ক্রমেই বাড়ছে ভেনেজুয়েলা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা। লাতিন ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌবহর পাঠানোর জবাবে ব্যাপক সামরিক মহড়া আয়োজন করেছে ভেনেজুয়েলা। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর অভিযোগ তাদের সম্পদে নজর যুক্তরাষ্ট্রের; আর তাই সামরিক উত্তেজনা তৈরি করে উপনিবেশ স্থাপন করতে চায় তারা। এদিকে, সার্বভৌমত্ত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে চিঠি দিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকান দেশটি।
মূলত দেশের উপকূলে মার্কিন নৌ বহর দৃশ্যমান হওয়ার পরই সামরিক শক্তি প্রদর্শনে মহড়া দেয় ভেনেজুয়েলা। প্রেসিডেন্ট মাদুরোর সরাসরি তত্ত্বাবধানে এতে অংশ নেন স্পেশাল রেভ্যুলুশনারি অপারেশনস বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য।
দেশটির পাহাড়ি অঞ্চলে বিশেষ পোশাকে বিভিন্ন সামরিক দক্ষতা দেখান সেনারা। ছিল চোখ জুড়ানো প্যারেড। অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে লাইভ ফায়ারিংয়েও অংশ নেন স্পেশাল বাহিনীটি। এসময় ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেন, দেশটির সম্পদ লুটের জন্য উসকানি তৈরির চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তার দাবি, সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রস্তুত ভেনেজুয়েলার মানুষ।
নিকোলাস মাদুরো বলেন, সাম্রাজ্যবাদী গ্রিংগোরা কী চায়? ভেনেজুয়েলার সম্পদ, উপনিবেশ স্থাপন করা এবং ভেনেজুয়েলাকে টুকরো টুকরো করতে চায় তারা। একটানা হুমকি, মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ, ভেনেজুয়েলা জাতির বিরুদ্ধে অবরোধের পরও আমি বলতে পারি, আমরা আগের চেয়েও শক্তিশালী। শান্তি, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য আরও বেশি প্রস্তুত।
চলতি সপ্তাহে আরও একটি সামরিক মহড়া হবে বলে জানিয়েছে মাদুরো প্রশাসন। লাতিন ও ক্যারিবীয় উপকূলে নৌবহর পাঠানোর ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে কারাকাস। এরই মধ্যে, জাতিসংঘের কাছে পাঠিয়েছে অভিযোগপত্রও।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ভেনেজুয়েলার প্রতিনিধি স্যামুয়েল মোনকাদা বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে, যেখানে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের ক্রমাগত হয়রানিমূলক নীতি এবং সাম্প্রতিক বিপজ্জনক কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়েছে। তাদের এই সামরিক তৎপরতা জাতিসংঘ সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
এর আগে, মাদক বিস্তার রোধে ভেনেজুয়েলা উপকূলে তিনটি ডেস্ট্রয়ার, পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন অ্যাটাক সাবমেরিনসহ সাড়ে চার হাজার নৌসেনা পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে, সারাদেশে মিলিশিয়া মোতায়েনসহ, জলসীমায় যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে ভেনেজুয়েলাও।
প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রশাসন ভেনেজুয়েলার বর্তমান শাসক নিকোলাস মাদুরোকে ‘বৈধ প্রেসিডেন্ট’ মনে করে না। তার সঙ্গে লাতিনের বিভিন্ন মাদকচক্র ও অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর যোগসাজশ আছে বলেও অভিযোগ ওয়াশিংটনের।