হাজারও নিউইয়র্কবাসীর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে শেষ বিদায় নিলেন বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ অফিসার দিদারুল ইসলাম (৩৬)। বৃহস্পতিবার  (৩১ জুলাই) ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করেই পার্কচেষ্টারে তার জানাজায় অংশ নেন ২০ হাজার মুসলিম।

শ্রদ্ধা জানাতে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের ৫ হাজার সদস্য। আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেন নিউইয়র্কের গভর্ণর, মেয়র ও আইনপ্রণেতাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তুলে ধরেন দিদারুলের বীরোচিত আত্মত্যাগের কথা।

পার্কচেস্টার জামে মসজিদের ইমাম ড. জাকির আহমান বলেন, বাংলাদেশি মুসলিম আমেরিকান ছিলেন তিনি। কঠোর পরিশ্রমী হিসেবেই পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা করাকেই দায়িত্ব ভেবেছিলেন। তার জীবন এই দেশের জন্য এবং সবার জন্য উৎসর্গ করে গেছেন।

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডাম বলেন, দিদারুলের পরিবারকে সান্তনা জানানোর ভাষা নেই। একজন অভিভাবক হিসেবে অন্য অভিভাবকের কাছে ক্ষমা চাই। দিদারুল ইসলাম যে সন্ত্রাসবাদ রুখতে জীবন দিয়েছেন, সেটি চিন্তাভাবনা ধারণ করতে হবে।

আনুষ্ঠানিকভাবে দিদারুলকে সম্মান জানানো নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের ৫ হাজার সদস্য স্যালুটের পাশাপাশি হেলিকপ্টারের মাধ্যমেও গার্ড অব অনার প্রদান করে। সহকর্মীর পরিবারের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ।

তিনি বলেন, চেয়ে দেখো দিদারুল। পুরো নিউইয়র্ক পুলিশ তোমার পাশে। তোমার এবং তোমার পরিবারের জন্য আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। আমরা সবসময় এই পরিবারের পাশে থাকবো।

পরে তাকে নিউ জার্সির লোরেল গ্রোভ কবরস্থানে দাফন করা হয়

এদিকে হামলার এই ঘটনায় পর আবারও সমালোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র আইন। নিউইয়র্কের মেয়রপ্রার্থী জোহরান মামদানি বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আবারও মনে করিয়ে দেয় যে, যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র আইন যতই শক্তিশালী বলা হোক না কেনো; সেটি আসলে দুর্বল। এটা ভয়াবহ যে মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে লড়াই করা একজন ব্যক্তি এমন ধ্বংসাত্মক অস্ত্র কিনতে পেরেছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের পার্ক অ্যাভিনিউয়ে ভয়াবহ বন্দুক হামলায় কর্তব্যরত অবস্থায় ৩৬ বছর বয়সি পুলিশ অফিসার দিদারুল ইসলামসহ ৪ জন নিহত হন। হামলাকারী ২৭ বছরের শ্যেন ডেভন তামুরা নিজেও আত্মহত্যা করে। গান ভায়োল্যান্স আর্কাইভের তথ্য অনুসারে, এবছর এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ২৫৪টি বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন শত শত মানুষ।

নিহত দিদারুল ইসলাম ৪ বছর আগে পুলিশে যোগ দেন। এর আগে তিনি স্কুল সেইফটি ও ট্রাফিক বিভাগেও কাজ করেছেন। তার বাড়ি বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায়। দিদারুলের দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। স্ত্রী আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

আমাদের অনুসরণ করুন

 

সর্বাধিক পড়ুন

  • সপ্তাহ

  • মাস

  • সব