‘হজ ২০২৫’-এর জন্য ব্যাপক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মক্কায় একটি বড় আকারের নিরাপত্তা বাহিনীর কুচকাওয়াজ ও সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে বছরের বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশে লাখ লাখ হাজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজ্যের প্রস্তুতির জানান দেয়া হয়েছে। রোববার (২ মে) এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ এ তথ্য জানায়।

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স আব্দুল আজিজ বিন সৌদের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত এই কুচকাওয়াজে হেলিকপ্টারে আকাশপথে প্রদর্শনী এবং বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর কৌশলগত দক্ষতা প্রদর্শিত হয়েছে। হজ উপলক্ষে ৪০ হাজারের বেশি নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

হজ শুরুর পূর্বে সৌদি আরবের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রস্তুতি পরীক্ষা ও নিশ্চিত করাই এই মহড়ার মূল লক্ষ্য। হজ নিরাপত্তা কুচকাওয়াজটি একটি প্রতীকী জাতীয় সংকল্প এবং মক্কা, মদিনা, মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফায় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের বিশাল সমাগমে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি ব্যবহারিক অনুশীলন।

দেশটির পাবলিক সিকিউরিটির ডিরেক্টর ও হজ নিরাপত্তা কমিটির চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ আল বাসামি বলেছেন, ‘হজ নিরাপত্তা একটি ‘রেড লাইন’। আমাদের বাহিনী আল্লাহর অতিথিদের শান্তি বিঘ্নিত করতে পারে এমন যেকোনো কিছুর মুখোমুখি হতে সর্বোচ্চ দৃঢ়তা ও শক্তি প্রয়োগের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আমরা চেষ্টা করবো হাজিরা যাতে সহজে ও স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের ধর্মীয় রীতি পালন করতে পারে।’

ভিড় নিয়ন্ত্রণ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, নজরদারি ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা ছাড়াও ফেসিয়াল রিকগনিশন সিস্টেম, ড্রোন ও স্মার্ট মনিটরিং প্ল্যাটফর্মের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে এবারের হজে।

প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল। আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরামের মতো রাজ্যগুলোতে গত দু’দিনে বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসের কারণে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩২ জনের। রোববার (১ মে) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানায়।

বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গ এবং সংলগ্ন মেঘালয়ের ওপর সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের কারণে এই ভয়াবহ দুর্যোগের সৃষ্টি হয়। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল প্রদেশ।

গত কয়েকদিন ধরে অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে আসামের ১৭টি জেলায় বন্যা ও ভূমিধসে আটজন নিহত এবং ৭৮ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যাপক বৃষ্টিপাতে ধসে পড়েছে অনেক ঘরবাড়ি; প্লাবিত বহু এলাকা। পাহাড়ি এলাকায় হয়েছে ভূমিধস।

আসামের ১২টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত। অন্যান্য রাজ্যগুলোয় হতাহত বহু মানুষ। বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে অনেক পরিবার। বিভিন্ন স্থানে বন্ধ অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে, আগামী কয়েক দিন আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

এদিকে, ব্যাপক জলাবদ্ধতার কারণে গুয়াহাটির কিছু অংশ টানা দ্বিতীয় দিনের মতো প্লাবিত হয়েছে, যার ফলে উদ্ধারকারী দল আটকে পড়া বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।

ভারতীয় সামরিক বাহিনী প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে যে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের কয়েকটি যুদ্ধবিমান হারিয়েছে। তবে, তারা জোর দিয়ে বলেছে যে এই চারদিনের সংঘর্ষ কখনোই পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে এগোয়নি।

শনিবার (৩১ মে) সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত শ্যাংগ্রি-লা ডায়ালগ সম্মেলনে ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

পাকিস্তানের দাবি যে তারা ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে, তা ‘একেবারেই ভুল’ বলে মন্তব্য করেছেন জেনারেল চৌহান। তবে, তিনি ভারতের কতটি বিমান হারিয়েছে তার সঠিক সংখ্যা উল্লেখ করেননি।

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধবিমান হারানোর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সেগুলো কীভাবে হারালো, কী ভুল হয়েছিল—সেই বিশ্লেষণ। সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’

জেনারেল চৌহান বলেন, ‘ভালো দিক হলো, আমরা আমাদের কৌশলগত ভুলগুলো বুঝতে পেরেছি, সেগুলো সংশোধন করেছি এবং মাত্র দুই দিনের মধ্যেই আবার সমস্ত যুদ্ধবিমান উড়িয়েছি; বিশেষকরে দূরপাল্লার টার্গেট করে অভিযান পরিচালনা করেছি।’

গত ৭ মে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিমান হামলা ও পাল্টা হামলার এক উত্তেজনাপূর্ণ সংঘর্ষ হয়। এর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ দাবি করেছিলেন যে তার দেশ ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যদিও এই দাবির স্বাধীনভাবে কোনো সত্যতা যাচাই হয়নি।

ভারত সরকার এতদিন তাদের কোনো বিমান হারিয়েছে কিনা সে বিষয়ে মন্তব্য এড়িয়ে যাচ্ছিল। জেনারেল চৌহানের এই বক্তব্য ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে বিমান ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে ভারতের পক্ষ থেকে প্রথম স্বীকারোক্তি।

জেনারেল চৌহান জোর দিয়ে বলেন যে এই সংঘর্ষ কখনোই পারমাণবিক যুদ্ধের স্তরে পৌঁছায়নি। উভয় পক্ষই সংঘাত নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।

উল্লেখ্য, ভারতীয় সামরিক বাহিনী এখন তাদের কৌশলগত দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে তা সংশোধনের কাজ করছে। বিশেষ করে, ড্রোন ও মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।

পাকিস্তানের দুই প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর ১২ সদস্য নিহত হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে প্রাণ গেছে চার সেনা সদস্যেরও। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। খবর দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনের।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সীমান্তবর্তী উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় টহল দিচ্ছিল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। সহসা তাদের ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। পাল্টা গুলিবর্ষণে নিহত হয় ছয় বিচ্ছিন্নতাবাদী। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় সেনাবাহিনীর চার সদস্য। এছাড়াও, চিত্রাল জেলায় সেনা অভিযানে প্রাণ গেছে আরও এক সন্ত্রাসীর।

এর আগে, বেলুচিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে প্রাণ গেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ফিতনাহ আল হিন্দুস্তান সংগঠনের পাঁচ সদস্যের।

আফগানিস্তান ও ইরান সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো দীর্ঘদিন ধরেই নিষিদ্ধ ঘোষিত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর শক্ত আস্তানা। সাম্প্রতিক সময়ে এসব এলাকায় অভিযানের মাত্রা বাড়িয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগুন নিয়ে খেলছেন বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মঙ্গলবার (২৭ মে) ইউক্রেনে রাশিয়ার ভয়াবহ ড্রোন ও মিসাইল হামলার জেরে সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া পোস্টে এই মন্তব্য করেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়।

ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি প্রেসিডেন্ট না হলে রাশিয়ার সাথে আরও খারাপ কিছু ঘটতো, যা পুতিন বুঝতে পারছে না।

অপরদিকে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্প চলতি সপ্তাহের শুরুতেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার কথা বিবেচনা করছেন। একই সাথে জোর দিয়ে বলেন, তিনি এখনও তার মন পরিবর্তন করতে পারেন যদি পুতিন আলোচনায় বসেন।

এর আগে, গত রোববার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধির কথা বিবেচনা করছেন। তবে পুতিন চাইলে অন্য সকল বিকল্প খোলা আছে বলেও জানান তিনি। এ সময়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য জো বাইডেনকে দায়ী করে বলেন, তিনি একটি আলোচনার মাধ্যমে শান্তি চুক্তি দেখতে চান।

এর দু’দিন আগেও ইউক্রেনে রাশিয়ার সিরিজ বোমা হামলার নিন্দা জানান ট্রাম্প। বলেন, রুশ প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ডে ব্যাপক নারাজ তিনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় এখন থেকে পতাকা উত্তোলন করতে পারবে ফিলিস্তিন। ভোটে জয়লাভের পর প্রথমবারের মতো সংস্থাটিতে পতাকা তোলার অধিকার পেলো তারা।

সোমবার (২৬ মে) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয় এমন তথ্য।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বার্ষিক সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে দেয়ার বিষয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করে চীন, পাকিস্তান, সৌদি আরবসহ বেশ কয়েকটি রাষ্ট্র। অনুষ্ঠিত হয় প্রতীকী ভোটাভুটি। এতে ফিলিস্তিনের অধিকারের পক্ষে সমর্থন দেয় ৯৫টি দেশ।

অপরদিকে, বিরোধিতা করে জার্মানি, হাঙ্গেরি, চেক রিপাবলিকের মতো দেশগুলো। ভোটদানে বিরত ছিল ২৭টি দেশ। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পড়ায় গৃহীত হয় প্রস্তাবটি।

এর ফলে ধারণা করা হচ্ছে, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাসহ রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি মেলার পথ আরও সুগম করবে এই ঘটনা।

ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কার্যক্রমকে সমর্থন দিলো পাকিস্তান। সোমবার (২৬ মে) তেহরানে এক রাষ্ট্রীয় সফরে এই ঘোষণা দেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। খবরটি নিশ্চিত করেছে ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা আইআরএনএ।

শাহবাজ শরিফ বলেন, বেসামরিক আর শান্তিপূর্ণ খাতের জন্য তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সমর্থন করে ইসলামাবাদ। সেইসাথে, এটি ইরানের অধিকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে, ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সাথে বৈঠক করেন তিনি। এ সময়, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পাশাপাশি পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রত্যয় ব্যক্ত করেন দুই নেতা।

ইরানের প্রেসিডেন্টের সাথে আলোচনা ফলপ্রসূ ও গঠনমূলক হয়েছে উল্লেখ করে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বলেন, আলোচনায় দু’দেশের পারস্পরিক স্বার্থ ও সহযোগিতার বিভিন্ন দিক উঠে এসেছে। উভয় পক্ষই রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ নিয়ে সম্মত হয়েছে। সেইসাথে, পূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তিসমূহ বাস্তবায়নের বিষয়ে দু’দেশই আগ্রহী বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, পূর্বঘোষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী চারদেশীয় সফরের দ্বিতীয় দেশ হিসেবে ইরান ভ্রমণ করেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী। এরপর আজারবাইজান এবং তাজিকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে তার।

কুয়ালালামপুরে শুরু হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত আসিয়ান-জিসিসি দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলন। মঙ্গলবার (২৭ মে) শুরু হওয়া এই সম্মেলনে গালফ অঞ্চলের ৬ দেশের সাথে চলছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০ সদস্য রাষ্ট্রের বৈঠক।

সম্মেলনটি এমন সময় অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন বিশ্ব রাজনীতির নতুন মেরূকরণ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজা সংকট এবং লোহিত সাগরে নিরাপত্তা হুমকির প্রেক্ষাপটে উভয় জোটই পারস্পরিক নির্ভরতা বাড়াতে চাইছে।

বিশ্লেষকদের মতে, সম্মেলনে বাণিজ্যিক জোট গঠনের সম্ভাবনা গুরুত্ব পেতে পারে। এছাড়াও আলোচিত হচ্ছে বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা ইস্যু। সেইসাথে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসতে পারে ‘চীন-পারস্য উপসাগর-দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া করিডর’ নিয়ে।

এর আগে, সকালে দিন শুরু হয় ১৬তম ইস্ট আসিয়ান গ্রোথ এরিয়া সামিট দিয়ে। ব্রুনেই, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইন নিয়ে গঠিত এই উপ-আঞ্চলিক জোটটি গত তিন দশক ধরেই সহযোগিতার নানা খাতে কাজ করছে। এবার বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে কাস্টমস, ইমিগ্রেশন এবং কোয়ারেন্টাইন সহযোগিতা কাঠামো। যা সদস্য দেশগুলোর পণ্য ও মানুষ চলাচল আরও সহজ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইউক্রেনের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ওলেহ ইভাশচেঙ্কো বলেছেন, চীন রাশিয়ার সামরিক কারখানাগুলোতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পণ্য সরবরাহ করছে। তবে বেইজিং এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। মঙ্গলবার (২৭ মে) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়।

ওলেহ ইভাশচেঙ্কো বলেন, ‘প্রমাণিত তথ্য রয়েছে যে চীন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য বিশেষভাবে যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক দ্রব্য, বারুদ ও যন্ত্রাংশ সরবরাহ করছে। আমরা ২০টি রাশিয়ান কারখানার বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য পেয়েছি।’

তিনি বলেন, ২০২৪-২৫ সালে রাশিয়া ও চীনের মধ্যে এভিয়েশন খাতে পাঁচটি যৌথ প্রকল্পের আওতায় যন্ত্রাংশ, সরঞ্জাম ও কারিগরি তথ্যের আদান-প্রদান হয়েছে। এছাড়া ছয়বার রাশিয়ায় বড় পরিমাণে রাসায়নিক পদার্থ পাঠানো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি, যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেননি।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন রাশিয়ার সাথে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করেছে। যদিও চীন আনুষ্ঠানিকভাবে ‘রাশিয়া-ইউক্রেন’ যুদ্ধে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার দাবি করছে, তবে ইউক্রেনের গোয়েন্দা রিপোর্টে চীনের সরবরাহকৃত সামরিক-সহায়ক পণ্যের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

দেখতে অবিকল ফাইটার জেট, কিন্তু চালকবিহীন! পঞ্চম প্রজন্মের এমন এক আকাশযান উদ্ভাবন করেছে তুরস্ক। যা ছুটতে পারে শব্দের চেয়ে বেশি গতিতে। আধুনিক কমব্যাট মিশনে এটি যুদ্ধবিমানের ভূমিকা পালনে সক্ষম বলে দাবি আঙ্কারার। সম্প্রতি সফল পরীক্ষাও চালিয়েছে বায়কারের তৈরি মানুষবিহীন এই আকাশযান- কিজিলেলমা।

শক্তিশালী আর অত্যাধুনিক ড্রোন ভাণ্ডারের জন্য বরাবরই সুপরিচিত তুরস্ক। নিজস্ব প্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত একের পর এক মনুষ্যবিহীন আকাশযান বানিয়ে সক্ষমতার জানান দিয়েছে ইউরেশিয়ান দেশটি। আর এ তালিকায় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য- তুরস্কের খ্যাতনামা সমরাস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বেয়কার টেকনোলোজিস। যা জন্ম দিয়েছে টিবি-টু, আকিনঝির মতো মনুষ্যবিহীন যুদ্ধযানের।

সেই বেয়কারই এবার আনলো নতুন আরেক আকাশযান। যার নাম, কিজিলেলমা। সম্প্রতি, ড্রোনটির চতুর্থ প্রোটোটাইপের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে এরদোয়ান প্রশাসন। দেখতে ফাইটার জেটের মতো হলেও আদতে এটি একটি চালকবিহীন যুদ্ধযান। যেটি পঞ্চম প্রজন্মের বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন।

শুধু দেখতেই নয়, কাজেও ফাইটার জেটের চেয়ে কোনো অংশে কম নয় কিজিলেলমা। তুরস্কের দাবি- যুদ্ধ পরিস্থিতিসহ নানা ধরনের কমব্যাট মিশন পরিচালনায় সক্ষম এটি। যা মোতায়েন করা হবে তুরস্কের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয়।

বেয়কারের তথ্যানুযায়ী, তুরস্কের সর্বপ্রথম জেট ফুয়েল চালিত ড্রোন কিজিলেলমা। যেখানে ব্যবহার করা হয়েছে ইউক্রেনীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরি এআই-৩২২ এফ মডেলের একটি ইঞ্জিন। যা শব্দের গতির চেয়ে দ্রুত ছুটতে সক্ষম।

মাত্র সাড়ে ১৪ ফুট দৈর্ঘ্যের এই মনুষ্যবিহীন আকাশযানটি বহন করতে পারে দেড় টনের পে-লোড। আর উড়তে পারে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার ফুট উচ্চতায়। একটানা তিন ঘণ্টারও বেশি সময় আকাশে স্থায়ী হতে পারে কিজিলেলমা। লেজার গাইডেড যুদ্ধাস্ত্রের পাশাপাশি এতে, বহন করা যায়, দুরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও।

বর্তমানে তিনটি সংস্করণ রয়েছে কিজিলেলমা আকাশযানের। এগুলোর কোনো কোনোটি শব্দের চেয়ে বেশি আবার কম গতিতেও ছুটতে পারে। বর্তমানে ৩৫টির মতো দেশ তুরস্কের তৈরি ড্রোন ব্যবহার করে থাকে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে রাজা চার্লসের প্রতিষ্ঠিত একটি দাতব্য সংস্থার উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে সংস্থায় আড়াই লাখ পাউন্ড অনুদান দিয়ে আলোচনায় আসেন সালমান এফ রহমানের ছেলে সায়ান এফ রহমান। এবার ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) সালমানপুত্রের মালিকানাধীন লন্ডনের দুটি সম্পত্তি জব্দ করার আদেশ দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস এ তথ্য জানায়

সম্পত্তির নথি অনুযায়ী, লন্ডনের দুটি সম্পত্তির মালিক সায়ান এফ রহমান। নথিপত্রে দেখা গেছে, এর মধ্যে একটি সম্পত্তি হলো লন্ডনের ১৭ গ্রোসভেনর স্কয়ারে অবস্থিত একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট, যা ২০১০ সালে ৬.৫ মিলিয়ন পাউন্ডে কেনা হয়েছিল। অন্যটি উত্তর লন্ডনের গ্রেশাম গার্ডেন্সে অবস্থিত, যা পরের বছর ১.২ মিলিয়ন পাউন্ডে কেনা হয়েছিল।

ব্রিটিশ নির্বাচনী রেকর্ড অনুসারে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা এবং যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের মা একসময় গ্রেশাম গার্ডেন্সের এই সম্পত্তিতে বসবাস করতেন। তবে, তিনি এখনও সেখানে থাকেন কিনা তা স্পষ্ট নয়।

এনসিএ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে, এনসিএ একটি চলমান সিভিল তদন্তের অংশ হিসেবে লন্ডনের ১৭ গ্রোসভেনর স্কয়ার এবং গ্রেশাম গার্ডেন্সের সম্পত্তি জব্দ করার আদেশ পেয়েছে। আমরা এই মুহূর্তে আর কোনো মন্তব্য করতে পারবো না।’

মূলত, এনসিএ সালমানপুত্রের দুটি সম্পত্তি ফ্রিজ করার আদেশ পেয়েছে। ফ্রিজিং অর্ডার হলো এমন একটি আদেশ যা কোনো সম্পত্তি বিক্রি বা স্থানান্তর করা থেকে বিরত রাখে।

এর আগে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমসের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সায়ান রহমান একটি অফশোর ট্রাস্টে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে উত্তর লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিন এলাকায় ১২ লাখ পাউন্ড দিয়ে একটি বাড়ি কিনেছিলেন। সেই বাড়িতে থাকতেন টিউলিপের মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা। এছাড়াও লন্ডনের গ্রসভেনর স্কয়ারে সায়ান রহমানের একাধিক সম্পত্তি রয়েছে যার মোট দাম ৪ কোটি ২০ লাখ পাউন্ড।

২০০৭ সালে ‘ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট’ নামের দাতব্য সংস্থা গড়ে তুলেছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ রাজপুত্র তৃতীয় চার্লস। ঠিক ১১ বছর পর, ২০১৮ সালে, বাংলাদেশে এই ট্রাস্টের কার্যক্রম শুরু করতে সাহায্যের হাত বাড়ান নৌকার কান্ডারি সালমানের পুত্র সায়ান। তিনি এই সংস্থার একটি উপদেষ্টা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান।

২০১৮ সালে, লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেসে এক নৈশভোজে সবার সামনে সায়ান রহমানের প্রশংসা করেছিলেন চার্লস। বলেছিলেন, ‘আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি যে সায়ান রহমান যে সহায়তা দিচ্ছেন, তার জন্য আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে সালমান এফ রহমানের পাশাপাশি সায়ান এফ রহমান ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ থেকে আট কোটি ডলারের বেশি অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওভাল অফিসে টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বৈঠককে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক অপ্রত্যাশিত মানসিক যুদ্ধে পরিণত করেছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পর এবার দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাকেও এই অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। একসময় ওভাল অফিসে আমন্ত্রণ পাওয়াকে গৌরবের বিষয় মনে করা হতো, কিন্তু ট্রাম্পের আমলে তা এখন এক ধরনের ‘রাজনৈতিক অ্যামবুশ’-এ পরিণত হয়েছে। এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম ‘ফ্রান্স-২৪’ এ তথ্য জানায়।

স্থানীয় সময় বুধবার (২১ মে) ওভাল অফিসে আয়োজিত বৈঠকে আমন্ত্রিত অতিথি রামাফোসার সরকারের বিরুদ্ধে শ্বেতাঙ্গ গণহত্যা ও ভূমি দখলের অভিযোগ আনেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের অভিযোগ, অনেক মানুষ (দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সম্প্রদায়) মনে করছেন, তারা নিপীড়নের শিকার। তারা যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় চাচ্ছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গদের জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তারা হত্যার শিকার হচ্ছেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে জেলেনস্কির সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ আলোচনার পর ট্রাম্প এবার রামাফোসাকে লক্ষ্য করেছেন। সাধারণত রাষ্ট্রীয় সফরে ওভাল অফিসে সংক্ষিপ্ত আলাপ ও ছবি তোলার রেওয়াজ থাকলেও ট্রাম্প সেগুলোকে প্রায় একঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে এমন উত্তপ্ত আলোচনায় পরিণত করেন।

বৈঠকের শুরুতেই রামাফোসা বলে দিয়েছিলেন, তিনি মূলত বাণিজ্য নিয়ে আলাপ করতে চান। তবে খুবই দক্ষতার সঙ্গে আলোচনার মোড় ঘুরিয়ে রামাফোসাকে একগাদা অভিযোগে বিদ্ধ করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গদের প্রতি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণ নিয়ে তিনি চিন্তিত। কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদন এবং একটি ভিডিওকে নিজের দাবির সপক্ষে প্রমাণ হিসেবে হাজির করেন তিনি।

তবে জেলেনস্কির মতো ট্রাম্পের সঙ্গে বাগ্‌যুদ্ধে জড়াতে চাননি রামাফোসা। তিনি বরং শান্তভাবে সব অভিযোগ শুনে ধীর গলায় বলেছেন, শ্বেতাঙ্গ কৃষক গণহত্যার অভিযোগ যদি সত্য হতো, তবে এই তিন ভদ্রলোক (আমন্ত্রিত গলফ খেলোয়াড়) আমার সঙ্গে থাকতেন না।

দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার এই বৈঠককে ‘উত্তেজনাপূর্ণ কিন্তু ফলপ্রসূ’ বলে বর্ণনা করেছে। তবে কূটনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করছেন, ট্রাম্পের এই আচরণ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা তৈরি করে।