কোরবানির ঈদের আগেই নতুন নকশার নোট বাজারে ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক। দুই টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার টাকার নতুন নোটে থাকবে জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতির পাশাপাশি দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির নির্দশন। এরই মধ্যে সব নোটের ডিজাইন ঠিক হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেছেন, নতুন নকশার নোট ছাপাতে কমপক্ষে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগে। তবে, গ্রাহকদের চাহিদা মাথায় রেখে কোরবানি ঈদের আগেই নতুন নোট ছাড়া হবে।

তিনি জানান, নতুন ৯ ধরনের নোট ছাপানো হলেও সবগুলো এখনই পাওয়া যাবে না।

এদিকে চাহিদা থাকলেও বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত নোট গ্রাহকদের দিতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ফলে খোলাবাজার থেকে ছেঁড়াফাটা নোট পরিবর্তন করতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন গ্রাহকেরা। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ৯ মাস হলেও এখনও বাজারে আসেনি নতুন নকশার নোট। টাকায় বঙ্গবন্ধুর ছবি থাকায়, গেল ঈদুল ফিতরে ছাড়া হয়নি নতুন নোট। ফলে চাহিদা বাড়ে খোলাবাজারে।

নতুন নোটের সংকটে গ্রাহকের হাতে বেড়েছে ছেঁড়াফাটা নোটের সংখ্যা। ফলে অনেকেই পুরোনো কিংবা ছেঁড়াফাটা নোট পরিবর্তন করছেন রাজধানীর গুলিস্তান ও মতিঝিল এলাকায়। বাড়তি টাকায় এসব নোট পরিবর্তন করতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে গ্রাহকদের।

এদিকে, ব্যাংকগুলোতে ছেঁড়াফাটা নোট পরিবর্তন করতে গ্রাহকদের অনেক নিয়ম-নীতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।  ভল্টে বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত নোট থাকলেও, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রাহকদের তা দিতে পারছে না ব্যাংকগুলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী বলছে: গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইস্যুকৃত নোট ছিল ৩ লাখ ১ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকার।  প্রতি বছর বিভিন্ন মূল্যমানের ১৫০ কোটি পিস নতুন টাকার চাহিদা থাকলেও, টাকশাল ছাপাতে পারে ১২০ কোটি পিস।

সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তরাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। 

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ রায় দেন। এর ফলে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সুবিধা পাবেন। রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইব্রাহিম খলিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকারি চাকরিজীবীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দেয়া আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন হাইকোর্ট। সংক্ষুব্ধ চাকরিজীবীদের এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর এক পরিপত্রে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, একই পদে কর্মরত কোনো সরকারি কর্মচারী দুই বা তার চেয়ে বেশি টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়ে থাকলে নতুন পে-স্কেল অনুযায়ী তিনি উচ্চতর গ্রেড পাবেন না। তবে ইতোমধ্যে একটিমাত্র টাইম স্কেল অথবা সিলেকশন গ্রেড পেলে নতুন স্কেলে শুধু একটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন।

পরিপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, সরকারি কর্মচারীদের প্রদত্ত এসব আর্থিক সুবিধা কোনোক্রমেই ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বরের আগে দেওয়া হবে না। পরবর্তীতে পরিপত্রের এ আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন সংক্ষুব্ধ সরকারি চাকরিজীবীরা।

মূল পে-স্কেলে উল্লেখ আছে, সরকারি চাকরিতে নিচের স্তরের কর্মচারীদের পদোন্নতির সুযোগ সীমিত। এসব পদোন্নতিবঞ্চিতদের আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার বহুল আলোচিত টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের পুরোনো প্রথা বাতিল করে। একইসঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চতর গ্রেড প্রথা প্রবর্তন করে। নতুন স্কেল অনুযায়ী, কোনো কর্মচারী একই পদে ১০ বছর চাকরি করার পর পদোন্নতি না পেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন। এরমধ্যে একটি পাবেন চাকরির ১০ বছর পর (১১তম বছরে)। আর অপরটি ১৬ বছর পর অর্থাৎ ১৭তম বছরে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মূল পে-স্কেলে এ বিধান করা হলেও এ সুবিধা কীভাবে দেয়া হবে, সে বিষয়ে কোনো দিক-নির্দেশনা ছিল না। এ প্রেক্ষাপটে মূল পে-স্কেলে উল্লেখিত নিয়ম কার্যকর করতে স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। মূল পে-স্কেল কার্যকর হওয়ার ৩ মাস পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে এটি জারি করা হয়।

 

https://www.youtube.com/@fitv

সৌদি আরবের জেদ্দার উদ্দেশ্যে ৩৯৮ জন যাত্রী নিয়ে চলতি বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট ঢাকা ত্যাগ করেছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দিনগত রাত ২টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানটি জেদ্দার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

এর আগে, সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আশকোনা হজক্যাম্পে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন হজ ফ্লাইট উদ্বোধন করেন। এরপর তিনি হজযাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এ সময় হজযাত্রীদেরকে সৌদি আরবের আইনকানুন মেনে চলা এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানান ধর্ম উপদেষ্টা।

জানা গেছে, প্রথম দিনে মোট ১০টি ফ্লাইটে চার হাজার ১৮০ জন হজযাত্রী সৌদি যাবেন। এরমধ্যে আটটি ফ্লাইট সৌদি আরবের জেদ্দায় এবং বাকি দুটি ফ্লাইট মদিনায় বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।

উল্লেখ্য, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজযাত্রী সৌদি যাবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন সরকারি মাধ্যমে এবং বেসরকারি মাধ্যমে ৮১ হাজার ৯০০ জন।

হজ ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ৩১ মে। আর চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৫ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে।

ঢাকাসহ দেশের ১৬ জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যাওয়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

 

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

 

এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। 

এছাড়া সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের এনজিএসও সেবাদাতা স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) এই লাইসেন্স অনুমোদন করেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কর্তৃক গত ২৫ মার্চ Non-Geostationary Orbit (NGSO) Satellite Services Operator In Bangladesh শীর্ষক লাইসেন্সিং গাইডলাইন জারি করে। ওই গাইডলাইনের আওতায় Starlink Services Bangladesh Non-Geostationary Orbit (NGSO) Satellite Services Operator License প্রাপ্তির জন্য প্রযোজ্য ফি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিটিআরসি বরাবর আবেদন করেছে। প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে আবেদনকৃত লাইসেন্স ইস্যুর জন্য গত ২১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ২৯৪তম কমিশন সভায় নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

স্টারলিংক বাংলাদেশের ইন্টারনেটে নতুন সংযোজন। শ্রীলঙ্কার পরে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বৈশ্বিক এই স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করল। 

এ প্রসঙ্গে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের উপর্যুপরি ইন্টারনেট বন্ধের প্রতিবাদে স্টারলিংককে বাংলাদেশের নিয়ে আসা একটা গণদাবিতে পরিণত হয়েছিল। 

‘পাশাপাশি বাংলাদেশকে বিনিয়োগ বান্ধব হিসেবে একটা বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ইচ্ছা ছিল প্রধান উপদেষ্টার। বাংলাদেশের হাওর-বাওড় দ্বীপাঞ্চলে, দুর্গম পার্বত্য এলাকায়, বিশেষভাবে উপকূলীয় দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন এবং মানসম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যেসব অঞ্চলে এখনো ফাইবার পৌঁছেনি সেখানে দ্রুততম সময়ে মানসম্পন্ন ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা স্ব-উদ্যোগী হয়ে স্পেইসএক্স সিইও ইলন মাস্ককে ফোন করে ৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংককে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানান। এ লক্ষ্য অর্জনে বিডা, বিটিআরসি, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় নিবিড়ভাবে কাজ করেছে,’ বলেন তিনি।

 

ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, স্টারলিংকের সেবাগুলোর মধ্যে একটি প্রাথমিক সেবা হচ্ছে নিরবচ্ছিন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেট, যেখানে লোডশেডিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাবে না, যেটা আইএসপির ক্ষেত্রে হয়। অনেক ক্ষেত্রে যদি লম্বা সময় ধরে লোডশেডিং থাকে, মোবাইল টাওয়ারের ব্যাটারির ব্যাকআপ ফুরিয়ে গেলে মোবাইল ইন্টারনেটেও বিঘ্ন ঘটে। স্টারলিংকের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা হবে না। 

‘আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, বাংলাদেশে ফাইবার নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি সীমিত। উপরন্তু এই ফাইবার নেটওয়ার্কের উল্লেখযোগ্য অংশ টেলকো গ্রেডের নয়। বাংলাদেশের অন্তত ৬৫ শতাংশ টেলিযোগাযোগ টাওয়ার এখনো ফাইবারাইজেশনের বাইরে, সেখানে মাইক্রোওয়েভ দিয়ে সেবা দেওয়া হয়, খুবই সীমিত ধারণক্ষমতা। আবার আমাদের মোবাইল নেটওয়ার্কের যে কাভারেজ ও ক্যাপাসিটি আছে, তাতেও সমস্যা আছে, হাইওয়ে মোবিলিটি কভারেজের সমস্যা আছে। স্টারলিংক এসব সমস্যার সমাধান করবে,’ বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ এই সহকারী জানান, স্টারলিংক বাংলাদেশের মোবাইল এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করবে। এর মাধ্যমে ভয়েস কল এবং ডেটা বান্ডেল ভিত্তিক গতানুগতিক ইন্টারনেট সেবাদান ব্যবস্থা ডিজিটাল সার্ভিস কেন্দ্রিক নতুন রূপান্তরে মধ্য দিয়ে যাবে। 

তিনি বলেন, স্টারলিংকের সার্ভিসের ফলে কমিউনিকেশন ইন্ডাস্ট্রিতে ডিরেগুলেশনের সূচনা হবে, প্রতিযোগিতা বাড়বে, শহর কিংবা গ্রামভেদে নিরবচ্ছিন্ন এবং মানসম্পন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেট প্রাপ্তির নিশ্চয়তা তৈরি হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী উপদেষ্টা ফয়েজ আহম্মদ এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান আলোচনার অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের প্রধান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৈঠকে সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যেসব আলোচনা হয়েছে সে ব্যাপারে কমিশন প্রধানকে অবহিত করেন কমিশনের সহসভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ। পরে সেই আলোকে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, বিচারপতি এমদাদুল হক এবং সফর রাজ হোসেন অংশ নেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, শিল্প ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান শুভ্র এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগদান ও ৪ দিনের কাতার সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (২৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায় তিনি ইতালির রোম ত্যাগ করেন। একই দিন দিবাগত রাত ৩টায় তাকে বহনকারী ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ করে।

এর আগে, শনিবার বিশ্বনেতাদের সঙ্গে পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। আগের দিন তিনি কাতারের দোহা থেকে রোমে যান।

পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ক্যাথলিক চার্চের শীর্ষস্থানীয় দুই নেতা কার্ডিনাল সিলভানো মারিয়া টমাসি ও জ্যাকব কুভাকাদ। তারা ড. ইউনূসের কাজের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাকে পোপের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, ‘আর্থনা সামিট-২০২৫’-এ যোগ দিতে গত ২১ এপ্রিল কাতারের উদ্দেশে রওনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।

রাজউকের পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ দুর্নীতির মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (২৭ এপ্রিল) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

এর আগে, গত ১০ এপ্রিল প্লট বরাদ্দ দুর্নীতির মামলায় সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত। আর প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা পৃথক তিনটি মামলায় ১৩ এপ্রিল শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত। তিনটি মামলাতেই শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদসহ ১৬ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।

দেশে ছোট-বড় ইস্পাত কারখানা অর্ধশত। এর ৬২ শতাংশ চট্টগ্রামে। শুধু ইস্পাত নয়; গার্মেন্ট সেক্টরেও ঢাকার পরে অবস্থান চট্টগ্রামের। সংকটে পড়ে গত সাত মাসে এসব কারখানার ৫০টি বন্ধ হয়ে গেছে। আর বিনিয়োগের পথে থাকা শতাধিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম থমকে গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট এবং দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে শিল্পকারখানায়; বিশেষত টেক্সটাইল, সিরামিক ও ইস্পাত কারখানা। এগুলো গ্যাসনির্ভর। তাই গ্যাসের সরবরাহ ঠিকমতো না পাওয়া, কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় গ্যাসের চাপ না পাওয়া এবং দাম বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

 
 

২০২৩ সালে শিল্পে গ্যাসের দাম বেড়েছে ১৭৮ শতাংশ। চলতি মাসে (১৩ এপ্রিল) নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য গ্যাসের দাম আরও ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন, এতে নতুন বিনিয়োগকারীরা পিছিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি পুরোনো শিল্পমালিকরাও চাপে পড়েছেন। কারণ অনুমোদিত লোডের ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করলে তাদেরও গুনতে হবে বাড়তি দাম। 

 

এর বাইরে গত ১৪ বছরে দেশে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৯ বার। এ সময়ে বিদ্যুতের দাম পাইকারি পর্যায়ে ১১৮ আর গ্রাহক পর্যায়ে বেড়েছে ৯০ শতাংশ। সেটিও শিল্প উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

 

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, সিস্টেম লস না কমিয়ে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। এতে আবাসিকের গ্রাহক যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে শিল্প মালিকদের। সিস্টেম লসের দায় ভোক্তার ওপর চাপানো অন্যায়। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ করা দরকার। তাহলে কিছু দিন পরপর দাম বাড়ানোর চাপ আর নিতে হবে না গ্রাহককে।

বিইআরসি ১৩ এপ্রিল নতুন শিল্পের জন্য গ্যাসের দাম প্রতি ইউনিটে ১০ টাকা বাড়িয়ে ৪০ টাকা করেছে। শিল্পে নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্রে (ক্যাপটিভ) ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ছিল ৩১ টাকা ৫০ পয়সা। এটি বেড়ে হয়েছে ৪২ টাকা। এখন যত গ্যাস সংযোগ অনুমোদন করা হবে, তাদের বাড়তি দাম দিতে হবে। এ জন্য হঠাৎ করে শিল্পকারখানার উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে।

জিপিএইচ ইস্পাতের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমাস শিমুল বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম যেভাবে বাড়ছে, সেভাবে সেবার মান বাড়ছে না। বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়লেও কিছু দিন পরপর দাম বাড়ছে। চাহিদা মতো মিলছে না গ্যাসও। আবার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) সরবরাহ প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা হলে তার প্রভাব পড়ছে চট্টগ্রামের শিল্পকারখানায়। এসব নিয়ে দায়িত্বশীলদের গভীরভাবে ভাবতে হবে। তা না হলে ক্রমবর্ধমান উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে বন্ধ হয়ে যাবে ছোট কারখানাগুলো। 

বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, যে পদ্ধতিতে গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটা ঠিক না। আমদানি ও সরবরাহকারী পর্যায়ে দুই দফায় ভ্যাট, পরিচালন খরচ ও উন্নয়ন খরচ যুক্ত করে দাম নির্ধারণ করছে। দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে বিদ্যুতের দামও। সব চাপ দেওয়া হচ্ছে ব্যবসায়ীদের ওপর। অথচ সিস্টেম লসের নামে গ্যাস ও বিদ্যুৎ চুরি ঠেকাতে পারছেন না দায়িত্বশীলরা। তাদের অনিয়ম ও অদক্ষতার দায় নিতে হচ্ছে ১৬ কোটি মানুষকে। কারণ পণ্য উৎপাদনের ব্যয় বেড়ে গেলে স্বাভাবিকভাবে তার প্রভাব পড়ে দেশের জনগণের ওপর।

নতুন চ্যালেঞ্জে ইস্পাত কারখানা 
মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড কনসালটিংয়ের প্ল্যাটফর্ম বিগমিন্টের তথ্য অনুসারে, দেশে ছোট-বড় ইস্পাত কারখানার মধ্যে চট্টগ্রামে ৬২ এবং ৩২ শতাংশ ঢাকায়। দফায় দফায় গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে এসব ভারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। কেএসআরএমের মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম বলেন, এক মিনিটের জন্যও ইস্পাত কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রাখা যায় না। তাই চাহিদা কমে গেলেও কারখানা সচল রাখতে হয়। এর মধ্যে কয়েক দফা বেড়েছে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম। বাড়ছে কাঁচামালের দামও। এমন নানা কারণে গত দুই বছরে আমাদের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ।

প্রতিদিন চার হাজার টন রড উৎপাদনক্ষমতার আবুল খায়ের স্টিলও মোকাবিলা করছে কঠিন চ্যালেঞ্জ। প্রতিষ্ঠানটির সহকারী মহাব্যবস্থাপক  ইমরুল কাদের ভূঁইয়া বলেন, উৎপাদন খরচ যেভাবে বাড়ছে, সেভাবে বাড়ছে না রডের দাম। কারণ, এটি বেশি বেড়ে গেলে আবার চাহিদা কমে যাবে। এমন উভয় সংকটের মধ্যে ব্যবসা চালিয়ে নিতে হচ্ছে।
 
সার উৎপাদন ব্যাহত
আনোয়ারায় রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) গ্যাস সংকটে গত শুক্রবার সকাল থেকে সার উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। চালু থাকলে দৈনিক ১ হাজার ২০০ টন ইউরিয়া উৎপাদন করতে সক্ষম এই প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি বার্ষিক ৩ লাখ ১০ টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন করতে পারে সিইউএফএল। এর আগে কয়েক দফা উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়েছিল কাফকো ও ডিএপি সার কারখানাকেও।

সিইউএফএলের উৎপাদন বিভাগের প্রধান উত্তম চৌধুরী বলেন, ১১ এপ্রিল সকাল ৭টা থেকে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ। গ্যাস সংকটের কারণে আমরা এখনও উৎপাদনে যেতে পারিনি।

সিইউএফএলে প্রতিদিন গড়ে ৪৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দরকার হয়। এক দিন বন্ধ থাকলে কারখানাটিতে গড়ে ৩ কোটি টাকার ইউরিয়া সার উৎপাদন বন্ধ থাকে।

চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ তদারকি প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) আমিনুর রহমান এর আগে বলেছেন, চট্টগ্রামে দৈনিক ৩১২ মিলিয়ন থেকে ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল থেকে পাওয়া যায় ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। ঘাটতি থাকলেও সার কারখানায় দেওয়া হয় ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস। বিদ্যুৎকেন্দ্রে যাচ্ছে ৪০ মিলিয়ন ঘনফুট। সিএনজি ফিলিং স্টেশনে দিতে হচ্ছে ১৯ মিলিয়ন ঘনফুট। বাকি গ্যাস দেওয়া হয় কেজিডিসিএলের ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪টি আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহককে। গৃহস্থালি ছাড়াও ইস্পাত, কাচ, সিমেন্ট, শিপ ব্রেকিং, ঢেউটিন, গার্মেন্টের মতো ভারী শিল্প খাতেও সংযোগ রয়েছে।

সংকট বাড়ছে পোশাক কারখানায়
পোশাক মালিকরা বলছেন, উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তারা তাল মেলাতে পারছেন না। গত সাত মাসে এমন বন্ধ হওয়া কারখানার সংখ্যা অন্তত ৫০টি। 

তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানায়, গ্যাসের চাপ কম থাকলে টেক্সটাইল কারখানায় রঙের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়। আবার বিকল্প জ্বালানি দিয়ে উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে গেলে খরচ বেড়ে যায় দ্বিগুণের বেশি। 

গত সাত মাসে বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার মধ্যে বিজিএমইএর আওতাধীন ১৮টি, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) আওতাধীন দুটি, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) একটি, বেপজার ৯টি ও অন্য সংগঠনের সদস্যপদে থাকা ২২টি কারখানা রয়েছে। 

নতুন শতাধিক প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ
আনোয়ারার সাদ মুসা শিল্প পার্কে বিনিয়োগ করবে ৩২টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠান সেখানে উৎপাদন শুরু করেছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির নতুন সিদ্ধান্তে তাদের ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। আবার মিরসরাইয়ের শিল্পনগরে হচ্ছে দেশের প্রথম অ্যালুমিনিয়াম ইনগট ও কপার ইনগট তৈরির কারখানা। বাংলাদেশ-জাপান যৌথ বিনিয়োগে কারখানাটি হবে ৫০ একর জমির ওপর। কাঁচামাল আসবে জাপান থেকে। এ জন্য বাংলাদেশি শিল্প গ্রুপকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে স্টার অ্যালাইড ভেঞ্চার লিমিটেড। বিপদে পড়বে এই প্রতিষ্ঠানও। 

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান কুনমিং আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি এখানে ১৯ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এ জন্য তাদের এক হাজার একর জমি দেওয়া হয়েছে। এই বিনিয়োগে থাকছে বাংলাদেশি ১৭টি কোম্পানির জোট ‘স্টার কনসোর্টিয়াম’। মিরসরাইয়ের শিল্পনগরে সবচেয়ে বড় প্রকল্প এনেছে পিএইচপি স্টিল ওয়ার্কস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগের প্রস্তাব প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া রুরাল পাওয়ার কোম্পানি ১২০ কোটি ডলার, বসুন্ধরা দেড়শ কোটি ডলার, বাংলাদেশ এডিবল অয়েল ৪০ কোটি, এসিআই ৩১ কোটি, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) ২৬ কোটি এবং অনন্ত অ্যাপারেলস ২২ কোটি ৯০ লাখ ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব এনেছে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর নতুন সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এসব প্রতিষ্ঠানও।

ধর্ষণের শিকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদের কলেজপড়ুয়া মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নে শহীদের ওই কিশোরী মেয়েকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় তার পরেরদিনই অভিযুক্ত একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত একজন গ্রেফতার হয়েছিলো। এছাড়া যারা চিহ্নিত অপরাধী তারা ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই হতাশার মধ্যে ছিলেন ভুক্তভোগী কিশোরী। এসব হতাশা থেকেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন মেয়েটি তার বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা হয়। পথে নলদোয়ানী এলাকা থেকে সাকিব ও সিফাত নামে দুজন তাকে অনুসরণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা মুখ চেপে ধরে পাশের জলিল মুন্সির ভিটা বাগানে নিয়ে যান। সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয় এবং ঘটনার ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় দুজনের নাম উল্লেখ করে দুমকি থানায় মামলা করেছিলেন ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী। 

গত ১৫ বছর স্বাধীনভাবে কেউ কোনো কথা বলতে পারেননি, তাই বর্তমানে এত আন্দোলন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার দেশের সব সমস্যার সমাধানে বিরতিহীন কাজ করে যাচ্ছে। মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের ওপর চালানো হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন প্রমাণ থাকার পরও কেউ কোনো প্রতিবাদ করেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, বর্তমান অস্থির সময়ে সহনশীলতার অভাবের বিপরীতে একমাত্র হাতিয়ার হচ্ছে বই। এ সময় প্রকাশনা শিল্প সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। জনগণের সমর্থন ও রায় নিয়ে বিএনপি এই সংস্কার কার্যক্রম শুরু করবে। জনমানুষের যে চাওয়া, তার সাথে একটি মহলের চাওয়ার অমিল রয়েছে। তবে বিএনপি সফল একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের দাবি দাওয়া নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম চালাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে পঞ্চগড়ের পৌরসভা চত্বরে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি প্রশিক্ষণ কর্মশালা’ শীর্ষক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান বলেন, অনেকে অনেক কিছু বলতে পারে। তবে আমাদের প্রতিজ্ঞা দৃঢ়। সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, আমরা যা মানুষের সামনে বলেছি, তাই করবো ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশের একটি প্রধান দল হিসেবে আমরা শুরু করবো, এরপর আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ও নেতাকর্মীরা তা চালিয়ে যাবে। 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা দেশের সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই। আমাদের মাঝে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। গণতন্ত্রে মতপার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে কোনোভাবেই যাতে মানুষের ভোট ও রাজনৈতিক অধিকার বাধাগ্রস্ত না হয়। কারণ এসব বাধাগ্রস্ত হলে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। 

তিনি আরও বললেন, বিগত ১৫ বছর জনগণের রাজনৈতিক অধিকার ও ভোটের অধিকারকে কেড়ে নেয়া হয়েছিল। তার ফলে বিচারব্যবস্থা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য-চিকিৎসা খাত ধ্বংস হয়ে গেছে। সমাজে বিভিন্ন অধঃপতন ও বিভিন্ন অনাচার শুরু হয়।