স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নির্বাচনকালীন সরকারের উপদেষ্টা পদে থাকছেন না।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম ঠিকানায় গতকাল মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসে তিনি এ তথ্য জানান।

তার মানে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই কি নাহিদ ইসলামের মতো উপদেষ্টার পদ ছেড়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন আসিফ মাহমুদ? তেমনটাই ইঙ্গিত রয়েছে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার কথায়।

সরকার থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে আসিফ মাহমুদ বলেছেন, ২০১৮ সাল থেকে আমি রাজনীতিতে যুক্ত। তাই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে যাবো।

রাজনীতিতে আছে এমন কয়েকজন সরকারে আছে; মাহফুজ আলমসহ আরও কেউ যদি থাকেন এমন কারও নির্বাচনকালীন সরকারে থাকা উচিত নয় বলেও মনে করছেন তিনি। কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা দেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতিকে সেরা নির্বাচন উপহার দিতে চান। তাই কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের প্রশ্ন যেন না আসে।

আসিফ মাহমুদের মুখ থেকে এমন ঘোষণা আসার আগে থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন ছিল— ভোটের আগে দুই ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ ইসলাম সরকার থেকে সরে এসে এনসিপিতে যোগ দিতে পারেন।

তবে এনসিপিতেই আসিফ মাহমুদ যোগ দেবেন কি না তা পরিষ্কার করেননি এই টকশোতে। এছাড়া, আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি না, বিষয়টি স্পষ্ট করেননি তিনি।

এর আগে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠনকে কেন্দ্র করে জাতীয় নাগরিক কমিটির (জানাক) তৎকালীন কয়েকজন নেতার মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে সংগঠনটির কার্যালয় যে ভবনে, অর্থাৎ ঢাকার বাংলামোটরে রূপায়ন সেন্টারে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ উঠে এবং আলোচনা চলে।

তবে এ নিয়ে আসিফ মাহমুদের পক্ষ থেকে পরিস্কার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, কার্যক্রম স্থগিত হওয়া গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতারা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে ছিলেন। সেই সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন আখতার হোসেন, আর নাহিদ ইসলাম সদস্য সচিব ছিলেন। ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ছিলেন আসিফ মাহমুদ।

তারা সকলেই ছাত্রশক্তি গঠনের পূর্বে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাথে যুক্ত ছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে ২০২৩ সালে ছাত্রশক্তি গঠন করেন।

এদিকে, গুঞ্জন রয়েছে, কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে ভোট করতে পারেন আসিফ মাহমুদ। এজন্য বিএনপি নেতা ও অতীতে আসনটিতে একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের সাথে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে বলেও গুঞ্জন আছে রাজনৈতিক মহলে।

এ নিয়ে আসিফ মাহমুদ বলছিলেন, কেউ কেউ মনে করছেন তিনি মুরাদনগর থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন। এটা ঠিক নয় বলে দাবি তার।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, আমি জাতীয়পর্যায়ে রাজনীতি করতে চাই। সেক্ষেত্রে স্থানীয় স্তরে গিয়ে নির্বাচন করা, রাজনীতি করা সুবিধাজনক হবে না। জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্র হিসেবে ঢাকা শহরই আমার জন্য সুবিধাজনক স্থান।

এছাড়া, কুমিল্লার মুরাদনগরে মবের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড, শিক্ষক নিপীড়ন, চাঁদাবাজি— এসব ঘটনায় যারা জড়িত তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেন; কিছুদিন ধরে এমন আলোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এগুলোকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ‘অপপ্রচার’ বলে দাবি আসিফ মাহমুদের। এসবের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানালেন তিনি।

সব কিছুর দাম স্থিতিশীল থাকলেও শুধু চালের কারণে জুলাই মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উপকরণ হিসেবে আমদানিকে ব্যবহার করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে কৃষিঋণ নীতিমালা ঘোষণা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

গভর্নর বলেন, চলতি অর্থবছরে কৃষিতে ৩৯ হাজার কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি। তবে এর পরিধি আরও বাড়ানো দরকার।

কৃষি ঋণ আদায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কৃষি ঋণ আদায় নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। ঋণ পরিশোধে কমপক্ষে ৬ মাস সময় দেয়া দরকার। এ সময় সুদহারে ভর্তুকির চেয়ে সময়মতো ঋণ পাওয়া কৃষকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

রাজউকের পূর্বাচলে নতুন শহর প্রকল্পের প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, টিউলিপ সিদ্দিক, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে প্রথম দিনের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হন দুদকের তিন কর্মকর্তা। তারা হলেন— সালাহউদ্দিন, আফনান জান্নাত কেয়া ও এস এম রাশেদুল হাসান।

পৃথক তিন মামলায় শেখ হাসিনা পরিবারের বাইরে অন্য আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গণপূর্তের তৎকালীন সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়া, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য কবির আল আসাদ, সদস্য তন্ময় দাস, সদস্য নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার।

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর জানান, রাউকের আবাসন নীতিমালার সকল আইন ভঙ্গ করে শেখ হাসিনা তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে শেখ রেহেনাসহ তার পরিবারের নামে প্লট বরাদ্দ নেন। সাক্ষ্য গ্রহণে দুদকের কর্মকর্তারা এমন তথ্য আদালতকে জানান।

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দ নেয়া প্লটের বিষয়ে ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয় মামলায় গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।

‘২৪ এর গণঅভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করতে সকল ধরনের আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলছেন, সমীকরণ এখনও শেষ হয়নি। যারা এখনই সমীকরণ মিলিয়ে ফেলছে তারা ভুল পথে হাটছে। গত এক বছর ছাড় দিয়েছি, জুলাই ঘোষণাপত্রে ছাড় দিয়েছি, জুলাই সনদে এক শতাংশও ছাড় দেয়া হবে না।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে জাতীয় যুবশক্তি আয়োজিত ‘জাতীয় যুব সম্মেলনে’ এমন মন্তব্য করেন তিনি।

অভ্যুত্থানের শক্তি এখনও রাজপথে আছে এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে নাহিদ বলেন, গনঅভ্যুত্থানের এক বছর পার হয়েছে। অনেক হিসেব-নিকেশ করেছি। আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। গত এক বছরে জাতীয় নাগরিক পার্টি ছাড় দিয়েছে। এখন আর ছাড় দিবে না। জুলাই সনদের যে উদ্দেশ্য তা প্রতিষ্ঠা করেই নির্বাচনে অংশ নেবো।

নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে না পারলে আরেকটি ১/১১ আসবে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন চাই। তবে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। জুলাই সনদে একবিন্দুও ছাড় দেয়া হবে না। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হলে কোনও রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যেতে পারবে না।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, সংশোধন ও সংস্কার নিজেদের ঘর থেকে শুরু করতে হবে। চাঁদাবাজি কোনও রাজনৈতিক দলের ইমেজের জন্য ভালো নয়। যারা সুবিধা নেয়ার জন্য দলে এসেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

গণঅভ্যুত্থানের জন্য তরুণদের সম্মান দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম। বলেন, আগামীর গণপরিষদে তরুণদের নেতৃত্ব দেখতে চাই। জাতীয় প্রতিরক্ষার জন্য তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, জাতীয় প্রতিরক্ষার অংশ হিসেবে তরুণদের গড়ে তুলতে হবে। তরুণদেরকে সামরিক ট্রেনিং দিতে হবে, সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য তরুণদের প্রস্তুত রাখতে হবে। বাংলাদেশের তরুণরা যুদ্ধ করতে চায়, লড়াই করতে চায়, দেশ গঠন করতে চায়।

নাহিদ আরও বলেন, নাগরিক পার্টি যেমন রাজপথ থেকে গড়ে ওঠা দল এবং সারাদেশে সংগঠিত হচ্ছে তেমনি যুবশক্তিও রাজপথ থেকে গড়ে ওঠা দল। যুবশক্তি শুধু জাতীয় নাগরিক পার্টির ভ্যানগার্ড নয় দেশের ভ্যানগার্ড হবে। ক্ষমতার নির্ধারকরা যদি তরুণদের প্রতারিত করে তাহলে এদেশের ভবিষ্যৎ ভালো হবে না। জুলাই পদযাত্রা শেষ হয়নি দ্রুত আবার আপনাদের দোড়গোড়ায় যাবো বলেও জানান এনসিপির এই নেতা।

আওয়ামী লীগ আমলের সব সচিব ও আমলাদের অপসারন না করলে আগামী সপ্তাহে সচিবালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছে জুলাই মঞ্চ।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে এমন হুঁশিয়ারি দেয় সংগঠনটির নেতারা।

বক্তারা বলেন, বিপ্লবের এক বছর পার হলেও উপদেষ্টা পরিষদ ও সচিবালয়ে এখনও ফ্যাসিস্ট আমলের সুবিধাভোগীরা বহাল তবিয়তে রয়েছে। তাদেরকে রেখে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। দেশকে অস্থিতিশীল করতে নানা ষড়যন্ত্র করছে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার গণ-মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে এই সরকারের বিরুদ্ধেও আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

সংস্কার কার্যকর ও সংবিধান ঠিক না করে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে জুলাই অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের মায়ের বুকে ফেরত দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে জাতীয় যুবশক্তি আয়োজিত ‘জাতীয় যুব সম্মেলনে’ এমন মন্তব্য করেন তারা। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, আমরা একটা অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে, সত্যি কথা বললে আমাদের বিরুদ্ধে দশ কোটি টাকার মানহানির মামলা দেয়া হয়। এগুলো আমাদের ভয়ভীতি দেখানোর লক্ষণ। জাতীয় পার্টি পেছনের দরজা দিয়ে রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছে এমন অভিযোগ তুলে এনসিপির নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড় পাবে না। এসময় বিগত দিনে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও ‘ডামি’ নির্বাচনের জাতীয় পার্টির দায় আছে বলেও মন্তব্য করেন তারা। এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, জুলাই শিখিয়েছে কীভাবে হায়নাদের ধ্বংস করতে হয়। নতুন বাংলাদেশ গড়তে দলীয় স্বার্থের আগে বৃহৎ স্বার্থের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে আলোচনার টেবিলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বানও জানান বিএনপির এই সিনিয়র নেতা। একই অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, জুলাই প্রমাণ করেছে, আমরা লড়াই করতে জানি। আমাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তিই সব থেকে বড় শক্তি। দলীয় ভিত্তিতে নয়, জাতীয় ভিত্তিতে ঐক্য অক্ষুণ্ন থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জনগণের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতিই বিএনপির আগামী দিনের নীতি হবে বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক যুব দিবসে ‘যুব সমাজের প্রত্যাশা ও বিএনপির পরিকল্পনায় আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা জানান তিনি।

তারেক রহমান বলেন, জনগণ প্রচলিত রাজনীতির পরিবর্তন চাইছে। আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রতিশ্রুতি নয়, জনগণ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন চায়। তাই আগামী দিনে কর্মসংস্থানের রাজনীতি চালু করবে বিএনপি।

তিনি আরও বলেন, প্রতিশোধ-প্রতিহিংসা এড়িয়ে সাহস ও সততা নিয়ে এগিয়ে গেলে বাংলাদেশের সমৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী। জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে পারলে জনসংখ্যা দেশের জন্য আশীর্বাদ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যে কোনও অপকর্মের সঙ্গে বিএনপিকে জড়িয়ে খাটো করার অপচেষ্টা চলছে। বিএনপি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিতে বড় দল হিসেবে কাজ করবে। যাতে আওয়ামী লীগের মত কারচুপির নির্বাচনের অভিযোগ তুলে কেউ বিএনপির দিকে আঙুল তুলতে না পারে।

লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট (অব.) কর্নেল ড. অলি আহমদ বলেছেন, কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন পেছানোর জন্য অজুহাত তৈরি করছে। ভোট ব্যাহত হয় এমন বক্তব্য থেকে দলগুলোকে বিরত থাকতে হবে।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে মগবাজারে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

অলি আহমদ বলেন, পিআর (সংখ্যানুপাতিক) পদ্ধতি নয়, এই মূহুর্তে দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। জনগণকে ভোটমুখী করলে নানা সংকট কেটে যাবে। জামায়াতে ইসলামীকে পিআর নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি না করার আহ্বান জানাচ্ছি। এ সময় নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ায় সরকার ধন্যবাদও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, দেশজুড়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি দেখা যাচ্ছে। লটারির মাধ্যমে পুলিশ- প্রশাসনে বদলি করার সিদ্ধান্তটি সঠিক নয়। গুরুত্ব বিবেচনা করে কর্মকর্তাদের বদলি করতে হবে।

কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের দায়ের করা মামলায় আবদুল লতিফ ভূইয়া নামের এক সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তাকে ১০বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসাথে ওই কর্মকর্তাকে ১ কোটি ১৭ লাখ ৪০ হাজার ৫৩২ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।

আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে আসামীর উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিশেষ জজ আদালত নোয়াখালী (দুদক) বিচারক মো. শওকত আলী এ রায় প্রদান করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবদুল লতিফ ভূইয়া কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার ধামতি এলাকার বাসিন্দা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের কোর্ট ইন্সপেক্টর মো. ইদ্রিস।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, আবদুল লতিফ ভূইয়া রূপালী ব্যাংক পিএলসি- লক্ষ্মীপুরের পোদ্দার বাজার শাখায় প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। এ সময় লতিফ ১৯৩টি এন্ট্রির মাধ্যমে ব্যাংকের ১ কোটি ৩০ লাখ ৭২ হাজার ৪৯১ টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় তাকে বরখাস্ত করার পর ২০১২ সালের ২ জানুয়ারি মামলা দায়ের করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এরপর আটক করা হয় অভিযুক্তকে। পরে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুদক।

দুদকের প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগটি প্রমাণিত হলে আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক জনাব মো. আবদুস ছাত্তার সরকার। অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে আসামির উপস্থিতিতে আদালত এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পর আসামিকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম এবং আসামির পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সামছুদ্দিন।

১০০০, ৫০ এবং ২০ টাকার নতুন নোটের পর এবার আগামী মঙ্গলবার থেকে বাজারে ১০০ টাকার নতুন নোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আজ রোববার (১০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক নুরুন্নাহার স্বাক্ষরিত কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্স বিভাগের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্যের নতুন ডিজাইন ও সিরিজে সব মূল্যমানের নতুন নোট মুদ্রণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। তার ধারাবাহিকতায়, ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকার নোটের পর ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের স্বাক্ষরিত করা ১০০ টাকার নতুন নোট এবার বাজারে প্রচলন করা হবে।

আরও বলা হয়, আগামী ১২ আগস্ট প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এবং পরে দেশের অন্যান্য অফিস থেকে নতুন ১০০ টাকার নোট ইস্যু করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

আগামী নির্বাচনে জনগণ বিএনপিকে বেছে নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আজ রোববার (১০ আগস্ট) দীর্ঘ ১৬ বছর পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন দেয়া ভার্চুয়াল ভাষণে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার শুধু নির্বাচন ব্যবস্থা নয়, দেশের সব খাতকে ধ্বংস করেছে। নৃশংসভাবে দমন করেছে বিরোধী মতাবলম্বীদের। কিন্তু হাজারও মানুষের প্রাণের বিনিময়ে জুলাই অভ্যুত্থানে পতন ঘটেছে তাদের।

অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন আয়োজনের পথে হাঁটছে উল্লেখ করে বলেন, এই নির্বাচনে বিএনপি জয়ী হবে। কিন্তু ক্ষমতায় গেলে বিএনপিকে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। আর সবাইকে সাথে নিয়ে সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সেইসাথে, জনরায়ে ক্ষমতায় গেলে দেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিও দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

তারেক রহমান আরও বলেন, ক্ষমতায় এসে দেশবিদেশে দক্ষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষার আলো শিক্ষার্থীদের মাঝে পৌঁছে দিতে হবে। তাদের ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তুলতে হবে।

অপরদিকে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দলকে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তাদের মনে আস্থা সৃষ্টি করতে হবে। তাদের নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। এ সময়, পদ্মাসহ অন্যান্য নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি।

কসই বেড়ীবাঁধ এবং দ্বীপের চারপাশে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা না গেলে আগামী ৫০ বছরের মধ্যেই সমুদ্রপৃষ্ঠে বিলীন হবে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড কুতুবদিয়া। ‘অস্তিত্বের সংকটে কুতুবদিয়া দ্বীপ: রাষ্ট্রের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এমন শঙ্কার কথা জানান বক্তারা।

রোববার (১০ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সম্মিলিত নাগরিক সমাজের উদ্যোগে এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবাদী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

বক্তারা জানান, জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং অব্যাহত ভাঙনে ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে কুতুবদিয়া দ্বীপ। শত শত পরিবার হারিয়েছে ঘরবাড়ি, কৃষিজমি, মাছের ঘের। এতে থেমে গেছে তাদের জীবিকার চাকা। এ সময়, সরকারের জরুরি উদ্যোগ ছাড়া দ্বীপবাসীর জীবন ও জীবিকা রক্ষা সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেন বক্তারা। এজন্য সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণ, উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী তৈরি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দেন তারা।