ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ সামনে রেখে দেশের ৬৪ জেলায় নতুন করে পুলিশ সুপার পদায়ন করেছে সরকার। তারা নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন করবেন।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখা থেকে এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে, গত সোমবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় লটারি করে এসপি নির্বাচন করা হয়।

অবিলম্বে এ আদেশ কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

লটারির মাধ্যমে চূড়ান্ত হওয়া এসপিদের তালিকা:

May be an image of blueprint, ticket stub and text

 

May be an image of ticket stub and text

 

May be an image of text

May be an image of blueprint, ticket stub and text

দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এবং সুষ্ঠু নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনকে সেনাবাহিনী সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

রোববার (২৩ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান এ কথা বলেন। 

অনুষ্ঠানে বীরত্বপূর্ণ কাজ ও বাহিনীতে অসামান্য অবদানের জন্য ৬৪ সেনাসদস্যকে পদক এবং ৭৫ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সম্মাননা প্রদান করেন সেনাপ্রধান। এরমধ্যে ২০২৪-২০২৫ ও ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরে নানা অবদানের জন্য ৯ জনকে সেনাবাহিনী পদক, ১৭ জনকে অসামান্য সেবা পদক এবং ৩৮ সেনা সদস্যকে বিশিষ্ট সেবা পদক প্রদান করা হয়।

এসময় সেনাপ্রধান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের দেখানো পথ অনুযায়ী দেশের স্বার্থে, দেশের মানুষের কল্যানে কাজ করে যাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।  

 

বাংলাদেশে সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। রোববার (২৩ নভেম্বর) সকালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী অবস্থানরত হোটেলে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ দলটির অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তবে তাদের মধ্যে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা জানা যায়নি।

এর আগে, গতকাল শনিবার সকালে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় আসেন প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে। এরপর বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা এবং ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।

জাতীয় নির্বাচনে সারা দেশকে লাল, হলুদ, সবুজ তিন ভাগে ভাগ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। 

রোববার (২৩ নভেম্বর) সকালে কমনওয়েলথ এর ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে আসে।দেখা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে।

এক ঘণ্টা আলোচনার পর সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, গণভোটকে বাড়তি দায়িত্ব ও চ্যালেঞ্জ মনে করে কমনওয়েলথ। নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি নিয়ে আশাবাদী তারা।বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অংশগ্রহণ গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে বলে মনে করে কমনওয়েলথ। 

তবে তারা প্রতিনিধি দল পাঠাবে কি না সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। দুই মামলার একটির অভিযোগ গঠনের শুনানি ৩ ডিসেম্বর ও অন্যটির ৭ ডিসেম্বর। 

রোববার (২৩ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন।

এর আগে, গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় অভিযুক্ত ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ হাজির করা হয়। এদিন মামলার পরবর্তী শুনানির দিন সেনাকর্মকর্তাদের সশরীরে উপস্থিতির পরিবর্তে ভার্চুয়ালি হাজিরা দেয়ার অনুমতি চেয়ে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেছে তাদের আইনজীবীরা।

এদিকে, আজ রোববার শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রচারিত ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের ছবি  অপসারণ করতে বিটিআরসির ও তথ্য সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি আদালত অবমাননাকর মন্তব্য অপসারণেরও নির্দেশ দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৮ অক্টোবর এই দুই মামলা এবং অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা আরেকটি মামলায় ২৫ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। একইদিন প্রসিকিউশন ফরমাল চার্জ দাখিল করে।

পরবর্তীতে ২২ অক্টোবর সকালে সেনাবাহিনীর হেফাজতে থাকা ১৫ কর্মকর্তাকে সাধারণ পোশাকে বিশেষ প্রিজন ভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। শুনানি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। পরে তাদের ঢাকা সেনানিবাসের ঘোষিত সাব-জেলে নেয়া হয়।

এর আগে, পৃথক দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালকসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল-১।

ভূমিকম্পে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘরবাড়ি ধস এবং অন্যান্য দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে শোকবার্তাটি পাঠানো হয়।

শোকবার্তায় ভূমিকম্পে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পাশাপাশি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ বিবরণ সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকল দফতরকে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে উদ্ধার কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ সময় জনগণকে ধৈর্য ও সাহস ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার কথা বলেন তিনি।

এতে আরও বলা হয়, এরইমধ্যে এক শিশুসহ কমপক্ষে পাঁচজনের মৃত্যু খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, গাজীপুরে কারখানা শ্রমিক ও ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একশর কাছাকাছি ব্যক্তি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে। সেটিই আমাদের স্বপ্ন।  এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, নির্বাচন আনন্দ ও উৎসবমুখর করতে সবাইকে নিয়ে চেষ্টা করতে হবে।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের আয়োজনে দেয়া বক্তব্যে একথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে আগামী নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ, এই নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের পথে যাত্রা করবো।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম ১৯৭১ সালের রণক্ষেত্রে। ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর সেনাবাহিনীর সাথে নৌ ও বিমান বাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়েছিল বলে ২১ নভেম্বরকে মুক্তিযুদ্ধের একটি মাইলফলক হিসেবে গৌরবের সাথে পালন করা হয়। তবে মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর সংগ্রামের সূচনা ঘটে ২৫শে মার্চের রাত থেকেই। আমরা যদি বিজয় অর্জন না করতাম তাহলে এই বীর সেনাদের মৃত্যুদণ্ড ছিল অনিবার্য। অসহনীয় হয়ে যেত তাদের পরিবারের সকল সদস্যের জীবন। 

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি দেশ গঠন ও জাতীয় দূর্যোগ মোকাবেলায় আপনারা সর্বদাই জনগণের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। ২০২৪ এর ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান ও চলমান দেশ পুনর্গঠন ও সংস্কারের কাজেও সশস্ত্র বাহিনী বরাবরের মতই মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে অব্যহতভাবে দেশের মানুষের আস্থার প্রতিদান দিয়ে যাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি গণতান্ত্রিক এবং নিয়মতান্ত্রিক নেতৃত্বের প্রতি অনুগত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী তাদের পেশাগত দক্ষতা ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে দেশের জন্য ত্যাগ ও তৎপরতার এই ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখবে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তোরণে আসন্ন নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। একটি নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনে আমি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদেরকে দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, একটি শান্তি প্রিয় জাতি হিসেবে আমরা সকল বন্ধু রাষ্ট্রের সাথে সম্মানজনক সহাবস্থানে বিশ্বাসী। তথাপি, যেকোন আগ্রাসী বহিঃশত্রুর আক্রমন থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমাদেরকে সদা প্রস্তুত এবং সংকল্পবদ্ধ থাকতে হবে। এ লক্ষ্যে আমাদের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর আধুনিকায়ন, উন্নত প্রশিক্ষণ এবং উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাহিনীগুলোতে যুগোপযোগী প্রযুক্তি সংযোজনের প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে।

বক্তব্যের শুরুতে হঠাৎ ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ এবং ২৪ এর অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করেন তিনি। 

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সেনাকুঞ্জে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থার বিষয়ে খোঁজ নেন এবং সুস্থতা কামনা করেন। এ সময় খালেদা জিয়া প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি প্রধান উপদেষ্টার সহধর্মিণী আফরোজী ইউনূসের শারীরিক অবস্থারও খোঁজ খবর নেন।

এর আগে, শুক্রবার বিকেল ৪টায় খালেদা জিয়া রাজধানীর গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে সেনাকুঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন। প্রায় আধঘণ্টা পর সেনাকুঞ্জে পৌঁছান তিনি। এ সময় তার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান সিঁথি ও ভাই সাঈদ ইসকান্দারের স্ত্রী নাসরিন ইসকান্দার সঙ্গে ছিলেন।

সেনাকুঞ্জে পৌঁছানোর পর খালেদা জিয়ার স্বাগত জানানো হয়। এরপর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও খালেদা জিয়ার মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়। এ সময় পাশেই ছিলেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। এরপর এই দুই নেতার মধ্যে একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়াও সশস্ত্র বাহিনীর অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার, সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ যোগ দেন।

ফেব্রুয়ারির নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর ও আনন্দময় করতে সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে মিরপুরে সামরিক বাহিনীর কমান্ড ও স্টাফ কলেজে গ্র্যাজুয়েশন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সামরিক বাহিনী সম্মুখে থেকে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা। এসময় শীর্ষস্থানীয় সামরিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে- ডিএসসিএসসির বিশ্বব্যাপী অর্জিত সুনামের ভূয়সী প্রশংসা করেন ড. ইউনূস।

প্রসঙ্গত, এবার বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ৫৮ জন অফিসারসহ সর্বমোট ৩১১ জন প্রশিক্ষণার্থী গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। কোর্স সম্পন্নকারী তরুণ অফিসারদের অর্জিত জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।

অনুষ্ঠানে সরকারের উপদেষ্টারা, মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং তিন বাহিনীর প্রধানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

গণঅভ্যুত্থানে হত্যা ও নির্যাতনের বিচার এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনকে ঐতিহাসিক রিপোর্ট হিসেবে ঘোষণা দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। আজ বুধবার (১৯ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এই রায় প্রকাশ করা হয়।

এর আগে গত বছরের আগস্টে গণঅভ্যুত্থান চলাকালে মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক দলিল’ হিসেবে ঘোষণার রায় দেয় হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদের করা রিটের রুল শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।

সেই সঙ্গে রায়ে ওই প্রতিবেদনকে ‘জুলাই বিপ্লব-২০২৪’ হিসেবে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি জাতীয় আর্কাইভ ও সংশ্লিষ্ট সরকারি পাবলিক লাইব্রেরিসহ রাষ্ট্রীয় সংরক্ষণাগারে সংরক্ষণ, সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে জনগণের সচেতনতা, একাডেমিক গবেষণা এবং আইনি প্রয়োজনে সহজলভ্য করতে নির্দেশ দেয়া হয়।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির রায় ঘিরে রাজধানীতে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের চারপাশ কড়া নিরাপত্তায় মোড়ানো হয়েছে। গেটের সামনে সেনাবাহিনীকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। আর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে ও ভেতরে পুলিশ র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। হাইকোর্ট ও ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রাজধানীর দোয়েল চত্বর থেকে শিক্ষাভবন অভিমুখী সড়কে যানচলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সন্দেহভাজনদের তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। 

তবে রাজধানীতে অফিসগামী ও সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক চলাচল দেখা গেছে। সড়কে রয়েছে যানবাহনের ভিড়, চলছে গণপরিবহন ও মেট্রোরেল। পুলিশ বলছে, যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে মাঠে রয়েছে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। এর মধ্যে সাবেক আইজিপি মামুন ‘রাজসাক্ষী' হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলার রায়ের এই দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এর আগে, গত ১ জুন শেখ হাসিনাসহ এই তিন আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে এই তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়।

অভিযোগগুলো হলো— গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান; হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ প্রদান; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পোড়ানোর অভিযোগ। এই পাঁচ অভিযোগে তিন আসামির বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।

আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ মামলার একমাত্র গ্রেফতারকৃত আসামি।

বিএনপি কোন রায় প্রত্যাশা করে না, রায় দেয়া বা না দেয়া আদালতের বিষয়। তবে অপরাধী যেই হোক না কেন, তার অপরাধের ন্যায় বিচার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা যে সকল অপরাধ করেছে, তা বর্ণনা করার মতো নয়। দেশের জনগণ ন্যায়বিচার চায়। আজকের রায় নিশ্চয়ই দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, বিএনপি শান্তিময় বাংলাদেশ চায়, যেখানে সব মতের মানুষ নির্ভয়ে তাদের মতামত দেবে। যারা অপরাধ করেছে, তাদের দায়িত্বের আওতায় আনা এবং শাস্তি নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক। দেশের প্রতিটি নাগরিক আশা করছেন যে, আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। জনগণ ন্যায্য বিচার প্রত্যাশা করছে, যা আদালতের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।

তিনি আরও বলেন, আগামী ২০ নভেম্বর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কেককাটা থেকে শুরু করে কোন ধরনের অনুষ্ঠান না করার নির্দেশ বিএনপির। কেউ আয়োজনের চিন্তা করলে সেই অর্থ দান করার আহ্বান জানান দলটির এই সিনিয়র নেতা।