অবশেষে ছাত্র-জনতার তীব্র বিক্ষোভের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হলো নেপাল সরকার। তুলে নেয়া হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে নেয়া হয় এ সিদ্ধান্ত।

যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী পৃথিবী সুবা গুরুং জানিয়ছেন, জেন জি’র আন্দোলন ও দাবির জেরে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার চালুর বিষয়ে একমত হয়েছেন মন্ত্রীরা।

এর আগে, তীব্র ছাত্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রামেশ লেখক। সোমবার সন্ধ্যায়, প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন বালুওয়াতারে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।

মন্ত্রিসভার এক সদস্য জানিয়েছেন, বিক্ষোভ সহিংসতায় ১৯ জনের প্রাণহানি ও চার শতাধিক মানুষ আহত হওয়ায়, নৈতিক কারণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়েছেন রামেশ।

এরও আগে, নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করা হয় গত ৪ সেপ্টেম্বর। এ সময় থেকে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বন্ধ ছিল।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শুরু হয় ব্যাপক বিক্ষোভ। এই আন্দোলনকে ‘জেন-জি রেভলিউশন’ নাম দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

নেপাল সরকারের ভাষ্যমতে, দেশটিতে কিছু প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভুয়া আইডি ব্যবহারকারীরা ঘৃণা ও গুজব ছড়াচ্ছে, সাইবার অপরাধ করছে এবং সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করছে।

গত বুধবার পর্যন্ত এসব সামাজিক প্ল্যাটফর্মকে নিবন্ধন করার সবশেষ সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল নেপাল সরকার। সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার দেশটির টেলিকমিউনিকেশনস অথরিটিকে (এনটিএ) অনিবন্ধিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। এর ফলে সরাসরি জনগণের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন আন্দোলনকারীরা।

সমরাস্ত্রের বাজার বাড়াতে কয়েক দশকের পুরোনো নীতিতে পরিবর্তন আনতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্রের বিক্রি নিয়ন্ত্রণে ১৯৮৭ সালে ৩৫ দেশের মধ্যে হয়েছিলো এমটিসিআর নামের অনানুষ্ঠানিক সমঝোতা। এবার সৌদি আরব ও পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোর কাছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ড্রোন ও সমরাস্ত্র বিক্রির জন্য নতুন পদক্ষেপ নিতে চলেছে ট্রাম্প প্রশাসন। নীতি পরিবর্তন হলে সৌদি আরবের কাছে শতাধিক রিপার ড্রোন বিক্রি করতে পারে ওয়াশিংটন।

এমকিউ-নাইন রিপার— গোয়েন্দাগিরি, নজরদারি, টার্গেট শনাক্তকরণ কিংবা আক্রমণ, যেকোনো সামরিক অভিযান পরিচালনায় অত্যাধুনিক এই মার্কিন ড্রোনের জুড়ি মেলা ভার।

মূলত, ২০ মিটার দৈর্ঘের বিশাল ডানা নিয়ে ঘণ্টায় প্রায় ৪৮০ কিমি গতিতে ছুঁটতে সক্ষম এই চালকবিহীন আকাশযান। নজরদারির কাজে আকাশে থাকতে পারে একটানা প্রায় ৩০ ঘণ্টা। হেলফায়ার মিসাইল, পেভওয়ে ও লেজার গাইডেড বোমার মতো আধুনিক সমরাস্ত্র সমেত একটানা উড়ান ক্ষমতা ২৩ ঘন্টা। নির্ভুলভাবে হামলা চালাতে সক্ষম সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে।

এতসব আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য দেখে অনেক দেশই কিনতে আগ্রহী মার্কিন এই ড্রোন। গেল মে মাসেই, ট্রাম্পের সৌদি আরব সফরে শতাধিক রিপার ড্রোন কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে রিয়াদ। ধারণা করা হচ্ছে- প্রায় ১৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সমরাস্ত্র দেশটিতে বিক্রি করতে পারতে ওয়াশিংটন। সৌদি ছাড়াও মার্কিন এই সামরিক আকাশযান কিনতে আগ্রহী ইউরোপ ও প্যাসিফিক অঞ্চলের কয়েকটি দেশ।

কিন্তু ড্রোনসহ অত্যাধুনিক এসব সমরাস্ত্র বিক্রিতে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে কয়েক দশকের পুরোনো একটি সমঝোতা। ১৯৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ৩৫টি দেশ মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রিজিম বা এমটিসিআর সমঝোতায় সই করে। সে অনুযায়ী, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন কিংবা এ জাতীয় মারণাস্ত্র পারমানবিক শক্তিধর দেশ ব্যাতীত অন্য দেশগুলোর কাছে বিক্রি করতে পারবে না চুক্তিবদ্ধ দেশগুলো।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানায়, পুরোনো এই সমঝোতায় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। নতুন নীততে আন্তর্জাতিক চাহিদা অনুযায়ী এসব সমরাস্ত্র বিক্রি করবে দেশটি। যা তৈরি করা হবে মার্কিন সমরাস্ত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলোতেই।

বর্তমানে বৈশ্বিক অস্ত্র রফতানিতে মার্কিন ড্রোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়েছে তুরস্ক ও চীন।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সমাবেশ ফোবানা সম্মেলনের ৩৯তম আসর শুরু হয়েছে। শুক্রবার (২৯ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার ডুলুথে গ্যাস সাউথ কনভেনশন সেন্টারে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনে উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে আগত হাজারও প্রবাসী বাংলাদেশি অংশ নিয়েছেন।

উদ্বোধনী দিনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর আলোচকরা প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঐক্য, সংস্কৃতি ও আগামী প্রজন্মের কাছে মাতৃভাষা এবং ঐতিহ্য পৌঁছে দেয়ার গুরুত্ব নিয়ে বক্তব্য রাখেন।

সম্মেলনে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে আসা হাজারো প্রবাসী বাঙালির পদচারণায় পুরো অনুষ্ঠানস্থল পরিণত হয়েছিল এক টুকরো বাংলাদেশে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ র চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক বিন হারুন, যুক্তরাষ্ট্রের লেফটেন্যান্ট গভর্নর অফ জর্জিয়া বার্ড জোন্স, চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স, বাংলাদেশ, সালাউদ্দিন মাহমুদ, কনসোল জেনারেল অব বাংলাদেশ, মায়মি, সেহেলি সাবরিন, জর্জিয়ার সেনেটর শেখ আব্দুর রহমান, সেনেটর নাবিলা ইসলাম, সেনেটর শেলী হেরাল, সিনেটর জস ম্যাকলেইন, জর্জিয়া ফায়ারের চেয়ারম্যান হাসান তারেক দ্বীপ, কনভেনর, ফোবানা ২০২৫ নাহিদুল খান সাহেল, মেম্বার সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া, মোঃ আলমগীর, সেক্রেটারি জেনারেল আবির আলমগীর, চেয়ারপারসন ফোবানা এক্সিকিউটিভ কমিটি মাসুদ রব চৌধুরী, চেয়ারপারসন ফোবানা হোস্ট বিজনেস কমিটি ডিউক খান, কাজী নাহিদ, চীফ কো-অর্ডিনেট এম মওলা দিলু , মোয়াজ্জেম এইচ চৌধুরী, তাসিক আহমেদ, কবি ও বাচিক শিল্পী ভাস্কর ব্যানার্জি, ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিফ, যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র বাংলাদেশি মুসলিম জজ আজমেরী হক, মাহবুব রেজা চৌধুরী প্রমূখ।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের নিয়ে বিজনেস নেটওয়ার্কিং সেমিনার। সেখানে প্রবাসী বাংলাদেশী ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদেরকে বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগের আহ্বান জানান বিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক বিন হারুন। ওই সেমিনারে তিনি কি- নোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

এবারের সম্মেলনে বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পাশাপাশি ছিল আলোচনা সভা, সাহিত্য আসর, প্রবাসীদের জীবনধারা ও নতুন প্রজন্মের সমস্যাবলী নিয়ে সেমিনার। এছাড়া নাটক, লোকসংগীত, আধুনিক গান, ফ্যাশন শো এবং শিশু-কিশোরদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন জনপ্রিয় শিল্পী, সাংবাদিক, লেখক ও রাজনীতিবিদরা। তাদের অংশগ্রহণে আয়োজনটি আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠে। একই সঙ্গে প্রবাসী ব্যবসায়ী, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও তরুণ প্রজন্মের উপস্থিতি সম্মেলনকে রূপ দিয়েছে এক মহা মিলনমেলায়।

তিন দিনব্যাপী এ মহোৎসবকে ঘিরে আটলান্টার বাঙালি কমিউনিটিতে বইছে উৎসবের আমেজ। শুধু সাংস্কৃতিক পরিবেশনা নয়, এখানে ছিল বাঙালি খাবার, পোশাক, অলঙ্কার ও বই মেলা। যা পুরো সম্মেলনকে রূপ দিয়েছে এক ক্ষুদ্র বাংলাদেশে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজক নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বলেছেন, এই সম্মেলন প্রবাসীদের সাংস্কৃতিক বন্ধন আরও দৃঢ় করবে এবং আগামী প্রজন্মকে মাতৃভাষা ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সংযুক্ত রাখতে অনুপ্রাণিত করবে।

তারা আরও বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে শুধু সাংস্কৃতিক বন্ধনই দৃঢ় করেনি, বরং তরুণ প্রজন্মকে বাংলাদেশি ঐতিহ্য, শিল্প-সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত করারও সুযোগ তৈরি হয়েছে। ফোবানা সম্মেলন আগামী দিনে প্রবাসীদের পরিচয়, ঐক্য ও মূলধারায় সম্পৃক্ততাকে আরও সমৃদ্ধ করবে বলেও তারা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।

এবারের সম্মেলনে ছিল বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এর বিশেষ সেবা সার্ভিস। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব জর্জিয়া এই বিশেষ সার্ভিসটি আয়োজন করেন। পাসপোর্ট নবায়ন, ই পাসপোর্ট, এনআইডি সমস্যা সহ বিভিন্ন ধরনের সেবা দেওয়া হয় সেখানে।

তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজক ছিলেন আটলান্টাভিত্তিক সাহিত্য-সংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলা ধারা’।

এবারের সম্মেলনের মূল ফোকাস ছিল ‘প্রবাসী প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গি ও বৈশ্বীকরণে বাংলাদেশের অবস্থান’। এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বাড়ানো, বাংলাদেশিদেরকে দেশটির মূলধারায় সম্পৃক্ত করা এবং শিক্ষা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা ছিল সম্মেলনের মূল লক্ষ্য। এবারের সম্মেলনে বেশ কিছু বিষয়কে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফেডারেশন অব বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন্স ইন নর্থ আমেরিকার (ফোবানা) চেয়ারপারসন মাসুদ রব চৌধুরী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে সৌহার্দ্য বাড়িয়ে তোলা, নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের জীবন, শিল্প-সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়াই এই সম্মেলন আয়োজনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।

এবারের সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে স্কলারশিপ দেয়া হয়। এছাড়া এবার আটলান্টার ১০ জন নতুন প্রজন্মের মেধাবী শিক্ষার্থীদের এককালীন স্কলারশিপ প্রদান করা হয়।

ফোবানার এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি আবীর আলমগীর বলেন, এবারের সম্মেলনে উত্তর আমেরিকার ২৪টি শহর থেকে সর্বমোট ৭৪টি সংগঠন এবং সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়া ছিল উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন শহরের সাংগঠনিক সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, বিষয়ভিত্তিক সেমিনার, বইমেলা, সাহিত্য আসর, কাব্য জলসা, বিভিন্ন পণ্যের স্টল, ইয়ুথ ফোরাম, বিজনেস নেটওয়ার্কিং ইভেন্টস এবং বাংলাদেশের জনপ্রিয় তারকা শিল্পীদের অংশগ্রহণে সংগীতানুষ্ঠান।

সম্মেলনের তৃতীয় শেষ দিনে ফোবানার সাধারণ সভার পর ঘোষণা করা হবে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে আগামী বছরের জন্য নির্বাচিত নতুন কমিটির সদস্যদের নাম।

সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী বছর ২০২৬ সালের ৪০তম ফোবানা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফোবানা ২০২৫ এর কনভেনর নাহিদুল খান সাহেল বলেন, ফোবানা সম্মেলন মানে প্রবাসীদের একটি মিলনমেলা।

তিনি আরও বলেন, ফোবানা সম্মেলনে শুধু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানই নয়, মানবিক বিষয়েও কাজ করা হয়। তবে ফোবানা কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়। এখানে দলমত নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণ থাকে। প্রবাসে নতুন প্রজন্মের সঙ্গে দেশীয় সংস্কৃতির পরিচয় করিয়ে দেওয়াও এই সম্মেলনের বড় অর্জন।

তিনি বলেন, এবারের সম্মেলনে বেশ কয়েকটি বিষয়কে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে এবারের সেমিনারগুলো অনুষ্ঠিত হয়।

এর মধ্যে ছিল সামাজিক ইস্যু— মানবাধিকার ও সামাজিক-রাজনৈতিক দিক। স্বাস্থ্য ও সুস্থতার বিষয়ে প্রতিরোধমূলক এবং চিকিৎসাগত দিক। প্রযুক্তিতে প্রকৌশল, বিজ্ঞান ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। শিক্ষা, ক্যারিয়ার ও যোগাযোগে প্রযুক্তির প্রভাব। গঠিত পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ে স্থাপত্য, পরিকল্পনা, শহরায়ন এবং টেকসই উন্নয়ন। ব্যবসা ও অর্থনীতিতে ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি, উদ্যোক্তা, বাজার এবং অর্থনৈতিক নীতি। শিক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতি্তে পাঠদান, সৃজনশীল শিল্প, ডিজাইন, চলচ্চিত্র, মিডিয়া এবং সাহিত্য। সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিষয়ে ঐতিহ্য সংরক্ষণ, ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক পরিচয় এবং বাংলাদেশি-আমেরিকানদের মূলধারায় সম্পৃক্ততা।

এবারের সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটের যুবক-যুবতী ও নারীদের বড় ধরনের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পরার মত।

সম্মেলনের চিফ কো-অর্ডিনেটর দিলু মওলা বলেন, এবারের সম্মেলনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন শহরের ২৬টি সংগঠনের জমজমাট সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বিজনেস নেটওয়ার্কিং সেমিনার শেষে বাংলাদেশী প্রবাসী এবং যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসার ক্ষেত্রে বড় ধরনের অবদান রাখা এবং ফোবানার বিভিন্ন কর্মকান্ডে অবদান রাখার জন্য ১৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে প্রাউড স্পনসর এন্ড কন্ট্রিবিউটরস এওয়ার্ড দেয়া হয়। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আটলান্টার বাংলাদেশী প্রবাসী গ্রেট কেয়ার ডেন্টিস্ট্রি ডাক্তার নাঈম বাসার।

যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে যোগদানের অনুমতি না দেয়ায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ।

শনিবার (৩০ আগস্ট) ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক বৈঠকে যোগ দিতে এসে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানান এসব দেশের প্রতিনিধিরা। তাদের মধ্যে ছিলেন ফ্রান্স, স্পেন ও আয়ারল্যান্ডের মত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।

ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল ব্যারো বলেন, ”জাতিসংঘ একটি নিরপেক্ষ স্থান, যেটা শান্তির জন্য কাজ করে। যেখানে বিরোধ মেটানো হয় আর যুদ্ধ ঠেকানো হয়। সেই অর্থে ৮০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রবেশাধিকারে কোনো ধরনের সীমাবদ্ধতা আরোপ করা যায় না। এ বিষয়ে আমার সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করব।”

অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেন স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল আলবারেস। আর আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচিত এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানানো।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিদের যোগদান ঠেকাতে নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসসহ ৮০ জন কর্মকর্তার ভিসা প্রত্যাখ্যান ও বাতিল করেছে দেশটি। এর ফলে, আগামী মাসে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিদের অংশ নেয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এই অধিবেশনেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যসহ প্রভাবশালী বেশ কয়েকটি দেশ।

ইসরায়েল বিরোধী অবস্থান নিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪টি দেশ। গাজায় দুর্ভিক্ষের জন্য সরাসরি তেল আবিবকে দায়ী করে বিবৃতি দিয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীনসহ অন্যরা। বৈঠকে উপত্যকার অনাহারের পরিস্থিতি নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন ইসরায়েল ও আলজেরিয়ার প্রতিনিধি। কেবল যুক্তরাষ্ট্রই বরাবরের মতো পক্ষ নিয়েছে ইসরায়েলের।

বুধবার (২৭ আগস্ট) গাজার দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তুলে ধরতে অভুক্ত-অপুষ্টিতে ভোগা ফিলিস্তিনি শিশুদের ছবি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে তুলে ধরেন আলেজেরিয়ার প্রতিনিধি। নিজের ১৩ বছর বয়সী ছেলের কাছে লেখা ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত সাংবাদিক মরিয়ম আবু দাগ্গার আবেগঘন চিঠিও পড়ে শোনান তিনি।

যদিও আলজেরিয়ার প্রতিনিধির তথ্য-উপাত্তকে মিথ্যা দাবি করেছেন ইসরায়েলি প্রতিনিধি। বলেন, অপুষ্টি নয়, বরং অন্য কোনো রোগে মৃত্যু হয়েছে ফিলিস্তিনি শিশুদের। পাল্টাপাল্টি মন্তব্যে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছে দুই দেশের প্রতিনিধি।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন বলেন, আমি আপনাকে পরামর্শ দেব, কিছু দেখানোর আগে ঘটনাগুলো যাচাই করে নিন। যে ছবিগুলো দেখিয়েছেন- সেই নামগুলো যাচাই করেছি আমরা। আপনার সাথে আলাদা দেখা করে তাদের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত বলবো। তবে এসব শিশুর সাথে অপুষ্টির কোনো সম্পর্ক নেই।

পাল্টা জবাবে আলজেরিয়ার প্রতিনিধি ওমর বেন্ডজামা বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতিবেদনেই ঘটনাগুলো নথিভুক্ত করা হয়েছে। ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশনের রিপোর্টে এসব ঘটনার স্পষ্ট উল্লেখও রয়েছে।

এদিনের বৈঠকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ১৪ দেশই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। যৌথ বিবৃতিতে তারা সরাসরি অভিযোগ করেছে, গাজায় দুর্ভিক্ষ মানবসৃষ্ট এবং তা তেল আবিবের তৈরি।

ব্রিটিশ প্রতিনিধি বারবারা ওডওয়ার্ড বলেন, আধুনিক ইতিহাসে মধ্যপ্রাচ্যে প্রথমবারের মতো দুর্ভিক্ষ রেকর্ড করা হয়েছে। পুরোটাই মানবসৃষ্ট। গাজার সীমান্তে খাবারের ট্রাক অপেক্ষা করছে। অথচ শিশুরা অপুষ্টিতে মারা যাচ্ছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র বরাবরের মতোই পক্ষ নিয়েছে বন্ধু ইসরায়েলের। গাজায় দুর্ভিক্ষ ইস্যুতে আইপিসির প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দেশটির প্রতিনিধি। মার্কিন প্রতিনিধি ডরোথি শিয়া বলেন, আমরা স্বীকার করি গাজায় ক্ষুধা একটি বাস্তব সমস্যা। উল্লেখযোগ্য মানবিক চাহিদা পূরণ করা আবশ্যক। এবং তা যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার। তবে, দুর্ভাগ্যবশত IPC’র সাম্প্রতিক প্রতিবেদনটি সঠিক নয়।

প্রসঙ্গত, ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করায় নেতানিয়াহু প্রশাসনকে সমালোচনায় বিদ্ধ করেছে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা। গাজায় অবিলম্বে নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি তাদের।

মহাসমারোহে আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য ‘ভিক্টরি ডে’ প্যারেডের প্রস্তুতি নিচ্ছে এশিয়ান পরাশক্তি চীন। দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে এবার একই মঞ্চে দেখা যাবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন’কে। এতে যোগ দেবেন মোট ২৬ দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান। ১০ হাজার সামরিক সদস্যের কুচকাওয়াজের পাশাপাশি দেখা মিলবে বেইজিংয়ের ভাণ্ডারের অত্যাধুনিক সব সমরাস্ত্রের।

মূলত আগামী ৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে চীনের ভিক্টরি ডে প্যারেড। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান এবং জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এবার যেন আয়োজনের কোনো কমতিই নেই। কুচকাওয়াজ ঘিরে এরইমধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে।

বিশাল এই আয়োজন উপলক্ষে একসাথে দেখা যাবে পশ্চিমাবিরোধী নেতাদের। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ছাড়াও চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মঞ্চে থাকবেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। ধারণা করা হচ্ছে, এরমধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক কোনো অঙ্গনে বিশ্বনেতাদের সাথে মিলিত হবেন কিম।

তবে, নিমন্ত্রিত হলেও বেইজিং যাচ্ছেন না দক্ষিণ কোরিয়ার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লি জায়ে মিয়ং। অনেকটা নিশ্চিত ইরান, ইন্দোনেশিয়া ও বেলারুশের প্রেসিডেন্টের অংশগ্রহণ। থাকবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও।

চীনের ঘোষণা অনুযায়ী, এক ঘণ্টা ১০ মিনিটব্যাপী কুচকাওয়াজে প্রদর্শিত হবে বেইজিংয়ের সমরভাণ্ডারের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং অত্যাধুনিক অস্ত্র। যার অস্তিত্ব এখনও বিশ্বের কাছে প্রকাশিত হয়নি। আর তাই, সামরিক বিশ্লেষকদের পুরো নজর এখন এই প্যারেডের দিকেই।

তিয়েনআনমেন স্কয়ারে অনুষ্ঠিত হবে এই প্যারেড। বিভিন্ন ফরমেশনে চোখ জুড়ানো কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন চীনা সামরিক বাহিনীর ১০ হাজার সদস্য।

ধারণা করা হচ্ছে, নতুন প্রজন্মের যুদ্ধবিমান, মিসাইল সিস্টেমসহ কাটিং এইজ প্রযুক্তির নানা সামরিক সরঞ্জাম প্রদর্শন করবে বেইজিং।

মার্কিন হুমকি মোকাবেলায় এবার উপকূলে নৌবহর মোতায়েন করলো ভেনেজুয়েলা সরকার। সেই বহরে রয়েছে যুদ্ধজাহাজ, ড্রোনসহ একাধিক নৌযান। এক ভিডিওবার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভেনেজুয়েলার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিমির পাদ্রিয়ানো।

বুধবার (২৭ আগস্ট) আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতেও উঠে আসে এমন তথ্য।

ভ্লাদিমির পাদ্রিয়ানো জানান, ক্যারিবীয় উপকূলে উল্লেখযোগ্য হারে ড্রোন মোতায়েন করা হবে। সেইসাথে থাকবে নৌটহল। আর উত্তর জলসীমায় অবস্থান নেবে নৌবাহিনীর যানগুলো।

এর আগে, কলম্বিয়া সীমান্তে নতুন করে ১৫ হাজার সামরিক সদস্য মোতায়েনের ঘোষণা দেয় লাতিন আমেরিকার দেশটি।

উল্লেখ্য, মাদক বিস্তার ঠেকাতে ভেনেজুয়েলার কাছে সাড়ে চার হাজার সদস্যসহ নৌবহর মোতায়েন করে পেন্টাগন। এরই জেরে একের পর এক পাল্টা পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছে দেশটি।

আজ থেকে ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সবমিলিয়ে ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের হার দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে।

ইউএস প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশের মধ্য দিয়ে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশনের মাধ্যমে এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত নোটিশ জারি করেছে।

ট্রাম্প প্রশাসন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রাশিয়া থেকে ভারতের অপরিশোধিত তেল কেনার কারণে মস্কো ইউক্রেন যুদ্ধ চালাতে অর্থ পাচ্ছে, আর তারই শাস্তি হিসেবে এই অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। এর আগে, ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়া ২৫ শতাংশ শুল্কের ওপর এ নতুন শুল্ক যোগ হবে।

দেশটি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভারতের প্রায় ৮৭ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি এ শুল্কে সরাসরি প্রভাবিত হবে, যা দেশের জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর এই সফর তার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

টোকিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা-র সঙ্গে একদিনের বৈঠকের পর লি স্থানীয় সময় রোববার (২৪ আগস্ট) ওয়াশিংটন ডিসি পৌঁছান। সেখানে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে একটি আনুষ্ঠানিক বৈঠকে অংশ নেবেন তিনি।

এই বৈঠক এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন জুলাই মাসে একটি অপ্রকাশিত বাণিজ্য চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর তার পাল্টা শুল্কহার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামাতে সম্মত হয়।

এই বৈঠকটি দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের সামরিক আইন জারির ঘোষণার পর দেশজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিঘ্নিত হয়েছিল।

বৈঠকে মূল আলোচনা হবে জুলাই মাসের সেই মৌখিক চুক্তিকে কেন্দ্র করে, যার আওতায় দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি কেনার এবং ৩৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এই বিপুল বিনিয়োগ ছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর সরাসরি বিনিয়োগ নিয়েও আলোচনা হবে—যা ট্রাম্প ইতিমধ্যেই উল্লেখ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট লি একটি বিশাল প্রতিনিধি দল নিয়ে এসেছেন, যেখানে রয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার চারটি প্রধান শিল্পগোষ্ঠীর প্রধানরা: স্যামসাং ইলেকট্রনিকস, এসকে গ্রুপ, হুন্দাই মোটর এবং এলজি গ্রুপ।

দক্ষিণ কোরিয়ার দৈনিক মেইল বিজনেস পত্রিকার মতে, এই চার কোম্পানি ইতোমধ্যেই ৯১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করছে।

সূত্র: আল জাজিরা।

অস্ট্রেলিয়ার ২০টির বেশি শহরে গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে হাজারো মানুষ। দেশটির ব্রিসবেন শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে হাজারো মানুষ স্থানীয় সময় রোববার (২৪ আগস্ট) ভিক্টোরিয়া ব্রিজ অতিক্রম করে মিছিল করছে। তারা গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধ, যুদ্ধবিরতি এবং দুর্ভিক্ষ ও অনাহার বন্ধের দাবি জানাচ্ছে।

এই বিক্ষোভটি অস্ট্রেলিয়া জুড়ে অনুষ্ঠিত বহু বিক্ষোভের একটি, যাকে ‘ডে অফ অ্যাকশন’ হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার রাজধানীসহ ২০টিরও বেশি শহর এই অভিযানে অংশ নিয়েছে।

শহরগুলোতে পুলিশের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো হলেও, পুরো বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (২২ আগস্ট) প্রথমবারের মতো গাজা সিটি এবং এর আশপাশের এলাকাগুলোতে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ। গাজা উপত্যকার বর্তমান পরিস্থিতি দুর্ভিক্ষের পঞ্চম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ ধাপে চরম ক্ষুধায় বহু মানুষ মারা যেতে পারে। আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ দুর্ভিক্ষের এই চরম রূপ খান ইউনিস ও দেইর আল-বালাহসহ আরও কিছু এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে গাজাজুড়ে ৫ লাখেরও বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বে।

সূত্র: আল জাজিরা।

বাংলাদেশসহ এশিয়ার পাঁচটি দেশে নির্ধারিত সফর আপাতত বাতিল করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি।তার এ সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয়েছে।

এশিয়ার পাঁচটি দেশে সফরের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে ৩০ আগস্ট ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনির ঢাকায় আসার কথা ছিল। পরদিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত ছিল।

মেলোনির সফর বা‌তিলের কারণ জানতে চাইলে এক কূটনী‌তিক গণমাধ্যমকে জানান, বাংলাদেশসহ এশিয়ার পাঁচটি দেশে সফর বাতিল করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ দিয়ে তার সফর শুরুর কথা ছিল। এরপর সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে যাওয়ার কথা ছিল মেলোনির।

ত‌বে ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনায় ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন কর‌ছে ইতা‌লি। সেই ব্যস্ততার কারণে এ‌শিয়া সফর বা‌তিল করেছে তি‌নি।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে অংশগ্রহণকারী উত্তর কোরিয়ার সেনাদের ‘বীর’ আখ্যা দিয়েছেন সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন কেসিএনএ’তে প্রচার করা হয় এ খবর।

সংবাদমাধ্যমটি জানায়, উত্তর কোরীয় সেনা কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন কিম। ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিদেশে দায়িত্ব পালনকারী সেনা কর্মকর্তাদের। রাশিয়ার কুরস্কে যেভাবে উত্তর কোরীয় সেনারা বিভিন্ন কমব্যাট ইউনিটের নেতৃত্ব দিচ্ছে, তার প্রশংসা করেন কিম।

এর আগে, ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত উত্তর কোরীয় সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি। রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানানো হয় নিহত সেনাদের প্রতি।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য ১০ হাজারের বেশি উত্তর কোরীয় সেনাকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে। আরও একটি বহর পাঠানোর পরিকল্পনার কথাও শোনা গেছে।