সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি। ঘটনাটি তখন সারা দেশে আলোড়ন তোলে। পরে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায় এই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে। সেই বাস্তব ঘটনার প্রেক্ষাপটে নির্মিত হতে যাচ্ছে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।

এবার সেই সিনেমায় মেজর সিনহার চরিত্রে ঢালিউড ‘মেগাস্টার’ শাকিব খান অভিনয় করতে যাচ্ছেন বলে সংবাদমাধ্যমের দাবি। তিনি যদি এই চরিত্রে অভিনয় করেন, সেটা হবে তার ২৬ বছরের ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর ইউনিফর্মে উপস্থিতি।

ঢাকাই সিনেমার শীর্ষ নায়ক বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবকাশ যাপন করছেন। বাংলাদেশে ফিরবেন আগামী সপ্তাহে। দেশে ফেরার পর সেপ্টেম্বর থেকে তিনি এই সিনেমার শুটিং শুরু করবেন বলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ।

ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ বিষয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হচ্ছে, সাকিব ফাহাদ পরিচালিত এই সিনেমায় শাকিব খান পর্দায় হাজির হবেন মেজর সিনহার চরিত্রে!

তবে একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সরাসরি কোনো সেনাবাহিনীর কর্মকর্তার চরিত্রে অভিনয় করবেন না শাকিব, বরং রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক দক্ষ এজেন্টের ভূমিকায় দেখা যাবে তাকে। যিনি দেশের হয়ে লোমহর্ষক সব অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন করেন।

গল্পে থাকবে সত্য ঘটনা ও নাটকীয়তার মিশ্রণ, যা তুলে ধরবে তার চাকরি জীবনের নানান প্রেক্ষাপট ও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে উত্তেজনাপূর্ণ অ্যাকশন দৃশ্য।

নতুন এই প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যে সব ধরনের সরকারি অনুমতি নেয়া হয়েছে বলে দাবি গণমাধ্যমের। সিনেমায় বলিউড ও দক্ষিণ ভারতীয় টেকনিক্যাল ক্রু যুক্ত থাকবেন।

সিনেমাটির অধিকাংশ শুটিং হবে থাইল্যান্ডে। শাকিব খানের বিপরীতে ছোটপর্দার এক জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে নেয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন আছে। যদিও এখন পর্যন্ত কাউকে চূড়ান্ত করা হয়নি।

পরিচালক সাকিব ফাহাদ একাধিক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, সিনমাটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে হলেও কাহিনীতে কিছুটা নাটকীয়তা থাকবে। দেশপ্রেম, অ্যাকশন ও মানবিক আবেগ, সব মিলিয়ে এটি হবে শক্তিশালী গল্পের সিনেমা।

পরিচালক গণমাধ্যমে জানান, সিনেমাটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে হলেও কাহিনিতে কিছুটা কাটছাঁট থাকবে। তবে দেশপ্রেম, অ্যাকশন এবং মানবিক আবেগ- সব মিলিয়ে এটি হবে একটি শক্তিশালী গল্পের সিনেমা।

জানা গেছে, সেপ্টেম্বরে এর শুটিং শুরু হয়ে ডিসেম্বরে মুক্তি দেয়া হবে। সিনেমাটি একযোগে মুক্তি পাবে বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে।

তখন ছবি আঁকা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন সুলতান। শেষ প্রদর্শনী হয়েছিল তার দুই যুগ আগে। নড়াইলের পুরুলিয়া গ্রামের বহু পুরাতন বাড়িতে সবার অগোচরে থাকতেন। সবার বলতে ঠিক সবার নয়, গৃহপালিত পশু-পাখি প্রকৃতিই ছিল তার সহচর। কয়েকজন শুভানুধ্যায়ী তাকে অনুরোধ করেছিলেন ঢাকার শিল্পকলা একাডেমির জন্য কিছু ছবি আঁকতে। সুলতান ছবি এঁকেছিলেন সেই প্রদর্শনী সামনে রেখে।

সত্তরের দশকের শেষের দিকে এস এম সুলতানের আঁকা জলরং, তৈলচিত্র, স্কেচ ও চারকোলের বেশ কিছু চিত্রকর্ম নিয়ে শিল্পকলা একাডেমিতে জমকালো এক প্রদর্শনী হয়। সুলতান তখন যেন নতুন কান্তিতে শ্যামল মহিমায় উদ্ভাসিত হলেন। বহুমাত্রিক লেখক আহমদ ছফাসহ অনেকেই এগিয়ে এলেন নিজের দেশের মানুষের কাছে ‘লাল মিয়া’কে পরিচিত করাতে।

অথচ তার আগে বহির্বিশ্বের কাছে সুলতানের নাম বেশ প্রশংসিত। তার চিত্রকর্মের রোশনাইয়ে ঝিকিমিকি করেছে বহু দেশ। প্রথম প্রদর্শনী হয়েছিল ১৯৪৭ সালে, ভারতের শিমলায়। সেই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছিলেন কাপুরতলার মহারাজা। দ্বিতীয় প্রদর্শনী হয়েছিল তিন বছর পর, লাহোর ও করাচিতে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের আমন্ত্রণ পেয়ে ঘুরে এলেন মার্কিন মুলুক। বিলেতের লেস্টার গ্যালারিতে সুলতানের ছবি স্থান পায়। তিনিই প্রথম এশীয়, যার আঁকা ছবি পাবলো পিকাসো, সালভাদোর দালি, পল ক্লি, মাতিসের মতো বিশ্ববিখ্যাত চিত্রশিল্পীদের ছবির সঙ্গে প্রদর্শিত হয়।

আঁকার জন্য তিনি একেবারে সাধারণ কাগজ, গাবের রঙ এবং চটের ক্যানভাস ও কয়লা ব্যবহার করতেন। এ বিষয়ে তার বক্তব্য হলো– ‘বিদেশি ক্যানভাসের প্রচুর দাম। তাই পাটের চটের ওপর আঁকার চেষ্টা করলাম। শিরীষ ব্যবহার করে দেখলাম, বর্ষাকালে লুজ হয়ে যায়। তখন মাথায় এলো, জেলেদের জালে দেয়া গাবের রঙ ব্যবহার করার। তাতে ছবি নষ্ট হবার আশঙ্কা কম। ছত্রাকও পড়বে না।’

এভাবে ছবি আঁকার সরল উপাদান তৈরি করে শিশু-কিশোরদের ছবি আঁকা শিখিয়েছেন সুলতান। নিজের এলাকায় গড়ে তুলেছিলেন ‘শিশুস্বর্গ’ নামের পাঠশালা। শুধুমাত্র আর্টের জন‍্য ‘নন্দনকানন’। তবে নানা প্রতিকূলতায় ‘শিশু স্বর্গ’ নিয়ে বেশিদূর এগোতে পারেননি তিনি।

দৃঢ় জাতি গঠনে শিশুদের মন বিকাশের বিকল্প নেই। শিশুদের জন‍্য সুলতানের ছিল অনন্ত দরদ আর অফুরন্ত ভালোবাসা। যেসব শিশু তার কাছে আশ্রিত ছিল, তাদের জন্য নিজের ঘর ছেড়ে দিয়েছিলেন। সুলতান শিশুদের জন্য তৈরি করেছিলেন একটি বড় কাঠের নৌকা। তার অভিলাষ ছিল, সেই নৌকায় চড়ে সমুদ্র পরিভ্রমণে বের হবে দেবদূতেরা। সমুদ্র থেকেই হয়তো খুঁজে নেবে শিল্প চর্চার হীরা-চুনি-পান্না।

সুলতানের ছবিতে প্রাণ পেতো এ ভূখণ্ডের শক্তসমর্থ পুরুষ ও নারীর যৌথ খামার। একইসাথে তার ছবিগুলোতে প্রকাশিত হয় গ্রামীণ প্রেক্ষাপটের শ্রেণি-দ্বন্দ্ব। তিনি তার ছবির বলিষ্ঠ সাবজেক্টের বিষয়ে বলতেন, ‘আমার অতিকায় ছবিগুলোর কৃষকের অতিকায় অতিকায় দেহটা এই প্রশ্নই জাগায় যে, ওরা কৃশ কেন? ওরা রুগ্ন কেন- যারা আমাদের অন্ন যোগায়। ফসল ফলায়।’

তার ছবিতে নারী চরিত্রগুলো নাজুক নয় বরং কোথাও কোথাও তারা একটু বেশিই সবল আর প্রাণশক্তিতে ভরা। দৈনন্দিন কাজে মত্ত থেকে তারা যেন সূর্যের যাত্রাকে আরও কর্মিষ্ঠা ও স্বতঃস্ফূর্ত করে তোলে। এই ভাবনাগত জরীন জায়গা ছিল সুলতানের ছবি আঁকার প্রেরণা বা অবলম্বন।

এস এম সুলতানের ছবিতে বাংলার কৃষক

 

চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক নূরুল আলম আতিক বলেন, ‘এস এম সুলতান একজনই। তার তুলনা চলে না ভারতবর্ষের কোনো শিল্পীর সঙ্গে। সাহিত্যে যেমন মাইকেল মধুসূদন দত্ত, চিত্রকলাতেও তেমনি এস এম সুলতান। তাদের কোনো পূর্বসূরি-উত্তরসূরি নেই। তারা তাঁদের মতো—স্বতন্ত্র।’

১৯৮২ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার পান সুলতান। এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে তাকে ভূষিত করা হয় ম্যান অব এশিয়া হিসেবে। একই বছর একুশে পদকও পান। প্রাপ্তির খাতায় আরও অনেক পুরস্কার জমে যায়। অথচ সত্তরের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমরা তাকে কি পর্যাপ্ত মূল্যায়ন করতে পেরেছিলাম। আধুনিক চিত্রশিল্পের বিকাশের কালে দেশে কি তিনি শিল্পরসিকদের চোখের আড়ালেই ছিলেন না?

দুনিয়াবিখ্যাত লেখক গুন্টার গ্রাস একবার ঢাকায় এসেছিলেন। শিল্পকলা একাডেমিতে সুলতানের ছবি দেখে যারপরনাই অবাক হয়েছিলেন। ঝাঁকড়া চুলের শিল্পীর এ দেশে যথার্থ মূল‍্যায়ন দেখতে না পেয়ে মন্তব্য করেছিলেন– ‘সুলতানকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ হয় না।’ গুন্টার গ্রাসের এই উক্তির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করলে অনুধাবন করা যায় শিল্পকর্মে সুলতানের অনন্য অবস্থান। এই উক্তি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সুলতান বাংলাদেশের হৃদয়কে ধারণ করেছিলেন..

আহমদ ছফা তার বাঙালি মুসলমানের মন বইতে লিখেছিলেন, ‘বাংলার বদলে সুলতান যদি আরব দেশে জন্ম নিতেন, মরুচারী বেদুইনদের ছবি আঁকতেন। যদি জন্মাতেন নরওয়ে-সুইডেনে, তাহলে সমুদ্রচারী জেলেদের সভ্যতার পথিকৃৎ হিসেবে আঁকতেন। নেহায়েত বাংলাদেশে জন্ম নিয়েছেন বলেই এই কৃষকদের সভ্যতার জনয়িতা ধরে নিয়ে ছবি এঁকেছেন।’

বাঁশির টঙ্কারে নিপুণ সুলতান

 

তিনি নমঃশূদ্র নর-নারীর আদরের গোঁসাই, যিনি সুলতান নাম ধারণ করে ধরাধামে এসেছিলেন। তিনি আধেক ছন্নছাড়া সন্ত, আধেক লক্ষ্মীছাড়া শিল্পী। ইঁদুর-বেড়াল, হাঁস-মুরগী নিয়ে যিনি সংসার পেতেছেন। মনের আনন্দে ছবি এঁকেছেন। ফর্মের নিরীক্ষাকে গুরুত্ব না দিয়ে মানুষের ভেতরের শক্তির উত্থানকে গুরুত্ব দিয়েছেন। সভ্যতার সবচে মূল্যবান পেশিগুলো এঁকেছেন। সুলতান, আপনি আমাদের ক্ষমা কইরেন..

শুঁয়োপোকার মৃত্যুতে প্রজাপতির জন্ম
শুঁয়োপোকা আন্ডারপাসে ঢুইকা আমরা প্রজাপতি হইয়া যাই
আমাদের ঘাম জুড়ায় ‘প্রজাপতি গুহায়’

বিরাট বজরায় চইড়া আজও শিশুস্বর্গে যাইতে পারি নাই
নারীর কচুরি ধইরা পাড়ি দিতে পারি নাই নড়াই নদী
সেইখানে যাইতে পারলে কনফেস করতাম কনফেস..

ইউনিফাইড ড্রেস পইরা রোজ দুপুরে আমাদের পাড়া দিয়া
হাইটা যাইতো যে সরল গোঁসাই,
আমরা ‘রেলগাড়ি’ বইলা পেছন পেছন ছুটতাম
আস্তাকুঁড়ের রাস্তাকুকুররে নিয়ম কইরা ঢিল মারতাম
রঙ মাখাইয়া সঙ সাজাইতাম
অথচ তার পেট ভরাইতে পারি নাই
না খায়া না খায়া শেষতক মইরাই গেলো একদিন!

তুমি আমারে ক্ষমা কইরো সুলতান
তোমার শোভা বাড়াইসি কারওয়ান বাজার আন্ডারপাসে
তোমার শোভা বাড়াইসি সোনারগাঁয়ের বাউল বাগানে

তবু আমি কনফেস করি—
তুমি আমারে ক্ষমা কইরো সুলতান..

কানাডার সারেতে জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা কপিল শর্মার সদ্য চালু হওয়া ‘ক্যাপস ক্যাফে’তে এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার গুলি ঘটনা ঘটল। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে গুরপ্রীত সিং ওরফে গোল্ডি ধিলন এবং লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় মুম্বাই পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থা তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে ২৫ টিরও বেশি গুলির শব্দ শোনা যায়। ভিডিওতে একটি কণ্ঠকে বলতে শোনা যায়, আমরা টার্গেটের কাছে ফোন করেছিলাম, কিন্তু সে ফোন ধরেনি, তাই আমাদের ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। যদি সে এখনও ফোন না ধরে, তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ দ্রুত মুম্বাইয়ে নেয়া হবে।

এর আগে গত ১০ জুলাই কপিল শর্মার ক্যাফেতে হামলার ঘটনা ঘটে। সে সময় কিছু কর্মচারী ভেতরে থাকলেও কেউ হতাহত হননি। ওই ঘটনায় ক্যাফের একটি জানালায় ১০ টির বেশি বুলেটের আঘাতে সৃষ্ট গর্ত পাওয়া গিয়েছিল।

প্রথম হামলার পর শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বাব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনাল (বিকেআই)-এর সদস্য হরজিৎ সিং লাড্ডি দায় স্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, কপিলের একটি অনুষ্ঠানে একজন অংশগ্রহণকারী ‘নিহাং শিখ’দের ঐতিহ্যবাহী পোশাক এবং আচার-আচরণ নিয়ে কিছু ‘ব্যঙ্গাত্মক’ মন্তব্য করেন। এতে শিখ সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে।

প্রকৃতি ও জীবনের কবি মনিজা রহমান। তার লেখায় সাবলীল গতিশীলতায় প্রকাশ পায় সমাজের সব স্তরের মানুষের গহীন গল্পের ইতিহাস। এমন বক্তব্য উঠে এসেছে তরুণ-প্রবীণ লেখক ও কবিদের কণ্ঠে। রোববার (৩ আগস্ট) রাজধানীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে জলধি-সন্ধ্যায় শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে মনিজা রহমানের কাব্যগ্রন্থ ‘এক পশলা বৃষ্টি কেনার আগে’ নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা। জলধির প্রকাশক ও সম্পাদক কবি নাহিদ আশরাফির এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন কবি মনিজা রহমান। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন কবি নাসির আহমেদ, কথা সাহিত্যিক দিলারা মেসবাহ, কথা সাহিত্যিক সিরাজুল ইসলামসহ অনেকে। বক্তারা বলেন, মনিজা রহমান নিরন্তর জীবনকে উন্মোচন করে চলেছেন। সমাজের নানামাত্রিক জানালায় উঁকি দিয়ে সত্য আবিষ্কার করে চলেছেন। তার এই উন্মোচন চলে কখনও গল্পে, কখনও কবিতায়, কখনওবা উপন্যাসে। উল্লেখ্য, মনিজা রহমানের জন্ম বরিশালের পিরোজপুরে। পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার মনিজা রহমান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স করার পর পেশা হিসেবে বেছে নেন ক্রীড়া সাংবাদিকতা।

তিন দশকের বেশি সময় ধরে বলিউডে দাপুটে রাজত্ব করার পর অবশেষে প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন শাহরুখ খান। ২০২৩ সালের ব্লকবাস্টার ‘জওয়ান’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তিনি ‘সেরা অভিনেতা’র স্বীকৃতি পেয়েছেন। অন্যদিকে শাহরুখ খানের সঙ্গেও ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ সিনেমাতে আবেগঘন অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রী হয়েছেন রানি মুখার্জি। তিনিও প্রথমবারের মতো এই পুরুস্কোর পাচ্ছেন। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

এটি শাহরুখের জন্য এক বিশেষ অর্জন, কারণ এর আগে তিনি ৩০ বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়ে ১৪ বার জিতেছেন, যার মধ্যে ৮ বার সেরা অভিনেতার পুরস্কার—এই ক্যাটাগরিতে দিলীপ কুমারের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ জয়। এ ছাড়াও, ফ্রান্স সরকার তাকে ‘অর্ডার দেস আর্টস এট দেস লেটারস’ এবং ‘লিজিয়ন অব অনার’-এর মতো সম্মাননা প্রদান করেছে যা বিশ্বজুড়ে তার গ্রহণযোগ্যতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক ঘটে শাহরুখ খানের। এর পরের তিন দশকে উপহার দিয়েছেন একের পর এক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র-‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে যায়েঙ্গে’, ‘কভি খুশি কভি গম’, ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’, ‘মাই নেম ইজ খান’সহ বহু সুপারহিট সিনেমা।

এদিকে, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শাহরুখের সঙ্গে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন ‘টুয়েলভথ ফেল’ অভিনেতা বিক্রান্ত ম্যাসি। বিক্রান্তেরও এটি প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

অন্যদিকে, শাহরুখ খানের দীর্ঘদিনের সহ-অভিনেত্রী রানি মুখার্জিও এবারই প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা অভিনেত্রী হয়েছেন। ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ ছবিতে আবেগঘন ও বাস্তবভিত্তিক অভিনয়ের জন্য তিনি সেরা অভিনেত্রী হয়েছেন। ১৯৯৬ সালে বাংলা ছবি ‘বিয়ের ফুল’ দিয়ে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করা রানি একই বছর ‘রাজা কি আয়েগি বারাত’ দিয়ে বলিউডে পা রাখেন।

‘জওয়ান’ সিনেমার গানেও এসেছে সাফল্য—শিল্পা রাও জিতেছেন সেরা নারী প্লেব্যাক গায়িকার পুরস্কার। অন্যদিকে, সুদীপ্ত সেন ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমার জন্য সেরা পরিচালকের স্বীকৃতি পেয়েছেন।

কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও জনপ্রিয় মার্কিন গায়িকা কেটি পেরি সম্প্রতি মন্ট্রিয়লে একসঙ্গে রাতের খাবার খেয়েছেন—এমন খবর প্রকাশের পর নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

লে ভিওলোন নামের এক রেস্টুরেন্টে স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় ট্রুডো ও পেরি প্রায় দুই ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন।

একজন স্থানীয় সংবাদকর্মীর বরাতে জানা যায়, ‘তারা খুব স্বাভাবিক ও শান্ত মেজাজে ছিলেন। রেস্টুরেন্ট কর্মীরা বা অন্য অতিথিরা তাদের বিরক্ত করেননি। আর কোনো দৃশ্যমান রোমান্স বা ঘনিষ্ঠতার চিহ্নও ছিল না।’

তাদের ডিনার মেনুতে ছিল বিভিন্ন ধরনের অ্যাপেটাইজার, যেমন টুনা, বিফ টারটার, লবস্টার ও অ্যাসপারাগাস। মূল খাবার হিসেবে ছিল ল্যাম। রেস্তোরাঁর শেফ ড্যানি স্মাইলস নিজে গিয়ে তাদের শুভেচ্ছা জানান এবং বিদায়ের আগে তারা রান্নাঘরে গিয়ে পুরো টিমকে ধন্যবাদ জানান।

কেটি পেরি সম্প্রতি তার দীর্ঘদিনের সঙ্গী অরল্যান্ডো ব্লুম-এর সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করেছেন।

অন্যদিকে, জাস্টিন ট্রুডো ও তার স্ত্রী সোফি গ্রেগোয়ার ট্রুডো ২০২৩ সালে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। তিনি চলতি বছর দীর্ঘ প্রায় এক দশক পর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

ট্রুডোর পিতা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডো-ও ছিলেন প্রেমিক স্বভাবের, যিনি অফিসে থাকার সময় অভিনেত্রী বারবারা স্ট্রেইস্যান্ড ও কিম ক্যাটরাল-এর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান এবং ৫১ বছর বয়সে ২২ বছরের এক নারীকে বিয়ে করেন।

ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্ম নেয়া কেটি পেরি ১৩ বার গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের মনোনয়ন পেয়েছেন। তার সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যালবাম ২০১০ সালের ‘টিনেজ ড্রিম’, যা মাইকেল জ্যাকসনের রেকর্ড স্পর্শ করেছিল।

ট্রুডো বা পেরির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ এই ডিনার বা সম্পর্ক বিষয়ে মন্তব্য করেননি।

তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং গসিপ সংবাদমাধ্যমে ইতোমধ্যেই বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে—এটা কেবল একবারের ফরমাল ডিনার, নাকি নতুন কোনো সম্পর্কের শুরু, তা সময়ই বলে দেবে।

সূত্র: এপি।

চিত্রনায়ক জসীমের ছেলে এবং ‘ওন্ড’ ব্যান্ডের ভোকালিস্ট, বেজিস্ট এ কে রাতুল মারা গেছেন। আজ রোববার (২৭ জুলাই) বিকেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

তার মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ব্যান্ডের গীতিকার সিয়াম ইবনে আলম।

তিনি জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি জিমে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন রাতুল। পরে তাকে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

রাতুল ও তার ব্যান্ড ‘ওন্ড’ বাংলাদেশের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। ২০১৪ সালে তাদের প্রথম অ্যালবাম ‘ওয়ান’ এবং ২০১৭ সালে দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘টু’ মুক্তির পর ব্যান্ডটি জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

চিত্রনায়ক জসীমের তিন ছেলে— এ কে রাহুল, এ কে রাতুল ও এ কে সামী। তিনজনেরই সংগীতজগতে বিচরণ। এর মধ্যে রাহুল ‘ট্রেনরেক’ ব্যান্ডের গিটারিস্ট ও ‘পরাহো’ ব্যান্ডের ড্রামার, রাতুল ও সামী যুক্ত ‘ওন্ড’ ব্যান্ডের সঙ্গে। সামী ড্রামার। আর রাতুল ব্যান্ডটির ভোকালিস্ট, বেজিস্ট ও সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন।

পেশাদার রেসলিংয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী তারকাদের মধ্যে একজন টেরি বোলিয়া, যিনি ‘হাল্ক হোগান’ নামে বিশ্বজুড়ে পরিচিত, তিনি আর আর নেই।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এই কিংবদন্তি ৭১ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

খবরটি নিশ্চিত করেছে ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেইনমেন্ট (ডব্লুডব্লুই)।

এক বিবৃতিতে ডব্লুডব্লুই লিখেছে, ডব্লুডব্লুই হল অব ফেমার হাল্ক হোগানের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। পপ কালচারের অন্যতম পরিচিত মুখ হোগান ১৯৮০-এর দশকে ডব্লুডব্লুইকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তার পরিবার, বন্ধু ও অসংখ্য ভক্তদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।

আশির দশকে রেসলিংয়ের সোনালি যুগে হোগান ছিলেন পোস্টারবয়। তার বিখ্যাত সংলাপ— ‘সে ইউর প্রেয়ারস অ্যান্ড ইট ইউর ভিটামিনস’ আর বাহুর মাপ নিয়ে দম্ভোক্তি— ‘২৪ ইঞ্চি পাইথন’, তাকে সাধারণ দর্শকের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছিল।

২০১৫ সালে বর্ণবাদী মন্তব্য সংবলিত একটি ভিডিও ফাঁস হলে হাল্ক হোগানের ভাবমূর্তিতে বড় ধাক্কা খায়। তবে এটাও বলা যায়, বিতর্ক আর সমালোচনা সত্ত্বেও হোগান রেসলিংয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী তারকাদের একজন হয়েই থাকবেন।

‘দ্য গডফাদার অব হেভি মেটাল’ খ্যাত ওজি ওসবার্ন আর নেই। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিলো ৭৬ বছর। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাতে যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে তার মৃত্যু হয়।

ওজির পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে, আমাদের প্রিয় ওজি অসবোর্ন আজ সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই ছিলেন, ভালোবাসায় ঘেরা। এই কঠিন সময়ে আমাদের গোপনীয়তা রক্ষার অনুরোধ জানাচ্ছি।’ তার মৃত্যুর কারণ এখনো জানানো হয়নি।

এই খবর আসে মাত্র কয়েক সপ্তাহ পর, যখন ওজি তার জন্মস্থান বার্মিংহামে ‘ব্ল্যাক সাবাথ’-এর সাথে মঞ্চে ফিরেছিলেন  ‘ব্যাক টু দ্য বিগিনিং’ কনসার্টে। ব্যান্ডের বেসিস্ট গিজার বাটলার, ড্রামার বিল ওয়ার্ড এবং গিটারিস্ট টনি আইওমি-র সাথে এই রিইউনিয়ন শো’টি ছিল তাদের ২০ বছরের মধ্যে প্রথম পারফরম্যান্স। ওজির শেষ মঞ্চ উপস্থিতি হিসেবে এটি প্রচার করা হয়েছিল।

১৯৪৮ সালের ৩ ডিসেম্বর ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে এক সাধারণ পরিবারে জন্ম নেয়া জন ‘ওজি’ অসবোর্ন স্কুল ছাড়েন ১৫ বছর বয়সে। কসাইখানা থেকে শুরু করে চুরি পর্যন্ত সব কাজ করেছিলেন তিনি!

১৯৬৭ সালে ব্ল্যাক সাবাথ গঠনের মাধ্যমে সঙ্গীতজগতে প্রবেশ করেন তিনি। তাদের প্রথম অ্যালবাম মাত্র ১২ ঘন্টায় রেকর্ড করা হয়েছিল! এরপর একে একে আসে ‘প্যারানয়েড’, ‘মাস্টার অব রিয়েলিটি’র মতো বহু প্ল্যাটিনাম হিট।

১৯৭৮ সালে ব্যান্ড থেকে বের হলে অজি শুরু করেন একক ক্যারিয়ার। ১৯৮০ সালে মুক্তি পায় ‘ব্লিজার্ড অব অজ’ নামের অ্যালবাম। এই অ্যালবামে ছিল বিখ্যাত গান ‘ক্রেজি ট্রেইন’। পরের বছর আসে ‘ডায়েরি অব আ ম্যাডম্যান’। বিক্রি হয় ৫০ লাখ কপির বেশি।

এছাড়াও ‘আয়রন ম্যান’ ও ‘প্যারানয়েড’-এর মতো গানে কণ্ঠ দিয়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন ওজি ওসবার্ন ।

মঞ্চে বাদুড়ের মাথা কামড়ানো, মাংস ছোড়া, মাদক ও অ্যালকোহলে আসক্তি—ওজি সবসময়ই বিতর্কিত ছিলেন। ১৯৭৯ সালে ব্ল্যাক সাবাথ থেকে বেরিয়ে গেলেও ১৯৯৭ সালে আবার ফিরে আসেন। একক ক্যারিয়ারে ১১টি অ্যালবাম বের করেন, পেয়েছেন ৩টি গ্র্যামি।

দ্বিতীয় স্ত্রী শ্যারন অসবোর্ন (যিনি তার ম্যানেজারও ছিলেন) এবং সন্তানদের নিয়ে দ্য অসবোর্নস রিয়েলিটি শো তাকে নতুন প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় করে। শোটি এমি অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছিল!

২০১৯ সালে নিউমোনিয়ার পর থেকে তার স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। ২০২০ সালে তিনি পারকিনসন্স ডিজিজ-এ আক্রান্ত হন। ২০২২ সালে কমনওয়েলথ গেমস-এ শেষবারের মতো মঞ্চে ওঠেন। গত বছর তিনি বলেন, ‘আমার জীবনের শেষ ইচ্ছা—আরও একটি শো করে ভক্তদের ধন্যবাদ জানানো।’

ওজি অসবোর্ন রেখে গেছেন স্ত্রী শ্যারন, প্রথম সংসারের তিন সন্তান এবং শ্যারনের সাথে তিন সন্তান—জ্যাক, কেলি ও এমি।