• Colors: Purple Color

আওয়ামী লীগ আমলের সব সচিব ও আমলাদের অপসারন না করলে আগামী সপ্তাহে সচিবালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছে জুলাই মঞ্চ।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে এমন হুঁশিয়ারি দেয় সংগঠনটির নেতারা।

বক্তারা বলেন, বিপ্লবের এক বছর পার হলেও উপদেষ্টা পরিষদ ও সচিবালয়ে এখনও ফ্যাসিস্ট আমলের সুবিধাভোগীরা বহাল তবিয়তে রয়েছে। তাদেরকে রেখে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। দেশকে অস্থিতিশীল করতে নানা ষড়যন্ত্র করছে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার গণ-মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে এই সরকারের বিরুদ্ধেও আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

‘২৪ এর গণঅভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করতে সকল ধরনের আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলছেন, সমীকরণ এখনও শেষ হয়নি। যারা এখনই সমীকরণ মিলিয়ে ফেলছে তারা ভুল পথে হাটছে। গত এক বছর ছাড় দিয়েছি, জুলাই ঘোষণাপত্রে ছাড় দিয়েছি, জুলাই সনদে এক শতাংশও ছাড় দেয়া হবে না।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে জাতীয় যুবশক্তি আয়োজিত ‘জাতীয় যুব সম্মেলনে’ এমন মন্তব্য করেন তিনি।

অভ্যুত্থানের শক্তি এখনও রাজপথে আছে এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে নাহিদ বলেন, গনঅভ্যুত্থানের এক বছর পার হয়েছে। অনেক হিসেব-নিকেশ করেছি। আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। গত এক বছরে জাতীয় নাগরিক পার্টি ছাড় দিয়েছে। এখন আর ছাড় দিবে না। জুলাই সনদের যে উদ্দেশ্য তা প্রতিষ্ঠা করেই নির্বাচনে অংশ নেবো।

নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে না পারলে আরেকটি ১/১১ আসবে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন চাই। তবে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। জুলাই সনদে একবিন্দুও ছাড় দেয়া হবে না। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হলে কোনও রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যেতে পারবে না।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, সংশোধন ও সংস্কার নিজেদের ঘর থেকে শুরু করতে হবে। চাঁদাবাজি কোনও রাজনৈতিক দলের ইমেজের জন্য ভালো নয়। যারা সুবিধা নেয়ার জন্য দলে এসেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

গণঅভ্যুত্থানের জন্য তরুণদের সম্মান দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম। বলেন, আগামীর গণপরিষদে তরুণদের নেতৃত্ব দেখতে চাই। জাতীয় প্রতিরক্ষার জন্য তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, জাতীয় প্রতিরক্ষার অংশ হিসেবে তরুণদের গড়ে তুলতে হবে। তরুণদেরকে সামরিক ট্রেনিং দিতে হবে, সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য তরুণদের প্রস্তুত রাখতে হবে। বাংলাদেশের তরুণরা যুদ্ধ করতে চায়, লড়াই করতে চায়, দেশ গঠন করতে চায়।

নাহিদ আরও বলেন, নাগরিক পার্টি যেমন রাজপথ থেকে গড়ে ওঠা দল এবং সারাদেশে সংগঠিত হচ্ছে তেমনি যুবশক্তিও রাজপথ থেকে গড়ে ওঠা দল। যুবশক্তি শুধু জাতীয় নাগরিক পার্টির ভ্যানগার্ড নয় দেশের ভ্যানগার্ড হবে। ক্ষমতার নির্ধারকরা যদি তরুণদের প্রতারিত করে তাহলে এদেশের ভবিষ্যৎ ভালো হবে না। জুলাই পদযাত্রা শেষ হয়নি দ্রুত আবার আপনাদের দোড়গোড়ায় যাবো বলেও জানান এনসিপির এই নেতা।

রাজউকের পূর্বাচলে নতুন শহর প্রকল্পের প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, টিউলিপ সিদ্দিক, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে প্রথম দিনের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হন দুদকের তিন কর্মকর্তা। তারা হলেন— সালাহউদ্দিন, আফনান জান্নাত কেয়া ও এস এম রাশেদুল হাসান।

পৃথক তিন মামলায় শেখ হাসিনা পরিবারের বাইরে অন্য আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গণপূর্তের তৎকালীন সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়া, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য কবির আল আসাদ, সদস্য তন্ময় দাস, সদস্য নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার।

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর জানান, রাউকের আবাসন নীতিমালার সকল আইন ভঙ্গ করে শেখ হাসিনা তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে শেখ রেহেনাসহ তার পরিবারের নামে প্লট বরাদ্দ নেন। সাক্ষ্য গ্রহণে দুদকের কর্মকর্তারা এমন তথ্য আদালতকে জানান।

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দ নেয়া প্লটের বিষয়ে ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয় মামলায় গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।

সব কিছুর দাম স্থিতিশীল থাকলেও শুধু চালের কারণে জুলাই মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উপকরণ হিসেবে আমদানিকে ব্যবহার করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে কৃষিঋণ নীতিমালা ঘোষণা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

গভর্নর বলেন, চলতি অর্থবছরে কৃষিতে ৩৯ হাজার কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি। তবে এর পরিধি আরও বাড়ানো দরকার।

কৃষি ঋণ আদায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কৃষি ঋণ আদায় নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। ঋণ পরিশোধে কমপক্ষে ৬ মাস সময় দেয়া দরকার। এ সময় সুদহারে ভর্তুকির চেয়ে সময়মতো ঋণ পাওয়া কৃষকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নির্বাচনকালীন সরকারের উপদেষ্টা পদে থাকছেন না।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম ঠিকানায় গতকাল মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসে তিনি এ তথ্য জানান।

তার মানে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই কি নাহিদ ইসলামের মতো উপদেষ্টার পদ ছেড়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন আসিফ মাহমুদ? তেমনটাই ইঙ্গিত রয়েছে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার কথায়।

সরকার থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে আসিফ মাহমুদ বলেছেন, ২০১৮ সাল থেকে আমি রাজনীতিতে যুক্ত। তাই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে যাবো।

রাজনীতিতে আছে এমন কয়েকজন সরকারে আছে; মাহফুজ আলমসহ আরও কেউ যদি থাকেন এমন কারও নির্বাচনকালীন সরকারে থাকা উচিত নয় বলেও মনে করছেন তিনি। কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা দেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতিকে সেরা নির্বাচন উপহার দিতে চান। তাই কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের প্রশ্ন যেন না আসে।

আসিফ মাহমুদের মুখ থেকে এমন ঘোষণা আসার আগে থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন ছিল— ভোটের আগে দুই ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ ইসলাম সরকার থেকে সরে এসে এনসিপিতে যোগ দিতে পারেন।

তবে এনসিপিতেই আসিফ মাহমুদ যোগ দেবেন কি না তা পরিষ্কার করেননি এই টকশোতে। এছাড়া, আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি না, বিষয়টি স্পষ্ট করেননি তিনি।

এর আগে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠনকে কেন্দ্র করে জাতীয় নাগরিক কমিটির (জানাক) তৎকালীন কয়েকজন নেতার মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে সংগঠনটির কার্যালয় যে ভবনে, অর্থাৎ ঢাকার বাংলামোটরে রূপায়ন সেন্টারে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ উঠে এবং আলোচনা চলে।

তবে এ নিয়ে আসিফ মাহমুদের পক্ষ থেকে পরিস্কার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, কার্যক্রম স্থগিত হওয়া গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতারা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে ছিলেন। সেই সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন আখতার হোসেন, আর নাহিদ ইসলাম সদস্য সচিব ছিলেন। ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ছিলেন আসিফ মাহমুদ।

তারা সকলেই ছাত্রশক্তি গঠনের পূর্বে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাথে যুক্ত ছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে ২০২৩ সালে ছাত্রশক্তি গঠন করেন।

এদিকে, গুঞ্জন রয়েছে, কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে ভোট করতে পারেন আসিফ মাহমুদ। এজন্য বিএনপি নেতা ও অতীতে আসনটিতে একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের সাথে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে বলেও গুঞ্জন আছে রাজনৈতিক মহলে।

এ নিয়ে আসিফ মাহমুদ বলছিলেন, কেউ কেউ মনে করছেন তিনি মুরাদনগর থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন। এটা ঠিক নয় বলে দাবি তার।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, আমি জাতীয়পর্যায়ে রাজনীতি করতে চাই। সেক্ষেত্রে স্থানীয় স্তরে গিয়ে নির্বাচন করা, রাজনীতি করা সুবিধাজনক হবে না। জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্র হিসেবে ঢাকা শহরই আমার জন্য সুবিধাজনক স্থান।

এছাড়া, কুমিল্লার মুরাদনগরে মবের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড, শিক্ষক নিপীড়ন, চাঁদাবাজি— এসব ঘটনায় যারা জড়িত তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেন; কিছুদিন ধরে এমন আলোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এগুলোকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ‘অপপ্রচার’ বলে দাবি আসিফ মাহমুদের। এসবের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানালেন তিনি।

আগামী নির্বাচনে কালো টাকার বিস্তার ঠেকাতে অন্তর্বর্তী সরকার সচেষ্ট থাকবে; এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে এবং সংস্কৃতির পরিবর্তন আনতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ‘ইউ পেনশন’ অ্যাপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ফেব্রুয়ারিতে একটি ভালো নির্বাচন আয়োজন করতে চায় সরকার। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে একটি কল্যাণরাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে সব পেশার মানুষ কেন অংশ নিচ্ছে না, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশও দেন তিনি।

এ সময় অর্থ উপদেষ্টা জানান, সরকারি কর্মচারী ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। এই স্কিমে কোনো ভুলত্রুটি থাকলে তা সংশোধনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। সর্বজনীন পেনশন নিয়ে আরও ব্যাপক প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

আমাদের অনুসরণ করুন

 

সর্বাধিক পড়ুন

  • সপ্তাহ

  • মাস

  • সব