চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন হামলা চালানোর এখতিয়ার আছে কি না— এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, একমাত্র কংগ্রেসের হাতে যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা থাকলেও, ইতিহাস বলছে, বিগত সময়ে অনেক প্রেসিডেন্টই কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে নিয়েছেন সামরিক পদক্ষেপ।
এবার ট্রাম্প যাতে এ ধরনের উদ্যোগ না নিতে পারেন, তার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন কিছু মার্কিন কংগ্রেসম্যান। কারণ তারা মনে করছেন, এটা আমেরিকার যুদ্ধ নয়। আর সাংবিধানিকভাবে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া, একতরফাভাবে প্রেসিডেন্টের কোনো সামরিক পদক্ষেপ সমর্থন করেন না তারা।
মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান বলেন, এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের কোনোভাবেই উচিত নয় ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ানো। আর যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের নেই, এ ক্ষমতা আছে শুধুমাত্র কংগ্রেসের। ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি সকল যুদ্ধ বন্ধ করতে এসেছেন, শুরু করতে নয়। তাই এ নিয়ে রিপাবলিকানদের মধ্যে প্রতিদিনই বিতর্ক চলছে।
রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান থমাস ম্যাসি ও ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান রো খান্না হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে একটি যৌথ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এতে বলা হয়, কংগ্রেসের স্পষ্ট অনুমতি ছাড়া ইরানে কোনো সামরিক অভিযান চালাতে পারবেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিতে রয়েছে প্রস্তাবটি, যেখানে ১৫ দিনের মধ্যে কোনো পদক্ষেপ না নিলে সরাসরি ভোটের জন্য হাউসে উঠবে এটি। প্রস্তাবটি পাশ হলে, কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া ইরানে বড় কোনো সামরিক হামলা বা যুদ্ধ শুরু করতে পারবেন না প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
তবে শুধু সাংবিধানিক বাধা-ই নয়, ইরানে হামলা না করতে মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদের পাশাপাশি ব্যবসায়িদের পক্ষ থেকেও চাপ বাড়ছে ট্রাম্পের ওপর। এ সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে পড়লে ক্ষতির মুখে পড়বে সারা বিশ্বের অর্থনীতিও।
সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা ফিলিপ ইনগ্রাম বলেন, ইরানে যদি যুক্তরাষ্ট্র অভিযান শুরু করে, তাহলে তারা হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিতে পারে। বর্তমানে বিশ্বের ২০ শতাংশ তেল ও গ্যাসের বাণিজ্য হয় এ পথে। আর তা বন্ধ হয়ে গেলে হুমকির মুখে পড়বে বিশ্ব অর্থনীতি।
প্রসঙ্গত, অতীতে সরাসরি প্রেসিডেন্টের নির্দেশে কোরীয় এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধে জড়িয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাই ইরান-ইসরায়েল ইস্যুতে তাদের প্রত্যক্ষ অবস্থান নিয়েও চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।