চারদিনের সফরে জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (২৭ মে) দিবাগত রাত ২টা ১০ মিনিটে তাকে বহনকারী ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

এই সফরে টোকিওতে অনুষ্ঠিত নিক্কেই ফোরামের ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে অংশ নেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পাশাপাশি দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই সফরে বাংলাদেশের ১ লক্ষ দক্ষ জনশক্তিকে জাপানে পাঠানো এবং মাতাড়বাড়ি-মহেশখালীর প্রকল্পসহ দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি গুরুত্ব পাবে। এছাড়া, জাপানি প্রতিষ্ঠান জাইকার সাথে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সফরে দুই দেশের মধ্যে ৭‌টি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। ঢাকা-টোকিও সম্পর্কের অমীমাংসিত সব ইস‍্যুতেও আলোচনা হবে। তবে সেখানে সামরিক খাত অগ্রাধিকারে থাকবে না। এয়ারক্রাফট সংকটে বন্ধ হওয়া জাপানের সাথে সরাসরি বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালুর ব‍্যাপারে কথা হবে। এছাড়া জাপানের কাছ থেকে এক বিলিয়ন ডলার স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তার প্রস্তাব করবেন প্রধান উপদেষ্টা।

গত বছরের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পরে মাসে নিউইয়র্কের জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর নভেম্বরে আজারবাইজানে কপ-২৯ সম্মেলন ও ডিসেম্বরে মিসরে ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। মার্চে চীন সফর করেন ড. ইউনূস। এপ্রিলে থাইল্যান্ড, কাতার ও সবশেষ ভ্যাটিকান সিটিতে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

নারীর স্বাভাবিক জীবনচক্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ পিরিয়ড। অথচ আজও এই বিষয়টি ঘিরে রয়ে গেছে অসংখ্য ট্যাবু, কুসংস্কার আর নীরবতা। ২০২৫ সালে এসে, যখন পৃথিবীর সাথে মহাকাশের যোগাযোগ সহজ করার নানা উপায় বের করা হচ্ছে, তখন নারীর স্বাভাবিক জৈবপ্রক্রিয়া নিয়ে নিষিদ্ধ সব ট্যাবু বিরাজমান।

তবে কিছুটা হলেও, ধীরে ধীরে ভাঙছে এই নীরবতা। যেখানে একসময় পিরিয়ড ছিল গোপনীয়, লজ্জার সেখানে আজ মেয়েরাই বলছে নিজেদের কথা।

বদলাচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গি, ভাঙছে সামাজিক ট্যাবু। এই দলে যোগ দিয়েছেন পুরুষরাও। তারা বলছেন, পিরিয়ড বা মাসিক এখন আর শুধু নারীর বিষয় নয়, এটা পরিবার ও সমাজেরও দায়িত্ব।

পিরিয়ডের সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, মানসিক সাপোর্ট এবং সামাজিক স্বীকৃতি— এই তিন বিষয় সবচেয়ে জরুরি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতে যৌথ সচেতনতাই পারে সহনশীল ও স্বাস্থ্যবান সমাজ গঠন করতে।

প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শারমিন সিদ্দিকা ইসলাম বলেন, টয়লেটের সময় টয়লেট পেপার ব্যবহার করছি, সেটা যদি স্বাভাবিক হয়; তাহলে পিরিয়ডের সময় একজন নারী ন্যাপকিন ব্যবহার করবে, এটাও স্বাভাবিক। এখন সবাই অনেক সচেতন, শুধু বিষয়টিকে সহজভাবে নিলেই হয়।

মেয়েরা যেন নিরাপদ, সুস্থ ও সম্মানের সঙ্গে বেড়ে উঠতে পারে, সেই দৃষ্টিভঙ্গি গড়াই এখন সময়ের দাবি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ৭ বছরের সাজার বিরুদ্ধে আপিল করে খালাস পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান।

মঙ্গলবার (২৭ মে) তাকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত।

খালাসের পর প্রধান বিচারপতি, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ জুলাই আন্দোলনের বিপ্লবীদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সাংবাদিক শফিক রেহমান বলেন, খালাসের মাধ্যমে বিচার বিভাগ স্বাধীন তা প্রমাণিত হয়েছে।

এসময় তার আইনজীবীরা বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। মামলায় যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান আইনজীবীরা।

২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে সাংবাদিক শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমানসহ পাঁচ জনকে পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 

এছাড়া, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, তার ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়ারও সাজা হয়। 

গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমান ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়ার সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে সাজার বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের শর্তে আত্মসমর্পণ করেন শফিক রেহমান। আদালত তার বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করেন। একইসঙ্গে সাজা পরোয়ানা স্থগিত করেন। এরপর ২১ নভেম্বর আত্মসমর্পণ করে জামিন পান তিনি। 

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিয়েছে আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার (২৭ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার পর জামায়াতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, এখন থেকে এটিএম আজহার অপরাধমুক্ত। এই রায়ের মাধ্যমে সত্যের বিজয় এবং মিথ্যা পরাজিত হয়েছে। জামায়াত এবং বিএনপির ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। অন্ততপক্ষে ৫ জন জেলেই মৃত্যুবরণ করেছেন। দুনিয়ার ইতিহাসে এটা নজিরবিহীন নির্যাতনের সামিল।

তিনি আরও বলেন, আমরা একটা শর্ট অর্ডার চেয়েছি। আজকে বা কালকের মধ্যে এই শর্ট অর্ডার প্রসেস করে সকল আইনি ব্যবস্থা নিয়ে এটিএম আজহারের বাইরে বের হওয়ার ব্যবস্থা করবেন আদালত।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ড. দৈয়দ আব্দুল্লাহ তাহের জানান, কুরআনে বলা আছে সত্যের বিজয় হবে এবং মিথ্যার পতন অবশ্যম্ভাবী। আজকেও এই রায়ের মাধ্যমে এটিই প্রমাণিত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ২২শে আগস্ট মগবাজারের বাসা থেকে আজহারুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন আজহারুল ইসলাম। শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে।

২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এরপর তা পুনর্বিবেচনা চেয়ে ওই বছরের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগে আবেদন করেন আজহারুল ইসলাম। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ রিভিউ শুনে ফের আপিল শুনানির সিদ্ধান্ত দেয়। এটাই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা, যেটি রিভিউ পর্যায়ে আসার পর ফের আপিল শুনানির অনুমতি পায়।

বকেয়া পরিশোধের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় কিডনি অ্যান্ড ইউরোলজি ইনস্টিটিউটে (নিকডু) ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ রেখেছে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্যানডর। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল থেকেই বন্ধ আছে ডায়ালাইসিস সেবা।

ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। তাদের চোখেমুখে রয়েছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার ছাপ। কিডনি ডায়ালাইসিস চিকিৎসা ব্যয়বহুল। কিডনি ইনস্টিটিউটে বাইরের চেয়ে কম খরচে ডায়ালাইসিস করা যায় তাই এই হাসপাতালে বাড়তি রোগীর চাপও রয়েছে।

এর আগে, গতকাল সোমবার একই দাবিতে ৩ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছিলেন স্যানডরের কর্মীরা। তারা জানান, সরকারের কাছে তাদের সাড়ে ৭ কোটি টাকা বাকি রয়েছে। টাকা না পাওয়ায় তিন মাস ধরে বেতন হচ্ছে না। বেতন না পাওয়ায় নার্স টেকনোলজিস্টরা আর কাজ করতে চাচ্ছে না। সামনে ঈদ, কর্মদিবস কম আছে, বেতনের আশ্বাস না পেয়ে কেউই কাজে যাচ্ছে না বলে জানান তারা।

স্যানডর কর্তৃপক্ষ বলছে, স্বাভাবিক সময়ে জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির শুরুতেই বকেয়া বিল দেয়া হয়। কিন্তু পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ফলে কর্মীদের বেতনের পাশাপাশি ডায়ালাইজার কিনতেও সমস্যা হচ্ছে। এতে সেবা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। তবে বিল আটকে যাওয়ার এমন জটিলতা নতুন কিছু নয়। বিগত সময়ও সরকারের নীতিনির্ধারকদের গুরুত্বের অভাবে বহুবার ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ হয়ে যায়।

ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুটি হাসপাতালে সেবা দিচ্ছে স্যানডোর। মোট ডায়ালাইসিসের ১০ শতাংশ করে তারা। ঢাকা ও চট্টগ্রামে স্যানডোরের দুই সেন্টার মিলে ২০০ মেশিন রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৭০টি। 

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন— সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে নিজেকে অপরাধী মনে হবে। আমি যতদিন আছি নিশ্চিত থাকেন দেশের অনিষ্ট হবে এমন কোনও কাজ হবে না।

রোববার (২৫ মে) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিভিন্ন দলের সাথে বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। রাতে এই বৈঠকের আলোচিত বিষয়সমূহ জানাতে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সেখানেই এসব কথা জানান তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর লিডাররা প্রফেসর ইউনূসকে সমর্থন জানিয়েছেন। সংস্কার-বিচার-নির্বাচন এর জন্য যে কাজ শুরু করা হয়েছে তার প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন আছে। এ সকল কাজে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থাকবে বলেও জানিয়েছেন।

প্রেস সচিব জানান, রাজনৈতিক দলগুলোকে ড. ইউনূস বলেন— আমরা বড় যুদ্ধাবস্থার ভেতরে আছি। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর দেশকে অস্থিতিশীল করতে যত রকমভাবে পারে চেষ্টা করছে দেশবিদেশের অনেকেই। এটা থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। বিভাজন থেকে আমাদের উদ্ধার পেতে হবে। আমরা যতটুকু দাঁড়াতে পেরেছি এটা যেন সামনের দিকে যায়। এ সময়, সবাই একসঙ্গে বসাতে তিনি মনে সাহস পেয়েছেন বলেও জানান।

নির্বাচন নিয়ে কী কথা হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আবারও জানিয়েছেন ইলেকশন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে এবং ৩০ জুনের পর কখনোই যাবে না। এতে সবাই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বলেও জানান তিনি।

প্রেস কনফারেন্সের শেষ পর্যায়ে শফিকুল আলম বলেন, আমাদের তিনটি বড় কাজ হচ্ছে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। প্রথমে সংস্কার করতে পারলে ইলেকশনের বিষয়ে সকলের আস্থা পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার (২৪ মে) রাতে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সাথে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন দ্বিতীয় পর্যায়ের নেতারা। দুই দফায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের প্রথম দফার বৈঠকে ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

রোববার (২৫ মে) বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে প্রথম দফার বৈঠকে অংশ নিতে যাওয়া নেতারা যমুনায় প্রবেশ করেন। তাদের আলোচনা শেষে সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে বৈঠকে বসেন দ্বিতীয় পর্যায়ের নেতারা।

দ্বিতীয় দফায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন ৯ জন। তারা হলেন, মাওলানা সাদিকুর রহমান, মাওলানা রেজাউল করিম, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আহমেদ আব্দুল কাদের, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদি, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, নুরুল হক নূর, মাওলানা মুসা বিন ইজহার ও মুফতি মাওলানা শাখাওয়াত হোসাইন রাযি।

এর আগে, প্রথম দফায় দেখা করছেন ১১ জন। তারা হলেন, কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বীর বিক্রম, মাহমুদুর রহমান মান্না, সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকি, হাসনাত কাইয়ুম, মুজিবর রহমান মঞ্জু, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া, টিপু বিশ্বাস, শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।

উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার (২৪ মে) রাতে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সাথে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই একটি সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, বিএনপির দাবি—ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন, গতকাল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সেই দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।

রোববার (২৫ মে) বিকেলে কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে এনপিপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এই প্রত্যাশার কথা জানান।

তারেক রহমান বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। কম বা বেশি সংস্কার বলে কিছু নেই। এই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক নয়।

তিনি আরও বলেন, জনগণকে অন্ধকারে রেখে এবং রাজনীতিবিদদের বাদ দিয়ে কোনো পরিকল্পনা টেকসই হতে পারে না।

তারেক রহমান বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার না থাকায় বিদেশি বিনিয়োগ থেমে গেছে, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হচ্ছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন দাবিতে মানুষ মাঠে নামছে, কিন্তু তাদের কথা শোনার মতো কেউ নেই।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে দুটি আলাদা বিভাগ করে যে অধ্যাদেশ জারি হয়েছে, তা বাতিলসহ চার দাবিতে আন্দোলন করছে সংস্থাটির কর্মীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে সোমবারও (২৬ মে) কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’।

এরপর আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জারি করা অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সব সংশোধনীসহ অধিকাংশ দাবির বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় একমত হওয়ায় আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে।

আজ রোববার (২৫ মে) এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের এক সূত্র থেকে বিষয়টি জানা যায়। 

গত ১২ মে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি বিভাগ করে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এরপর কলম বিরতিসহ টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’।

এর আগে, এদিন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর প্রধান কার্যালয়ের নিচে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়– রাজস্ব ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী সংস্কারের ক্ষেত্রে আমাদের এই যৌক্তিক দাবিগুলো সরকার কী কারণে এখন বাস্তবায়ন করছে না, তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। মূল চারটি দাবির সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান তারা।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের চারটি প্রধান দাবি হলো— ১. ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ-২০২৫’ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। ২. জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। ৩. রাজস্ব সংস্কার পরামর্শক কমিটির সুপারিশ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। ৪. এনবিআরের প্রস্তাবিত খসড়া ও পরামর্শক কমিটির সুপারিশের আলোকে অংশীজনদের মতামত নিয়ে টেকসই রাজস্ব সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, প্রধান বিচারপতি বিকেল ৫টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রবেশ করেন। বৈঠক শেষে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তিনি যমুনা ত্যাগ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে যমুনায় প্রবেশ করেছেন বিভিন্ন দলের নেতারা। দুই দফায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আজ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

রোববার (২৫ মে) বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে প্রথম দফার বৈঠকে অংশ নিতে যাওয়া নেতারা যমুনায় প্রবেশ করেন।

প্রথম দফায় দেখা করছেন ১১ জন। তারা হলেন, কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বীর বিক্রম, মাহমুদুর রহমান মান্না, সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকী, হাসনাত কাইয়ুম, মুজিবর রহমান মঞ্জু, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া, টিপু বিশ্বাস, শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।

সন্ধ্যা ৬টায় দ্বিতীয় দফার বৈঠকে অংশ নেবেন মাওলানা সাদিকুর রহমান, মাওলানা রেজাউল করিম, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আহমেদ আব্দুল কাদের, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদি, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, নুরুল হক নূর, মাওলানা মুসা বিন ইজহার ও মুফতি মাওলানা শাখাওয়াত হোসাইন রাযি।

শেষ সময়েও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং আরও রক্তপাতের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা—আদালতে এক তদন্ত প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।

রোববার (২৫ মে) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আদালতে শুনানিতে বিচারকদের সামনে লিখিতভাবে এ তথ্য পড়ে শোনান তিনি।

এদিন ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সকল ভূমিকা আদালতের সামনে উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর।

তিনি বলেন, পদত্যাগ করতে ৫ আগস্ট গণভবনে শেখ হাসিনার পা ধরেছিলেন শেখ রেহানা। পরে পরিবারের সদস্যরা বোঝালে তিনি পদত্যাগ করেন।

পরে আদালত প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো আদালতে প্রমাণ করা সম্ভব—শেখ হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন। আন্তর্জাতিক মানের বিচার করতে এবং অপরাধ প্রমাণে যত তথ্য প্রয়োজন, সবকিছু প্রসিকিউশনের কাছে আছে।

বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ মানবিক করিডোর, চট্টগ্রাম বন্দর, সংস্কার, বিচার, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এক দীর্ঘ চিঠি দিয়েছে বিএনপি।

শনিবার (২৪ মে) বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিটি গণমাধ্যমের হাতে আসে।

এতে নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছে বিএনপি। একইসঙ্গে বিতর্কিত কয়েকজন উপদেষ্টার বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া সরকারকে শিগগিরিই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ গ্রহণ করানোর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।  

প্রধান উপদেষ্টা বরাবর বিএনপির চিঠিতে যা বলা হয়েছে  

দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর অগণতান্ত্রিক বর্বরতম ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টের রক্তাক্ত ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী সাম্য, মানবিক মর্যাদা, বৈষম্যহীন ও সামাজিক ন্যায়বিচার-ভিত্তিক একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে এ দেশের মানুষ আপনার (প্রধান উপদেষ্টা) নেতৃত্বে একটি নির্দলীয়-নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে।

চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, ফ্যাসীবাদী আওয়ামী দুঃশাসনের পতন হয়েছে কিন্তু গত সাড়ে ৯ মাসে জনপ্রত্যাশা বা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা কতটুকু এর মধ্যে পূরণ হয়েছে তা একটি বিশাল প্রশ্নের সম্মুখীন। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরতে শুরু করেছে। অথচ আগামীর বাংলাদেশের মূল চালিকাশক্তি এই ঐক্যকে বজায় রেখে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের কোনো বিকল্প নেই। এই ঐক্যের স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার অবস্থান বজায় রাখার কথা। কোনো মহলকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের এজেন্ডা যেন সরকারের কর্মপরিকল্পনার অংশ না হয় সেদিকে সচেতন থাকা উচিত ছিল। এই বক্তব্য আমরা আপনার সামনে বারবার উচ্চারণ করেছি। অথচ সরকারের সাম্প্রতিক কিছু কর্মকাণ্ডে জনমনে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।

আরও বলা হয়, মানবিক করিডর এবং চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সরকারের বিভিন্ন বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে জাতীয় স্বার্থে রক্ষিত হচ্ছে কি না সেটা সর্বাগ্রে বিবেচনায় নেওয়া দরকার ছিল। এছাড়াও এমন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি নির্ধারণী কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার অন্তর্বর্তী অস্থায়ী সরকারের আছে বলে এ দেশের জনগণ মনে করে না।

অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে বিতর্কিত কয়েকজন উপদেষ্টা যাদের বক্তব্যে এবং কর্মকাণ্ডে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে, এমন বিতর্কিত উপদেষ্টাদের সরিয়ে দেওয়া দরকার বলে আমরা মনে করি। দেশের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট স্পর্শকাতর ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বিবেচনায় নিয়ে যাতে দেশে অস্থিতিশীল কোনো পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে এই বিষয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত কেবল জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার কর্তৃক জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত হওয়াই সমীচীন।

কয়েকজন উপদেষ্টার বিষয়ে বিএনপির অভিযোগ,  অন্তর্বর্তী সরকারের যে সমস্ত উপদেষ্টারা একটি নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত বলে সবাই জানে ও বোঝে; উপদেষ্টা পরিষদে তাদের উপস্থিতি সরকারের নির্দলীয় নিরপেক্ষ পরিচিতিকে ক্রমাগত প্রশ্নবিদ্ধ করে চলেছে বলেই সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাদেরকে অব্যাহতি প্রদান করা প্রয়োজন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইতোমধ্যে বিতর্কিত হয়েছেন, সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাকে অব্যাহতি প্রদান করতে হবে।

নির্বাচন কমিশন ঘেরাও ঘটনার বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে একটি সংস্কার সনদ তৈরির প্রক্রিয়ার মধ্যেই আলাপ-আলোচনা অব্যাহত থাকা স্বত্বেও একই বিষয়গুলো নিয়ে এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে একটি দলের নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি আমাদেরকে এবং সরকারকে বিব্রত করে। সার্চ কমিটির মাধ্যমে আইনানুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠিত হলেও একটি মহল নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন চায়। সরকার সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় সব ক্ষেত্রে আমাদের মতামত না নিলেও নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে সকল পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করে এই কমিশন গঠন করেছে। কিন্তু ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতের রায় অনুযায়ী গেজেট নোটিফিকেশন করায় নির্বাচন কমিশনকে অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্যই দেশের জনগণ রক্ত দিয়ে গণঅভ্যুত্থান করেছে। সুতরাং আমাদেরকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা আশা করব অতি শিগগিরই সরকার ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ গ্রহণ করানোর ব্যবস্থা নেবে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার পক্ষপাতমূলক আচরণ সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করছে।

নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। এমন বাস্তবতায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করার বিষয়টি উদ্দেশ্যমূলক ও রহস্যজনক।

জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে বলা হয়েছে, জুলাই-ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে মানুষের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকারসহ ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাসম্ভব জন-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তাই, আমরা একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে একটি জাতীয় সংসদ গঠনের জন্য অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দারি জানাচ্ছি। এই সর্বোচ্চ জন-আকাঙ্ক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানতম এজেন্ডা হওয়া উচিত বলে জনগণ মনে করে। এর অন্যথা হলে জনগণের দল হিসাবে বিএনপির পক্ষে এই সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া দুটোই একই সঙ্গে চলতে পারে। পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তির এবং ব্যক্তির অর্থাৎ দল এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। আমরা যে বিষয়গুলো এই চিঠিতে উল্লেখ করেছি সেগুলো আমাদের আগের প্রস্তাব ও পরামর্শের মত উপেক্ষিত হলে তা হবে দুর্ভাগ্যজনক এবং অনিবার্যভাবেই তা আমাদেরকে সরকারকে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে পরামর্শ দিতে নিরুৎসাহিত করবে।

সবশেষে উল্লেখ করা হয়, দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধকল্পে, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার নাগালের মধ্যে রাখতে, বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্যে গতিশীলতা আনায়নের লক্ষ্যে সরকার ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন, এই প্রত্যাশা আমাদের সকলের।