কাঁচা পাট রফতানি করতে গেলে এখন থেকে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করেছে।

বিদ্যমান রফতানি নীতি ২০২৪-২৭–এ শর্ত সাপেক্ষে পণ্য রফতানির একটি তালিকা রয়েছে। এই তালিকায় কাঁচা পাট ছিল না এতদিন। রফতানি নীতি সংশোধন করে পরিপত্রে শর্ত যুক্ত পণ্য তালিকার ১৯ নম্বর ক্রমিকে কাঁচা পাটকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে কাঁচা পাট রফতানি বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন গত ২৫ আগস্ট বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের কাছে যৌথভাবে একটি আবেদন করে। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্তটি নিয়েছে।

আবেদনে বলা হয়, বর্তমানে পাটের ভরা মৌসুমে প্রতি মণ পাটের দাম ৩ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা। অথচ আগের বছরগুলোতে প্রতি মণ পাটের দাম ছিল সর্বোচ্চ ৩ হাজার ২০০ টাকা। পাটশিল্পে অন্যতম কাঁচামাল কাঁচা পাট। এই কাঁচা পাটের অভাবে কারখানাগুলো প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে পারে না। মাঝখানে সুযোগ নিচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা।

উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট রফতানি হয়েছে ১০ লাখ বেল।

কোনো ব্যাংক একীভূত হলে সেই ব্যাংকের গ্রাহকদের ভোগান্তি হবে না, কোনো টাকাই নষ্ট হবে না। এমনটা জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে, সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের একীভূত কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য আট সদস্যের একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে সরকার। একীভূত ব্যাংকের সম্ভাব্য নাম হতে পারে ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’।

এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা জানান, পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত হওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তিনি বলেন, জাপানে এক লাখ কর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে জাপানি ভাষা জানার পাশাপাশি যেকোনো ধরনের দক্ষতা বাড়াতে হবে। সেখানে পিএইচডি করার পর যাতে চাকরি মেলে, সে ব্যাপারেও অনুরোধ করা হয়েছে।

গাড়ি কেনা প্রসঙ্গে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে মাঠ পর্যায়ে ব্যবহারের জন্য ৩০০ গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যে প্রস্তাব ছিল, অর্থ মন্ত্রণালয় সেটি বাতিল করেছে।

দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের বছরে অন্তত ২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। তবে আইএমএফ থেকে এক-দুই বিলিয়ন ডলার আনতেই কষ্ট হয়ে যায়— এমনটাই জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার আগারগাঁওয়ের পিকেএসএফ মিলনায়তনে ‘নেভিগেটিং ক্লাইমেট ফাইন্যান্স: মিডিয়া রিপোর্টিং প্রশিক্ষণ’ সেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, জলবায়ু ইস্যুতে অর্থ আসছে না। ২৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি তহবিল প্রয়োজন। দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের মানুষ এগিয়ে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় লোকেরা নিজেদের প্রচেষ্টায় দুর্যোগ মোকাবিলা করে। এটা ভালো দিক। তবে, কেউ যদি অপেক্ষা করে ঢাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের লোক গিয়ে সহায়তা করবে; তবে তা হবে না।

তিনি বলেন, সাংবাদিকদের ভালো ভূমিকা রাখতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সাংবাদিকদের কাজ করতে হবে। আমাদের সতর্ক করতে হবে। জাপানের ছাত্ররা দুর্যোগ নিয়ে সচেতন। আমাদেরও সচেতন হতে হবে। দুর্যোগ নিয়ে শিশুদের ছোটবেলা থেকে সচেতন করতে হবে।

এসময় আলোচকরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় উন্নত বা দায়ী দেশগুলো পর্যাপ্ত অর্থায়ন করছে না, এমনকি প্রতিশ্রুত অর্থায়নও হচ্ছে না। জলবায়ু পরিবর্তন শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি ডেকে আনছে না, সামাজিক খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অথচ তহবিল মিলছে না।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বলেন, বাংলাদেশ ঝুঁকির দিক থেকে নবম। আঠারো কোটি মানুষ ক্ষতির মুখে। তবে প্রচারনায় তা উঠে আসছে না। এসময় বৈশ্বিক দৃষ্টি আকর্ষণে মিডিয়াকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে মাতারবাড়ী-মহেশখালীকে সাংহাই-সিঙ্গাপুর বন্দরের মতো উন্নতমানের বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে চায় সরকার। এর ফলে এখান থেকে দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) দেড়শ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখবে।

আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

বিডা চেয়ারম্যান বলেন, মাতারবাড়িকে কেন্দ্র করে ১৬ থেকে ১৮ বিলিয়ন ডলার রফতানি হবে। ২০৫৫ সালের মধ্যে ২৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এতে করে দেশের চেহারা পুরো বদলে যাবে।

তিনি আরও বলেন, গ্যাস বা নিউক্লিয়ার পাওয়ার স্টেশন করার পরিকল্পনা রয়েছে, হবে শিল্প পার্ক। প্রথম ৫ বছরের মধ্যে ডিপসি চালু করা হবে, পরের ৫ বছরে রেল সংযোগ।

এ সময় বিডা চেয়ারম্যান বলেন, ২০৪৩-৪৫ থেকে ২০৫৫ সালের মধ্যে কক্সবাজার ও মহেশখালিকে পুরো এলাকা পর্যটনকেন্দ্রিক করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ১২০ দিনের মধ্যে ভিশন ও মাস্টারপ্ল্যানের খসড়া তৈরি করে দেয়া হবে।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৩ দশমিক ৯ শতাংশ বাড়বে বলে জানিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। দক্ষিণ এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধির অনুমানের তুলনায় যা অনেক কম। দক্ষিণ এশিয়ায় গড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি।

বুধবার (৯ এপ্রিল) প্রকাশিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক প্রতিবেদনে এডিবি এশিয়ান দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির ২০২৫ এবং ২০২৬ সালের পূর্বাভাস দিয়েছে। বাংলাদেশ আগামী অর্থবছরে (২০২৫-২৬) জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ১ শতাংশ হবে বলে অনুমান করেছে এডিবি।

এডিবি এর আগে চলতি অর্থবছরের জন্য চার দশমিক তিন শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। বাংলাদেশের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) জিডিপি প্রাক্কলনের কথা উল্লেখ করে এডিবির পূবাভাসের এপ্রিল সংস্করণে বলা হয়েছে, এ সময়ে অর্থনীতি ধীর গতিতে প্রসারিত হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, শ্রমিক বিক্ষোভ, উচ্চ মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের অর্থনীতির সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির ওপর প্রভাব ফেলেছে। তবে উৎপাদন খাত স্থিতিশীল হওয়ায় পরবর্তী প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।