দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ধর্মস্থালা প্রায় আটশো বছর ধরে পরিচিত তীর্থস্থান হিসেবে। প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার পূণ্যার্থী এই শহরে ভিড় জমায়। ধর্মাস্থালায় অবস্থিত আলোচিত ভগবান মঞ্জুনাথের মন্দির নিয়ে এক অভিযোগের জেরে শুরু হয়েছে তোলপাড়। এমনকি গণকবর থাকার সন্দেহে আলোচিত এই ইস্যুর খবর ও তথ্য প্রচারেও এসেছে নিষেধাজ্ঞা।

স্পর্শকাতর হওয়ায় ধর্মাস্থালার এই মামলা সংক্রান্ত ৮ হাজার ৮ শ’ অনলাইন পোস্ট, ফেসবুক ও ইউটিউব কন্টেন্ট মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন ব্যাঙ্গালুরুর একটি আদালত। বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে সংবাদ প্রচারেও। যা নিয়েও ক্ষোভ ছড়িয়েছে ভারতজুড়ে। এরইমধ্যে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছে একটি ইউটিউব চ্যানেল। এদিকে, ঘটনার স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদ্ঘাটনের দাবি জানিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ।

ঘটনার সূত্রপাত গত ৩ জুলাই। ধর্মস্থালায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন দাবি করে দলিত সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার দাবি, ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রভাবশালীদের নির্যাতনের শিকার শতাধিক নারী ও শিশুর মরদেহ তিনি মন্দির চত্বরে মাটিচাপা দিয়েছেন। দেহগুলোতে নৃশংসতার স্পষ্ট চিহ্ন ছিল বলেও অভিযোগ তার। সেখান থেকে কয়েকটি কঙ্কালও উদ্ধার হয়েছে। এরইমধ্যে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। আদালত তার নাম প্রকাশ করেনি।

এমন বিস্ফোরক অভিযোগের পর ভারতজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। এতদিন পর কেন এই বিতর্ক উঠেছে সে প্রশ্ন। যদিও জবানবন্দী দাতার দাবি, ২০১৪ সালে পরিবারসহ ধর্মস্থালা থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। অপরাধবোধ থেকেই দিচ্ছেন সাক্ষ্য।

আইনজীবী উমাপাথি এস বলেন, অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় চলমান তদন্ত অসন্তোষজনক। সরকারের উচিত ছিল মামলাটি তদারকি করার জন্য একজন বিশিষ্ট এবং অভিজ্ঞ আইপিএস অফিসারের নেতৃত্বে বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা। এটি একটি বা দুটি মৃত্যু বা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। গণধর্ষণ, গণহত্যা এবং গণকবরের মতো গুরুতর বিষয় রয়েছে।

সাবেক ওই পরিচ্ছন্নতাকর্মীর জবানবন্দীর পর, ২০০৩ সালে ধর্মাস্থালায় নিখোঁজ হওয়া এক শিক্ষার্থীর পরিবার রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি জানিয়েছে। এদিকে, তোপের মুখে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন কর্ণাটক রাজ্য সরকার।

আমাদের অনুসরণ করুন

 

সর্বাধিক পড়ুন

  • সপ্তাহ

  • মাস

  • সব