জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালে জুলাই আন্দোলনে আহতদের দেখতে গিয়ে ‘নো রিলিজ, নো ট্রিটমেন্ট অর্ডার দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৪ আগস্ট) তার বিরুদ্ধে মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী আবদুল্লাহ আল ইমরানের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে এমন তথ্য।

ইমরান জবানবন্দিতে বলেন, শেখ হাসিনার ওই আদেশের পর চিকিৎসা অবহেলার শিকার হন তিনি। এমনকি অন্য হাসপাতালে গিয়ে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ চাইলেও তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়নি।

ঢাকা কলেজের এই শিক্ষার্থী তার জবানবন্দিতে আরও জানান, ১৯ জুলাই আন্দোলনের সময় বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে তার পায়ে গুলি লাগে। ওইসময় তার সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় আরও দুই জুলাই যোদ্ধা। পায়ে গুলি লাগার পর বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে পরে তিনি পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হন।

হাসপাতালে নেয়ার পথে সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসার সামনে তাদের অ্যাম্বুলেন্স থামানো হয়। তখন অ্যাম্বুলেন্স থেকে একজনকে গ্রেফতার করা হয়।

সাক্ষ্যের শেষে তার জীবনের এই অবস্থার জন্য শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সেসময়ের পুলিশ প্রধানকে দায়ী করেন। ইমরানের জবানবন্দীর সময় কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

উপকূলীয় এলাকায় নিরাপদ পানির প্রাপ্যতা ও জলবায়ু সহনশীলতা বাড়াতে ‘রেইন ফর লাইফ’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে ব্র্যাক।

প্রকল্পটি আগামী তিন বছর সাতক্ষীরার আশাশুনি, বাগেরহাটের মংলা ও বরগুনার পাথরঘাটা উপকূলীয় উপজেলায় ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষের জন্য নিরাপদ পানির জন্য কাজ করবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

সম্প্রতি রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত এক কর্মশালায় ‘রেইন ফর লাইফ’ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক যাত্রার ঘোষণা দেয়া হয়।

ডেনমার্কের সহায়তায় পরিচালিত এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় পরিবার ও কমিউনিটি পর্যায়ে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ, জলাশয়ের পানি পরিশোধন এবং জলবায়ু সহনশীল কৃষিকে উৎসাহিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে।

এছাড়া কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্র্যাকের ‘অ্যাডাপটেশন ক্লিনিক’ মডেলের মাধ্যমে বিশেষত নারীদের নেতৃত্বে প্রান্তিক কৃষকদের জলবায়ু সহনশীল প্রযুক্তি ও পরামর্শ দেয়া হবে এবং তাদের জন্য অর্থায়নের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।

কর্মশালায় ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার বলেন, প্রকল্পটি সকলকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রকৃতি নির্ভর সামগ্রিক পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এটি কেবল মানুষের জন্যই নয়, ফসল, গবাদিপশু ও সামগ্রিক পরিবেশের জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, ‘রেইন ফর লাইফ’ প্রকল্পটি নিরাপদ পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা- এই দুটি বিষয়কে একসঙ্গে মোকাবেলা করছে। কারণ, জলবায়ু সংকটের প্রেক্ষাপটে এই দুইয়ের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, নিরাপদ পানির প্রাপ্যতা একটি মৌলিক অধিকার। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে এই অধিকার থেকে বঞ্চিত।  

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম বলেন, এই প্রকল্পে ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপ, অ্যাডাপটেশন ক্লিনিকসহ সকল ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাখা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২২ থেকে ২০২৪ সালে এই প্রকল্পের প্রথম ধাপে পানি সরবরাহ ব্যবস্থার মাধ্যমে ৭২ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ পানীয় জলের আওতায় আনা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য দিনদিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। ব্যবসায়িক লেনদেন ঠিক রাখার জন্য তাই মুদ্রা বিনিময়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে পাল্লা দিয়ে। লেনদেনের সুবিধার্থে বিভিন্ন দেশের মুদ্রার সঙ্গে বাংলাদেশি টাকার আজকের (৪ আগস্ট, ২০২৫) বিনিময় হার: মুদ্রার নাম বাংলাদেশি টাকা ইউএস ডলার ১২২ টাকা ৬৩ পয়সা ইউরো ১৪১ টাকা ৪৮ পয়সা পাউন্ড ১৬৩ টাকা ৯০ পয়সা ভারতীয় রুপি ১ টাকা ৪১ পয়সা মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত ২৬ টাকা ৮৩ পয়সা সিঙ্গাপুরি ডলার ৯১ টাকা ৪২ পয়সা সৌদি রিয়াল ৩২ টাকা ৭১ পয়সা কানাডিয়ান ডলার ৮৪ টাকা ৫৫ পয়সা কুয়েতি দিনার ৪০১ টাকা ৬৭ পয়সা অস্ট্রেলিয়ান ডলার ৭৫ টাকা ১১ পয়সা *মুদ্রার বিনিময় হার পরিবর্তন হতে পারে। প্রসঙ্গত, বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসীরা নিয়মিত পাঠাচ্ছেন বৈদেশিক মুদ্রা। জিডিপি কিংবা পার ক্যাপিটা (মাথাপিছু আয়) হিসাবও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে করা হয় পশ্চিমা মুদ্রায়।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের ঠিক একদিন আগে, বেপরোয়া হয়ে ওঠে রাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীগুলো। এদিন আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না করার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটও খারিজ করে দেয়া হয়। ফলে ৪ আগস্ট জঙ্গিদমন কায়দায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারতে থাকে বিভিন্ন বাহিনী। এরই মধ্যে ঘোষণা হয়, মার্চ টু ঢাকা। আন্দোলনের এই পর্যায়ে এসে, এক দফা দাবিতে অনঢ় হয় ছাত্র-জনতাসহ দেশের আপামর মানুষ। তা হলো, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। সেই দাবিতেই ৪ তারিখ থেকে সারাদেশে শুরু হয় আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি। একই সাথে আরও কঠোর কারফিউ জারি হয় দেশজুড়ে। এদিন সকাল থেকে ছাত্র-জনতার প্রতিরোধে রীতিমতো রণক্ষেত্র রাজধানীর যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকা। ছাত্রলীগ-যুবলীগ আর পুলিশের সশস্ত্র হামলা খালি হাতেই মোকাবিলা করতে থাকে কয়েকশ’ মানুষ। রামপুরায় নামেন ইস্ট ওয়েস্ট, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিসহ আশপাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক আর সাধারণ মানুষ। তাদের ওপরই বৃষ্টির মতো নামতে থাকে গুলি। উত্তরা, বাড্ডা, প্রগতি সরণিতেও একই চিত্র। কারওয়ান বাজার, সায়েন্স ল্যাব, শাহবাগ, বাংলামোটর আর ধানমন্ডি তখন যেন যুদ্ধক্ষেত্র। এ সময় ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা বিচ্ছিন্নভাবে ভাঙচুর চালান বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায়, বিএসএমএমইউ কম্পাউন্ডের ভেতরেও করা হয় অগ্নিসংযোগ। নিম্ন আদালতের মূল গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেও ক্ষোভ ঝাড়তে থাকেন আন্দোলনকারীরা। হাসপাতালগুলোতেও তখন বইছে রক্তের স্রোত। এত এত গুলিবিদ্ধদের চিকিৎসা দিতে চিকিৎসক-নার্সদের তখন নাভিশ্বাস অবস্থা। এক ঢাকা মেডিকেলেই কয়েতঘণ্টার মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে ভর্তি হন ৬৭ জন। আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় আড়াইশো’ মানুষ। এরমধ্যে জরুরি বিভাগেই ৭ জনের মৃত্যু হয়। এদিকে মিরপুরে তখন দেখা যায় এক অভূতপূর্ব চিত্র। সরকার সমর্থিত বাহিনীর বিপরীতে আন্দোলনকারীদের পক্ষেই ঢাল হয়ে দাঁড়ান একদল সেনাসদস্য। এসময় পুলিশ-ছাত্রলীগের দিকে সেনাসদস্যরা ফাঁকা গুলি ছুড়লে; ভিন্ন হিসেব-নিকেশের গন্ধ পায় সাধারণ মানুষ। রক্তের দাম মেটাতে সারাদেশেই তখন শক্ত প্রতিরোধ ছাত্র-জনতার। চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, দিনাজপুর ঝিনাইদহসহ গোটা দেশ রীতিমতো যুদ্ধক্ষেত্র। তখন ক্ষমতা টেকানোর শেষ চেষ্টায় তৎকালীন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, আর সশস্ত্র বাহিনী প্রধানদের সাথে বৈঠকে বসেন শেখ হাসিনা। সেই বৈঠকেই আন্দোলনে গুলি চালাতে সেনাবাহিনীর ওপর চাপ দেন তিনি। এই যখন পরিস্থিতি, তখন ‘ডু অর ডাই’ সিদ্ধান্ত আসে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে। ঘোষণা, ৬ তারিখ নয়, ‘মার্চ টু ঢাকা’ হবে ৫ আগস্ট। সমন্বয়করা জানালেন, মার্চ টু ঢাকা একদিন এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত ছিল, মূলত একটা ফাঁদ। ‘মার্চ টু ঢাকা’ ঘোষণার পরই টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। তখন বড় কিছু একটার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দফায় টানা দেড় দশকের মসনদ ত্যাগের আগাম বার্তা পাচ্ছিলেন শেখ হাসিনা।

জুলাই গণহত্যার মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ জুলাই আন্দোলনে আহতরা সাক্ষ্য দিচ্ছেন।

রোববার (৩ আগস্ট) সকালে সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। বিটিভিতে তা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে সাক্ষ্যগ্রহণ সরাসরি সম্প্রচার করা হয়নি।

এর আগে, রোববার সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ‘রাজসাক্ষী’ হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।

সূচনা বক্তব্যে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিগত আমলে গুম-খুনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি সৃষ্টি হয়েছিল। দেশের মানুষ ও গণতন্ত্রের জন্য এমন একটি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা দরকার, যেখানে খুনের রাজনীতি বন্ধ হবে। শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি চায় রাষ্ট্রপক্ষ।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচার হওয়া মানেই ন্যায় বিচার বঞ্চিত হওয়া নয়।

গত ১০ জুলাই জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিচার শুরুর আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেন। এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক রয়েছেন।

মানুষের জীবনে বন্ধু এক অদৃশ্য আশ্রয়। যে আশ্রয়ে না বলা কথাগুলোও বুকে গাঁথা থাকে, যে পাশে দাঁড়ায় কোনো শর্ত ছাড়াই।

বন্ধুত্ব মানে চোখের চাহনিতে, হালকা এক হাসিতে কিংবা নিঃশব্দে কাঁধে হাত রাখার সেই ভরসা— যা শব্দ ছাড়াও অনুভব করা যায়। সেই বন্ধুগুলোর সাথে হয়তো নিয়মিত দেখা হয় না, আড্ডার ধরনও হয়তো বদলে গেছে, তবু বছরের এই একটা দিন ফিরে আসে পুরোনো বিকেলগুলোকে মনে করিয়ে দিতে… আজ সেই বন্ধুত্বের জয়গান গাওয়ার দিন।

বন্ধুত্ব উদযাপনের সূচনা আধুনিককালে হলেও, মানুষের হৃদয়ে এর শেকড় অনেক গভীরে। এক শতাব্দী আগেও ‘বন্ধু দিবস’ নামে কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। ১৯৩০-এর দশকে মার্কিন উদ্যোক্তা জয়েস ক্লাইড হল প্রথম ‘বন্ধু দিবস’ পালনের ধারণা আনেন। পরে ১৯৫৮ সালে প্যারাগুয়ের চিকিৎসক র‍্যামন আর্তেমিও ব্রাচো এই দিবসকে আন্তর্জাতিকভাবে পালনের প্রস্তাব দেন। আর জাতিসংঘ ২০১১ সালে ৩০ জুলাইকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস’ ঘোষণা করে।

তবে বাংলাদেশ ও ভারতসহ অনেক দেশেই আগস্টের প্রথম রোববার বন্ধু দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সামাজিকমাধ্যমে এদিন ভরে ওঠে অনুভবের ঝরায়। দেখা যায় ছবির ক্যারোসেল, পুরোনো আড্ডার স্মৃতি অথবা ‘তোকে মনে পড়ে’ বার্তা।

বন্ধু মানে এমন কেউ, যার সঙ্গে কোনো মুখোশ পরে কথা বলতে হয় না। ‘ভালো আছিস?’ বলা লাগে না, কারণ চোখের দৃষ্টিতেই সব বলা হয়ে যায়। বন্ধু মানে চায়ের দোকানে বিকেলের হালকা বাতাস, ক্যাম্পাসের নির্দিষ্ট কর্নার, নদীর পাড়ের নিশ্চুপ হাঁটাচলা কিংবা কোনো সন্ধ্যায় নিঃশব্দে পাশে বসে থাকা।

এই দিনে কেউ কেউ ফোন করে পুরোনো বন্ধুদের, কেউ খুঁজে নেয় সেই পুরোনো আড্ডার জায়গাগুলো। কেউ হয়তো লিখে ফেলে একটি চিঠি—প্রিয় বন্ধুর উদ্দেশে, যা কখনো বলা হয়নি মুখে।

বন্ধুত্বের মানে সময়ের সঙ্গে বদলায় না, শুধু রূপ নেয়। স্কুলের বেঞ্চ থেকে কর্মস্থলের করিডোর— বন্ধুত্ব থাকে, রয়ে যায় অন্তরের গভীরে। আজ সেই সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন। আজ বন্ধুত্বের জয়গান গাওয়ার দিন। সবাইকে বন্ধু দিবসের শুভেচ্ছা।

শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি চায় রাষ্ট্রপক্ষ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে গুম-খুন-চাদাবাজি ও টাকা পাচারের রাজনৈতিক সংস্কৃতি সৃষ্টি করেছিলো বিগত সরকার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী মামলার সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

রোববার (৩ আগস্ট) ট্রাইব্যুনালের সামনে সূচনা বক্তব্য শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে দেন অ্যাটর্নি জেনারেল একথা বলেন।

সূচনা বক্তব্য শুরুর আগে ট্রাইব্যুনালের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি বলেন, ব্যক্তি নয় অপরাধই মূখ্য। ব্যক্তি যেই হোক সে অপরাধ করলে তার বিচার করার জন্য আমরা সংকল্পবদ্ধ। যে কারণে আমরা বিচার চাই। আজকের দিনটি ঐতিহাসিক। পৃথিবীর ইতিহাসে শেখ হাসিনার মত কোনো স্বৈরাচারের জন্ম হয়নি। তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মিথ্যাবাদী স্বৈরাচার। 

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কোনো স্বৈরাচারকে মিথ্যার ওপর পিএইচডি করতে হলে শেখ হাসিনার কাছে শিখতে হবে। পৃথিবীর সব স্বৈরশাসকের যদি কোনো সমিতি করা হয়, শেখ হাসিনা হবেন তার সভাপতি। বাংলাদেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে স্বৈরাচার ও তার সহযোগীদের সর্বোচ্চ শাস্তি আমরা চাই। মানব সভ্যতার ইতিহাসে এই বিচার একটি মানদণ্ড হয়ে থাকবে। আমরা চাই শেখ হাসিবার বিরুদ্ধে যাতে কোনো ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ এর মাধ্যমে বিচার না হয়।

এসময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে বিচার পরিচালিত হবে। বলেন, শেখ হাসিনার বিচার অতীতের হিসাব মেটানো নয়, এটি বিচার ব্যবস্থায় জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপনের একটি প্রক্রিয়া। আজ ‘রাজসাক্ষী’ হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আনা হয় ট্রাইব্যুনালে। সাক্ষ্য দিচ্ছেন জুলাই আন্দোলনের আহতরা।

রাজধানীতে ছাত্রদল ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে ঘিরে যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বইলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো: সাজ্জাত আলী।

রোববার (৩ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, অনলাইনে বিভিন্ন গুজব ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু সমাবেশ ঘিরে কোনো হুমকি নেই। পুরো এলাকায় পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বস্তিসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে। এ সময় নগরবাসীকে গুজবে কান না দিয়ে স্বাভাবিকভাবে চলাচলের আহ্বানও জানান তিনি।

শহীদ মিনারে জনসমাবেশ থেকে নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার ঘোষণা করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ইশতেহারে ২৪টি দফা থাকবে বলে জানিয়েছে দলটি। যেখানে এনসিপির পক্ষ থেকে রূপরেখা এবং কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। পাশাপাশি আজকের এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে সারদেশে জুলাই পদযাত্রার সমাপ্তিও ঘোষণা করতে যাচ্ছে এনসিপি।

আজ রোববার (৩ আগস্ট) বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে এই সমাবেশ। ঠিক এক বছর আগে একই জায়গা থেকে এক দফা ঘোষণা করেছিলেন নাহিদ ইসলাম। যিনি এখন এনসিপির আহ্বায়ক।

ইশতেহারে যে বিষয়গুলো থাকতে পারে তার মূল বিষয় হলো, বিচার, সংস্কার এবং নতুন সংবিধান। এই তিনটি হলো তাদের প্রধান প্রত্যাশা। যদিও পুরো জুলাই মাসজুড়ে সারাদেশে এনসিপির যে পদযাত্রা হয়েছে, সেখানে তারা এসব বিষয়ের কথাই বলে এসেছেন।

বিচারের ক্ষেত্রে- জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার দেখতে চায় এনসিপি। জুলাই গণোহত্যার যেসব মামলার বিচার প্রক্রীয়াধীন রয়েছে সেসবের রায় এবং এই সরকারের সময়েই রায় কার্যকর দেখতে চান তারা।

আর সংস্কারের যে বিষয়টি রয়েছে, ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের মাধ্যমে যে জুলাই সনদ প্রনয়ণ করা হবে তার আইনগত ভিত্তি চান তারা। জুলাই সনদের ভিত্তিতে পরবর্তী নির্বাচন চাইবে এনসিপি। নির্বাচিন সংসদের হাতে সংস্কার কার্যক্রম ছেড়ে না দিয়ে বরং জুলাই সনদের ভিত্তিতে সংসদ বা গণপরিষদ গঠিত করতে হবে এমন দাবি তাদের। এই অন্তর্বর্তী সরকারের সময় থেকেই জুলাই সনদ কার্যকর করার বিষয়ের মতো বেশ কিছু প্রস্তাবনা আসতে পারে আজকের সমাবেশ থেকে।

প্রস্তাবনায় আরও একটি বিষয় থাকতে পারে- তরুণরা যেই চেতনা থেকে জুলাই অভ্যুত্থান করেছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটানোর পর তরুণদের যে আকাঙ্ক্ষা ছিলো এনসিপির মতে, তাদের সেই আকাঙ্ক্ষা এই অন্তর্বর্তী সরকার বাস্তবায়ন করতে পারেনি এই সংক্রান্ত প্রস্তাবনা পেশ করবেন এবং পরবর্তী বাংলাদেশে এসবের আইনী ভিত্তি চাইবেন তারা।

তবে শুরুতে যে বিষয়টি ছিল যে, জুলাই ঘোষণাপত্রের ঘোষণা নিজ থেকেই করতে চেয়েছিল এনসিপি। তবে সরকার যেহেতু ৫ আগস্ট বিকেল ৫টায় এটি প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছেন তাই এই সমাবেশের নাম দেয়া হয়েছে নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার।

রাজধানীর শাহবাগে সমাবেশের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই সমাবেশে এরইমধ্যে যোগ দিয়েছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।

রোববার (৩ আগস্ট) দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করে ছাত্রদলের বিভিন্ন জেলা ও মহানগর ইউনিট।

সমাবেশের জন্য শাহবাগ মোড়ে মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আরও বক্তব্য দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলসহ ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

জুলাই অভ্যুত্থানের পর এটাই ছাত্রদলের প্রথম বড় কোনো গণজমায়েত। তবে এবারের সমাবেশে দেখা যাবে না চিরাচরিত মিছিল, ব্যানার আর ফেস্টুনের ভিড়। সমাবেশ উপলক্ষে ইতোমধ্যেই নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ছয় দফা নির্দেশনা দিয়েছে ছাত্রদল। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সমাবেশকে ঘিরে নেতাকর্মীদের কোনো ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন বা প্ল্যাকার্ড না আনার নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে যে কোনো ধরনের জনদুর্ভোগের জন্য সংগঠনটি আগাম দুঃখ প্রকাশ করেছে।সমাবেশের কারণে রাজধানীতে ধীরগতিতে চলছে যানবাহন।

মিথ্যা পরিচয় দিয়ে কনভেনশন সেন্টার ভাড়া নিয়ে রাজধানীর ভাটারায় একটি আবাসিক এলাকায় সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়ো হয়েছিল কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের। এর রহস্য উদঘাটন এবং এর পেছনে জড়িতদের বের করতে ‘গুরুত্ব দিয়ে’ তদন্ত করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ কথা জানান।

জুলাই অভ্যুত্থান ও অন্তর্বর্তী সরকারের বর্ষপূর্তিতে আগস্টকেন্দ্রিক কোনও ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই বলেও জানিয়েছেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই ভাটারা থানা এলাকার একটি কনভেনশন সেন্টারে ‘গোপন বৈঠক’ করায় আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের অন্তত ২২ জনকে গ্রেফতার করার কথা ইতোমধ্যে জানিয়েছে পুলিশ। বৈঠকটিতে মেজর সাদিকুল হক নামের এক সেনা কর্মকর্তারও অংশ নেয়ার অভিযোগ উঠলে তাকে হেফাজতে নেয় সেনাবাহিনী। তার বিষয়ে তদন্ত চলমান বলে জানিয়েছে সেনাসদর।

বলা হচ্ছে, দেশজুড়ে ব্যাপক নাশকতার ছক কষতে ওই বৈঠকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

এদিকে, ঢাকার গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। সে তথ্যও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর ওয়ারী থেকে অপুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে চাঁদাবাজির মামলায় অভিযুক্ত ছয়জনকেই ধরা হলো।

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, বাংলাদেশের মাটিতে শেখ হাসিনা যেভাবে গত ১৫ বছর অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে শাসন করে দেশকে ধ্বংস করেছেন, তাকে আর রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া হবে না। যত ষড়যন্ত্র আর চক্রান্তই করা হোক না কেন, যতই ভার্চুয়ালি মিটিং করুক না কেন—দেশের মানুষ আর শেখ হাসিনাকে পুনরায় সুযোগ দেবে না।

আজ শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেলে নাটোরের মোমিনপুর কলেজ মাঠে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় এক জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

দেশের সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দুলু বলেন, যেভাবে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলন করে দেশকে ফ্যাসিজম থেকে মুক্ত করেছেন, সেভাবেই সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশের মাটিতে আর কখনও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। সবাইকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের অপতৎপরতা সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।