• Colors: Blue Color

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) স্থানীয় সময় রোববার (২৭ জুলাই) ঘোষণা করেছে যে নাহাল ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেডের তিন সৈন্যকে যুদ্ধের দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। গাজায় ফিরে যুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকার করায় তাদের বিরুদ্ধে ‘অনুগত্য হারানো’র অভিযোগ আনা হয়।

সৈন্যরা তাদের এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে ‘গভীর আত্মিক সংকট’ (deep internal crisis)-এর কথা উল্লেখ করেছে।

কান পাবলিক ব্রডকাস্টার প্রথম এই ঘটনার কথা জানায়, যা পরে আইডিএফ নিশ্চিত করে। রিপোর্ট অনুযায়ী, নাহাল ব্রিগেডের ৯৩১তম ব্যাটালিয়নের চার সদস্য গাজায় ফেরত যেতে অস্বীকার করায় তাদের যুদ্ধ দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। এর মধ্যে তিনজনকে ৭ থেকে ১২ দিনের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে, চতুর্থ সদস্যের বিচার প্রক্রিয়া এখনও চলছে।

সৈন্যরা তাদের কমান্ডারদের জানিয়েছিল যে, গাজায় ফিরে যাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়, কারণ যুদ্ধের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তাদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে।

রিপোর্টে আরও বলা হয়, তারা যখন এই সিদ্ধান্ত নেয়, তখন তাদের চিকিৎসার পরিবর্তে কারাগারে পাঠানো হয়।

একজন সৈন্যের মা কানকে বলেন, ‘তাদের অনেক সহযোদ্ধা যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন, তারা ভয়াবহ দৃশ্য দেখেছেন এবং মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন। এসব কিছু তাদের আত্মায় দগদগে দাগ রেখে গেছে।’

আইডিএফের প্রতিক্রিয়া

আইডিএফ জানিয়েছে যে, নাহাল ব্রিগেডের এই তিন সৈন্য গাজায় যুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকার করায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী দাবি করেছে যে, সৈন্যরা একজন মানসিক স্বাস্থ্য কর্মীর সাথে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিল, যিনি তাদের যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য ‘সক্ষম’ বলে রায় দিয়েছিলেন। তবে শাস্তিমূলক প্রক্রিয়ার পরও তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকায় তাদের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

আইডিএফ বলেছে, ‘এই বিষয়টি সংবেদনশীলতার সাথে এবং নিয়ম অনুযায়ী সমাধান করা হয়েছে এবং যুদ্ধের সময় আনুগত্য হারানোকে গুরুতরভাবে নেয়া হয়।’

সেনাবাহিনীতে মানসিক স্বাস্থ্য সংকট

এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মধ্যে ক্রমবর্ধমান মানসিক চাপ ও অনাগ্রহের বিষয়টি আবারও সামনে এসেছে। গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সেনাসদস্যদের মধ্যে আত্মহত্যার ঘটনাও বেড়েছে।

গত কয়েক সপ্তাহে চার সৈন্য (একজন রিজার্ভ সদস্যসহ) আত্মহত্যার সন্দেহে মারা গেছেন, যা এ বছরের মোট আত্মহত্যার সংখ্যা ১৯-এ পৌঁছে দিয়েছে।

সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল।

ইউরোপের সকল পণ্যে ১৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য করে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববার, স্কটল্যান্ডে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দের লিয়েনের সাথে বৈঠক হয় ট্রাম্পের।

দীর্ঘ আলোচনার পর ইইউর পণ্যে ১৫ শতাংশ ট্যারিফ নির্ধারনের সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে ইউরোপের সকল পণ্যে ৩০ শতাংশ শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

চুক্তি অনুযায়ী, ইইউ পণ্যের উপর যুক্তরাষ্ট্র ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে, যা ট্রাম্পের পূর্বের ৩০% হুমকির অর্ধেক। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা, ২৭ সদস্যের এই ব্লক যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিকারকদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে শূন্য শুল্কে তাদের বাজার উন্মুক্ত করবে।

ভন ডের লেনও এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি উভয় মিত্রের জন্য স্থিতিশীলতা আনবে, যারা সম্মিলিতভাবে বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের অংশীদার।

কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড যুদ্ধবিরতি আলোচনায় রাজি হয়েছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার (২৬ জুলাই) ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া পোস্টে তিনি বলেন, শিগগিরই সাক্ষাৎ করবেন দুই দেশের নেতারা।

এছাড়াও গতকাল উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে ফোনালাপ করেন ট্রাম্প। সীমান্তে সংঘাত বন্ধ না হলে কোনো পক্ষের সাথেই বাণিজ্য চুক্তি করবেন না বলে হুমকি দেন তিনি। এরপরই আসে এমন ঘোষণা।

এদিকে মধ্যস্থতার জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচি। বলেন, তার দেশ যুদ্ধবিরতির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে রাজি। কম্বোডিয়ার তরফ থেকেও একইরকম আন্তরিকতা দেখতে চান বলেও জানান।

উল্লেখ্য, দুই দেশের মধ্যে ১৩ বছরে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে তিনদিনে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ।

দীর্ঘ ৪১ বছর কারাভোগের পর মুক্তি পেয়েছেন লেবাননের আলোচিত ফিলিস্তিনপন্হি বিপ্লবী যোদ্ধা জর্জ ইব্রাহীম আব্দুল্লাহ। ফ্রান্সে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা ও ইসরায়েলি কূটনীতিককে হত্যার অভিযোগে তাকে জেলে পাঠিয়েছিল ফরাসি পুলিশ। জীবদ্দশায় আর কখনও ফ্রান্সে প্রবেশ না করার শর্তে মুক্তি দেয়া হয় তাকে।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) বৈরুতের রাফিক হারিরি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় জর্জ ইব্রাহীমকে বহনকারী বিমানটি।

দীর্ঘদিন পর পরিবারের সদস্যদের কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন জর্জ। ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী কেফায়া পড়ে বিমান বন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি।

জর্জ ইব্রাহীম বলেন, শত্রুদের প্রতিহতে আমরা জয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। জীবনের শেষ পর্যন্ত শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। ইসরায়েলের অস্তিত্ব কিছুদিনের মাঝেই হারিয়ে যাবে। ওরা শেষ অধ্যায়ে পা দিয়েছে।

১৯৮৪ সালে ফ্রান্সের লিওন শহর থেকে আটক হন জর্জ ইব্রাহীম। প্যারিসে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা চার্লস রবার্ট রে এবং ইসরায়েলি কূটনীতিক ইয়াকোভ বারসিমানটোভকে হত্যার অভিযোগে তাকে আটক করে ফরাসি পুলিশ।

জর্জ ইব্রাহীম আব্দুল্লাহ ১৯৫১ সালে লেবাননের উত্তরাঞ্চলীয় কোবাইয়াত শহরে একটি খ্রিস্টান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চ শিক্ষার জন্য পাড়ি জমান ফ্রান্সে। টুলুজ বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিষয়ে পড়ার সময়ই বামপন্হি ও বিপ্লবী চিন্তাধারার সাথে পরিচিত হন জর্জ ইব্রাহীম। এই বিশ্বাসই তার রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তি।

লেবাননে ৭০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন জর্জ ইব্রাহীম। যোগ দেন পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন- জেনারেল কমান্ড’ নামের সংগঠনে। উপনিবেশবাদ বিরোধী ও ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার আন্দোলনের প্রতি সমর্থনে অনুপ্রাণিত হয়ে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ বেছে নেন সাহসী এই বিপ্লবী যোদ্ধা। এরফলে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর রোষানলে পড়েন তিনি।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৪১ বছর কারাবাসের পর প্রিয় নেতাকে বরণ করতে বৈরুতের রাফিক হারিরি বিমান বন্দরে জড়ো হয়েছিল শত শত মানুষ। এসময় ভক্ত-অনুসারীদের ভালোবাসায় সিক্ত হন জর্জ।

তৃতীয় দিনের মতো সংঘাতে জড়িয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দুই দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া।

শনিবার ভোরে, থাইল্যান্ডের ত্রাত প্রদেশে হামলা চালায় নমপেন, তবে তা প্রতিহত করে ব্যাংকক। এর আগে অন্যদিকে, দেশ দুটির মধ্যে দুই দিন ধরে চলা সীমান্ত সংঘর্ষের পর, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে কাম্বোডিয়া।

জাতিসংঘে নিযুক্ত কাম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূত চিয়া কেও বলেন, শর্তহীনভাবে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে তার দেশ; এবং এই বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় নমপেন। এখনও এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি থাইল্যান্ড। এর আগে কাম্বোডিয়া সীমান্তবর্তী আটটি জেলায় সামরিক আইন জারি করে দেশটি।

সংঘাতের জেরে আলোচনায় থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সামরিক সক্ষমতা। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের র‍্যাঙ্কিং বলছে, কম্বোডিয়ার চেয়ে সামরিক শক্তিতে যোজন যোজন এগিয়ে থাইল্যান্ড। এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী বিমানবাহিনীও ব্যাংককের। তাদের ভাণ্ডারে রয়েছে ২৮টি এফ- সিক্সটিন ফাইটার জেট। অথচ নমপেনের কাছে নেই কোনো যুদ্ধবিমানই। প্রতিবছর সামরিক খাতে কম্বোডিয়ার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি অর্থ খরচ করে থাইল্যান্ড।

দু’দেশের সংঘাতের জেরে নতুন উত্তেজনা এশিয়ায়। আরও একটি যুদ্ধের শঙ্কায় বিশ্ব। এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, দু’দেশের মধ্যে সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে?

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের র‍্যাঙ্কিংয়ের তথ্যমতে, সামরিক শক্তিতে স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে থাইল্যান্ড। দেশটির অবস্থান ২৫তম স্থানে, বিপরীতে কম্বোডিয়ার অবস্থান ৯৫।

লন্ডন ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা, ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর স্ট্র্যাটিজিক স্টাডিসের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে সামরিক খাতে ৫৭৩ কোটি ডলার খরচ করেছে ব্যাংকক। আর এই খাতে নমপেনের বাজেট ছিল ১৩০ কোটি ডলার। কম্বোডিয়ার সামরিক বাহিনীতে মোট সদস্য ১ লাখ ২০ হাজারের কিছু বেশি। আর থাইল্যান্ডের সামরিক সদস্য সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ।

এশিয়ার শক্তিশালী দেশগুলোর তালিকার অন্যতম থাইল্যান্ডের আর্টিলারি এবং আর্মার্ড ডিভিশন। দেশটির সমরভাণ্ডারে রয়েছে ৪০০ ট্যাঙ্ক, ২০০ সাঁজোয়া যান এবং ২ হাজার ৬০০ কামান। অন্যদিকে কম্বোডিয়ায় ট্যাংক রয়েছে ২শ আর কামানের সংখ্যা এর দ্বিগুন।

এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী বিমান বাহিনী হিসেবে বিবেচনা করা হয় থাইল্যান্ডের বিমান বাহিনীকে। দেশটির কাছে ২৮টি এফ-সিক্সটিন ও ১১টি সুইডিশ গ্রিপেন যুদ্ধবিমানসহ শতাধিক সামরিক বিমান রয়েছে। তার বিপরীতে একেবারেই দুর্বল কম্বোডিয়ার বিমান বাহিনী। দেশটির কাছে নেই কোনো যুদ্ধবিমান। রয়েছে হাতে গোনা কয়েকটি পরিবহন বিমান এবং সামরিক হেলিকপ্টার।

প্রসঙ্গত, সেনা ও আকাশপথের পাশাপাশি থাইল্যান্ডের নৌবাহিনীও বেশ শক্তিশালী। একটি বিমানবাহী রণতরী, সাতটি ফ্রিগেট ও ৬৮টি টহল জাহাজ রয়েছে তাদের কাছে। কম্বোডিয়ার কাছে আছে ১৩টি টহল জাহাজ।

আমাদের অনুসরণ করুন

 

সর্বাধিক পড়ুন

  • সপ্তাহ

  • মাস

  • সব