কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার নদী ভাঙন কবলিত এলাকা ফলুয়ার চর, সেনাপুর ও নামাজের চর পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকা বিডব্লিউডিবি ডিজাইন সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী
ফাইয়াজ জালাল উদ্দিন, ডিজাইন সার্কেলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন ও কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান। 

শুক্রবার দুপুরে এসব ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন তারা।

 
 

প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, রৌমারীর বিভিন্ন নদী ভাঙন কবলিত এলাকার জন্য কিছু বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল। ঢাকা থেকে ডিজাইন দল এই চাহিদাগুলো সঠিক আছে কি-না, তা ভেরিফাইড করতে এসেছে। তারা গিয়ে প্রতিবেদন দেবেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা হয়তো বাজেটের অনুমোদন পাব। তারপর দরপত্র আহ্বান করে খুব দ্রত কাজ শুরু করব।

 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দরপত্র প্রক্রিয়া করে সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে কাজ শুরু করতে পারি। এছাড়াও স্থানীয়দের বাঁশের বান্ডিল ও বস্তা ফেলার দাবি রয়েছে। এ বিষয়ে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব। 

 

পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন- রৌমারী নদী রক্ষা সংগঠক মহিউদ্দিন মহির ও ট্রোসা-২ প্রকল্পের প্রজেক্ট অফিসার খায়রন্নেসা সরকারসহ স্থানীয়রা।

মহিউদ্দিন মহির বলেন, সোনাপুর, ঘুঘুমারী ও সুখেরবাতি অঞ্চলে ভাঙন শুরু হয়েছে, বিশেষ করে সোনাপুর এলাকায় ভাঙনের যে তীব্রতা, এক সপ্তাহের মধ্যে এক কিলোমিটার ভেঙে ভেতরে ঢুকেছে। বাড়িঘর সব বিলীন হয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, চারতলা ভবন ও বাজার আছে, এগুলো যদি দ্রুত রক্ষা করতে না পারি, তাহলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্রে পানি বাড়া-কমার সঙ্গে সঙ্গে রৌমারী উপজেলায় দেখা দেয় তীব্র ভাঙন। এতে খেদাইমারী, সুখেরবাতি, ঘুঘুমারী, সোনাপুর ও নামাজের চর, উত্তর খাউরিয়া, ঘুঘুমারী, চর ইটালুকান্দা, চর খেদাইমারীর প্রায় ৫০০ মানুষের ভিটেমাটি, হাজার হাজার একর আবাদি জমি, পাঁচটির বেশি শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় বাজার, মসজিদসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। রাস্তার ধারে খোলা আকাশের নিচে কিংবা অন্যের ভিটায় ঠাঁই নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হয় ভাঙন কবলিত মানুষদের। নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় নদী তীরবর্তী বাড়ির বাসিন্দাদের। কখন যে ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যায় তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয় তাদের। ভিটেমাটি হারানো তাদের প্রতিবছরের দুঃখ গাঁথা। শুষ্ক মৌসুম ছাড়া সারা বছর কম-বেশি ভাঙতে থাকে নদী। 

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেন না পেয়ে সেমলি চাকমা নামে এক মাস বয়সী শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ করেছে তার পরিবার। শুক্রবার সকালের এ ঘটনায় চিকিৎসকরা বলেছেন, হাসপাতালে আনার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

শিশুটির বাবা উপজেলার সার্বোয়াতলী ইউনিয়নের রিটন চাকমার দাবি, তাঁর মেয়ে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে শুক্রবার সকালে বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। হাসপাতালে অক্সিজেন দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। যথাসময়ে চিকিৎসা না পেয়ে তাঁর মেয়ে মারা গেছে।

সন্ধ্যায় স্থানীয় সাংবাদিকরা সরেজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে অক্সিজেনের সিলিন্ডার দেখতে পান। তবে তাতে কোনো অক্সিজেন ছিল না। হাসপাতালের বিশ্বস্ত সূত্রের দাবি, ঈদুল ফিতরের আগ পর্যন্ত তারা অক্সিজেনের সরবরাহ পেয়েছেন। বর্তমানে সিলিন্ডারে কোনো অক্সিজেন নেই। যদিও রাঙামাটি সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা বলেছেন, যতটুকু জেনেছি, হাসপাতালে আনার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে অক্সিজেনের যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে। তার পরও বিষয়টি তদন্ত করা হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক দেবাশীষ বণিক বলেন, শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে শিশুটিকে হাসপাতালে আনা হয়। আমরা তার কোনো পালস পাইনি। এখানে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার পরও আমরা শিশুটিকে পাঁচ মিনিটের মতো সিপিআর দিয়েছি। অক্সিজেনের অভাবে মারা যাওয়ার তথ্য সঠিক নয়।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেনের কোনো সিলিন্ডার ছিল না বলে জেনেছি। জনবল সংকটও রয়েছে। ১৬ চিকিৎসকের জায়গায় মাত্র চারজন দিয়ে কার্যক্রম চলছে।

রাজধানীর বনানী থানার আদর্শনগর পুরা বস্তি এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সাব্বির রহমান (১৭) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। সে একটি চায়ের দোকানে কাজ করতো।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল)রাত আটটার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত সাব্বিরের দুলাভাই রিপন আহমেদ বলেন, সাব্বির একটি চায়ের দোকানে কাজ করতো। সন্ধ্যা সাতটার দিকে সে বন্ধুদের নিয়ে বনানীর আদর্শ নগর পুরাবস্তির সাত তলা সংক্রমণ ব্যাধি হাসপাতালের মাঠে ক্রিকেট খেলছিল। পরে হাসপাতালে জানালা স্পর্শ করলে সেখানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অচেতন হয়ে পড়ে সাব্বির। পরে খবর পেয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসক জানায় সাব্বির আর বেঁচে নেই।

তিনি আরও জানান, বনানীর আদর্শ নগর পুরা বস্তি এলাকায় ভাড়া থাকতো সাব্বির। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানার আশুড়ায় গ্রামে। তার বাবার নাম চট্টু মিয়া।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, ওই কিশোরের মরদেহ হাসপাতালে জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি বনানী থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসছে জুলাই অভ্যুত্থাসে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এনসিপির কেন্দ্রীয় দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক ও দলটির ‘সংস্কার বিষয়ক সমন্বয় কমিটির’ সদস্য আরমান হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তাতে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে দলটির প্রতিনিধি দল অংশ নেবে।

যমুনা নিউজকে আরমান হোসাইন বলেন, সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাবনার ক্ষেত্রে আমরা যেসব দ্বি-মত করেছি, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

কী কী বিষয়ে তারা দ্বি-মত করেছেন, সেই প্রশ্নের জবাবে বলেন, পুরোপুরি দ্বি-মত পোষণা করেছি, সেই সংখ্যা অনেক বেশি তা নয়, কিছু ক্ষেত্রে আবার আংশিক একমত হয়েছি। যেমন, চার বিভাগে প্রাদেশিক সরকার, ফরিদপুর ও কুমিল্লাকে বিভাগ করারে ক্ষেত্রে আমরা একমত নই। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে যে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে তাতে দ্বি-মত পোষণ করেছি।

তিনি আরও বলেন, সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী একই ব্যক্তি হতে পারবেন না— এই প্রস্তাবনায় আমরা দ্বিমত করেছি। কারণ বাংলাদেশের ক্ষমতার কনটেক্সটে এটি ভারসাম্যহীনতা আনতে পারে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭০-এ অর্থ বিলের ক্ষেত্রে ভোট দেয়ার বিষয়ে আরও আলোচনা হতে পারে বলে মতামত দিয়েছি। মূলত যেগুলোতে দ্বি-মত পোষণ করেছি, সেইসবই আলোচনার এজেন্ডায় থাকবে।

অন্তর্বর্তী সরকার প্রো-বাংলাদেশপন্থি পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে দাবি করে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেছেন, বিশ্বে পূর্বশত্রুদের মিত্রে পরিণত হওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ওঠা প্রশ্নের ব্যাখ্যায় শুক্রবার আবুল কালাম আজাদ মজুমদার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এ কথা বলেন। খবর বাসসের

বিশ্বে পূর্বশত্রুদের মিত্রে পরিণত হওয়ার উদাহরণ তুলে ধরে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেছেন, ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড শতাব্দী ধরে অসংখ্য যুদ্ধ করেছে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হাত মিলিয়েছে। একই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র জাপানে বোমাবর্ষণ করেছিল, কিন্তু পরে তারা মিত্রে পরিণত হয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি কি পাকিস্তানপন্থী হয়ে যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি আমরা। এ ধরনের প্রশ্ন আমাদের মোটেও অবাক করেনি। এমন কিছু মানুষ সব সময়ই থাকবে, যারা বাংলাদেশের স্বাধীন পরিচয়ে খুব কমই বিশ্বাস করবে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব বলেন, আমাদের জবাব স্পষ্ট ছিল। অতীতে দেশের পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে যা–ই ঘটুক না কেন, এখন থেকে এটি বাংলাদেশপন্থী নীতি হবে, যা আমাদের নিজস্ব স্বার্থে পরিচালিত হবে।

 

এক প্রতিবেশীকে খুশি রাখতে অন্য প্রতিবেশী থেকে দূরে সরে যাওয়া একটি স্বাধীন জাতির পররাষ্ট্রনীতি হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন আজাদ মজুমদার। 

তিনি বলেন, সফররত পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচকে দুই দেশের মধ্যকার অমীমাংসিত বিষয়গুলো স্মরণ করিয়ে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার তার কথাগুলোকে কাজে রূপ দিতে ২৪ ঘণ্টার কম সময় নিয়েছে। একই সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মতি জানিয়েছে।

আজাদ মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টিকারী একটি আবেগঘন বিষয় হলো ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর গণহত্যা ও নৃশংসতার জন্য দেশটির পক্ষ থেকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি। এমনকি পাকিস্তানের সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই বিশ্বাস করতেন, ক্ষমা চাওয়া- সদিচ্ছা ও উদারতার একটি কাজ হবে। কিন্তু পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর ও সামরিক আমলাতন্ত্র সর্বদা এই ধরনের কথার বিরোধিতা করেছে। তাই আনুষ্ঠানিকভাবে কখনো ক্ষমা চাওয়া হয়নি।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশ সম্পদের বিভাজনের বিষয়টির ওপরও জোর দিয়েছে, যা অতীতের শাসকদের কাছে ভুলে যাওয়া একটি বিষয় ছিল। অতীতে শাসকেরা এটি আলোচনার চেয়ে বিচ্ছিন্নতা পছন্দ করতেন।  

তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালের একটি অনুমিত হিসাব অনুযায়ী, পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের পাওনা ৪ দশমিক ৩২ বিলিয়ন (৪৩২ কোটি) মার্কিন ডলার। অভ্যন্তরীণ মূলধন সৃষ্টি, বৈদেশিক ঋণ নিষ্পত্তি এবং বৈদেশিক আর্থিক সম্পদ ধরে রাখার অনুমিত হিসাবের ভিত্তিতে এটি নির্ধারণ করা হয়।

আজাদ মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের আরও প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দাবি করেছে, যা ১৯৭০ সালের নভেম্বরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ/সংস্থা অনুদান দিয়েছিল। ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের লাহোর শাখায় স্থানান্তরিত হওয়ার আগে এই অর্থ ঢাকায় স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের অফিসে পড়ে ছিল।

আজাদ মজুমদার তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন আরেকটি বিষয় ছিল, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে বাধাগ্রস্ত করেছিল। অতীতে পাকিস্তান তাদের লোকদের মাত্র এক লাখ ২৫ হাজার জন ফিরিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের ১৪টি জেলার ৭৯টি শিবিরে প্রায় ৩ লাখ ২৫ হাজার জন ছিল।

তিনি বলেন, এই বিষয়গুলোই দুই দেশের মধ্যে একটি সুস্থ ও ভবিষ্যৎমুখী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে রয়ে গেছে। সমস্যা সমাধানের সর্বোত্তম বিকল্প হলো আলোচনা এবং অন্তর্বর্তী সরকার ঠিক এটাই করার চেষ্টা করছে। অনেক বছর পর বাংলাদেশ পাকিস্তানকে আলোচনায় এনেছে এবং পারস্পরিক সুবিধার জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনা অন্বেষণ করার পাশাপাশি যথাযথভাবে বিষয়গুলো উত্থাপন করেছে।

উপ-প্রেস সচিব স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত ডিসেম্বরে মিশরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে এক বৈঠকে অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধানের আহ্বান জানান। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বালুচের সঙ্গে বৈঠক করার সময় তিনি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। একই বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্কের ওপর জোর দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতের সুবিধার্থে অতীতের ইস্যুগুলো সমাধানের জন্য সম্ভবত এখন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের এক সঙ্গে কাজ করা ও এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে।

সংস্কার ও বিচার নিশ্চিত করেই নির্বাচন দিতে হবে। তবে কোনোভাবেই অতিরিক্ত সময় নেয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ কথা বলেন তিনি।

জামায়াত আমির বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করে নির্বাচন দিলে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। সংস্কার ছাড়া দেশে কোনও নির্বাচন কাজে আসবে না বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে জানানো হয়েছে। নির্বাচন এমনভাবে করতে হবে যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়।

লন্ডনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে তিনি বলেন, শুধুমাত্র খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতেই বেলজিয়াম থেকে লন্ডন গিয়েছি। তবে সেখানে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ইউরোপ সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতেই ব্রাসেলস সফরের উদ্দেশ্য ছিল। সফরে রাজনীতি, অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

আসন্ন কাতার সফরে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হচ্ছেন বাংলাদেশের চার জাতীয় নারী ক্রীড়াবিদ। তারা হলেন- ফুটবলার আফিদা খন্দকার ও ⁠শাহেদা আক্তার রিপা, ক্রিকেটার সুমাইয়া আক্তার ও শারমিন সুলতানা। এবারই প্রথম কোনো সরকার প্রধানের রাষ্ট্রীয় সফরে সঙ্গী হতে যাচ্ছেন নারী ক্রীড়বিদদের একটি দল।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তার সফরসঙ্গী হতে যাওয়া এই চার ক্রীড়াবিদ। বাংলাদেশের এই নারী ক্রীড়াবিদদের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কাতার সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে কাতার ফাউন্ডেশন।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সফরে যাওয়ার আমন্ত্রণ পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন চার নারী ক্রীড়াবিদ। তারা বলেন, আমরা এ সফরের আমন্ত্রণ পেয়ে ভীষণ আনন্দিত এবং আমাদের টিমমেটরাও আমাদের এ আমন্ত্রণে উচ্ছ্বসিত।

নারী ফুটবলাররা জানান, দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে এশিয়ার অন্য দলের সঙ্গে ম্যাচ খেলার খুব একটা সুযোগ তাদের হয় না। তারা কাতার নারী টিমকে প্রীতি ম্যাচ খেলার আমন্ত্রণ জানাতে চান। এ সফরে আমরা তাদের স্পোর্টস ফ্যাসিলিটিসগুলো ঘুরে দেখতে এবং প্রফেশনাল চিন্তাভাবনাগুলো জানতে চান তারা।

নারী ক্রিকেটাররা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, কাতারে ক্রিকেট তেমন জনপ্রিয় নয়। আমরা এ সফরে ক্রিকেট নিয়ে তাদের মধ্যে আগ্রহ তৈরির চেষ্টা করব। আমাদের পুরুষ ক্রিকেট দল ও নারী ক্রিকেট দলের গল্পগুলো তুলে ধরব। তারা একটি প্রেজেন্টেশন তৈরি করে নিয়ে যাবেন বলেও জানান তারা।

বৈঠকে নিজেদের জীবনন সংগ্রামের কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান চার নারী ক্রীড়াবিদ। সরকারপ্রধানের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সফরের সুযোগ দেয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান তারা।

তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা ও কাতার সফর নিয়ে পরিকল্পনা শুনে ব্যাপক উৎসাহ ও সমর্থন জানান প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আমি চাই, তোমরা তোমাদের জীবনের সত্যিকারের কথাগুলো তাদের কাছে তুলে ধরবে। তোমরাই এদেশের স্পোর্টস অ্যাম্বাসেডর। সেখানে তোমরা এদেশের স্পোর্টসকে প্রতিনিধিত্ব করবে। তোমাদের এ রাষ্ট্রীয় সফরে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারে আমিও ভীষণ আনন্দিত। নারী ক্রীড়াবিদদের এ সফর সফল করতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে বলেও আশ্বাস দেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আর্থনা সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী সোমবার (২১ এপ্রিল) চার দিনের সফরে কাতার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশের সম্পদ ফেরত ও গণহত‍্যার জন‍্য সাধারণ ক্ষমা চাওয়া নিয়ে আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে পাকিস্তান। ঢাকা-ইসলামাবাদ বিদ‍্যমান সম্পর্ক এগিয়ে নিতে দুই দেশই একমত— এমনটা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দীন।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে দুই দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশের সম্পদ হিসেবে ৪ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ফেরত চেয়েছে সরকার। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে ইসলামাবাদ। বাংলাদেশে এখনও তিন লাখ ২৫ হাজার আটকে পড়া পাকিস্তানি রয়েছে। তাদের নিজ দেশে প্রত‍্যাবাসনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বৈঠকে দুই দেশই অর্থনৈতিক ও বাণিজ‍্যিক সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার প্রত‍্যয় ব্যক্ত করেছে। খুব শিগগিরই পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের সরাসরি ফ্লাইট চালু হবে। জাতীয় স্বার্থের বিষয়টি মাথায় রেখেই দেশটির সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করছি। তবে তাদের দিকে ঝোঁকার কোনও বিষয় নেই।

এ সময় ঢাকায় সফররত পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ বলেছেন, ঢাকায় এসে তিনি খুশি।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দীন এবং পাকিস্তানের হয়ে ঢাকা সফররত দেশটির পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ অংশ নেন।

শুধু অতীতের ভিত্তি ধরে রাখা নয়, বরং ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও বাড়াতে আগ্রহী যুক্তরাজ্য। সম্প্রতি ঢাকা সফরে এসে যমুনা টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত রোজি উইন্টারটন।

তাঁর ইঙ্গিত, ইউকে এক্সপোর্ট ফান্ডের ২ বিলিয়ন পাউন্ড ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। তবে তার আগে বাংলাদেশকে কমাতে হবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা।

এর আগে, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত রোজি উইন্টারটন যোগ দিয়েছিলেন এবারের বিনিয়োগ সম্মেলনে। বক্তব্য রেখেছেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল পর্বে।

সম্মেলনের পর, যমুনা টেলিভিশনে সাথে যুক্ত হন একান্ত সাক্ষাৎকারে। এসময় রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দান এবং শিক্ষার্থীদের প্রাণের বিনিময়ে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার পতন ঘটানোকে বিস্ময়কর মনে করেন এ ব্রিটিশ দূত।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে দ্বিমুখী বাণিজ্যের অপার সুযোগ রয়েছে এমনটাও জানান উইন্টারটন। বলেন বাংলাদেশি পোশাক খাত প্রতিষ্ঠিত এবং ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোর কাজের সুযোগ রয়েছে এখানে। এছাড়া জলবায়ু সংকট মোকাবেলা, এভিয়েশন, শিক্ষা ও প্রতিরক্ষা খাতে দ্বিপাক্ষিক কাজের সুযোগকে কাজে লাগাতে চান তিনি।

তিনি আরও জানান ইউকে এক্সপোর্ট ফান্ডে ২ বিলিয়ন পাউন্ড আছে, যা ব্রিটিশ কোম্পানির বিনিয়োগে বাংলাদেশের জন্য সহায়ক হতে পারে। এছাড়া ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ ঘটলেও কম শুল্কহার সুবিধা ২০২৯ পর্যন্ত অব্যাহত রাখবে যুক্তরাজ্য বলেও জানান উইন্টারটন।

বিনিয়োগকারীরা স্থিতিশীলতা চান উল্লেখ করে ব্রিটিশ বাণিজ্য দূত বলেন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নেয়া পদক্ষেপ বিনিয়োগকারীদের জন্য উৎসাহজনক, যা ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা বাড়াচ্ছে।

বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর প্রথম দিনে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে প্রদর্শিত হয়েছে ড্রোন শো। তাতে সন্ধ্যার পর ঢাকার আকাশ হয়ে ওঠে ঝলমলে। হাজার হাজার দর্শক উপভোগ করেন এই শো।

ঢাকার চীনা দূতাবাসের কারিগরি সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টায় এ ড্রোন শো শুরু হয়।

যেখানে প্রদর্শিত হয় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো আবু সাঈদ, পানির বোতল হাতে প্রতীকী মুগ্ধতা, ‘২৪-এর বীর’, পায়রার খাঁচা ভাঙা থিম এবং ফিলিস্তিনের জন্য প্রার্থনা। বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্বের শুভেচ্ছাবার্তা-ও ছিল।

এছাড়া, জুলাই আন্দোলনের প্রসঙ্গ ও গণঅভ্যুত্থান থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার প্রতিবাদও প্রতীকীভাবে শোতে স্থান পায়।

ড্রোন শোর আগে বিকেলে বৈশাখী কনসার্ট চলে। বান্দরবানের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর গানের দল বেসিক গিটার লার্নিং স্কুলের খুদে শিল্পীদের পরিবেশনার মাধ্যমে আয়োজনটি শুরু হয়।

এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সংস্কৃতিবি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, বিশেষ অতিথি ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক প্রতিনিধিসহ সরকারি ও বেসরকারি দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার মতো এমন অপকর্ম করার সাহস পেত না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদ ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিএনপির আয়োজিত র‍্যালিতে অংশ নিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় যেমন জিয়াউর রহমান ভূমিকা রেখেছিলেন, তিনি বেঁচে থাকলে আজ ফিলিস্তিনের পক্ষে কার্যকর উদ্যোগ নিতেন এবং ইসরায়েল এমন সহিংসতা চালানোর সাহস পেত না।

তিনি বলেন, ইসরায়েল শুধু ফিলিস্তিন নয়, ধীরে ধীরে সারা বিশ্বের মুসলমানদের নিঃশেষ করবে। এরপরও মুসলিম বিশ্বের মোড়লরা চুপ করে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এই অত্যাচার চলবে। ধীরে ধীরে মুসলমানদের ধ্বংস করে দেবে ইসরায়েল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফিলিস্তিনে চলমান সহিংসতার ছবি দেখলে সহ্য করা যায় না বলেও উল্লেখ করেন মির্জা আব্বাস।