জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) এবং প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন জাতিসংঘের উদ্যোগে আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

আজ রোববার (১৭ আগস্ট) ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

খলিলুর রহমান বলেন, এই সম্মেলন হলো রোহিঙ্গাদের জন্য এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য আশু সমাধানের পথ নির্দেশিকা দেওয়ার একটি স্থায়ী সুযোগ। আমরা সেই কারণে রোহিঙ্গাদের ভয়েস, তাদের কথা, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, তাদের স্বপ্ন, এসব আমরা সেখানে নিয়ে যেতে চাই।

এ সময়, সম্মেলনটির প্রস্তুতি হিসেবে আগামী ২৫শে আগস্ট কক্সবাজারে ‘অংশীজন সংলাপ: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য প্রাপ্ত বার্তা’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের কথাও জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, কক্সবাজারের সম্মেলনটি জাতিসংঘের একটি বৃহত্তর সম্মেলনের প্রস্তুতির অংশবিশেষ। এই সম্মেলনটি রোহিঙ্গাদের জন্য এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য এই সমস্যার একটি স্থায়ী ও প্রকৃত সমাধান খুঁজে বের করার পথনির্দেশিকা দেয়ার একটি বড় সুযোগ।

ড. খলিলুর রহমান আরও বলেন, একসময় রোহিঙ্গা ইস্যুটি আন্তর্জাতিক আলোচনার এজেন্ডা থেকে প্রায় বাদ পড়ে যাচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা গত বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজনের জন্য সকল সদস্য রাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। এই আহ্বানে তাৎক্ষণিকভাবে এবং সর্বসম্মতিক্রমে সাড়া পাওয়া যায় এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ এই সম্মেলন আহ্বানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। উল্লেখ্য, বিশ্বের ১০৬টি দেশ এই সম্মেলনকে স্পন্সর করেছে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসির সাথে বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, ‘না ভোট’ প্রবর্তনের বিষয়টি বিএনপির কোনো দাবি ছিল না। বরং এটি কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তির সুপারিশের ভিত্তিতে এসেছে।

আজ রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেলে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে সাক্ষাৎ করেন বিএনপির ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে থাকা এ দলে ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৈঠকে সিইসির পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন একজন নির্বাচন কমিশনার ও ইসির সিনিয়র সচিব।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের নজরুল ইসলাম বলেন, ‘না’ ভোট আমাদের দাবির ভিত্তিতে হয়নি। কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তির সুপারিশের প্রেক্ষিতে এসেছে। এখন যা করা হচ্ছে তাতে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই।

এ সময়, মূলত নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতেই তারা বৈঠকে গিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। বিশেষ করে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ কীভাবে হচ্ছে, সে বিষয়ে পরিষ্কার হওয়ার চেষ্টা করেছে বিএনপি। এছাড়া নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয় বলে উল্লেখ করেন নজরুল ইসলাম খান।

অপরদিকে, প্রবাসী ভোটারদের প্রসঙ্গে সিইসি প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছেন, যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) এবং ই-পাসপোর্ট রয়েছে, তারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবেন। এ সময়, শুধু এনআইডি ও ই-পাসপোর্টধারী নয়, বরং সাধারণ পাসপোর্টধারী প্রবাসীদেরও ভোটাধিকার নিশ্চিতের দাবি জানায় দলটি।

আসন ভাগাভাগি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, এ বিষয়ে এখনো দলের ভেতরে কোনো আলোচনা হয়নি। তফসিল ঘোষণার পরেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হবে।

গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার ও জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই— এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

রোববার (১৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় কবিতা পরিষদের আয়োজনে ‘গণতন্ত্র উত্তরণে কবি সাহিত্যকদের ভূমিকা ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশ যাতে চরমপন্থি ও মৌলবাদের অভয়ারণ্যে হয়ে উঠতে না পারে, সেই প্রত্যাশা করে বিএনপি। এজন্য সবাইকে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, দেশের মালিকানার একমাত্র দাবিদার এদেশের নাগরিক— এই সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে মানুষের ভোটাধিকারের প্রশ্নে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, বাক স্বাধীনতার পক্ষে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে৷

তিনি আরও বলেন, দেশে জবাবদিহিতামূলক অবস্থা তৈরি করা একান্তই প্রয়োজন। এটি সম্ভব একমাত্র মানুষের ভোটের অধিকার রক্ষার মধ্যমে।

বিতারিত স্বৈরাচারের পুনর্জাগরণ প্রতিহত করতে সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যের প্রতিধ্বনি উচ্চারিত হোক।

বিদেশে বাংলাদেশের সব কূটনৈতিক মিশন, কনস্যুলেট, কূটনীতিকদের অফিস ও বাসভবন থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি সরানোর নির্দেশনা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিদেশি বিভিন্ন মিশন সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

জানা গেছে, ছবি সরানোর বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি বা ই-মেইল না দিলেও টেলিফোনে অঞ্চলভিত্তিক কয়েকজন রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারকে এই নির্দেশনা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একইসাথে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার তথ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত দূতদের অন্যান্য মিশনে জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে, এখনো দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপের কয়েকটি মিশন এই নির্দেশনা পায়নি। তবে বিদেশের দুটি মিশন প্রধান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, অন্যান্য মিশনকে অবহিত করার পাশাপাশি ছবি সরানোর বিষয়টিও তদারকি করবেন তারা।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৬ হাজার ৫০৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় সংবলিত ১০টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। রোববার (১৭ আগস্ট) সকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে একনেক সভায় এ প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়।

সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ জানান, জুলাই মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ১ শতাংশেরও কম। এটি ভালো লক্ষণ নয়।

সভায় ৫১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, এর জন্য পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নিতে হবে।

এ ছাড়া আরও দুই বছর সময় বাড়ানো হয়েছে ঢাকা ওয়াসার পানি পরিশোধন প্রকল্পের জন্য। ৫,২৪৮ কোটি টাকার এ প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা।

পানি সংকট নিরসনের লক্ষ্যে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়েছিল ‘ঢাকা পরিবেশবান্ধব টেকসই পানি সরবরাহ’ প্রকল্প। ওয়াসার এ প্রকল্পে মেঘনা নদী থেকে পানি এনে নারায়ণগঞ্জের গন্ধর্বপুরে ৫০০ মিলিয়ন লিটার দৈনিক ক্ষমতার বিশাল শোধনাগার নির্মাণ করে রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টা পরিশোধিত পানি সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।

প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা ছিল এবং তৎকালীন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন, উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা গেলে অপচয় ও দুর্নীতি কমবে। পাশাপাশি প্রকল্প নির্মাণে বিদেশি ঠিকাদারদের ওপর নিভর্শীলতা কমাতে হবে।

শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে পতেঙ্গায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, সীমিত সম্পদের কথা মাথায় রেখে অপচয় কমাতে হবে। আমাদের সড়ক নির্মাণ ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ার তুলনায় বেশি। প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশি সময় লাগলে ব্যয়ও বাড়ে। কারণ মুদ্রার মান ও জিনিসপত্রের দাম প্রতিনিয়ত বদালাতে থাকে।

তিনি আরও বলেন, এই পাইপলাইন ব্যবহার করে তিনটি তেল বিপণন কোম্পানি জ্বালানি সরবরাহ করবে। চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লার বরুড়া হয়ে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল এবং ঢাকার ফতুল্লায় জ্বালানি তেল যাবে। এর ফলে তেল চুরি, অপচয় ঠেকানোসহ কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত তারিখেই নির্বাচন হবে। জনগণ নির্বাচনমুখী হলে নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই- বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কৃষি মার্কেট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকের এসব কথা বলেন তিনি।

মোহাম্মদপুর ও মিরপুরে চাঁদাবাজি বেশি হয় এমনটা স্বীকার করে নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, চাঁদাবাজ যেই হোক তাকে ছাড়া দেয়া হবে না।

নির্বাচন প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে তারিখ ঘোষণা করেছে, সেই তারিখ অনুযায়ী নির্বাচন হবে। স্যারের কথার উপরে আমাদের কোনো কথা নেই।

তিনি বলেন, ক্ষমতা জনতার হাতে, জনগণ যদি নির্বাচনমুখী হয় তাহলে নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না।

এসময় একজন সাংবাদিক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলেন, একজন উপদেষ্টাকে ঘিরে চাঁদাবাজি নিয়ে নানা রকম অভিযোগ আসছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এবারও বিতর্কিত নির্বাচন হলে দেশ অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, যারা ইনিয়ে বিনিয়ে বিভিন্ন ধরণের কথা বলে নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়, তারা গণতন্ত্রের শক্তি নয়।

শনিবার (১৬ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে যুবদল আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বেগম খালেদা জিয়া দিকনির্দেশনা দিচ্ছে জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশনা অনুযায়ী আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে গণতন্ত্রের পথে হাঁটছে বিএনপি। গণতন্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হলে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিকে জাতীয় ঐক্যে পরিণত করতে হবে।

তবে নির্বাচন নিয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন এই বিএনপি নেতা। বলেন, যারাই নির্বাচন বিলম্বের জন্য ভিবিন্ন ধরণের কথা বলছে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে দেশের জনগণ। যারা ভিন্ন রকম যুক্তি তুলে গণতন্ত্রের যাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে, তারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়।

সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের আরাধ্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি ও শুভ জন্মাষ্টমী আজ। শনিবার (১৬ আগস্ট) এ উপলক্ষে দেশের হিন্দু সম্প্রদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ–উৎসবের মধ্য দিয়ে জন্মাষ্টমী পালন করবে।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মতে, প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বছর আগে দ্বাপর যুগে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে শ্রীকৃষ্ণ ধরাধামে আবির্ভূত হন। অত্যাচারী ও দুর্জনের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রিয় সাধুজনের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কংসের কারাগারে জন্ম নেন তিনি। শিষ্টের পালন ও দুষ্টের দমনে তিনি ব্রতী ছিলেন। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণ তাই ভগবানের আসনে অধিষ্ঠিত।

সনাতন ধর্মানুযায়ী যখনই পৃথিবীতে অধর্ম বেড়ে গিয়ে ধার্মিক ও সাধারণের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে, তখনই দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের মাধ্যমে ধর্মের রক্ষার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অবতার রূপে ধরায় নেমে আসেন।

আজ সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করবে বিশেষ নিবন্ধ।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল শুক্রবার এক বাণীতে তিনি বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আবহমানকাল থেকে এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আজ বেলা ৩টায় ঐতিহাসিক কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিল ও রাতে শ্রীকৃষ্ণপূজা অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর পলাশীর মোড়ে বেলা তিনটায় কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিলের উদ্বোধনে থাকবেন তিন বাহিনীর প্রধানরা।

সিলেটের ভোলাগঞ্জ থেকে সাদাপাথর লুটের ঘটনায় অজ্ঞাত ২ হাজার জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাতে মামলা দায়ের করেন খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ারুল হাবীব।

মামলার এজাহারে বলা হয়, কিছু দুষ্কৃতিকারী গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে গেজেটভুক্ত ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি হতে অবৈধ এবং অননুমোদিতভাবে কোটি টাকার পাথর লুটপাট করছে। যারা এই ঘটনায় জড়িত, তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

এজাহারে আরও বলা হয়, সরকারি গেজেটভুক্ত কোয়ারি থেকে এ ধরনের লুট বা চুরি খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন, ১৯৯২-এর ধারা ৪(২)(ঞ) এবং খনি ও খনিজ সম্পদ বিধিমালা, ২০১২-এর বিধি ৯৩(১)-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এছাড়া দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ৩৭৯ ও ৪৩১ ধারার অপরাধও সংঘটিত হয়েছে।

পাথর লুটে জড়িতদের তদন্তের মাধ্যমে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সিলেট থেকে লুট হওয়া আনুমানিক ১ লাখ ঘনফুট পাথর এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবেশকর্মী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ভাষ্যমতে, এক বছরে সিলেট থেকে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ ঘনফুট পাথর লুট হয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য দুই শত কোটি টাকার বেশি।

গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে বাংলাদেশে আবারও পুরোনো সমস্যাগুলো ফিরে আসবে— এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সম্প্রতি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে সিঙ্গাপুরভিত্তিক চ্যানেল নিউজ এশিয়া (সিএনএ) টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তার সরকার বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছেন। দায়িত্ব নেয়ার পর যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিলো, সেগুলো অর্জনের কাছাকাছি পৌঁছেছে বলেও জানান তিনি।

নির্বাচনের পরে সরকারে থাকার কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়ে দেন প্রধান উপদেষ্টা। বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে জাতির যে আকাঙ্ক্ষা, তা নিশ্চিত করাই তাদের মূল লক্ষ্য। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন— এই তিনটি বিষয় প্রাধান্যের তালিকায় সবার আগে বলেও জানান তিনি।

নির্বাচন ও সংস্কার— কোনটি আগে? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি আমরা নির্বাচন দিয়ে শুরু করি তাহলে আমাদের সংস্কারের প্রয়োজন নেই, বিচারের প্রয়োজন নেই। কারণ, আমাদের পক্ষ থেকে নির্বাচন হলে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে। তাহলে সবকিছু নির্বাচিতদের হাতে চলে যাবে। অন্য দুটি কাজ না করে শুধু নির্বাচন হলে ফের সেই পুরোনো সমস্যায় ফিরে যাওয়াটাই স্বাভাবিক গন্তব্য হবে, যা ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন ঘটাবে। কারণ, সেই পদ্ধতি কোনো আইনের শাসন তৈরি করতে কাজ করবে না।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও দ্বিপাক্ষিক পররাষ্ট্রনীতি ইস্যুতেও কথা বলেন ড. ইউনূস। পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করার পাশাপাশি জানান, ভারতের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক রাখতে চায় বাংলাদেশ। নেপাল-ভুটানের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ‘সেভেন সিস্টার্স’ এলাকাকে সামগ্রিকভাবে ভালো একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল বানানোর দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।

আজ ১৫ আগস্ট। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ইতিহাসের এই দিনেই সপরিবারে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। গতবারের মতো এবারও দিবসটি এসেছে ভিন্ন আবহে।

আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিন মেয়াদে ১৫ আগস্ট ‘জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে পালিত হতো। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশত্যাগ করেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। গত বছর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ১৫ আগস্টের জাতীয় শোক দিবসের সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়।

১৫ আগস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। সেদিন ভোররাতে কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনে সপরিবারে হত্যা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই তারা থামেনি, বুলেটের আঘাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন তার সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল।

নির্মম ওই হত্যাযজ্ঞে প্রাণে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ ও মেয়ে বেবি, সুকান্তবাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবলীগ নেতা শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, আবদুল নাঈম খান রিন্টু, কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন।

ওই ঘটনার সময় মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওই বছর রাষ্ট্রীয়ভাবে ১৫ আগস্টকে প্রথম শোক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এলে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। তবে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আবারও ১৫ আগস্টকে রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। যদিও ফেসবুকের মতো সামাজিকমাধ্যমে আলোচনা ও কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দলটি। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ১৫ আগস্ট উপলক্ষ্যে শোক জানানো হয়েছে।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেখানে পুলিশের সাঁজোয়া যান (এপিসি) ও রায়টকার মোতায়েন করা হয়েছে। বিকেল থেকেই এলাকার প্রবেশপথগুলোতে ব্যারিকেড বসিয়ে যানবাহন ও পথচারীর চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। একইসঙ্গে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য।

৩২ নম্বর এলাকায় ‘সন্দেহজনক’ ঘোরাঘুরির অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যদিও রাত ১২টার দিকে শুক্রাবাদ মোড়ে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।