‘২৪ এর গণঅভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করতে সকল ধরনের আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলছেন, সমীকরণ এখনও শেষ হয়নি। যারা এখনই সমীকরণ মিলিয়ে ফেলছে তারা ভুল পথে হাটছে। গত এক বছর ছাড় দিয়েছি, জুলাই ঘোষণাপত্রে ছাড় দিয়েছি, জুলাই সনদে এক শতাংশও ছাড় দেয়া হবে না।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে জাতীয় যুবশক্তি আয়োজিত ‘জাতীয় যুব সম্মেলনে’ এমন মন্তব্য করেন তিনি।

অভ্যুত্থানের শক্তি এখনও রাজপথে আছে এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে নাহিদ বলেন, গনঅভ্যুত্থানের এক বছর পার হয়েছে। অনেক হিসেব-নিকেশ করেছি। আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। গত এক বছরে জাতীয় নাগরিক পার্টি ছাড় দিয়েছে। এখন আর ছাড় দিবে না। জুলাই সনদের যে উদ্দেশ্য তা প্রতিষ্ঠা করেই নির্বাচনে অংশ নেবো।

নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে না পারলে আরেকটি ১/১১ আসবে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন চাই। তবে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। জুলাই সনদে একবিন্দুও ছাড় দেয়া হবে না। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হলে কোনও রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যেতে পারবে না।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, সংশোধন ও সংস্কার নিজেদের ঘর থেকে শুরু করতে হবে। চাঁদাবাজি কোনও রাজনৈতিক দলের ইমেজের জন্য ভালো নয়। যারা সুবিধা নেয়ার জন্য দলে এসেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

গণঅভ্যুত্থানের জন্য তরুণদের সম্মান দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম। বলেন, আগামীর গণপরিষদে তরুণদের নেতৃত্ব দেখতে চাই। জাতীয় প্রতিরক্ষার জন্য তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, জাতীয় প্রতিরক্ষার অংশ হিসেবে তরুণদের গড়ে তুলতে হবে। তরুণদেরকে সামরিক ট্রেনিং দিতে হবে, সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য তরুণদের প্রস্তুত রাখতে হবে। বাংলাদেশের তরুণরা যুদ্ধ করতে চায়, লড়াই করতে চায়, দেশ গঠন করতে চায়।

নাহিদ আরও বলেন, নাগরিক পার্টি যেমন রাজপথ থেকে গড়ে ওঠা দল এবং সারাদেশে সংগঠিত হচ্ছে তেমনি যুবশক্তিও রাজপথ থেকে গড়ে ওঠা দল। যুবশক্তি শুধু জাতীয় নাগরিক পার্টির ভ্যানগার্ড নয় দেশের ভ্যানগার্ড হবে। ক্ষমতার নির্ধারকরা যদি তরুণদের প্রতারিত করে তাহলে এদেশের ভবিষ্যৎ ভালো হবে না। জুলাই পদযাত্রা শেষ হয়নি দ্রুত আবার আপনাদের দোড়গোড়ায় যাবো বলেও জানান এনসিপির এই নেতা।

আওয়ামী লীগ আমলের সব সচিব ও আমলাদের অপসারন না করলে আগামী সপ্তাহে সচিবালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছে জুলাই মঞ্চ।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে এমন হুঁশিয়ারি দেয় সংগঠনটির নেতারা।

বক্তারা বলেন, বিপ্লবের এক বছর পার হলেও উপদেষ্টা পরিষদ ও সচিবালয়ে এখনও ফ্যাসিস্ট আমলের সুবিধাভোগীরা বহাল তবিয়তে রয়েছে। তাদেরকে রেখে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। দেশকে অস্থিতিশীল করতে নানা ষড়যন্ত্র করছে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার গণ-মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে এই সরকারের বিরুদ্ধেও আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

সংস্কার কার্যকর ও সংবিধান ঠিক না করে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে জুলাই অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের মায়ের বুকে ফেরত দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে জাতীয় যুবশক্তি আয়োজিত ‘জাতীয় যুব সম্মেলনে’ এমন মন্তব্য করেন তারা। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, আমরা একটা অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে, সত্যি কথা বললে আমাদের বিরুদ্ধে দশ কোটি টাকার মানহানির মামলা দেয়া হয়। এগুলো আমাদের ভয়ভীতি দেখানোর লক্ষণ। জাতীয় পার্টি পেছনের দরজা দিয়ে রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছে এমন অভিযোগ তুলে এনসিপির নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড় পাবে না। এসময় বিগত দিনে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও ‘ডামি’ নির্বাচনের জাতীয় পার্টির দায় আছে বলেও মন্তব্য করেন তারা। এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, জুলাই শিখিয়েছে কীভাবে হায়নাদের ধ্বংস করতে হয়। নতুন বাংলাদেশ গড়তে দলীয় স্বার্থের আগে বৃহৎ স্বার্থের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে আলোচনার টেবিলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বানও জানান বিএনপির এই সিনিয়র নেতা। একই অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, জুলাই প্রমাণ করেছে, আমরা লড়াই করতে জানি। আমাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তিই সব থেকে বড় শক্তি। দলীয় ভিত্তিতে নয়, জাতীয় ভিত্তিতে ঐক্য অক্ষুণ্ন থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জনগণের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতিই বিএনপির আগামী দিনের নীতি হবে বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক যুব দিবসে ‘যুব সমাজের প্রত্যাশা ও বিএনপির পরিকল্পনায় আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা জানান তিনি।

তারেক রহমান বলেন, জনগণ প্রচলিত রাজনীতির পরিবর্তন চাইছে। আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রতিশ্রুতি নয়, জনগণ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন চায়। তাই আগামী দিনে কর্মসংস্থানের রাজনীতি চালু করবে বিএনপি।

তিনি আরও বলেন, প্রতিশোধ-প্রতিহিংসা এড়িয়ে সাহস ও সততা নিয়ে এগিয়ে গেলে বাংলাদেশের সমৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী। জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে পারলে জনসংখ্যা দেশের জন্য আশীর্বাদ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যে কোনও অপকর্মের সঙ্গে বিএনপিকে জড়িয়ে খাটো করার অপচেষ্টা চলছে। বিএনপি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিতে বড় দল হিসেবে কাজ করবে। যাতে আওয়ামী লীগের মত কারচুপির নির্বাচনের অভিযোগ তুলে কেউ বিএনপির দিকে আঙুল তুলতে না পারে।

লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট (অব.) কর্নেল ড. অলি আহমদ বলেছেন, কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন পেছানোর জন্য অজুহাত তৈরি করছে। ভোট ব্যাহত হয় এমন বক্তব্য থেকে দলগুলোকে বিরত থাকতে হবে।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে মগবাজারে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

অলি আহমদ বলেন, পিআর (সংখ্যানুপাতিক) পদ্ধতি নয়, এই মূহুর্তে দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। জনগণকে ভোটমুখী করলে নানা সংকট কেটে যাবে। জামায়াতে ইসলামীকে পিআর নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি না করার আহ্বান জানাচ্ছি। এ সময় নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ায় সরকার ধন্যবাদও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, দেশজুড়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি দেখা যাচ্ছে। লটারির মাধ্যমে পুলিশ- প্রশাসনে বদলি করার সিদ্ধান্তটি সঠিক নয়। গুরুত্ব বিবেচনা করে কর্মকর্তাদের বদলি করতে হবে।

কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের দায়ের করা মামলায় আবদুল লতিফ ভূইয়া নামের এক সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তাকে ১০বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসাথে ওই কর্মকর্তাকে ১ কোটি ১৭ লাখ ৪০ হাজার ৫৩২ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।

আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে আসামীর উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিশেষ জজ আদালত নোয়াখালী (দুদক) বিচারক মো. শওকত আলী এ রায় প্রদান করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবদুল লতিফ ভূইয়া কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার ধামতি এলাকার বাসিন্দা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের কোর্ট ইন্সপেক্টর মো. ইদ্রিস।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, আবদুল লতিফ ভূইয়া রূপালী ব্যাংক পিএলসি- লক্ষ্মীপুরের পোদ্দার বাজার শাখায় প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। এ সময় লতিফ ১৯৩টি এন্ট্রির মাধ্যমে ব্যাংকের ১ কোটি ৩০ লাখ ৭২ হাজার ৪৯১ টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় তাকে বরখাস্ত করার পর ২০১২ সালের ২ জানুয়ারি মামলা দায়ের করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এরপর আটক করা হয় অভিযুক্তকে। পরে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুদক।

দুদকের প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগটি প্রমাণিত হলে আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক জনাব মো. আবদুস ছাত্তার সরকার। অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে আসামির উপস্থিতিতে আদালত এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পর আসামিকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম এবং আসামির পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সামছুদ্দিন।

১০০০, ৫০ এবং ২০ টাকার নতুন নোটের পর এবার আগামী মঙ্গলবার থেকে বাজারে ১০০ টাকার নতুন নোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আজ রোববার (১০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক নুরুন্নাহার স্বাক্ষরিত কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্স বিভাগের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্যের নতুন ডিজাইন ও সিরিজে সব মূল্যমানের নতুন নোট মুদ্রণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। তার ধারাবাহিকতায়, ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকার নোটের পর ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের স্বাক্ষরিত করা ১০০ টাকার নতুন নোট এবার বাজারে প্রচলন করা হবে।

আরও বলা হয়, আগামী ১২ আগস্ট প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এবং পরে দেশের অন্যান্য অফিস থেকে নতুন ১০০ টাকার নোট ইস্যু করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

আগামী নির্বাচনে জনগণ বিএনপিকে বেছে নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আজ রোববার (১০ আগস্ট) দীর্ঘ ১৬ বছর পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন দেয়া ভার্চুয়াল ভাষণে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার শুধু নির্বাচন ব্যবস্থা নয়, দেশের সব খাতকে ধ্বংস করেছে। নৃশংসভাবে দমন করেছে বিরোধী মতাবলম্বীদের। কিন্তু হাজারও মানুষের প্রাণের বিনিময়ে জুলাই অভ্যুত্থানে পতন ঘটেছে তাদের।

অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন আয়োজনের পথে হাঁটছে উল্লেখ করে বলেন, এই নির্বাচনে বিএনপি জয়ী হবে। কিন্তু ক্ষমতায় গেলে বিএনপিকে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। আর সবাইকে সাথে নিয়ে সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সেইসাথে, জনরায়ে ক্ষমতায় গেলে দেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিও দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

তারেক রহমান আরও বলেন, ক্ষমতায় এসে দেশবিদেশে দক্ষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষার আলো শিক্ষার্থীদের মাঝে পৌঁছে দিতে হবে। তাদের ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তুলতে হবে।

অপরদিকে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দলকে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তাদের মনে আস্থা সৃষ্টি করতে হবে। তাদের নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। এ সময়, পদ্মাসহ অন্যান্য নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি।

কসই বেড়ীবাঁধ এবং দ্বীপের চারপাশে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা না গেলে আগামী ৫০ বছরের মধ্যেই সমুদ্রপৃষ্ঠে বিলীন হবে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড কুতুবদিয়া। ‘অস্তিত্বের সংকটে কুতুবদিয়া দ্বীপ: রাষ্ট্রের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এমন শঙ্কার কথা জানান বক্তারা।

রোববার (১০ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সম্মিলিত নাগরিক সমাজের উদ্যোগে এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবাদী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

বক্তারা জানান, জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং অব্যাহত ভাঙনে ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে কুতুবদিয়া দ্বীপ। শত শত পরিবার হারিয়েছে ঘরবাড়ি, কৃষিজমি, মাছের ঘের। এতে থেমে গেছে তাদের জীবিকার চাকা। এ সময়, সরকারের জরুরি উদ্যোগ ছাড়া দ্বীপবাসীর জীবন ও জীবিকা রক্ষা সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেন বক্তারা। এজন্য সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণ, উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী তৈরি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দেন তারা।

গত দেড় দশকে ছাত্র রাজনীতির নেতিবাচক কার্যক্রমে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ট্রমায় আছে। এ অবস্থায় ক্যাম্পাসে রাজনীতির রুপ কেমন হবে, তা নিয়ে সবার সাথেই ধারাবাহিক আলোচনা করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এমনটা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান।

আবাসিক হলে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে সক্রিয় ছাত্রসংগঠনগুলোকে আমন্ত্রণ জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার (১০ আগস্ট) দুপুর সোয়া ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে শুরু হয় এই বৈঠক।

বৈঠকের আগে ঢাবি ভিসি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ জানান, সমঅধিকারের ভিত্তিতে সবাই যেন হলে শান্তিপূর্ণভাবে ডাকসুকেন্দ্রিক কর্মসূচি চালিয়ে যেতে পারে, সে লক্ষ্যে এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

রুদ্ধদ্বার আলোচনা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই ইসলামী ছাত্রশিবিরের উপস্থিতিকে কারণ দেখিয়ে সভা বর্জন করে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো। তারা বাংলাদেশ ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে গুপ্ত কার্যক্রমের অভিযোগ তোলেন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংগঠনটির অবস্থানের প্রতিবাদ জানান।

এদিকে, আবাসিক হল ও একাডেমিক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কাঠামো চায় না বলে মতামত জানিয়েছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস)।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ক্যাম্পাসে শিবিরের গুপ্ত রাজনীতি বন্ধ করে সবার মতামত নিয়ে ছাত্র রাজনীতির নতুন রুপরেখা দিতে হবে।

সভায় ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেন, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি থাকতেই হবে। তবে রাজনীতির ধরন কেমন হবে, তার জন্য শিক্ষার্থীদের ভোটাভুটি হতে পারে।

এর আগে, শুক্রবার (৮ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামেন শিক্ষার্থীরা। এরপর শনিবার (৯ আগস্ট) দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে বিক্ষোভের মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন ঢাবি উপাচার্য।

ঢাকা বিশ্ববিদলয়ের হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি না রাখার বিষয়ে আগের সিদ্ধান্ত বহাল আছে। সিদ্ধান্ত কার্যকরে রোডম্যাপ তৈরিতে সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ।

শনিবার (৯ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ইস্যুতে হল প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি।

এসময় সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট ড. ফারুক শাহ বলেন, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে রোডম্যাপ তৈরি হবে। ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ঢাবি শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন হল ইউনিটে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুর থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। পরে দিবাগত রাত ১২টার পর মিছিল নিয়ে টিএসসি’র রাজু ভাস্কর্যে একত্রিত হন বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা হলে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি জানান।

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে বলে মৌখিকভাবে জানিয়ে দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। পরে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ স্পষ্টভাবে ঘোষণা দেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি অনিয়ম হয় ব্যাংকিং খাতে। প্রভাবশালীদের লুটপাটে খাদের কিনারে চলে যায় বেশ কয়েকটি ব্যাংক।

বর্তমান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নিয়েই ব্যাংকিং খাতের লুটপাট বন্ধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নেন । বছরজুড়েই চলমান ছিল সংস্কার কার্যক্রম। শুরুতে পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়া হয় ১৪টি ব্যাংকের।

ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন ও আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালী করতে গঠন করা হয় টাস্কফোর্স। আর্থিক অবস্থা জানতে সম্পদ মূল্যায়ন করা হয় দুর্বল ৬টি ব্যাংকের। একীভূতকরণে প্রণয়ন করা হয় ব্যাংক রেজুলেশন অ্যাক্ট। এ বিষয়ে একটি বিভাগও গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। খেলাপি ঋণ নির্ধারণে চালু করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসব উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

সেন্টার ফর পলিসির (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যাংকিং খাতটা, বিশেষ করে বলতে গেলে সেখানেই অনেক দৃশ্যমান সংস্কারের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। অন্যান্য খাতের সাথে তুলনা করলে ব্যাংকিং খাতে কিন্তু অনেক অগ্রগতি হয়েছে এবং আমার মনে হয় যে কালক্ষেপণ না করে যতটা সম্ভব দ্রুততার সাথে করা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে কিন্তু অগ্রগতি সংস্কারের পথে যাচ্ছে। আসলে এই সংস্কারটা অনেকদিন ধরেই চলবে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বললেন, ব্যাংকগুলোতে পরিবর্তন আসার সাথে সাথে গভর্নেন্স অনেক ইম্প্রুভ করে গেছে। লক্ষণীয়ভাবে যে জিনিসগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক করেছে সেটা হচ্ছে এই যে এতগুলো ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করে দিয়েছে। আবার এখন এনপিএল ক্যালকুলেশনটা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করতেছে। ব্যাংক রেজুলেশন অর্ডিন্যান্স একটা করছে। সবগুলো কিন্তু অবশ্যই প্রভাব রাখা শুরু করেছে।

সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ব্যাংক কোম্পানি আইন এবং বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডারেও। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সংস্কারের প্রতিটি উদ্যোগেরই অগ্রগতি আছে। আইন না থাকায় এর আগে একীভূতকরণের উদ্যোগ সফল হয়নি বলেও জানান মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।

তিনি বলেছেন, সুপারভিশনের মাধ্যমে আগে আমরা কোনও একটা ব্যাংকের ক্ষেত্রে রিঅ্যাক্টিভ মেজার নিতাম। এখন করছি প্রোঅ্যাক্টিভ। আগে থেকে আমরা সাবধান করে দিচ্ছি। তোমার কিন্তু এইখানে দুর্বলতা দেখা দিচ্ছে। এখনই তুমি সংশোধন করো অন্যথায় ভবিষ্যতে তোমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। ব্যাংক রেজুলেশন অর্ডিনেন্স জারি করা হয়েছে যার মাধ্যমে একীভূতকরণসহ বিভিন্ন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করার আইনি ভিত্তি তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিবাচক উদ্যোগের ফলে ব্যাংকিং খাত এখন অনেকটাই স্থিতিশীল বলেও জানায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা।