একটি জাতি গঠনে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। সেই মেরুদণ্ড গড়ার মহান দায়িত্ব পালন করে থাকেন শিক্ষকরা। মেধা বিকাশ, নীতি-নৈতিকতার শিক্ষাসহ জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ার তোলার পথ বাতলে দেন তারা। তাই শিক্ষকদের মানুষ গড়ার কারিগরও বলা হয়। আজকের দিনটি সেই শিক্ষকদের জন্য।

আজ (৫ অক্টোবর) বিশ্ব শিক্ষক দিবস। ১৯৯৫ সাল থেকে জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা ইউনেস্কোর সদস্যভুক্ত প্রতিটি দেশে এই দিনে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়ে থাকে। শিক্ষকদের সম্মান রক্ষা এবং সমাজে তাদের অবদান স্মরণে দিনটি পালন করা হয়ে থাকে।

এদিকে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়। কয়েকবছর ধরে সরকারিভাবে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হচ্ছে।

১৯৯৩ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ২৬তম সাধারণ সভায় ৫ অক্টোবর দিনটিকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরপর ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো দিবসটি পালন করা হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে বিভিন্ন দেশে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ পালন শুরু হয়। ইউনেস্কোর অনুমোদনে প্রতিবছর পৃথক প্রতিপাদ্যে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে একটি রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনজন ফায়ার ফাইটারসহ চারজনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অগ্নিকাণ্ডে জীবন রক্ষার মহৎ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের তিনজন সাহসী ফায়ার ফাইটারসহ চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। এটি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। আমি নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর সদস্যরা দিনরাত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় নিয়োজিত থাকেন। নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে তারা অন্যের জীবন বাঁচানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাদের এই আত্মত্যাগের কাছে জাতি চিরঋণী। আজকের এই দুর্ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দিল যে দায়িত্ব পালনের সময় তারা কত বড় ঝুঁকি বহন করেন। তাদের এ মহৎ ত্যাগ জাতির ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই দুর্ঘটনায় শুধু কয়েকজন প্রাণ হারায়নি, বরং দৃষ্টান্ত দেখলাম আমাদের সাহস, মানবিকতা আর কর্তব্যনিষ্ঠার প্রতীকের। ফায়ার সার্ভিস দেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং সাহসী বাহিনী। সংকটময় সময়ে তাঁরাই প্রথম ঝাঁপিয়ে পড়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। আজ সেই মহৎ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের জীবন দিতে হয়েছে। এটি সমগ্র জাতির জন্য গভীর শোকের বিষয়।

তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি সান্ত্বনা জানিয়ে বলেন, আপনাদের প্রিয়জনরা নিছক প্রাণ হারাননি, তারা জাতির জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। দেশের প্রতিটি মানুষ তাদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। আমি আপনাদের বেদনা ভাগ করে নিচ্ছি এবং দোয়া করছি এই কঠিন সময়ে আল্লাহ যেন আপনাদের ধৈর্য ও শক্তি দেন।

প্রধান উপদেষ্টা নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বলেন, এই বেদনাবহ ক্ষতি কখনো পূরণ হওয়ার নয়। তবে তাদের আত্মত্যাগ আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে— যাতে আমরা একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে পারি।

নির্বাচনি আসনের যে কোনো কেন্দ্রে কারচুপির অভিযোগ বা বিশৃঙ্খলা হলে, সেই আসনের ভোট স্থগিত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।

আজ রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে এমন কথা বলেন তিনি। সেইসাথে, নির্বাচন ঘিরে আয়োজিত সংলাপ কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে এই সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও মন্তব্য করেন সিইসি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ইসি বিশাল কর্মযজ্ঞে হাতে নিয়েছে। আরপিও সংশোধনসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। এ সময়, আইনে পোস্টাল ব্যালটের কথা থাকলেও এর প্রয়োগ ছিল না উল্লেখ করে সিইসি জানান, বর্তমান কমিশন এ নিয়ে কাজ করেছে।

তিনি আরও বলেন, পূর্বে নির্বাচনে সংশ্লিষ্টরা ভোট দিতে পারতেন না। তবে এবার নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতরাও ভোট দিতে পারবেন। এ ধরনের মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ বলেও জানান তিনি।

অপরদিকে, সংলাপে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী বলেন, জনগণের প্রত্যাশা পূরণই ইসির চ্যালেঞ্জ।

উল্লেখ্য, ইসি ঘোষিত এই কর্মপরিকল্পনায় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সুশীল সমাজ ও নারী সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম সম্পাদক ও সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধি, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে এই সংলাপ শেষ করা যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।  

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেয়া বক্তব্যকে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাষণের সঙ্গে তুলনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ‘এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রফেসর ইউনূস যখন কথা বলছিলেন, আমার বারবার মনে হচ্ছিল যে আমি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কণ্ঠ শুনছি।’

তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক, সমৃদ্ধ এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠন করার যে স্বপ্ন ছিল প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের, তার সমস্ত কথাগুলো প্রফেসর ইউনূসের কথায় বের হয়ে আসছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের তরুণ প্রজন্ম আধুনিকভাবে চিন্তা করে এবং বিএনপি তাদের আধুনিক চিন্তাভাবনা গ্রহণ করার মানসিকতা রাখে।’

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে তরুণ-তরুণীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

জুলাই আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রামী, লড়াই তাদের সহজাত বৈশিষ্ট্য। যেকোনো বিপদে, যেকোনো সংকটকালে তারা জানে কীভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে লড়াই করতে হয়। জুলাই মাস তা প্রমাণ করেছে। আমি সবার সামনে পরিষ্কার করে বলতে চাই- বিএনপি সেই কাজই করবে, যাতে বাংলাদেশ ও দেশের মানুষ উপকৃত হয়।’’

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশন উপলক্ষে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নিউইয়র্ক সফরে রয়েছেন ৬জন রাজনৈতিক নেতা, তাদের মধ্যে রয়েছেন মির্জা ফখরুলও।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, দুর্গাপূজা ভালোভাবে সম্পন্ন হবে। এ নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। তবে প্রতিবেশী দেশ ও ফ্যাসিস্টের সহযোগীরা বিভিন্ন গুজব সৃষ্টির চেষ্টা করবে।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে কোর কমিটির বৈঠক শেষে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ ও ফ্যাসিস্টের সহযোগিরা মিথ্যা খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রতিরোধ করে জনগণের সামনে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, সারাদেশে দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় সশস্ত্র বাহিনীর ১ লাখ সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া, পুলিশের ৭০ হাজার সদস্য ও ৪৩০ প্লাটুন মাঠে থাকবে। এর সাথে বিজিবি ও অন্যান্য বাহিনীও থাকবে। পাশাপাশি মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় থেকে অনেক স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ সময় পূজাকে ঘিরে গুজব ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্টের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পরও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা বলেছে। ভোট নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে মন্ত্রণালয়।

এ সময় খাগড়াছড়ির ঘটনা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা সব পক্ষকে নিয়ে বসেছেন বলেও জানান তিনি।

ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বার্ষিক গবেষণা অগ্রগতি পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন বিষয়ক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

ফরিদা আখতার বলেন, মুক্ত জলাশয়ে মাছ চাষের নামে যাকে-তাকে জমি ইজারা দেওয়া যাবে না। যারা মৎস্য ব্যবস্থাপনায় জড়িত, তাদেরকেই জমি ইজারা দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। মাছের প্রজনন পরিবেশ ঠিক রাখতে প্রজনন ক্ষেত্রগুলোতে পর্যটন (ট্যুরিজম) নিয়ন্ত্রণ করার কথাও বলেন। এ ছাড়া নির্বাচন প্রসঙ্গে বাইরের কারও কথায় মন্তব্য করবেন না বলেও জানান উপদেষ্টা।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে এক শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রকাশ করা হয় এটি।

মূলত, দুর্গাপূজা ঘিরে ফ্যাসিবাদী শাসনামলের মতো কেউ যাতে কোনোভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে, এমন যেকোনো অপচেষ্টার বিষয়ে সজাগ থাকতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের আবহমানকালের ধর্মীয়-সামাজিক মূল্যবোধের সৌন্দর্যই হলো বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের পারস্পরিক বন্ধুত্ব, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্ব। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়কে নিশ্চিন্তে উৎসব উদযাপনের পাশাপাশি সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আমাদের রাষ্ট্র এবং সংবিধানে দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা বিধানের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। সুতরাং, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

ধর্মীয় সম্প্রীতির বিষয়ে তিনি পবিত্র হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, যে ব্যক্তি রাষ্ট্রের নিরাপত্তাপ্রাপ্ত অমুসলিমকে নির্যাতন করে বা তার অধিকার খর্ব করে, কেয়ামতের দিন আমি সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে লড়বো।

তারেক রহমান অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদী শাসনামলে শারদীয় উৎসবকে ঘিরে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা দেখা গেছে। এ ধরনের পরিস্থিতি যেন আর তৈরি না হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক ও সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা উৎসাহ-উদ্দীপনা সহকারে নিশ্চিন্তে নিরাপদে সারাদেশে উৎসব-আনন্দ উদযাপন করুন। সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিন।

শুভেচ্ছা বার্তার শেষে দলের পক্ষ থেকে আবারও শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি— ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাবার অধিকার সবার।’

প্রবাসীদের ভোটার বানাতে লাগাতার বিদেশ সফর চলছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্মকর্তাদের। তবে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী থাকলেও মধ্যপ্রাচ্যে তাদের আগ্রহ কম। বরং ইতালি, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার মতো দেশগুলোর দিকেই নজর। নিবন্ধন চালু হওয়া দেশগুলোর দিকেও নেই দৃষ্টি। ফলে, প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনে অগ্রগতি নগন্য।

আগের কমিশন ২০২৩ সালে সৌদি আরবের রিয়াদ ও জেদ্দায় ভোটার নিবন্ধন চালু করে। দুই বছরে সেখানে এনআইডি পেয়েছেন মাত্র ৬৫৯ জন। যদিও সৌদিতে থাকেন সবচেয়ে বেশি ৪০ লাখ ৪৯ হাজার প্রবাসী।

মধ্যপ্রাচ্য ও আশপাশের আরও কয়েকটি দেশেও ২০২৩ সালে ভোটার নিবন্ধন চালু হলেও সবখানেই ভোটার হওয়ার হার নগণ্য। মালয়েশিয়ায় ৩১৯, কাতারে ৩৯৪ এবং কুয়েতে ২১১ জন প্রবাসী এনআইডি পেয়েছেন।

অন্যদিকে, এখনও কার্যক্রম শুরু হয়নি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান ও বাহরাইনে। দুই দেশে প্রবাসী থাকেন প্রায় সাড়ে আট লাখ।

প্রবাসী অধ্যুষিত মধ্যপ্রাচ্য বাদ দিয়ে বর্তমান কমিশনের কর্মকর্তারা যাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও ইতালিসহ উন্নত দেশগুলোতে। ভোটার কার্যক্রম তদারকি ও এনআইডি বিতরণ উদ্বোধন করতে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন গিয়েছিলেন দশ দিনের কানাডা সফরে।

গত এপ্রিলে কানাডায় যান ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ। কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার কদিন আগেই শেষ করে এসেছেন মালয়েশিয়া সফর। ইসি সচিব আখতার আহমেদ পাঁচদিনের সফর করেছেন জাপানে।

এছাড়া, এনআইডি বিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম সাত দিন অস্ট্রেলিয়া ও দুইদিনের জন্য সিঙ্গাপুর সফর করেছেন। কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ অক্টোবরে যাচ্ছেন সুইডেনে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাসনিম মাহবুব বললেন, আমাদের দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের একটা প্রবণতা আছে, কথায় কথায় দেশের বাইরে যাওয়ার। বেড়ানোর জন্য তো উন্নত বিশ্ব ভালো। কারণ খরচ তো সরকারই দিচ্ছে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যবাসী প্রবাসীদের উপেক্ষা করার সুযোগ নাই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রবাসী ভোটার সংখ্যার আধিক্য যেখানে সেখানেই সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি।

নির্বাচন বিশ্লেষক আব্দুল আলিম বলেন, ব্যাপক সচেতনতামূলক কর্মসূচি লাগবে, এই যে আমাদের দূতাবাসগুলো আছে, হাইকমিশন আছে, সারা দুনিয়াতে ভোটারদের বুঝাতে হবে তারা কীভাবে ভোটটা দেবেন, ডামি ভোটের আয়োজন করতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যে যারা থাকেন, তারা কিন্তু অভিবাসী শ্রমিক, তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা যারা কানাডা, আমেরিকা, জাপানে থাকে তাদের চেয়ে অনেক কম, কাজে তাদেরকে বুঝাতে সময় লাগবে। এগুলো মধ্যপ্রাচ্যে করতে হবে। না হলে এরা কিন্তু তখন ভোটদানে ব্যর্থ হবে।

এখন পর্যন্ত নগণ্য পরিমাণ এনআইডি প্রদান সম্পন্ন করেই সন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন। ইসির দাবি, মধ্যপ্রাচ্যে অনেক প্রবাসীর ভোটার নিবন্ধন আগেই হয়ে গেছে।

ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, আমাদের নিবন্ধন কার্যক্রম মধ্যপ্রাচ্যে শুরু হয়েছে আগেই। যেখানে যাওয়া হয়েছে সেখানে আর বাড়তি দ্বিতীয়বার যাওয়ার আবশ্যকতা থাকলে অবশ্যই যাবো। আর আমাদের দূতাবাসগুলো তো আছেই। তারা এ ব্যাপারে আমাদের প্রতিনিধি হিসেবে তো কাজ করছেন। বরং মোটামুটিভাবে আমরা যতটুকু না গেলে নয় সেটুকুর ভেতরে সীমিত থাকতে চাই।

এদিকে, প্রবাসীদের অভিযোগ, একদিকে ইসির তদারকির অভাব, অন্যদিকে দূতাবাসের অসহযোগিতা নিবন্ধন কার্যক্রমে ধীর গতির মূল কারণ। তাই বিদেশ ভ্রমণের চেয়ে এনআইডি প্রক্রিয়ার জটিলতা দুর করার দাবি তাদের।

আওয়ামী লীগের দোসরদের সঙ্গে বিএনপির কোনো আতাঁত নেই। আর তাদের দোসররা খোলস পাল্টাতে না পারার বিষয়ে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নবনির্বাচিত পিরোজপুর জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, নিউইয়র্কে অন্তর্বর্তী সরকার দক্ষতা দেখাতে পারলে ফ্যাসিবাদের দোসররা এম কর্মকাণ্ড ঘটানোর সাহস পেত না। সরকার কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় দোসরদের প্রেতাত্মারা দেশে নামতে পারছে, বিদেশের মাটিতে কার্যক্রম চালাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এখনও অর্থ লুটপাটকারীদের টাকা দেশে ফেরত আনতে পারেনি, বিচারও করতে পারেনি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দুদক দৃশ্যমান নয়, অথর্ব হিসেবে কাজ করছে।

নিউইয়র্কে মির্জা ফখরুলকে কেউ লাঞ্চিত করেনি দাবি করে রিজভী বলেন, নানা অপপ্রচার শুরু হয়েছে তাকে নিয়ে। এসবের সবকিছু মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

এখনও ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতা রিজভী নেতাকর্মীদের ঐকবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তৃণমূলের মাধ্যমে দল এমনভাবে সুসংহত করতে হবে যেন জনগণ ধানের শীষে ভোট দেয়।

ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের প্রতীক হিসেবে শেখ হাসিনাকে উল্লেখ করেন। বলেন, বহুধরনের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত মাস্টারপ্ল্যান চলছে। জুলাই শহীদদের রক্ত যেন বৃথা না যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দুই দিন আগে অরক্ষিত অবস্থায় বিপুল ব্যালট পেপার থাকার অভিযোগ করে আসছেন ছাত্রদল সমর্থিত ভিপিপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। তার অভিযোগ, এ সংক্রান্ত অভিযোগ দিলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, এমনকি জবাবও দেয়নি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন এই ছাত্রদল নেতা।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তিনি তার ভেরিফায়েড আইডিতে লেখেন, নীলক্ষেতে ব্যালট পেপারের ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়া যাবে না, সত্য উন্মোচিত হবেই। স্বচ্ছতা আদায় করা আমাদের দায়িত্ব। সবকিছু খুব দ্রুতই স্পষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ। মিথ্যার শক্তিতে বিভ্রান্ত হবেন না।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কার্যালয়ে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অভিযোগ জানাতে যান আবিদসহ ভিপিপ্রার্থী উমামা ফাতেমা, আব্দুল কাদেরসহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী।

গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ডাকসু নির্বাচন। নির্বাচনের দিনই ছাত্রদলসহ বেশ কয়েকটি প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তোলে। মঙ্গলবার দুপুরে এসব অভিযোগ নিয়ে তিনটি প্যানেলের পক্ষ থেকে উপাচার্যের কার্যালয়ে যান ভিপি পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান, উমামা ফাতেমা ও আব্দুল কাদেরসহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী।

সাক্ষাৎ শেষে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান জানান, নীলক্ষেতের গাউছুল আজমের একটি ছাপাখানা থেকে অরক্ষিত অবস্থায় ব্যালট পাওয়া যায়। কিন্তু সে বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ৬টি মামলা চলমান রয়েছে। নভেম্বরের মাঝে সেই মামলার রায় হবে বলে আশা প্রকাশ করেন দুদক চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন।

আজ বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুর্নীতি প্রতিরোধ সংক্রান্ত কার্যক্রমকে বেগবান ও গতিশীল করতে দুদক ও টিআইবির মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। সমঝোতা স্মারকে সই করেন দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এবং টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

কর্তৃপক্ষ জানায়, সমঝোতা স্মারকের আওতায় দুদক ও টিআইবি দুর্নীতি প্রতিরোধে গণসচেতনতা, পদ্ধতিগত উৎকর্ষ এবং নৈতিকতার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, জনসম্পৃক্ততা, অধিপরামর্শ ও প্রচারাভিযান পরিচালনার পাশাপাশি যৌথ উদ্যোগে গবেষণা, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্যারিসের মেয়র অ্যান হিদালগো সাক্ষাৎ করেছেন। এসময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন গণতন্ত্রের জন্য নতুন যুগের সূচনা করবে।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টার অবস্থানরত হোটেলে মেয়র এসে সাক্ষাৎ করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সাক্ষাৎকালে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম, ক্রীড়া ও অলিম্পিকে সামাজিক ব্যবসার ভূমিকা এবং বৈশ্বিক শরণার্থী সংকট—বিশেষ করে রোহিঙ্গা মানবিক সংকট নিয়ে আলোচনা হয়।

অলিম্পিক প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, প্যারিস ২০২৪ অলিম্পিককে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সামাজিক ব্যবসার ইভেন্টে রূপান্তরে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতের সব অলিম্পিক, বিশেষ করে আসন্ন লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক, কার্বন নিরপেক্ষ হতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে রয়েছে এবং আগামী সাধারণ নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি আরও বলেন, আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হবে একটি ভিত্তিগত নির্বাচন, যা দেশের গণতন্ত্রের জন্য নতুন যুগের সূচনা করবে।

মেয়র হিদালগো এই সংকটকালীন সময়ে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি আপনার নেতৃত্বের প্রশংসা করি। আপনি অসাধারণ কাজ করেছেন।

উভয় নেতা কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার মানবিক সহায়তার জন্য অর্থায়ন বাড়ানোর জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

মেয়র হিদালগো বিশেষভাবে বিশ্বব্যাপী শরণার্থী শিবিরগুলোর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের আহ্বান জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে রোহিঙ্গারা একদিন নিরাপদে ও মর্যাদার সাথে তাদের স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে সক্ষম হবে।

এসময় প্রধান উপদেষ্টা জানান, জাতিসংঘ আগামী সপ্তাহে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করছে, যার লক্ষ্য হলো সাম্প্রতিক দশকগুলোর অন্যতম গুরুতর এই শরণার্থী পরিস্থিতি নিয়ে বৈশ্বিক মনোযোগ নতুন করে কেন্দ্রীভূত করা।

তিনি আরও জানান, সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য তিনি মেয়র হিদালগোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকারের সিনিয়র সচিব ও এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।