যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি, বরং তারা দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে লড়ছে মাত্র— এমন মন্তব্য করেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।

রোববার (২২ জুন) এনবিসির ‘মিট দ্য প্রেস উইথ ক্রিস্টেন ওয়েলকার’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করছি না। আমরা যুদ্ধ করছি তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে।

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে চালানো হামলাগুলোর কারণে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি অনেক বছর পিছিয়ে গেছে। আমার বিশ্বাস, এখন ইরান একটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম হতে বহু বছর সময় লাগবে।

ভ্যান্স ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, তারা আলোচনায় সদিচ্ছার পরিচয় দেয়নি, যার ফলে মার্কিন হামলা অনিবার্য হয়ে ওঠে।

ভ্যান্স আরও বলেন, আমরা ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন চাই না। আমরা দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ চাই না। আমরা শুধু পারমাণবিক কর্মসূচির অবসান চাই, এরপর ইরানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নিয়ে কথা বলতে চাই।

ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মোড়কে ক্লাস্টার বোমা ছুড়ছে ইরান। তেহরানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আইডিএফ’র। দাবি- সম্প্রতি তেলআবিবে চালানো এক হামলায় ব্যবহার করা হয় শক্তিশালী মারণাস্ত্রটি। যদিও এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে কিছুই জানায়নি আইআরজিসি।

১৯ জুন। রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে তেলআবিবে আঘাত হানে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র। দফায় দফায় বিস্ফোরণে নজিরবিহীন ক্ষয়ক্ষতির শিকার একাধিক আবাসিক এলাকা। এসব মিসাইলগুলোর মধ্যে অন্তত একটি ছিল ক্লাস্টার ওয়ারহেডযুক্ত, এমন দাবি আইডিএফ’র।

ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের চাদরে ঢাকা ভয়ংকর এক মারণাস্ত্রের নাম ক্লাস্টার মিউনিশন। কখনও কখনও আঘাত হানে ব্যালিস্টিক মিসাইলের চেয়েও ভয়ংকর রূপে।


মূলত, ক্লাস্টার মিউনিশন যুক্ত ওয়ারহেডগুলো মাটি থেকে ৭-৮ হাজার মিটার উচ্চতায় আকাশে থাকা অবস্থাতেই ছোট ছোট ওয়ারহেড কিংবা সাবমিউনিশনে বিভক্ত হয়। যা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায়। যেখান থেকে পরবর্তীতে ঘটতে থাকে একের পর এক বিস্ফোরণ।

ক্লাস্টার বোমার সাবমিউনিশনগুলো অনেকদিন মাটিতে সক্রিয় এবং অবিস্ফোরিত অবস্থায় থাকতে পারে। অজান্তে কেউ সংস্পর্শে চলে এলে বেড়ে যায় প্রাণহানির শঙ্কা। অর্থাৎ এক ধরনের জীবন্ত মাইন হিসেবেও বিবেচনা করা যেতে পারে এটিকে।


কনভেনশন অন ক্লাস্টার মিউনিশন নামে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি হয় ২০০৮ সালে। নিষিদ্ধ করা হয় ক্লাস্টার বোমার সংরক্ষণ, পরিবহন ও ব্যবহার। ১০০টির বেশি দেশ তাতে সই করে। অবশ্য চুক্তিবদ্ধ হয়নি যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, ইরান।


যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীনের মতো পরাশক্তিসহ হাতেগোনা কয়েকটি দেশের কাছেই রয়েছে ক্লাস্টার প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার। ধারণা করা হয়, ইরানের রহস্যময় ক্ষেপণাস্ত্র বহরেও রয়েছে এই ওয়ারহেড। যার মধ্যে অন্যতম, খায়বার এবং ফাজর থ্রি ব্যালিস্টিক মিসাইল।

ইরানের পারমাণবিক হুমকি ‘প্রশমনের’ জন্যই যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। এ সময় তিনি ইরানকে আবারও আলোচনার টেবিলে আসার আহ্বান জানান তিনি। খবর বিবিসির।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকি। ইরানকে কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেওয়া যাবে না এবং এই হুমকি প্রশমনে যুক্তরাষ্ট্র পদক্ষেপ নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি এখনও অস্থির। ওই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। আমরা ইরানকে আবারও আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি, যেন কূটনৈতিকভাবে এই সংকটের অবসান ঘটানো যায়।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একদিন থাকবেন না। কিন্তু ইরান ঠিকই থাকবে। এমন কথা বলেছেন, রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও দেশটির নিরাপত্তা কাউন্সিলের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ।

শনিবার (২২ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইরানের পক্ষে এমন কথা বলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এ ঘনিষ্ঠ মিত্র।

তিনি দখলদার ইসরায়েলের ‘গোপন’ পারমাণবিক কার্যক্রমেরও সমালোচনা করেন। মেদভেদেভ বলেন আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার তত্ত্বাবধানে ইসরায়েলের এসব ‘গোপন’ কার্যক্রম পরিত্যাগ করা উচিত।

তিনি বলেন, কেন তেলআবিবের জন্য পারমাণবিক কার্যক্রম ভালো। কিন্তু তেহরানের জন্য ভালো নয়। নেতানিয়াহু একদিন বিদায় নেবে। কিন্তু ইরান থাকবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ইরানের উত্তরাঞ্চলে ৫.১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসনিমের বরাত দিয়ে জানা গেছে, ইরানের সেমনান শহরের প্রায় ৩৭ কিলোমিটার (২৩ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) গভীরতায় এই ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।

একদিকে ভূমিকম্প, অন্যদিকে একই সময়ে ইসরায়েলের বিমান হামলায় দেশটির বিভিন্ন স্থানে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে, যা ইরানিদের জন্য একযোগে প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ ডেকে এনেছে।

এখনও পর্যন্ত বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর নিশ্চিতভাবে পাওয়া যায়নি, তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কিছু ভবন হালকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইরানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (রেড ক্রিসেন্ট) এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ তৎপরতা শুরু করেছে।

ইরানের বেশ কিছু শহরে ইন্টারনেট ও ব্যাংকিং সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় ভূমিকম্প পরিস্থিতি মোকাবিলায় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটির উদ্ধারকর্মীরা।

সূত্র: তাসনিম নিউজ এজেন্সি, ব্যারন্স, গালফ নিউজ, আল-আরাবিয়া নিউজ

ইরান–ইসরায়েলের চলমান সংঘাতে ইসরায়েল অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিউজার্সিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। খবর টাইমস অব ইসরায়েল।

এমনকি ইসরায়েলকে এ মুহূর্তে হামলা বন্ধ করতে বলা তার জন্য কঠিন হবে বলেও মন্তব্য করেন।

ট্রাম্প বলেন, এই মুহূর্তে হামলা থামাতে বলাটা কঠিন। কেননা যুদ্ধে কেউ এগিয়ে থাকলে তাকে থামানো, হারতে থাকা পক্ষকে থামানোর চেয়ে কঠিন। তবে আমরা ইরানের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত এবং সক্ষম—ইরানের সঙ্গে আমাদের কথাবার্তা চলছে।

তিনি আরও বলেন, যুদ্ধে ইসরায়েল ভালো করছে, অন্যদিকে ইরান কম ভালো করছে। এ অবস্থায় কাউকে থামাতে বলা একটু কঠিন।

এর আগে গত শুক্রবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো আলোচনা সম্ভব নয়।

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক হামলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জন্য আরও দুই সপ্তাহ সময় দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর সিএনন’র।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন ল্যাভিট।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি বলেন, ইরানের সঙ্গে যেকোনো চুক্তির ক্ষেত্রে ‘ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ না করার বিষয়টি’ অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগের অবস্থান পুনরায় তুলে ধরে বলেন, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের সুযোগ দেয়া যাবে না।

চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন হামলা চালানোর এখতিয়ার আছে কি না— এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, একমাত্র কংগ্রেসের হাতে যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা থাকলেও, ইতিহাস বলছে, বিগত সময়ে অনেক প্রেসিডেন্টই কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে নিয়েছেন সামরিক পদক্ষেপ।

এবার ট্রাম্প যাতে এ ধরনের উদ্যোগ না নিতে পারেন, তার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন কিছু মার্কিন কংগ্রেসম্যান। কারণ তারা মনে করছেন, এটা আমেরিকার যুদ্ধ নয়। আর সাংবিধানিকভাবে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া, একতরফাভাবে প্রেসিডেন্টের কোনো সামরিক পদক্ষেপ সমর্থন করেন না তারা।

মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান বলেন, এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের কোনোভাবেই উচিত নয় ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ানো। আর যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের নেই, এ ক্ষমতা আছে শুধুমাত্র কংগ্রেসের। ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি সকল যুদ্ধ বন্ধ করতে এসেছেন, শুরু করতে নয়। তাই এ নিয়ে রিপাবলিকানদের মধ্যে প্রতিদিনই বিতর্ক চলছে।

রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান থমাস ম্যাসি ও ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান রো খান্না হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে একটি যৌথ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এতে বলা হয়, কংগ্রেসের স্পষ্ট অনুমতি ছাড়া ইরানে কোনো সামরিক অভিযান চালাতে পারবেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিতে রয়েছে প্রস্তাবটি, যেখানে ১৫ দিনের মধ্যে কোনো পদক্ষেপ না নিলে সরাসরি ভোটের জন্য হাউসে উঠবে এটি। প্রস্তাবটি পাশ হলে, কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া ইরানে বড় কোনো সামরিক হামলা বা যুদ্ধ শুরু করতে পারবেন না প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

তবে শুধু সাংবিধানিক বাধা-ই নয়, ইরানে হামলা না করতে মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদের পাশাপাশি ব্যবসায়িদের পক্ষ থেকেও চাপ বাড়ছে ট্রাম্পের ওপর। এ সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে পড়লে ক্ষতির মুখে পড়বে সারা বিশ্বের অর্থনীতিও।

সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা ফিলিপ ইনগ্রাম বলেন, ইরানে যদি যুক্তরাষ্ট্র অভিযান শুরু করে, তাহলে তারা হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিতে পারে। বর্তমানে বিশ্বের ২০ শতাংশ তেল ও গ্যাসের বাণিজ্য হয় এ পথে। আর তা বন্ধ হয়ে গেলে হুমকির মুখে পড়বে বিশ্ব অর্থনীতি।

প্রসঙ্গত, অতীতে সরাসরি প্রেসিডেন্টের নির্দেশে কোরীয় এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধে জড়িয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাই ইরান-ইসরায়েল ইস্যুতে তাদের প্রত্যক্ষ অবস্থান নিয়েও চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

ইসরায়েলি নারকীয় আক্রমণে নিহত হয়েছে ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলিশনারি গার্ড সংস্থার গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমীসহ আরও দুই কর্মকর্তা।

তথ্যটি নিশ্চিত করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা। রোববার ইসরায়েলের নির্বিচার গোলাবর্ষণে মোহাম্মদ কাজেমীর পাশাপাশি প্রাণ হারিয়েছেন তার সহকারী দুই জেনারেল হাসান মোহাঘেগ ও মোহসেন বাঘেরি।

আইআরজিসির পাশাপাশি তাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন শহরে টানা ৪র্থ দিনের মতো হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। বার্তা সংস্থা সিএনএন জানায়, ইরান থেকে নতুন করে আরও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ শনাক্ত করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ফলে ইসরায়েলি নাগরিকদের দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

তেলআবিবে সাইরেন শোনা গেছে এবং বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সিএনএনের সাংবাদিকরা।

এদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে ও ইরানের হামলা প্রতিহত করার চেষ্টা চলছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনালাপ হয়েছে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের। এ সময় ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছেন সৌদি যুবরাজ। খবর আরব নিউজের।
  
রোববার (১৫ জুন) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ওপর হওয়া ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে সৌদি যুবরাজ বলেন, এই হামলা ইরানের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে ক্ষুণ্ণ করেছে। লঙ্ঘন করেছে আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি।

তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে চলমান সংলাপকে ব্যাহত করেছে। উত্তেজনা হ্রাস এবং কূটনৈতিক সমাধানকে বাধাগ্রস্ত করেছে। ফোনকলে বিরোধ সমাধানের জন্য শক্তি প্রয়োগ বন্ধ ও মতপার্থক্য সমাধানের ভিত্তি হিসেবে সংলাপের ওপর জোর দিয়েছেন সালমান।

অন্যদিকে মাসুদ পেজেশকিয়ান সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে বলেন, আমি রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এই অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা জোরদার করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু ইহুদিবাদী সরকার (ইসরায়েল) আমরা যেখানে কিছু অর্জন করতে চেয়েছিলাম প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ও নাশকতা সৃষ্টি করেছে।

উল্লেখ্য, ইরান ও সৌদি আরব ২০২৩ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন করে চালু করার ঘোষণা দেয়। ওই সময় থেকে দেশ দুটির সম্পর্কে শীতলতা কাটতে শুরু করে।

সম্মুখ যুদ্ধে ইসরায়েলকে মোকাবিলা করার জন্য ইরানের সামরিক বাহিনী প্রস্তুত। এক্ষেত্রে ইসরায়েলের প্রতি কোনো দয়া প্রদর্শন করা হবে না— এমন মন্তব্য করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।

শুক্রবার (১৩ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।

খামেনি বলেন, ইরানে হামলা করে জায়নবাদী শাসকগোষ্ঠী একটি বড় ভুল করেছে। এটি একটি গুরুতর অপরাধ এবং চরম বেপরোয়া আচরণের বহিঃপ্রকাশও। এই হামলার ফলাফল হবে গুরুতর এবং জায়নবাদী শাসকগোষ্ঠী ধ্বংস হয়ে যাবে। তাদের হামলায় ইরানে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের রক্ত এদেশের জনগণ বৃথা যেতে দেবে না। ইরান নিজেদের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশও সহ্য করবে না। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত। দেশের সর্বস্তরের মানুষ তাদের পাশে আছেন।

তিনি আরও বলেন, এই অশুভ, ঘৃণ্য এবং সন্ত্রাসী জায়নবাদীদের শক্ত জবাব দেয়ার সময় এসেছে। তাদের প্রতি কোনো দয়া দেখানো হবে না।স

উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ অন্তত ৮টি শহরে বড় ধরনের বিমান হামলা করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী (আইএএফ)। ইরানের পরমাণু প্রকল্প ও সামরিক বাহিনীর স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে এ হামালা চালানো হয়েছিল। পরে পাল্টা হামলা চালায় তেহরানও।