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।

তাসনিম জারার ফেসবুক পোস্ট

তিনি আরও বলেন, কোনো ব্যক্তি বা পরিবার আর বাংলাদেশকে কিনে নিতে পারবে না। কোনো একক ব্যক্তি বা পরিবারের স্বার্থে বাংলাদেশ বিক্রি হবে না। বাংলাদেশ হবে সবার। যারা দেশের সংস্কারে বাধা দেবেন, জনগণ তাদের মনে রাখবে।

দেশ গড়তে এনসিপির জুলাই কর্মসূচিতে কোনো জেলা বাদ দেয়া হবে না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমাদের পদযাত্রা গোপালগঞ্জকে বাদ দিয়ে নয়। এখানকার সন্তানেরা যাতে বৈষম্যের শিকার না হয়, সে জন্যই আমাদের লড়াই। গোপালগঞ্জকে সঙ্গে নিয়েই আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়বো। পথটা দীর্ঘ। চ্যালেঞ্জ অনেক। কিন্তু মানুষ যখন জাগে, ইতিহাস বদলায়।

আদালতের নির্দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রায় ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রায় ৫ হাজার শতাংশ জমি, গাজী টায়ারের কারখানা ও আরও বিভিন্ন বাণিজ্যিক স্থাপনা রয়েছে।

সিআইডি সূত্র জানায়, গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরুদ্ধে জমি দখল, কমিশন গ্রহণ, জাল-জালিয়াতি, প্রতারণা, হুন্ডি এবং আন্ডার ইনভয়েস, ওভার ইনভয়েসের ও সংঘবদ্ধ অপরাধের মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তার ক্রোক করা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে— রূপগঞ্জের খাদুন এলাকার ৬৯টি দলিলের সর্বমোট ৪৮৮০ শতাংশ জমি। এসবের দলিল মূল্য ১৬ কোটি ৫২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এ সব জমিতে তার গাজী টায়ার প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অবকাঠামো রয়েছে। এর মূল্য প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।

গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান গাজী ডোর, গাজী নেটওয়ার্ক, গাজী টায়ার, গাজী ট্যাংকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। এর আগে, গত ৮ জুলাই সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত এই সম্পত্তি জব্দের আদেশ দেন।

রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড) সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যায় সিমেন্টের ব্লক দিয়ে আঘাত করা যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার পটুয়াখালী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে ডিএমপি কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাত আলী।

আটক যুবকের নাম রেজওয়ান উদ্দিন অভি। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ৯ জন।

সোহাগ দীর্ঘদিন মিটফোর্ড এলাকায় চোরাই তারের ব্যবসা করতো জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার জানান, সোহাগকে হত্যার আগে হত্যাকারীরা মবের পরিবেশ তৈরি করেছিল দুর্বৃত্তরা। এই ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্বেই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় তাকে।

দেশের সরকারি ৩২ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠকে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান এবং কোন স্কুলগুলো ভালো করছে সে ব্যাপারে মূল্যায়ন জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান সম্পর্কে এবং কোন স্কুলগুলো ভালো করছে সে ব্যাপারে মূল্যায়ন জানতে চান।

উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য অনেক অর্থব্যয় হয়েছে। কিন্তু মূল যে উদ্দেশ্য শিক্ষার মান বৃদ্ধি, সেটা সাধন হয়নি। আমরা মূল্যায়ন করে স্কুলগুলোকে র‍্যাংকিং করছি। যেসব স্কুলের বাচ্চারা পিছিয়ে আছে তাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি নিচ্ছি।

তিনি জানান, মূল্যায়নে দেখা গেছে যেসব স্কুলের মান ভালো সেখানে প্রধান শিক্ষকের যোগ্যতা ও তার সঙ্গে অন্য সহকর্মীদের সম্পর্ক-ব্যবহার বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে। দেশের ৩২ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ বর্তমানে শূন্য রয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান বলেও প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন তিনি। 

বৈঠকে প্রধান শিক্ষক পদে পদায়নের পাশাপাশি নতুন নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘স্কুলগুলোতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কীভাবে যোগ্যদের নিয়ে আসা যায় সে বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে। কয়েকটা ক্যাটাগরি করে দিতে হবে। যারা বহু বছর ধরে শিক্ষকতা করে আসছেন, অভিজ্ঞ তারা প্রাধান্য পাবেন। এর পাশাপাশি তরুণদেরও প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য সুযোগ দিতে হবে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হবে।

সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সঙ্গে সমন্বয় করে অতিদ্রুত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্নের নির্দেশ দেন তিনি। এর পাশাপাশি শিক্ষকদের বদলির ক্ষেত্রেও নীতিমালায় পরিবর্তন আনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। 

তিনি বলেন, ‘অনেক সময় এক উপজেলায় নিয়োগ পেয়ে পরে অন্য উপজেলায়, শহরের কাছে কোনো স্কুলে শিক্ষকরা বদলির জন্য চেষ্টা করেন। তারা সুপারিশ-তদবির নিয়ে বিভিন্ন মহলে ঘোরেন। এক্ষেত্রে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা ও প্রক্রিয়া থাকতে হবে। কেবল ওই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই তিনি বদলি হতে পারবেন।’

স্কুলগুলোতে মেয়েদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, স্কুলের অবকাঠামো নারীবান্ধব কি না এসকল বিষয়েও জানতে চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘স্কুলের ভবন নির্মাণের সময় কমিটিতে অন্তত একজন নারী স্থপতি রাখতে হবে যাতে নারীবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণ হয়। পরিকল্পনায়, চিন্তায়, বাস্তবায়নে মেয়েদের বিষয় আলাদা করে গুরুত্ব দিতে হবে, সব ব্যবস্থা রাখতে হবে।’

এছাড়া দেশের সকল প্রাথমিক স্কুলকে ধারাবাহিকভাবে ইন্টারনেট সংযোগ ও মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ তৈরির বিষয়েও জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সব আসামি খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি ১৭ জুলাই। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

এর আগে গত ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে ১৯ মার্চ এ মামলায় সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। পরে, লিভ টু আপিল মঞ্জুর হলেও, হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেনি আপিল বিভাগ।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আওয়ামী লীগের ২৪ নেতা-কর্মী নিহত হন। আলোচিত ওই ঘটনার পর হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দু’টি মামলা হয়। ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত দু’টি মামলারই রায় দেন। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন ও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামি- সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজউদ্দীন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ও মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৯ আসামি- শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ ওরফের আবু ওমর, আবু হোমাইরা ওরফে পীরসাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমদ ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, আরিফ হাসান ওরফে সুজন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর ওরফে সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, মহিবুল মোত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন (পলাতক), আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন (পলাতক), মো. খলিল (পলাতক), জাহাঙ্গীর আলম বদর ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর (পলাতক), মো. ইকবাল (পলাতক), লিটন ওরফে মাওলানা লিটন (পলাতক), তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া (পলাতক), হারিছ চৌধুরী (পলাতক), কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (পলাতক), মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মুফতি আবদুল হাই (পলাতক) এবং রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে বাবু ওরফে রাতুল বাবু (পলাতক)।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা-বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতা-কর্মী। তাদের অনেকে আজও শরীরে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার নিয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন। অনেকে চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন।

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাঁচামরিচের আমদানি বাড়লেও দেশে দাম কমছে না। একদিনেই ১০ ট্রাক কাঁচামরিচ আমদানি হয়েছে।

ব্যাবসায়ীরা বলছেন, দেশের বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানির পরিমাণও বাড়ছে। হিলির পাইকারি বাজারে প্রতি কেজির দাম হাঁকা হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা। অনেক আমদানিকারক বন্দরে বিক্রি না করে বেশি দামের আশায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন ঢাকা, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

দীর্ঘ আট মাস পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচামরিচ আমদানি শুরু হয় গত ১০ জুলাই। প্রথম দিকে দুই-এক ট্রাক আমদানি হলেও গতকাল সোমবার একদিনেই এসেছে ১০ ট্রাক কাঁচামরিচ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েকদিনের তুলনায় কাঁচামরিচের চাহিদা অনেক বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হিলি বন্দরে আসা পাইকারি ক্রেতারা বলছেন, চলতি মৌসুমে বন্যা ও খরায় মরিচের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশে উৎপাদিত কাঁচামরিচের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দিন-দিন দামও বাড়ছে।

উল্লেখ্য, প্রতি কেজি আমদানিতে সরকারকে  শুল্ক দিতে হচ্ছে ৩৭ টাকা।

চুয়াডাঙ্গার বিতর্কিত সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিনের বিরুদ্ধে ওঠা নানান অভিযোগের তদন্ত করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তার ব্যক্তিগত ক্লিনিক ‘ডক্টরস কেয়ার অ্যান্ড স্পেশালাইজড’ হাসপাতালে সরেজমিন তদন্তের কথা জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির সভাপতি ডা. আব্দুল মান্নান।

যমুনা নিউজকে ডা. আব্দুল মান্নান জানিয়েছেন, ডা. হাদীর বিরুদ্ধে যত অভিযোগ তার সবকিছু নিয়েই তদন্ত চলছে। বৃহস্পতিবার থেকে চুয়াডাঙ্গায় তারা সরেজমিন তদন্ত শুরু করবেন। আজ মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) আলমডাঙ্গা উপজেলায় তার ব্যক্তিগত ক্লিনিকে গিয়েছেন তারা।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ডা. হাদীর দুর্নীতি নিয়ে ২ পর্বের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করে যমুনা টেলিভিশন। ২০২৪-এ তিনি আলমডাঙ্গা উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় অবৈধভাবে ওই হাসপাতাল চালু করেন। সরকারি হাসপাতালের রোগীদের তিনি পাঠাতেন নিজের ক্লিনিকে।

৫ আগস্টের পর ওই জেলারই সিভিল সার্জন করা হয় তাকে। সবশেষ স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগও তার বিরুদ্ধে। পরে ওই পরীক্ষার ফলাফল ৬ মাসের জন্য স্থগিতের আদেশ দেন হাইকোর্ট।