সাম্য, প্রেম ও বিদ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ। ১৮৯৯ ইংরেজি ও ১৩০৬ বঙ্গাব্দের এই দিনে অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অন্যতম এই বিরল প্রতিভা। কে জানতো ঝাঁকড়া চুলের সেই দুখু মিয়া হয়ে উঠবে বাংলার বিদ্রোহী কবি?

রোববার (২৫ মে) নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। দিনটিকে ঘিরে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে কবির সমাধিতে যাবেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মরতরা। সেখানে সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন তারা।

এদিকে, জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আজ রোববার (২৫ মে) শুরু হয়ে আগামী মঙ্গলবার (২৭ মে) পর্যন্ত চলবে। জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বিকেল ৩টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মো. লতিফুল ইসলাম শিবলী এবং কবির নাতনী ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউট ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান খিলখিল কাজী উপস্থিত থাকবেন।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা করবেন। পাশাপাশি স্বাগত বক্তৃতা দেবেন জেলা প্রশাসক  মো. আমিরুল কায়ছার।অনুষ্ঠানে ‘নজরুল পুরস্কার ২০২৩ ও ২০২৪’-এর জন্য মনোনীতদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হবে।

নজরুলকে কেউ বলেন প্রেমের কবি, কেউ বলেন দ্রোহ আর বিদ্রোহের। কারো কাছে মানবতার কবি নজরুল, গান গেয়েছেন সাম্যের। প্রাণের কবি, গানের কবি-এমন নানা নামে ডাকে সাধারণ। গবেষকরা বলছেন, নির্দিষ্ট কোন গণ্ডি নয়, নজরুলের বিস্তৃতি সর্ব পরিসরে। সাম্রাজ্যবাদ, ফ্যাসিবাদ, অনাচার, বৈষম্য, শোষণ ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে লিখেছেন অসংখ্য গল্প, কবিতা, উপন্যাস ও গান।

১৯২২ সালে প্রকাশ করেন ধূমকেতু পত্রিকা। ‌’আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতার জন্য নজরুলকে দেয়া হয় এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। মাত্র ২২ বছর ব্যাপ্তির লেখক জীবনে রচনা প্রায় ৪ হাজার গান, অসংখ্য কবিতা, ছোটগল্প আর উপন্যাস। সাহিত্যের পাশাপাশি করেছেন সংগীত ও চলচ্চিত্র পরিচালন, এমন কী অভিনয়ও। বর্ণাঢ্য জীবনে জড়িয়েছিলেন নানা পেশায়। অংশ নেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধেও।

স্বাধীনতার পরের বছর কবি নজরুলকে সপরিবারে নিয়ে আসা হয় স্বাধীন বাংলাদেশে। দেয়া হয় জাতীয় কবির সম্মান। এরপর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এদেশেই ছিলেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তৎকালীন পিজি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন প্রিয় কবি। কবির ইচ্ছানুসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

কবি না থাকলেও তার অমর কবিতা, গান এখনও প্রেরণা যোগায় অন্যায়-জুলুম আর শোষণের শেকল ভাঙার। কবি যেন আগে থেকেই অনাগত ভবিষ্যৎ জানতেন। চারপাশে সাম্প্রতিক যে অস্থিরতার চিত্র আমরা খুঁজে পাই, তাতে নজরুলের মহাকালছেদী প্রতিবাদী কণ্ঠ বড় প্রয়োজন।

শেখ হাসিনার আমলে হওয়া জাতীয় এবং স্থানীয় সকল নির্বাচন অবৈধ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সেই সময়ে বিরোধী দলগুলোও এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছিল। এমন মন্তব্য করেছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

শনিবার (২৪ মে) প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক শেষে তিনি একথা জানান। 

তিনি বলেন, প্রথমেই সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছি। বলা হয়েছে গণঅভ্যুত্থানের যে দায়িত্ব থেকে তিনি সরকারে এসেছিলেন তা যেন তিনি রক্ষা করেন। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনে জুলাই ঘোষণাপত্রের কথা ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে ৩০ দিন সময়ও দেয়া হয়েছিলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যাতে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করা হয় এমন দাবি জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

নাহিদ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ এবং আহতদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া ধীরগতিতে আগাচ্ছে গণপূর্ত অধিদফতর থেকে যে সঞ্চয়পত্র দেয়ার কথা ছিল তা অনেক শহীদ পরিবার পায়নি এবং মাসিক ভাতা দেয়াও এখন পর্যন্ত শুরু হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব দাবি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। শেখ হাসিনার আমলে হওয়া জাতীয় এবং স্থানীয়ত সকল নির্বাচন অবৈধ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে এনসিপি। শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থায় মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছিল। সেই সময়ের বিরোধী দলগুলোও বিভিন্ন সময়ে এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। সেই নির্বাচনকে আদালতে নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এজন্য যাতে আইনগতভাবে এসব নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা করা হয়।

এনসিপির এই নেতা বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা নির্বাচন কমিশইনের ওপর আস্থা রাখতে পারছি না। এটি পুনর্গঠন করে যাতে দ্রুত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বিচার, স্থানীয়-গণপরিষদ নির্বাচন এবং জুলাই সনদ এই তিনটির সমন্বয়ে একটি রোডম্যাপ যাতে সরকার গঠন করে সেই দাবি জানানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ নিয়ে তিনি বলেন, গণ অভ্যুত্থানের চেতনা নিয়ে তারা সরকারে গিয়েছে। তাদের মামাদের সাথে মিলিয়ে ফেলায় নিন্দাও জানানো হয়েছে। এটিকে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যমূলক বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে কটূক্তির মামলায় জামালপুরে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে আদালত।

শনিবার (২৪ মে) বিকেলে সরিষাবাড়ী আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুকসানা পারভীন মামলাটি আমলে নিয়ে ডা. মুরাদ হাসানসহ দু’জন আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে পানসিয়ানা নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এ ধরনের মন্তব্য করায় ১০ হাজার কোটি টাকার অধিক ক্ষতি হয়েছে ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

পরবর্তীতে, ২০২৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর জামালপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সরিষাবাড়ীর ট্রাক মালিক সমিতির সহ-সভাপতি ও সাবেক ছাত্রদল নেতা রুমেল সরকার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

এই মামলায় মহিউদ্দিন হেলাল নামে ইউটিউব চ্যানেলটির উপস্থাপককেও আসামি করা হয়েছে। মামলাটির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৯ জুন। সেদিন আসামিদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মামলার বাদী রুমেল সরকার বলেন, মুরাদ হাসান অনেক মানুষকে নির্যাতন করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি গ্রেফতার হননি। এ সময় দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি।

আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, মামলায় আদালত সমন দিয়েছেন। আগামী ১৯ জুন ডা. মুরাদ হাসানসহ দুই আসামিকে আদালতে উপস্থিত হতে হবে। যথাসময়ে উপস্থিত না পারলে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হতে পারে বলেও জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনায় আবারও ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেইসাথে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিও জানানো হয়।

শনিবার (২৪ মে) রাতে যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক শেষে বিফ্রিংয়ে এসব কথা জানায় বিএনপির প্রতিনিধি দল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সংস্কার ও বিচার কাজ নিয়ে বিএনপির মধ্যে কোন দ্বিধা নেই। আওয়ামী লীগের সময় সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ও নিপীড়িত দল বিএনপি। ক্ষমতায় গেলে গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার করা হবে বলেও জানান তিনি। সেইসাথে ৩১ দফার আলোকে সংস্কার কার্যক্রমের কথাও জানান খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

এ সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, নিরাপত্তা ও দুই ছাত্র উপদেষ্টার কারণে সরকার এখন বিতর্কিত। তাই তাদের পদত্যাগ চায় বিএনপি।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন ও সংস্কার এবং দৃশ্যমান বিচারের দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। শনিবার (২৪ মে) প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক শেষে ডা. শফিকুর রহমান একথা জানান।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে দেশে অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছিল। প্রধান উপদেষ্টা জাতিকে একটি বার্তা দিতে চেয়েছলেন কিন্তু তা দেননি। ফলে সমাজে অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়ে। পুরো পরিস্থিতি প্রধান উপদেষ্টার জন্য কিছুটা কষ্টের ও বিরক্তির ছিলো। দেশ আমাদের সবার দেশ ভালো থাকলে আমরা সবাই ভালো থাকবো।

জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই বিপ্লবে দেশে পরিবর্তন এসেছে কিন্তু এখন যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের পরিচয় হলো তারা কোনো পার্টির রাজনীতি করবেন না। এটা হওয়া উচিত কিন্তু এখানেও কিছু ব্যাতিক্রম ঘটেছে। এটিও মাঝেমধ্যে সমাজকে উদ্বিগ্ন করেছে। এই বিপ্লবের অবশ্যম্ভাবী দাবি ছিল কিছু সংস্কার করা লাগবে এবং অপরাধীদের বিচার হতে হবে। এর মধ্য দিয়ে একটি অর্থবহ নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে যারা অংশ নেবেন তাদের কোনো ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হতে হবে না। এখানে পেশিশক্তি এবং কালো টাকার প্রভাব থাকবে না এবং মানুষ ভোটের অধিকার নিশ্চিতভাবে পাবে।

আমরা বলেছি, ২টি বিষয় স্পষ্ট করা দরকার একটি হলো নির্বাচন কখন হবে আর আরেকটি হলো নির্বাচনের আগে অবশ্যই সংস্কার এবং বিচারের কিছু প্রক্রিয়া জনগণের সামনে আসতে হবে। সংস্কার শেষ করে নির্বাচন না হলে জনগণ তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

নির্বাচনের জন্য সরকারকে কোনো সময়সীমা বেশে দেয়া হয়নি । জামায়াত কণ্ব কারোর পদত্যাগ চায়নি বলেও উল্লেখ করেন জামায়াতের আমীর।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকেও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে বিএনপির প্রতিনিধি দল।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনেও এই তিন উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি করা হয়। তাদের বিষয়ে বিএনপির বক্তব্য হচ্ছে তারা ‘বিতর্কিত’। আজও সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, এই তিন উপদেষ্টার কারণে সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুন্ণ হচ্ছে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যা অনুমান করতে পেরেছিলাম, সে অনুযায়ী আমরা একটি লিখিত বক্তব্য নিয়ে এসেছিলাম। তা প্রধান উপদেষ্টার কাছে পেশ করেছি এবং সে অনুযায়ী আমরা আলোচনা করেছি। এর সারাংশ হচ্ছে… বাংলাদেশে গণতন্ত্রে উত্তরণের লক্ষ্যে বিএনপি শুরু থেকে একটি জাতীয় নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবি জানিয়ে আসছে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে ও সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের জন্য আমরা দাবি জানিয়েছি।

তিনি আরও বলেছেন, বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক ও পারিবারিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আওয়ামী লীগ আমলে। এজন্য আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বেশি বিচার দাবি করে বিএনপি। কোনোভাবে আওয়ামী লীগের বিচার অসম্পূর্ণ থাকলে বিএনপি সরকারে যখন যাবে তখন তা বিচারের আওতায় এনে স্বাধীন বিচারবিভাগের মাধ্যমে পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা হবে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম অবিলম্বে সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দ্রুত একটি রোডম্যাপ প্রদানের দাবি আমরা জানিয়েছি।

অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে, একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণে একটি প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা হবে, তা বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, যেকোনও উছিলায় নির্বাচন যত বিলম্ব হবে, আবার স্বৈরাচার ফিরে আসার ক্ষেত্র তৈরি হবে। এর দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকারের সংশ্লিষ্টদের ওপর বর্তাবে।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সম্প্রতি নানা গুজব রয়েছে, সেই প্রেক্ষিতে আমরা বলেছি, বিএনপি কখনোই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চায়নি। বরং প্রথম দিন থেকে এ সরকাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছে।

আজকেও কি বিএনপি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের আশ্বাস পায়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, স্পেসিফিক কোনও কথা হয়নি, স্পেসিফিক কোনও কথা জানাননি, আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি। হয়তো উনারা প্রেস উইংয়ের মাধ্যমে জানাবেন। আমরা অপেক্ষা করবো।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন এই তিনটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সংস্কার প্রসঙ্গে উনারা একমত হয়েছেন, যেখানে একমত হওয়ার কথা তার ভিত্তিতে সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে। এবং সেই কাজ অতি সহসাই সম্পন্ন সম্ভব। এখানে কোনও দ্বিমত পোষণ করেননি।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জনের খবর পেয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যার পর প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যার পর প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। জানা যায়, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ নিয়ে আজ বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে, যা নিয়ে অনেকই অনেক কথা লিখছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলতে সন্ধ্যায় যমুনায় যান নাহিদ ইসলাম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে যমুনা টেলিভিশনকে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীন জানান, প্রধান উপদেষ্টার কাজ করার মতো পরিস্থিতি না থাকলে তিনি তার পদে থাকার ব্যাপারটি বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে এমন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও লাখো মানুষের ত্যাগ সেই ত্যাগের প্রতি দায়বদ্ধতা ও পুরো দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ জাতীয় ঐক্যের বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ ইসলাম।

দেশের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। 

বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগ থেকে মুজিবুল আলম প্রকাশিত এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার বিকালে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। এসময় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিষদ আলোচনা করা হয়।

বৈঠকে ডা. শফিকুর রহমান দেশের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ ইউনূসকে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) দেয়া বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি। বুধবার (২১ মে) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

এদিন বিকেলে ঢাকা উত্তর সিটির জনসংযোগ বিভাগ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলে, পছন্দের ঠিকাদার কাজ না পাওয়ায় ঢাকা উত্তর সিটির নগর ভবনের সামনে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন।

প্রতিবাদে গণ অধিকার পরিষদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পছন্দের ঠিকাদার কাজ না পাওয়ায় ডিএনসিসি নগর ভবনের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে নুরুল হক নুর’— ডিএনসিসির জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এমন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি তাদের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে পরিষদের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীর নেতা ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার স্পষ্ট তথ্য-প্রমাণের পর তিনি প্রশাসকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন না।

নুরুল হক নুর। সভাপতি, গণ অধিকার পরিষদ।

গণ অধিকার পরিষদ বলছে, এজাজের হিযবুত তাহ্‌রীর ও জঙ্গিবাদের কার্যক্রমে যুক্ত থাকা ও ওই অভিযোগে ২০১৫ সালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সম্প্রতি আল–জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের ফেসবুক পোস্টেও উঠে এসেছে। এই সুস্পষ্ট তথ্য–প্রমাণের ভিত্তিতেই তাঁকে প্রশাসক পদ থেকে অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবিতে গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা ঢাকা উত্তর সিটির সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেই কর্মসূচিতে সমর্থন জানায়।

এতে আরও বলা হয়, ঢাকা উত্তর সিটি বলেছে, নুরুল হকের পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ না দেওয়ায় গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা উত্তর সিটির সামনে বিশৃঙ্খলা করেছে। এটি একেবারে অসত্য, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। বরং দরপত্রে অংশগ্রহণ করে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েও গণ অধিকার পরিষদের একজন সদস্যকে ‘কমিশন’ ব্যতীত কাজ না দেওয়ার বিষয়টি প্রশাসক এজাজকে অবহিত করা হয়েছিল। তিনি বিষয়টি অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীকে অবহিত করতে বলেন।

গণ অধিকার পরিষদ বলেছে, প্রশাসকের পরামর্শেই নুরুল হক বিষয়টি ওই কর্মকর্তাকে জানান। অন্যদিকে গাবতলী পশুর হাটসহ কয়েকটি বিষয় গণমাধ্যমে এসেছে যে কমিশন ও পছন্দের লোক ব্যতীত প্রশাসক এজাজ অন্য কাউকে কোনো ধরনের কাজ দেন না। মূলত নিজের অভিযোগ আড়াল করে অন্যত্র দৃষ্টি ঘোরাতেই এজাজ গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়াচ্ছেন।

উল্লেখ্য, নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরীরের সাথে সম্পৃক্ত এবং দুর্নীতিতে অভিযুক্ত থাকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের পদ থেকে মোহাম্মদ এজাজকে অপসারণের পাশাপাশি দ্রুত গ্রেফতারের দাবি-ও জানায় গণ অধিকার পরিষদ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। তিনি আগামী অর্থবছরে এই রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যের কথাও জানান।

বুধবার (২১ মে) পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ পূর্বাভাসগুলোর কথা তুলে ধরেন গভর্নর।

ব্যাংকিং খাত এবং ক্ষুদ্রঋণ সম্পর্কেও কথা বলেন ড. মনসুর। তিনি বলেন, ২৬ শতাংশ সুদের হারে ক্ষুদ্রঋণ টিকতে পারে না।

গভর্নর বলেন, গ্রাহকরা এজেন্ট ব্যাংক শাখা থেকে অর্ধেক সুদে ঋণ পাচ্ছেন। এমতাবস্থায় ধীরে ধীরে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় উচ্চ সুদের ক্ষুদ্রঋণ বাজার থেকে বাদ দেয়া হবে।

রিজার্ভ সম্পর্কে ড. আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, পরের মাসে রিজার্ভ ২৭ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে থাকবে। আগামী অর্থবছরে এই রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, চলতি মাসের ১৯ মে পর্যন্ত দেশের মোট রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ গণনা পদ্ধতি অনুসারে বর্তমানে দেশের রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

পাঁচ দিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে আবারও বাড়ানো হলো স্বর্ণের দাম। নতুন দাম অনুযায়ী, ভালো মানের (২২ ক্যারেট) প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮২৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯২১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানীয় বাজারে তেজাবি (পাকা) স্বর্ণের দাম বাড়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

গতকাল বাজুসের স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন মূল্য তালিকা প্রকাশ করা হয়। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২২ মে) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।

নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮২৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯২১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার  ৬৯৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬২ হাজার ১৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৩০৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৯৭২ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৪৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রূপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ৮৪৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি রূপার ২ হাজার ৭১৮ টাকা। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ৩৩৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রূপার ১ হাজার ৭৫০ টাকা।  

এর আগে, ১৮ মে সবশেষ স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছিল। ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরিতে এক হাজার ৩৬৪ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৮ টাকা। এ নিয়ে চলতি বছরের সাড়ে চার মাসে মোট ২৩ বার স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলো।

বকেয়া বেতন ও অন্যান্য পাওনার দাবিতে রাজধানীর কাকরাইল মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করা গার্মেন্টস শ্রমিকরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। টিএনজেড গ্রুপের ওয়াশিং প্ল্যান্ট ও মহাখালী ডিওএইচএস-এ মালিকের বাড়ি বিক্রি করে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও অন্যান্য পাওনাদি আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে এমন ঘোষণার পর তারা আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়।

এর আগে, আজ মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে শ্রম ভবন থেকে মার্চ টু যমুনা কর্মসূচি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আসেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। এ সময় কাকরাইল মোড়ে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেন। পরে সেখানেই বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।

শ্রমিকরা জানান, গাজীপুরের টিএনজেড গ্রুপের ৮টি গার্মেন্টস ও আশুলিয়ার চেইন অ্যাপারেলস লিমিটেড দীর্ঘ সময় ধরে তাদের বেতন বন্ধ রেখেছে। এতে তাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। বেশিরভাগ কর্মীরা টানা তিন মাসের বাসা ভাড়া দিতে পারেননি। এছাড়াও, বিভিন্ন দোকানের বাকি পরিশোধ করতে পারছেন না তারা। ফলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে মার্চ করতে বাধ্য হয়েছেন তারা।

শ্রমিকরা তখন আরও জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে শ্রম ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও সরকার থেকে কোনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ন্যায্য বেতন ভাতা পরিশোধ না করা পর্যন্ত কাকরাইল মোড়েই অবস্থান করবেন তারা। এ সময় বেতন-ভাতা পরিশোধে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপও কামনা করেন তারা।